০৮:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মানিকছড়ি কোরবানীর পশুহাটে শেষ সময়ে প্রচুর বেচা-কেনা, স্বস্তি গো-খামারে

মানিকছড়ি কোরবানীর পশু হাটে শেষ সময়ে অপ্রত্যাশিত ভাবে বেচা-কেনা বেড়ে যাওয়ায় গো-খামারীর প্রাণে স্বস্তি এসেছে। বেশি লাভবান না হলেও কেউই লোকসানের বোঝা মাথায় নিতে হয়নি। ফলে ডেইরী শিল্প ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন জাগছে এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র,মাঝারী ও বড় গো-খামার সংশ্লিষ্ট মহলে।

প্রতি বছর ঈদুল আজহার কোরবানীকে টার্গেট পার্বত্য জনপদ খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে ঘরে ঘরে কৃষক পরিবারগুলো কম-বেশি দেশী-বিদেশী উন্নত জাতের গরু মোটাতাজা করে থাকেন। প্রাকৃতিক সবুজ ঘাস,খেড় ও খড়কুটোতে বেড়ে উঠা এসব গরুর মাংসে প্রচুর শ্বাস থাকায় এর চাহিদা সমতল ও জনপদে বেশি। ফলে কোরবানে এখানকার পশুহাটে ক্রেতা-বিক্রেতার জমজমাট আসর জমে উঠে। এখানাকার ছোট-বড় কৃষি পরিবারের পাশাপাশি উপজেলায় ইতোমধ্যে ছোট,মাঝারী ও বড় ৩৯টি গো-খামার গড়ে উঠেছে। আর এতে আপন মহিমায় লালন-পালন হয়েছে কয়েক হাজার গরু। এছাড়া প্রতিটি কৃষক পরিবারে ৮/১০টি গরু লালন-পালন স্বাভাবিক ঘটনা। এসবের পাশাপাশি এখানকার স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীরা এ খাতে লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে দূর্গম এলাকায় মানুষের নিকট গরু বর্গায় লালন-পালন করেন। কোরবান এলে এসব গরু বাজারজাত করা হয়। যার ফলে এ অঞ্চলে গো ব্যবসা দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। ফলে গড়ে উঠেছে অসংখ্য গো-খামার।

বৈশ্বিক মহামারী ও প্রাণঘাতি ‘করোনা’ ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার খামার ও বাসাবাড়িতে মোটাতাজা করা গরু বাজারজাত নিয়ে শংকিত ছিল সকলে। কোরবানের বাজার প্রথম থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত বাজারে ক্রেতা বলতেই ছিল না। ফলে গো-খামারীরা ভেঙ্গে পড়েছিল। কথায় বলে ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’ এবার তাই প্রমাণ হয়েছে। গত ২৫-৩০ জুলাই উপজেলায় একাধিক পশুহাটে প্রথমে ক্রেতারা লাভবান হলেও শেষ সময়ে এসে গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রেতারাও বেশ লাভবান হয়েছে। বাজারে সমতলের প্রচুর ক্রেতা সমাগম হওয়ায় খামারী ও গরু ব্যবসায়ীর প্রাণে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

মাঝারী খামারী শিক্ষক লুৎফর রহমান ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুল কাদের বলেন, কৃষক পরিবারের সন্তান হওয়ায় শিক্ষকতা ও জনসেবার পাশাপাশি লক্ষ লক্ষ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে খামার সাজিয়েছি। এবার কোরবানের বাজারের শুরুটা ভালো ছিল না। ফলে দারুণ দুঃশ্চিতায় ভুগছিলাম। শেষমেষ বেশি লাভবান হতে না পারলেও অন্তত পুঁজিতে হোঁচট লাগেনি। ক্রেতাবান্ধন বাজার থাকায় ‘করোনা’র দূর্যোগে সকলে(ক্রেতা-বিক্রেতা) মোটামুটি খুশি।

বিশেষ করে ‘করোনা’র প্রাদূর্ভাবে এবার উপজেলার ডেইরী খামার সংশ্লিষ্ট মালিক ও কৃষক পবিরারগুলো নিয়ে সর্বত্র মানুষজন,প্রশাসন আতংকে ছিল। এছাড়া গো-খামারীদের পাশে থেকে সর্বত্র সহযোগিতা দিয়েছে উপলো প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর ভ্যাটনারী সার্জন ও প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা। প্রতিনিয়ত খামারীদের দ্বারে দ্বারে খোঁজ-খবর রাখা, অসুস্থ গরু-ছাগলের সেবা, খামারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, উপকরণ বিতরণসহ ডেইরী ফার্ম বান্ধন সেবাদানে সকলের সহযোগিতায় সকল উৎকন্ঠা, উদ্বেগ, আতংক কাটিয়ে শেষ হতে যাচ্ছে উপজেলার কোরবানীর পশুহাটের জমজমাট আসর।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা ডেইরী ফার্ম মালিক সমিতির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডেইরী ফার্ম মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, বৈশ্বিক মহামারী‘করোনা’ ভাইসার মোকাবেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ডেইরী ফার্মে। দীর্ঘদিন দোকান-পাট,হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকায় হাজার হাজার টন দুধ অবিক্রিত থাকায় খামারীরা নিঃস্ব হয়েছে! এছাড়া কোরবান’কে ঘিরে মোটাতাজা গরু নিয়ে সকলে দুঃশ্চিতায় ছিল। অনেকে আগে-বাগে কমদামে গরু বাজারজাত করেছে। শেষ সময়ে যারা ঝুঁকি নিয়ে ধৈর্য্য ধরে গরু বিক্রি করেছে তাঁরা মোটামুটি লাভবান হয়েছে। আর বড় খামারীরা ভালো সুবিধা করতে পারেনি। কারণ বড় গরুর ক্রেতা ছিল কম। তারপরও আলহামদুলিল্লাহ সকলের দোয়ায় ডেইরী খামারীরা মরার পথ থেকে বেঁচে গেছে। এ খাতে সরকারের সহযোগিতা ফেলে পাহাড়ে ডেইরী খামার সংশ্লিষ্ঠরা দেশের অর্থনীতিতে বেশ অবদান রাখতে পারবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

জনপ্রিয়

রাষ্ট্র এবং রাজনৈতিক দলকে ,নতুন কৌশলে চালাতে হবে

মানিকছড়ি কোরবানীর পশুহাটে শেষ সময়ে প্রচুর বেচা-কেনা, স্বস্তি গো-খামারে

প্রকাশিত : ০৫:৩৭:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই ২০২০

মানিকছড়ি কোরবানীর পশু হাটে শেষ সময়ে অপ্রত্যাশিত ভাবে বেচা-কেনা বেড়ে যাওয়ায় গো-খামারীর প্রাণে স্বস্তি এসেছে। বেশি লাভবান না হলেও কেউই লোকসানের বোঝা মাথায় নিতে হয়নি। ফলে ডেইরী শিল্প ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন জাগছে এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র,মাঝারী ও বড় গো-খামার সংশ্লিষ্ট মহলে।

প্রতি বছর ঈদুল আজহার কোরবানীকে টার্গেট পার্বত্য জনপদ খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে ঘরে ঘরে কৃষক পরিবারগুলো কম-বেশি দেশী-বিদেশী উন্নত জাতের গরু মোটাতাজা করে থাকেন। প্রাকৃতিক সবুজ ঘাস,খেড় ও খড়কুটোতে বেড়ে উঠা এসব গরুর মাংসে প্রচুর শ্বাস থাকায় এর চাহিদা সমতল ও জনপদে বেশি। ফলে কোরবানে এখানকার পশুহাটে ক্রেতা-বিক্রেতার জমজমাট আসর জমে উঠে। এখানাকার ছোট-বড় কৃষি পরিবারের পাশাপাশি উপজেলায় ইতোমধ্যে ছোট,মাঝারী ও বড় ৩৯টি গো-খামার গড়ে উঠেছে। আর এতে আপন মহিমায় লালন-পালন হয়েছে কয়েক হাজার গরু। এছাড়া প্রতিটি কৃষক পরিবারে ৮/১০টি গরু লালন-পালন স্বাভাবিক ঘটনা। এসবের পাশাপাশি এখানকার স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীরা এ খাতে লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে দূর্গম এলাকায় মানুষের নিকট গরু বর্গায় লালন-পালন করেন। কোরবান এলে এসব গরু বাজারজাত করা হয়। যার ফলে এ অঞ্চলে গো ব্যবসা দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। ফলে গড়ে উঠেছে অসংখ্য গো-খামার।

বৈশ্বিক মহামারী ও প্রাণঘাতি ‘করোনা’ ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার খামার ও বাসাবাড়িতে মোটাতাজা করা গরু বাজারজাত নিয়ে শংকিত ছিল সকলে। কোরবানের বাজার প্রথম থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত বাজারে ক্রেতা বলতেই ছিল না। ফলে গো-খামারীরা ভেঙ্গে পড়েছিল। কথায় বলে ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’ এবার তাই প্রমাণ হয়েছে। গত ২৫-৩০ জুলাই উপজেলায় একাধিক পশুহাটে প্রথমে ক্রেতারা লাভবান হলেও শেষ সময়ে এসে গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রেতারাও বেশ লাভবান হয়েছে। বাজারে সমতলের প্রচুর ক্রেতা সমাগম হওয়ায় খামারী ও গরু ব্যবসায়ীর প্রাণে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

মাঝারী খামারী শিক্ষক লুৎফর রহমান ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুল কাদের বলেন, কৃষক পরিবারের সন্তান হওয়ায় শিক্ষকতা ও জনসেবার পাশাপাশি লক্ষ লক্ষ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে খামার সাজিয়েছি। এবার কোরবানের বাজারের শুরুটা ভালো ছিল না। ফলে দারুণ দুঃশ্চিতায় ভুগছিলাম। শেষমেষ বেশি লাভবান হতে না পারলেও অন্তত পুঁজিতে হোঁচট লাগেনি। ক্রেতাবান্ধন বাজার থাকায় ‘করোনা’র দূর্যোগে সকলে(ক্রেতা-বিক্রেতা) মোটামুটি খুশি।

বিশেষ করে ‘করোনা’র প্রাদূর্ভাবে এবার উপজেলার ডেইরী খামার সংশ্লিষ্ট মালিক ও কৃষক পবিরারগুলো নিয়ে সর্বত্র মানুষজন,প্রশাসন আতংকে ছিল। এছাড়া গো-খামারীদের পাশে থেকে সর্বত্র সহযোগিতা দিয়েছে উপলো প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর ভ্যাটনারী সার্জন ও প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা। প্রতিনিয়ত খামারীদের দ্বারে দ্বারে খোঁজ-খবর রাখা, অসুস্থ গরু-ছাগলের সেবা, খামারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, উপকরণ বিতরণসহ ডেইরী ফার্ম বান্ধন সেবাদানে সকলের সহযোগিতায় সকল উৎকন্ঠা, উদ্বেগ, আতংক কাটিয়ে শেষ হতে যাচ্ছে উপজেলার কোরবানীর পশুহাটের জমজমাট আসর।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা ডেইরী ফার্ম মালিক সমিতির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডেইরী ফার্ম মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, বৈশ্বিক মহামারী‘করোনা’ ভাইসার মোকাবেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ডেইরী ফার্মে। দীর্ঘদিন দোকান-পাট,হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকায় হাজার হাজার টন দুধ অবিক্রিত থাকায় খামারীরা নিঃস্ব হয়েছে! এছাড়া কোরবান’কে ঘিরে মোটাতাজা গরু নিয়ে সকলে দুঃশ্চিতায় ছিল। অনেকে আগে-বাগে কমদামে গরু বাজারজাত করেছে। শেষ সময়ে যারা ঝুঁকি নিয়ে ধৈর্য্য ধরে গরু বিক্রি করেছে তাঁরা মোটামুটি লাভবান হয়েছে। আর বড় খামারীরা ভালো সুবিধা করতে পারেনি। কারণ বড় গরুর ক্রেতা ছিল কম। তারপরও আলহামদুলিল্লাহ সকলের দোয়ায় ডেইরী খামারীরা মরার পথ থেকে বেঁচে গেছে। এ খাতে সরকারের সহযোগিতা ফেলে পাহাড়ে ডেইরী খামার সংশ্লিষ্ঠরা দেশের অর্থনীতিতে বেশ অবদান রাখতে পারবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর