ফরিদপুর জেলার ৩ টি উপজেলার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পদ্মা নদীর ফরিদপুরের গোপালপুর ও দোহারের চরমইনুট ঘাটের ফেরী চালু হওয়া। অবশেষে চালু হতে যাচ্ছে এই রুটের ফেরী। তার আগেই এই রুটে চালু হবে সী-ট্রাক।
শনিবার সকালে বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের এর নেতৃত্বে একটি টিম গোপালপুর-চরমইনুট রুট পরিদর্শন করার সময় সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। এসময় স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনসহ স্থানীয় সরকারী কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে ফরিদপুর ৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এখানে ফেরী চালুর উদ্যোগ নেন।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের ২ টি ফেরীও নিয়ে আসা হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় সেই ফেরী ২টি চালু হয়নি। পরবর্তীতে স্থানীয় সাংসদ বিআইডব্লিওটিএ’র ফেরী চালু উদ্যোগ নেন এখানে। গতমাসে আন্তঃমন্ত্রনালয়ের বৈঠকে এই রুটে ফেরী চালুর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
তারই প্রেক্ষিতে বিআইডব্লিওটিএ’র চেয়ারম্যান কমডর গোলাম সাদেক, প্রধান প্রকৌশলী মহিদুল ইসলাম, অতিঃ প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলামসহ উর্দ্ধতন নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয় ও অভ্যান্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের একটি টিম ঘাট ও নৌরুটটি পরিদর্শনে আসে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে এমপি নিক্সন চৌধুরীর নির্বাচনী ওয়াদা ছিল গোপালপুর-চরমইনুট রুটে ফেরী চালু করা। নির্বাচিত হওযার ১ বছরের মধ্যেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাধ্যমে তিনি ফেরী চালুর উদ্যোগ নেন। এমনকি ২ টি পল্টুন ও ২ টি ফেরীও নিয়ে আসা হয়।
কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক জটিলতায় ফেরী চালু করতে পারেনি সড়ক বিভাগ। স্থানীয়রা আবারো এমপি নিক্সন চৌধুরীর কাছে ফেরী চালুর ব্যাপারে আবেদন জানালে তিনি উদ্যোগ নেন নৌপরিবহন কর্তপক্ষের মাধ্যমে ফেরী চালু করার।
দ্বিতীয়বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদের মাধ্যমে এই রুটে ফেরী চালুর উদ্যোগ নেন নিক্সন চৌধুরী। নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ও জরিপ করে ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে এই রুটে ফেরী চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন।
বিআইডব্লিওটিএ’র চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক জানান, সড়ক বিভাগের মাধ্যমে এমপি নিক্সন সাহেব এখানে ফেরী চালুর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্ত যেহেতু এখানে নৌরুটের ব্যাপার, তাই বিষয়টি নৌপরিবহন কর্তপক্ষের, সেজন্যই সড়ক বিভাগের ফেরী চালু করা সম্ভব হয়নি।
অভ্যান্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ জরিপসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। খুব শীগ্রই এখানে ফেরী চালু হবে। সেজন্য ড্রেজিং করা, সংযোগ সড়কটি চওড়া ও ঘাট নির্মান করতে হবে। এই সপ্তাহ থেকেই ড্রেজিং এর কাজ শুরু হবে। সড়ক বিভাগ সংযোগ সড়কটি চওড়া করে দিলেই ফেরী চালু করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো জানান, এর আগেই সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আগামী মাসের মধ্যেই সি-ট্র্যাক চালু করা হবে। যাতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই ঢাকা যাতায়াত করতে পারেন।
এসময় স্থানীয় সংসদ সদস্য বলেন, আমার নির্বাচনী ওয়াদা ছিল এখানে ফেরী চালু করা। প্রথমবার নির্বাচিত হয়েই আমি ফেরী ও পল্টুন নিয়ে এসেছি। কিন্তু নানা জটিলতায় সেটি চালূ করা সম্ভব হয়নি। তাই নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে বিআইডব্লিওটিএ’র ফেরী চালু করার উদ্যোগ নেই। পুরো প্রক্রিয়া শেষের পথে। আগামী মাস থেকে সী-ট্র্যাক ও ৪/৫ মাসের মধ্যে ফেরী চালু হবে। এতদিন এই অঞ্চলের মানুষে যে ভোগান্তি হত তা লাঘোব হবে।
এর আগে সকালে মাওয়া ঘাট থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের নিজস্ব ২টি স্পিড বোটে পরিদর্শনকারী দল গোপালপুর ঘাটে এসে পৌছায়। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সূলতানাসহ স্থানীয় সাধারণ জনতা তাদের অভ্যার্থনা জানান।
উল্লেখ্য যে, চরভদ্রাসন, সদরপুর, নগরকান্দা ও ফরিদপুর সদরের একাংশে ৩লক্ষাধীক মানুষ ঢাকা যাওয়া আসার জন্য এই নৌরুটটি ব্যবহার করে। এতদিন তাদের বাহন ছিল, স্পিডবোট ও ট্রলার। তাও সন্ধ্যার পরে চলতো না কোন যানই। তাই ভোগান্তি আর জীবনের ঝুকি ছিল নিত্যসঙ্গী। এছাড়াও বাড়তি ভাড়াও গুনতে হত যাত্রীদের।






















