তৎকালীন আওয়ামী সরকারের আমলে ২০০১ সালে জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০১ পাসের মাধ্যমে গোপালগঞ্জে যাত্রা শুরু করে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত রয়েছে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী। কিন্তু সম্প্রতি এই একই নামে পিরোজপুরেও একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনটির খসড়ার ওপর মতামত ও চাওয়া হয়েছে যার একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আর এই ছবি দেখেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বশেমুরবিপ্রবিতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি তাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বড় আবেগের জায়গা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নামটাই আমাদের পরিচয় বহন করে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখলাম একই নামে পিরোজপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ করানোর কাজ চলছে। সত্যিই যদি এমন হয় তবে আমরা এইটার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। পৃথিবীতে একই নামে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হওয়ার নজির নেই। আমরা আশা করি দ্রুত এর সমাধান হবে।
আইন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ইজাজ রহমান বলেন, একই নামে দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় হবার কোন যৌক্তিকতা,প্রয়োজনীতা ও উদাহরণ কিছুই নেই৷ তারপর ও যখন আমার বিশ্ববিদ্যালিয়ের নামে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় হয় তখন আমি দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই ভবিষ্যতে আইডেন্টিটি ক্রাইসিসের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাই। বিশেষ করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৯ বছর পর এমন সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য অযাচিত ও আনজাস্টিফায়েড। এসময় এই শিক্ষার্থী আরো বলেন এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বশেমুরবিপ্রবি এর শিক্ষার্থীরা সোচ্চার থাকবে।
একই নামে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় হলে পরবর্তীতে জাতির পিতার নাম ই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি থেকে উহ্য হয়ে যেতে পারে আশঙ্কা করে লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের তোফায়েল আহমেদ বলেন বঙ্গবন্ধুর নাম ধারন করে তার জন্মস্থান গোপালগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত বশেমুরবিপ্রবি।
পিরোজপুরেও বশেমুরবিপ্রবি নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে চেনা বা ডাকার সুবিধার্থে কেউ বলবে গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় আর কেউ বলবে পিরোজপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এর ফলে দিনশেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নাম অনেকটাই উহ্য হয়ে যাবে। তাই আমি মনে করি, একই নামে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় কখনোই হতে পারে না।
একই নামে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় মজা করার শামিল উল্লেখ করে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের শেখ মোহাম্মদ রিফাত বলেন, একই নামে দুই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে মজা করার শামিল। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিক হওয়া উচিত। একে তো আমাদের দেশে প্রচুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষিত বেকার বাড়ছে,এখন আবার একই নামে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রমাণ করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে গুরুত্ব সহকারে নেই না।
বিজনেস বাংলাদেশ / আতিক