ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের উত্তর কৈখালী, সেকান্দরপুর কৌশল্যা ও বান্দেরজলা অধিবাসীদের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ছোট ফেনী নদীর ওপর প্রায় ৩০০ ফুট লম্বা একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো। এর ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে জীবনজীবিকার তাগিদে যাতায়াত করছে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বান্দেরজলা গ্রামের সীমান্ত এলাকায় এই সাঁকোর অবস্থান। বিকল্প না থাকায় এলাকার ৫০ হাজার মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকো ব্যবহার করছেন।স্থানীয়রা জানান, সাঁকোর জায়গায় সেতু নির্মাণ করা হলে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের বক্সগঞ্জ এলাকার মানুষও সেতুটি ব্যবহার করে সহজে ফেনীসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতে পারবে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ভূঞা বলেন, প্রতিবছর বর্ষার সময় পাহাড়ি ঢলের তোড়ে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো ভেসে যায়। বর্ষা শেষে আবার আশপাশের গ্রামের লোকজন চাঁদা তুলে সাঁকো নির্মাণ করে। এভাবেই চলছে যুগের পর যুগ।
শিক্ষার্থী নওশাদ বলেন, অনেকে ভয়ে সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল না করে নৌকায় নদী পার হয়। নদী পারাপারে জনপ্রতি দিতে হয় পাঁচ টাকা করে। দরিদ্র লোকজন বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকোটি ব্যবহার করে।
নৌকার মাঝি রুস্তম আলী (৭০) ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘ভোটের সময় নেতারা বড় গলায় বলেন, এবার সেতু হবেই। কিন্তু ভোটের পর তাদের কোনো খবর থাকে না, তাদের খুঁজে পাওয়া যায়না।’
সিন্দুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর নবী জানান, ওই সাঁকোর জায়গাটিতে সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর অনেক বার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
তিনি আরও জানান, গত বর্ষায় সাঁকোটি থেকে পড়ে সেকান্দরপুর ও উত্তর কৈখালী গ্রামের দুটি শিশু মারা গেছে। ত্রাণ বিতরণকালে কৈখালী যাওয়ার পথে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বচক্ষে দেখেছেন, গাড়ি পার না হওয়ায় তিনি নৌকাযোগে কৈখালী গ্রামে যান।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়া জানান, বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন তিনি। তবে জেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।