০৭:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৬:২২:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুন ২০২০
  • 55

গ্রাম বাংলার পুরাতন ঐতিহ্য গরুর গাড়ি আর তেমন দেখা যায় না। ওকি গাড়ীয়াল ভাই কত রইব আমি পন্থের দিকে চাইয়ারে ” জনপ্রিয় এই গান টি এখন ও শোনা গেলে ও চলনবিলে আর তেমন গরুর গাড়ি চোখে পড়ে না।

গাড়িতে বউ সাজিয়ে নিয়ে যাওয়া তেমন দেখা যায় না। ১৮ থেকে ২০ বছর আগেও গরুর গাড়ি ছাড়া বিয়ে হতো না, গাড়িতে বর, কনে সাজিয়ে যখন রাস্তার মধ্যে রওয়ানা হতো তখন নতুন বউকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় পড়ে যেত। সে সব বর, কনে ও বরযাত্রীদের যাতায়াত কল্পনাই করা যায় না। তাড়াশ উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামে আলহাজ খোদা বক্স সরকারের গাড়ি ছিল বর, কনে বিয়ের গাড়ি সবার জন্য উন্মুক্ত।

এক এলাকা থেকে অন্য এলাকা যাতায়াত, হাট বাজারে পণ্য বহন গরুর গাড়ি ছিল এক মাত্র বাহন। ফসল ঘরে তোলা বা বাজারজাত করা জমির ধান কাটার পর সেই ধান আনা সব কাজেই গাড়ি বাবহার করা হতো। গ্রাম বাংলার কৃষকের ঘরে ঘরে শোভা পেত নানা ডিজাইনের গরুর গাড়ি।

এসব গরুর গাড়ি অন্যদের মালামাল পরিবহনের জন্য ভাড়া ও দিত। যুগের পরিবর্তনে মানুষ গরুর গাড়ির ব্যবহার বাদ দিয়ে এখন রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা, ভটভটি, নছিমন, করিমন, মাইক্রোবাস, কার ও বাস ট্রাকসহ ইঞ্জিলচালিত নানা বাহন ব্যবহার করছে। অতীত সময়ে গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে নতুন ধান কাটার নবান্নের উৎসবের সময় গরুর গাড়ির প্রতিযোগিতার মানে নির্মল আনন্দের উপকরণ। কার গাড়ি আগে যাবে এই প্রতিযোগিতা হতো খোলা মাঠে।

এই খেলাটিও হারিয়ে গেছে কালের আবর্তে। আমার ছোট বেলায় মামা, চাচা, ফুফুদের বিয়ের সময় দেখেছি বর, কনে উভয় পক্ষই গরুর গলায় ঘণ্টা লাগিয়ে টোপর উঠিয়ে নানা রঙয়ের গরু ও গাড়ি সাজিয়ে গরুর গলায় ঘুগরা ও ফুলের মালা পরিয়ে বর কনে আনা নেয়া করত।

তখন বাংলা নববর্ষ বরণ শোভা যাত্রায় গরুর গাড়ি দেখা যেত। কালের আবর্তে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি চলনবিল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আমাদের প্রবীণদের কাছে এসব শুধুই স্মৃতি। দ্রুত বয়ে চলা সময়ের সঙ্গে ঘুগরার বাজনা আর সারিবদ্ধ গরুর গাড়ি সে এক অপরূপ শোভা। তা দেখতে গ্রামের নারী-পুরুষরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসত রাস্তার ধারে।

এমন দৃশ্যের কথা এখন ভাবাই যায় না। বাংলা নববর্ষ এলেই এদেশের মানুষ নিজেদের বাঙালি প্রমাণ করার জন্য গ্রামীণ জীবনের তাল মিলাতে গিয়ে গ্রামীণ ঐতিহ্য ভুলে এখন গ্রাম্য মানুষজনও হয়ে যাচ্ছে যান্ত্রিক। এ কারণে শহরের ছেলে মেয়েরা দূরের কথা বর্তমানে গ্রামের অনেক ছেলে মেয়েরাও গরুর গাড়ি শব্দটির সঙ্গে পরিচিত নয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এসএম

জনপ্রিয়

একজন ব্যবসায়ী বান্ধব নেতা ওয়াহিদুল হাসান দিপু

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি

প্রকাশিত : ০৬:২২:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুন ২০২০

গ্রাম বাংলার পুরাতন ঐতিহ্য গরুর গাড়ি আর তেমন দেখা যায় না। ওকি গাড়ীয়াল ভাই কত রইব আমি পন্থের দিকে চাইয়ারে ” জনপ্রিয় এই গান টি এখন ও শোনা গেলে ও চলনবিলে আর তেমন গরুর গাড়ি চোখে পড়ে না।

গাড়িতে বউ সাজিয়ে নিয়ে যাওয়া তেমন দেখা যায় না। ১৮ থেকে ২০ বছর আগেও গরুর গাড়ি ছাড়া বিয়ে হতো না, গাড়িতে বর, কনে সাজিয়ে যখন রাস্তার মধ্যে রওয়ানা হতো তখন নতুন বউকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় পড়ে যেত। সে সব বর, কনে ও বরযাত্রীদের যাতায়াত কল্পনাই করা যায় না। তাড়াশ উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামে আলহাজ খোদা বক্স সরকারের গাড়ি ছিল বর, কনে বিয়ের গাড়ি সবার জন্য উন্মুক্ত।

এক এলাকা থেকে অন্য এলাকা যাতায়াত, হাট বাজারে পণ্য বহন গরুর গাড়ি ছিল এক মাত্র বাহন। ফসল ঘরে তোলা বা বাজারজাত করা জমির ধান কাটার পর সেই ধান আনা সব কাজেই গাড়ি বাবহার করা হতো। গ্রাম বাংলার কৃষকের ঘরে ঘরে শোভা পেত নানা ডিজাইনের গরুর গাড়ি।

এসব গরুর গাড়ি অন্যদের মালামাল পরিবহনের জন্য ভাড়া ও দিত। যুগের পরিবর্তনে মানুষ গরুর গাড়ির ব্যবহার বাদ দিয়ে এখন রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা, ভটভটি, নছিমন, করিমন, মাইক্রোবাস, কার ও বাস ট্রাকসহ ইঞ্জিলচালিত নানা বাহন ব্যবহার করছে। অতীত সময়ে গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে নতুন ধান কাটার নবান্নের উৎসবের সময় গরুর গাড়ির প্রতিযোগিতার মানে নির্মল আনন্দের উপকরণ। কার গাড়ি আগে যাবে এই প্রতিযোগিতা হতো খোলা মাঠে।

এই খেলাটিও হারিয়ে গেছে কালের আবর্তে। আমার ছোট বেলায় মামা, চাচা, ফুফুদের বিয়ের সময় দেখেছি বর, কনে উভয় পক্ষই গরুর গলায় ঘণ্টা লাগিয়ে টোপর উঠিয়ে নানা রঙয়ের গরু ও গাড়ি সাজিয়ে গরুর গলায় ঘুগরা ও ফুলের মালা পরিয়ে বর কনে আনা নেয়া করত।

তখন বাংলা নববর্ষ বরণ শোভা যাত্রায় গরুর গাড়ি দেখা যেত। কালের আবর্তে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি চলনবিল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আমাদের প্রবীণদের কাছে এসব শুধুই স্মৃতি। দ্রুত বয়ে চলা সময়ের সঙ্গে ঘুগরার বাজনা আর সারিবদ্ধ গরুর গাড়ি সে এক অপরূপ শোভা। তা দেখতে গ্রামের নারী-পুরুষরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসত রাস্তার ধারে।

এমন দৃশ্যের কথা এখন ভাবাই যায় না। বাংলা নববর্ষ এলেই এদেশের মানুষ নিজেদের বাঙালি প্রমাণ করার জন্য গ্রামীণ জীবনের তাল মিলাতে গিয়ে গ্রামীণ ঐতিহ্য ভুলে এখন গ্রাম্য মানুষজনও হয়ে যাচ্ছে যান্ত্রিক। এ কারণে শহরের ছেলে মেয়েরা দূরের কথা বর্তমানে গ্রামের অনেক ছেলে মেয়েরাও গরুর গাড়ি শব্দটির সঙ্গে পরিচিত নয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এসএম