০১:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

কালিয়াকৈরে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।

অনেক দিন ধরে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস এবং বহুমুখী সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ সংকটের মুখে পড়েছে এই মৃৎশিল্পটি। মেলামাইন, প্লাষ্টিক ও অ্যালুমিনিয়াম এর পণ্যের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে শত শত বছরের ঐতিহ্যের মৃৎশিল্প। তারপরও পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য এখনও ধরে রেখেছে অনেকেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বেনুপুর,কালিয়াকৈর পাল পাড়া ও বলিয়াদী এলাকায় এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত কয়েকশ মৃৎশিল্পীর পরিবার এখন হাত-পা গুটিয়ে বসে আছে। বেচাবিক্রি না থাকায় তাদের হাতে কোন কাজ নাই। এসব মাটির তৈরি খেলনা জাতীয় জিনিসগুলো বিক্রি না হওয়ায় কুমার পাড়া এখন অনেকটা নিরব। উপজেলার কয়েকশত মৃৎশিল্পীর পরিবার এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে।
আগে তেমন একটা প্লাষ্টিক এবং অ্যালুমুনিয়িাম জাতীয় পণ্য বাজারে না থাকায় মাটির তৈরি কলসি, হাঁড়ি,পাতিল, সরা, মটকা,ফুলের টপ এসব সামগ্রী বেশি বেশি বিক্রি হতো।কিন্তু এখন প্লাষ্টিক ও অ্যালুমিনিয়াম জাতীয় পণ্যে বাজারে সয়লাব এবং তার দাম কম থাকায় প্রতি ঘরে ঘরে এসব সামগ্রীর ব্যবহার বেড়ে গেছে।যার কারণে মাটির তৈরি তৈজসপত্র এখন তেমন একটা বিক্রি হয় না। ফলে মৃৎশিল্পীরা সন্তান,পরিবার নিয়ে আর্থিক সংকটে দিন কাটচ্ছেন।

চাপাইর এলাকার মৃৎশিল্পী কানাই চন্দ্র পাল বলেন, মাটির তৈরি জিনিসপত্রের বেচাবিক্রি আগের মতো নেই পরিবারের তাগিদে তাই অনেকেই এই কাজ ছেড়ে অন্য কাজে যোগদান করছে। আগের তুলনায় এখন দশ ভাগের এক ভাগ তৈজসপত্র বিক্রি হয় না। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের এলাকা থেকে মৃৎশিল্প বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

কালিয়াকৈর এলাকার একাধিক মৃৎশিল্পী বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ পেশার শিল্পীদের বাঁচিয়ে রাখতে এখনই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। দেশে বিভিন্ন স্থানে মেলার আয়োজন করে মাটির জিনিসপত্রের প্রয়োজনীয়তা জন সাধারণের কাছে তুলে ধরা দরকার। তা না হলে মৃৎশিল্পীদের স্থান হবে শুধু বইয়ের পাতায়।

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী হাফিজুল আমীন বলেন, অন্যান্য সম্প্রদায়ের পাশাপাশি অনুদানের তালিকায় ইতিমধ্যে মৃৎশিল্পের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। আমরা দুস্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে বিভিন্ন সময়ে শুকনো খাবারসহ ত্রান বিতরণ করেছি। তার পরেও যদি মৃৎশিল্পীদের মধ্যে কোন দুস্থ ও অভাবগ্রস্ত পরিবার আমাদের কাছে আসে তাহলে আমরা তাদেরকেও সহযোগিতা করবো।

ট্যাগ :

সাবেক মার্কিন বিচারক ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রিও মারা গেছেন

কালিয়াকৈরে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

প্রকাশিত : ১২:০১:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।

অনেক দিন ধরে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস এবং বহুমুখী সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ সংকটের মুখে পড়েছে এই মৃৎশিল্পটি। মেলামাইন, প্লাষ্টিক ও অ্যালুমিনিয়াম এর পণ্যের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে শত শত বছরের ঐতিহ্যের মৃৎশিল্প। তারপরও পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য এখনও ধরে রেখেছে অনেকেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বেনুপুর,কালিয়াকৈর পাল পাড়া ও বলিয়াদী এলাকায় এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত কয়েকশ মৃৎশিল্পীর পরিবার এখন হাত-পা গুটিয়ে বসে আছে। বেচাবিক্রি না থাকায় তাদের হাতে কোন কাজ নাই। এসব মাটির তৈরি খেলনা জাতীয় জিনিসগুলো বিক্রি না হওয়ায় কুমার পাড়া এখন অনেকটা নিরব। উপজেলার কয়েকশত মৃৎশিল্পীর পরিবার এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে।
আগে তেমন একটা প্লাষ্টিক এবং অ্যালুমুনিয়িাম জাতীয় পণ্য বাজারে না থাকায় মাটির তৈরি কলসি, হাঁড়ি,পাতিল, সরা, মটকা,ফুলের টপ এসব সামগ্রী বেশি বেশি বিক্রি হতো।কিন্তু এখন প্লাষ্টিক ও অ্যালুমিনিয়াম জাতীয় পণ্যে বাজারে সয়লাব এবং তার দাম কম থাকায় প্রতি ঘরে ঘরে এসব সামগ্রীর ব্যবহার বেড়ে গেছে।যার কারণে মাটির তৈরি তৈজসপত্র এখন তেমন একটা বিক্রি হয় না। ফলে মৃৎশিল্পীরা সন্তান,পরিবার নিয়ে আর্থিক সংকটে দিন কাটচ্ছেন।

চাপাইর এলাকার মৃৎশিল্পী কানাই চন্দ্র পাল বলেন, মাটির তৈরি জিনিসপত্রের বেচাবিক্রি আগের মতো নেই পরিবারের তাগিদে তাই অনেকেই এই কাজ ছেড়ে অন্য কাজে যোগদান করছে। আগের তুলনায় এখন দশ ভাগের এক ভাগ তৈজসপত্র বিক্রি হয় না। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের এলাকা থেকে মৃৎশিল্প বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

কালিয়াকৈর এলাকার একাধিক মৃৎশিল্পী বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ পেশার শিল্পীদের বাঁচিয়ে রাখতে এখনই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। দেশে বিভিন্ন স্থানে মেলার আয়োজন করে মাটির জিনিসপত্রের প্রয়োজনীয়তা জন সাধারণের কাছে তুলে ধরা দরকার। তা না হলে মৃৎশিল্পীদের স্থান হবে শুধু বইয়ের পাতায়।

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী হাফিজুল আমীন বলেন, অন্যান্য সম্প্রদায়ের পাশাপাশি অনুদানের তালিকায় ইতিমধ্যে মৃৎশিল্পের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। আমরা দুস্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে বিভিন্ন সময়ে শুকনো খাবারসহ ত্রান বিতরণ করেছি। তার পরেও যদি মৃৎশিল্পীদের মধ্যে কোন দুস্থ ও অভাবগ্রস্ত পরিবার আমাদের কাছে আসে তাহলে আমরা তাদেরকেও সহযোগিতা করবো।