দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি দেশের শেয়ারবাজার। সোমবারও শেয়ারের দরপতন ঘটেছে। এ নিয়ে টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতন হয়েছে শেয়ারবাজারে।
মূলত নানা গুঞ্জনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দেয়ায় এমন ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতি, ঋণ আমানতের অনুপাত (এডিআর) কমানো এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায় নিয়ে শেয়ারবাজারে গুঞ্জন চলছে। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে যে গুঞ্জন রয়েছে তা একটি শ্রেণি ইচ্ছাকৃতভাবেই ছড়াচ্ছে।
এর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় ধরিয়ে দিয়ে, ওই চক্র কম দামে শেয়ার কিনে নিচ্ছে। নানা গুঞ্জনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়ায় রোববার শেয়ারবাজারে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন ঘটে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক পড়ে যায় ১৩৩ পয়েন্ট। পরিস্থিতির ভয়াবহত আঁচ করতে পেরে জরুরি বৈঠকে বসে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), ডিএসই ব্রোকারর্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) এবং ডিএসই শীর্ষ ৩০ ব্রোকারের নেতারা ওই বৈঠকে অংশ নেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী আতঙ্কে শেয়ার বিক্রির চাপ না বাড়ানোর জন্য বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে যে সব মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সক্ষমতা আছে, তাদের বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের পরিবেশ রয়েছে। শেয়ারবাজারের শীর্ষ স্টেকহোল্ডারদের পক্ষ থকে এমন বার্তা দেয়া হলেও সোমবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের পতন ঠেকানো যায়নি। এদিন মূল্যসূচকের পতনের পাশাপাশি উভয় বাজারে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেরেই শেয়ারের দাম কমেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ১১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৮৬টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির দাম। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪০ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৬৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দু’টি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক অপরিবর্তিত রয়েছে। টাকার অংকে ডিএসইতে সর্বাধিক লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার। সোমবার কোম্পানিটির মোট ২১ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ১২ লাখ টাকার। আর ১৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। লেনদেনে এরপর রয়েছে- গ্রামীণ ফোন, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, মুন্নু সিরামিক, রেনেটা, আফিল ইন্ডাস্ট্রিজ এবং বিডি ফাইন্যান্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ৫৩ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৯৫২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিন বাজারটিতে ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের মোট ১৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৩৬টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির দাম।

























