ড্রাগন ফল একটি সুস্বাদু পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল। লোভনীয় এই ফলের চাহিদা শুধু বাংলাদেশে নয় বহিঃ বিশ্বে যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তাই ড্রাগন ফল চাষের কোন বিকল্প নেই। এই ড্রাগন গাছ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ এই ড্রাগন বাগান দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ সুগার মিলস্’র কান্তা খামারের পার্শ্বে ইটুয়া গ্রামে। ড্রাগন ফল একটি লাভজনক ফলজ। বেলে ও দোআঁশ মাটিতে এই ফলের চাষ করা যায়। যেসব জমিতে ফসল হয় না সেখানে অনায়াসে ড্রাগন ফলের চাষ করা যায়। এসব বিষয়ে চিন্তা করে সেতাবগঞ্জ সুগার মিলস্ তাদের কান্তা ফার্মের ইটুয়া গ্রামে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ একর পতিত জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান তৈরি করেছে। গত ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল ড্রাগন বাগান উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন এর সাবেক চেয়ারম্যান একেএম দেলোয়ার হোসেন (এফসিএমএ)। এ ব্যাপারে মোঃ আব্দুল্লাহেল কাফী (কান্তা ফার্ম প্রধান সেচিক) জানান, বাগানটি ২০১৮ সালে উদ্বোধন হওয়ার পরের বছর ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় লীজমানি পাওয়া যায়। তার পরের বছর ১৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় বছর ২০২১ সালে ২৫ লক্ষ টাকা লীজমানি পাওয়া যায়। আগামী বছর ৩৫/৪০ লক্ষ টাকা লীজমানি পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, সেতাবগঞ্জ সুগার মিল সৃষ্টির পর থেকে কান্তা খামারের ইটুয়া গ্রামের ১৬ একর জমি থেকে কিছুই পাইনি। এ কারণে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন এর সাবেক চেয়ারম্যান একেএম দেলোয়ার হোসেন (এফসিএমএ) সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে উক্ত ১৬ একর জমিতে প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ করে ড্রাগন ফল চাষাবাদ শুরু করেন। এই ড্রাগন ফল এর বাগান তৈরি করতে ৯ হাজার ১শ পিলার লেগেছে। সাদা ও লাল ২ প্রজাতির ড্রাগন ফলের গাছ প্রতি পিলারে ৪টি করে ৩৬ হাজার হওয়ার কথা কিন্তু জায়গা খালি থাকার কারণে ৩৮ হাজার গাছ রোপণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ড্রাগন ফল লাভজনক হওয়ায় ৫ বছরের মধ্যে খরচের টাকা উঠে আসবে। ইতোমধ্যে ড্রাগন গাছের চারা প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার সেনভাগ লক্ষ্মীকোল গ্রামের মোঃ আবুল হোসেন এর পুত্র মোঃ আতিকুর রহমান ২০২১ সালে ২৫ লক্ষ টাকায় ড্রাগনের বাগান লীজ নিয়ে চাষাবাদ করছেন। তার সুবিধার জন্য সিফটিং হিসেবে ২ জন কর্মচারী রেখেছেন। তিনি আরো বলেন, ড্রাগন ফলের মধ্যে সব ধরনের ভিটামিন রয়েছে। ড্রাগন ফল গাছের প্রধান খাদ্য জৈব সার। তবে সামান্য কিছু রাসায়নিক সার দিতে হয়। এটা একটি সহনশীল ফসল। অতি সহজে নষ্ট হয় না। এ বিষয়ে কৃষিবিদ মোঃ আহসান হাবিব ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সেচিক) দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, এই বাগান তৈরি করে সেতাবগঞ্জ সুগার মিলস্ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে তেমনি জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে। তাই এই বাগান সুষ্ঠুভাবে পরিচর্যার মাধ্যমে সর্বাধিক মুনাফা অর্জন করা যায়। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের সচিব চৌধুরী রুহুল আমিন কায়সার ড্রাগন বাগানটি পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন সেতাবগঞ্জ সুগার মিলস্ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আহসান হাবিব এবং ম্যানেজার ফার্ম’র আইয়ুব আলী। পরিদর্শন শেষে সচিব রুহুল আমিন কায়সার ড্রাগন বাগানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
০৩:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম :
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ বাগান এখন দিনাজপুরে
-
মোঃ ওয়াহেদুর রহমান, দিনাজপুর
- প্রকাশিত : ১২:২৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মে ২০২১
- 34
ট্যাগ :
জনপ্রিয়