০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

করোনাকালে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে গণসংক্রমণের ঝুঁকি

  • নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত : ০৮:২৫:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০২০
  • 51

দেশে করোনাভাইরাস উপসর্গ ধরা পড়ার পরে শুধু একমাসে মাস্ক, হ্যান্ডগ্লাভসসহ সংশ্লিষ্ট প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ টন। এই বর্জ্যরে মধ্যে শুধু ঢাকায় উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার ৭৬ টন। যার বড় একটি অংশ যত্রতত্র ফেলার কারণে মাটি ও পানিতে মিশছে। এতে মাটি ও পানিতে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

যার কারণে ভয়াবহভাবে গণসংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এনভায়রমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডোর এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। করোনার সময়ের প্লাস্টিক বর্জ্য পরিস্থিতি নিয়ে রোববার সকালে অনলাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

গবেষণা থেকে সংগঠনটি জানায়, গত ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১ মাসে সারা দেশে পলিথিন ব্যাগের বর্জ্য ৫ হাজার ৭৯৬ টন, পলিথিন হ্যান্ডগ্লাভস ৩ হাজার ৩৯ টন, সার্জিক্যাল হ্যান্ডগ্লাভস ২ হাজার ৮৩৮ টন, সার্জিক্যাল মাস্ক ১ হাজার ৫৯২ টন ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতল থেকে ৯০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে। রাজধানীর পরিসংখ্যানে জানানো হয়, এ সময়ে শুধু ঢাকায়ই সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩১৪ টন সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভসের বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে। এছাড়া, পলিথিন হ্যান্ডগ্লাভস ৬০২ টন, সার্জিক্যাল মাস্ক ৪৪৭ টন, পলিথিন ব্যাগ ৪৪৩ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতল থেকে ২৭০ টন বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে।

এসব বর্জ্যরে ব্যবস্থাপনাকে গুরুত্ব না দিলে জীবাণুর ভয়াবহ বিস্তার ঘটতে পারে বলে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার রহমান বলেন, উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জ্যরে বড় একটি অংশ চলে যাচ্ছে পরিবেশে। যা মাটি ও পানিতে মিশে চলে আসতে পারে মানুষের খাদ্যচক্রে। এতে জীবাণুর ভয়াবহ বিস্তার ঘটতে পারে, যা রূপ দিতে পারে গণসংক্রমণের। তাই এসব বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় সরকারকে এখনি কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষ সাধারণ বর্জ্যরে সঙ্গে এসব ক্ষতিকর বর্জ্য ফেলছে, কখনো কখনো খোলা জায়গায়ও ফেলছে। এতে এসব বর্জ্য সংগ্রহের কাজ করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীরা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় অনেক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মী ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

আতঙ্কে অনেকে চাকরি ছেড়েছেন বলে জানিয়ে, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ক্ষতিকর এসব বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য দ্রুত একটি গাইডলাইন তৈরি এবং আক্রন্ত বাসা ও হাসপাতালের বর্জ্য আলাদাভাবে সংগ্রহ করতে নতুন পরিকল্পনা করারও পরামর্শ দেয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (বায়ুমান) জিয়াউল হক বলেন, এ মুহূর্তে কোভিড বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সরকারের সংস্থাগুলো রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। নিয়মিত আলোচনা চলছে এবং এসব বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পরিবেশ অধিদফতর। যত্রতত্র এসব আবর্জনা না ফেলে জনগণকে সহযোগিতা করতে হবে।

নয়লে এটি আরো কঠিন হবে। ত্রাণ বিতরণে ব্যবহারের কারণে পলিথিন বর্জ্য বেড়েছে বলে জানিয়ে ত্রাণ কার্যক্রমে পলিথিন ব্যবহার না করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিজনেস বাংলাদেশ/এসএম

জনপ্রিয়

বিসিবির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের বোনাস পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা

করোনাকালে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে গণসংক্রমণের ঝুঁকি

প্রকাশিত : ০৮:২৫:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০২০

দেশে করোনাভাইরাস উপসর্গ ধরা পড়ার পরে শুধু একমাসে মাস্ক, হ্যান্ডগ্লাভসসহ সংশ্লিষ্ট প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ টন। এই বর্জ্যরে মধ্যে শুধু ঢাকায় উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার ৭৬ টন। যার বড় একটি অংশ যত্রতত্র ফেলার কারণে মাটি ও পানিতে মিশছে। এতে মাটি ও পানিতে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

যার কারণে ভয়াবহভাবে গণসংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এনভায়রমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডোর এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। করোনার সময়ের প্লাস্টিক বর্জ্য পরিস্থিতি নিয়ে রোববার সকালে অনলাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

গবেষণা থেকে সংগঠনটি জানায়, গত ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১ মাসে সারা দেশে পলিথিন ব্যাগের বর্জ্য ৫ হাজার ৭৯৬ টন, পলিথিন হ্যান্ডগ্লাভস ৩ হাজার ৩৯ টন, সার্জিক্যাল হ্যান্ডগ্লাভস ২ হাজার ৮৩৮ টন, সার্জিক্যাল মাস্ক ১ হাজার ৫৯২ টন ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতল থেকে ৯০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে। রাজধানীর পরিসংখ্যানে জানানো হয়, এ সময়ে শুধু ঢাকায়ই সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩১৪ টন সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভসের বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে। এছাড়া, পলিথিন হ্যান্ডগ্লাভস ৬০২ টন, সার্জিক্যাল মাস্ক ৪৪৭ টন, পলিথিন ব্যাগ ৪৪৩ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতল থেকে ২৭০ টন বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে।

এসব বর্জ্যরে ব্যবস্থাপনাকে গুরুত্ব না দিলে জীবাণুর ভয়াবহ বিস্তার ঘটতে পারে বলে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার রহমান বলেন, উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জ্যরে বড় একটি অংশ চলে যাচ্ছে পরিবেশে। যা মাটি ও পানিতে মিশে চলে আসতে পারে মানুষের খাদ্যচক্রে। এতে জীবাণুর ভয়াবহ বিস্তার ঘটতে পারে, যা রূপ দিতে পারে গণসংক্রমণের। তাই এসব বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় সরকারকে এখনি কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষ সাধারণ বর্জ্যরে সঙ্গে এসব ক্ষতিকর বর্জ্য ফেলছে, কখনো কখনো খোলা জায়গায়ও ফেলছে। এতে এসব বর্জ্য সংগ্রহের কাজ করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীরা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় অনেক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মী ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

আতঙ্কে অনেকে চাকরি ছেড়েছেন বলে জানিয়ে, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ক্ষতিকর এসব বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য দ্রুত একটি গাইডলাইন তৈরি এবং আক্রন্ত বাসা ও হাসপাতালের বর্জ্য আলাদাভাবে সংগ্রহ করতে নতুন পরিকল্পনা করারও পরামর্শ দেয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (বায়ুমান) জিয়াউল হক বলেন, এ মুহূর্তে কোভিড বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সরকারের সংস্থাগুলো রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। নিয়মিত আলোচনা চলছে এবং এসব বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পরিবেশ অধিদফতর। যত্রতত্র এসব আবর্জনা না ফেলে জনগণকে সহযোগিতা করতে হবে।

নয়লে এটি আরো কঠিন হবে। ত্রাণ বিতরণে ব্যবহারের কারণে পলিথিন বর্জ্য বেড়েছে বলে জানিয়ে ত্রাণ কার্যক্রমে পলিথিন ব্যবহার না করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিজনেস বাংলাদেশ/এসএম