১১:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ধীরে ধীরে সোনালী হচ্ছে ধানের শীষ ও কৃষকের স্বপ্ন

দক্ষিন উপকূলে মাঠের পর মাঠ জুড়ে সোনালী ধানের শীষে কাঁচা-পাকা ধানের ফসলি ক্ষেত যেন দিগন্ত ছুঁয়েছে। কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হচ্ছে ধান তোলার পর্ব। হালকা বাতাসে বিস্তির্ন মাঠ জুড়ে কৃষকের স্বপ্নের সোনালী ধানের শীষ দোলা খাচ্ছে। অনেক ক্ষেতের ধানের শীষ ইতিমধ্যে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। বাকিগুলো ধীরে ধীরে সোনালী হয়ে উঠছে। গন্ধে ভরে উঠেছে সমুদ্র উপক‚লীয় কলাপাড়ার গ্রামীণ জনপদ। এজনপদের কৃষকদের যেনো দম ফেলার ফুরসত নেই। কদিন পরই শুরু হবে ধান কাটা, মাড়াই নতুন ধান ঘরে তোলার মহোৎসব। তাই প্রতিটি কৃষক পরিবারের কৃষকদের চোখে মুখে লেগে আছে সোনালী স্বপ্ন পূরনের ছাপ।

স্থানীয় কৃষকদের সূত্র ও বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু করেছে। করোনার কারণে ধান কাটার জন্য দৈনিক ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এখন আবহাওয়া ও বাজারে ধানের দাম ভালো থাকেলেই পুষিয়ে যাবে এমনটাই বলেছেন কৃষককুল।নতুন কাস্তে তৈরী করতে দিয়েছে অনেকেই। কেউ আবার পুরাতন কাস্তে মেরামত করাচ্ছে কামারের দোকানে। কেউ কেউ নতুন ধান উঠানে রাখার জন্য বাড়ির আঙ্গিনা সুন্দর ভাবে পারিস্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। তবে ফরিয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীদের আনাগোনা আর তৎপরতায় ফসলের কাঙ্খিত মূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা।

কৃষি অফিস সূত্র জানায়, কলাপাড়ায় দুটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এর আয়তন ৪৯২.১২২ বর্গ কিলোমিটার। ৩৫৫০০ জন কৃষক পরিবার রয়েছে। এবছর ৩৩৭২৮ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে কৃষকরা। এর মধ্যে ২৫০১০ হেক্টর জমিতে উফশি ও ৮৭১৮ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আমন ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা।

চাকামাইয়া ইউনিয়নের কৃষক মো: মতিউর রহমান এ প্রতিনিধিকে বলেন, অতি বৃষ্টির কারনে এবছর চাষাবাদে কিছুটা বিঘœ ঘটেছে। তিনি প্রায় তিন হেক্টর জমি জমিতে আমন ধান চাষ করেছে, তিনশ মন ধান পাবে বলে তিনি আশা করছে। লতাচাপলী ইউনিয়নের কৃষক মো: সফেজ হাওলাদার জানান, দুইশ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে, ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু করেছে। ক্ষেতে খুব একট ভালো ফসল হয়নি, তবুও দুইশ মন ধান পাবেন। তবে ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় দু:চিন্তায় আছে এ কৃষক। আরেক কৃষক লাল মিয়া বলেন, সার-ঔষধ প্রয়োগ ও ক্ষেতের নিয়মিত পরিচর্যা করে এ পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে। শ্রমিক পাওয়া গেলে এ সপ্তাহের মধ্যেই ধান কাটবেন বলে তিনি জানান।

কলাপাড়ার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমআরএম সাইফুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কলাপাড়ায় কৃষকদের মাঝে নভেম্বর মাসের শুরুতে ১০টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। যা দিয়ে ক্ষেতের ধান খুব অল্প সময়ে এবং একই সাথে ধান কাটতে ও মাড়াই করা করতে পারবে কৃষকরা। এছাড়াও উচ্চফলনশীন জাতের ধানের বীজ দেয়া হয়েছে কৃষকদের। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নিবিড় তত্বাবধানে রেখেছে উপ-সহকারী কর্মকর্তারা। ফলে আমন ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। আবহাওয়া অনুকলে থাকলে কৃষকরা কাঙ্খিত ফসল বেশ ভালোভাবেই কাটতে পারবে বলে তিনি জানান।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

ট্যাগ :

ধীরে ধীরে সোনালী হচ্ছে ধানের শীষ ও কৃষকের স্বপ্ন

প্রকাশিত : ০৬:৫৪:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ নভেম্বর ২০২১

দক্ষিন উপকূলে মাঠের পর মাঠ জুড়ে সোনালী ধানের শীষে কাঁচা-পাকা ধানের ফসলি ক্ষেত যেন দিগন্ত ছুঁয়েছে। কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হচ্ছে ধান তোলার পর্ব। হালকা বাতাসে বিস্তির্ন মাঠ জুড়ে কৃষকের স্বপ্নের সোনালী ধানের শীষ দোলা খাচ্ছে। অনেক ক্ষেতের ধানের শীষ ইতিমধ্যে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। বাকিগুলো ধীরে ধীরে সোনালী হয়ে উঠছে। গন্ধে ভরে উঠেছে সমুদ্র উপক‚লীয় কলাপাড়ার গ্রামীণ জনপদ। এজনপদের কৃষকদের যেনো দম ফেলার ফুরসত নেই। কদিন পরই শুরু হবে ধান কাটা, মাড়াই নতুন ধান ঘরে তোলার মহোৎসব। তাই প্রতিটি কৃষক পরিবারের কৃষকদের চোখে মুখে লেগে আছে সোনালী স্বপ্ন পূরনের ছাপ।

স্থানীয় কৃষকদের সূত্র ও বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু করেছে। করোনার কারণে ধান কাটার জন্য দৈনিক ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এখন আবহাওয়া ও বাজারে ধানের দাম ভালো থাকেলেই পুষিয়ে যাবে এমনটাই বলেছেন কৃষককুল।নতুন কাস্তে তৈরী করতে দিয়েছে অনেকেই। কেউ আবার পুরাতন কাস্তে মেরামত করাচ্ছে কামারের দোকানে। কেউ কেউ নতুন ধান উঠানে রাখার জন্য বাড়ির আঙ্গিনা সুন্দর ভাবে পারিস্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। তবে ফরিয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীদের আনাগোনা আর তৎপরতায় ফসলের কাঙ্খিত মূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা।

কৃষি অফিস সূত্র জানায়, কলাপাড়ায় দুটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এর আয়তন ৪৯২.১২২ বর্গ কিলোমিটার। ৩৫৫০০ জন কৃষক পরিবার রয়েছে। এবছর ৩৩৭২৮ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে কৃষকরা। এর মধ্যে ২৫০১০ হেক্টর জমিতে উফশি ও ৮৭১৮ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আমন ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা।

চাকামাইয়া ইউনিয়নের কৃষক মো: মতিউর রহমান এ প্রতিনিধিকে বলেন, অতি বৃষ্টির কারনে এবছর চাষাবাদে কিছুটা বিঘœ ঘটেছে। তিনি প্রায় তিন হেক্টর জমি জমিতে আমন ধান চাষ করেছে, তিনশ মন ধান পাবে বলে তিনি আশা করছে। লতাচাপলী ইউনিয়নের কৃষক মো: সফেজ হাওলাদার জানান, দুইশ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে, ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু করেছে। ক্ষেতে খুব একট ভালো ফসল হয়নি, তবুও দুইশ মন ধান পাবেন। তবে ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় দু:চিন্তায় আছে এ কৃষক। আরেক কৃষক লাল মিয়া বলেন, সার-ঔষধ প্রয়োগ ও ক্ষেতের নিয়মিত পরিচর্যা করে এ পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে। শ্রমিক পাওয়া গেলে এ সপ্তাহের মধ্যেই ধান কাটবেন বলে তিনি জানান।

কলাপাড়ার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমআরএম সাইফুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কলাপাড়ায় কৃষকদের মাঝে নভেম্বর মাসের শুরুতে ১০টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। যা দিয়ে ক্ষেতের ধান খুব অল্প সময়ে এবং একই সাথে ধান কাটতে ও মাড়াই করা করতে পারবে কৃষকরা। এছাড়াও উচ্চফলনশীন জাতের ধানের বীজ দেয়া হয়েছে কৃষকদের। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নিবিড় তত্বাবধানে রেখেছে উপ-সহকারী কর্মকর্তারা। ফলে আমন ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। আবহাওয়া অনুকলে থাকলে কৃষকরা কাঙ্খিত ফসল বেশ ভালোভাবেই কাটতে পারবে বলে তিনি জানান।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর