সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দেড় সপ্তাহে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমচরের বেশ কয়েকটি বসতভিটা ও ফসলি জমি এবং দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।এ ছাড়া উপজেলার প্রায় ১৪ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে।
জানা যায়, জোষ্ঠ্যের জোয়ারে যমুনায় প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে পানিবৃদ্ধি পেয়েছে। এতে প্রচ- স্রোতের কারণে চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের হাটাইল, ঘুশুরিয়া, হিজুলিয়া, কাঁঠালিয়া ও উমারপুরের পয়লা এলাকার প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন চলছে।
বিলীন হচ্ছে বহু ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। এ ছাড়া গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পশ্চিম হাটাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাটাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিলীন হয়েছে।
ঘুশুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, নদীভাঙনের কারণে বুধবার সকালে স্কুলঘর ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। করোনা সংকট শেষ হলে চরাঞ্চলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তাদের পুরনো ঠিকানা ভুলে যাবে। তীর সংরক্ষণে নদীর পেটে বালির বস্তা ডাম্পিংয়ের দাবি জানাই।
চৌহালী উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, নদীভাঙনে বসতভিটা ও ফসলি জমির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভেঙে যাচ্ছে। অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে হিজুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম সম্ভুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম হাটাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাষ মধ্য শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, থাক মধ্য শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিশ্রিগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বারবয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউসুফ শাহী সলঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিলজলহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাউশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শৈলজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাটাইল নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়।
এ ছাড়া গত আট বছরে শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কয়েক হাজার বসতিসহ প্রায় ৫২ হাজার একর আবাদি জমি যমুনা নদী গ্রাস করেছে। তবে নদী ভেঙে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় নিরাপদ স্থানে নতুন ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু চরের ভাঙন রোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পাউবো এমন অভিযোগ স্থানীয় শিক্ষক ও এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ফিরোজ যুগান্তরকে জানান, যমুনার ভাঙনে হুমকির মুখে পড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া বিলীন হয়ে যাওয়া বিদ্যালয়গুলোর নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। নতুন ভবন নির্মাণ হলে দুর্ভোগ অনেকটাই লাঘব হবে। সেই সঙ্গে ভাঙন রোধে তীর সংরক্ষণের দাবি জানাই।