০৭:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

শেয়ারবাজারে প্রথম কার্যদিবসে দরপতন

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে রোববার সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়, শেয়ারবাজারের চলমান সঙ্কট উত্তরণে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা যে প্রস্তাব দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয় তা বিশেষ বিবেচনায় মেনে নিয়েছে। সেই সঙ্গে তা বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে। ওই সংবাদ প্রচার হওয়ার পরই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরে আসে উভয় বাজারের মূল্যসূচক।

ফলে টানা চার কার্যদিবস দরপতনের পর শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। তবে এক কার্যদিবসের ব্যবধানে রোববার আবার দরপতন ঘটলো। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএমবিএ এবং ডিবিএ অর্থমন্ত্রী তাদের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে এমন ঘোষণা দিলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তা বিশ্বাস করতে পারছেন না। যতক্ষণ এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা না আসছে, ততক্ষণ এক ধরণের আতঙ্ক থেকেই যাচ্ছে। তবে বর্তমানে যে দরপতন দেখা দিয়েছে এর কোনো যুক্তি সংগত কারণ নেই। যারা এখন শেয়ার বিক্রি করছেন তারা ভুল করছেন।

share-bazar

ডিএসইর পরিচালক শরীফ আতাউর রহমান বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, ব্যাংকের ঋণ আমানত অনুপাত এবং এক্সপোজার নিয়ে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের যে দাবি ছিল অর্থ মন্ত্রণালয় তা মেনে নিয়েছে এবং সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অর্থমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। এটি খুবই ইতিবাচক সংবাদ। এমন সংবাদের পর দরপতনের কোনো কারণ নেই। যারা এখন শেয়ার বিক্রি করছেন, তারা ভুল করছেন। এখন শেয়ার ধরে রাখলে সামনে ভালো মুনাফা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীদের উচিত সব সময় ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করা।

ডিএসইর সাবেক পরিচালক শাকিল রিজভী বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, ব্যাংকের এক্সপোজার গণনা এবং ঋণ আমানত অনুপাত বিষয়ে আমরা যে দাবি জানিয়ে আসছিলাম অর্থমন্ত্রী তা মেনে নিয়েছেন। তবে এটি বাস্তবায়নের নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরণের সংশয় রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখন বিনিয়োগকারীরা অনেক সঠিক সংবাদও বিশ্বাস করতে চায় না। কারণ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে বিভিন্ন তথ্য ছড়ানো হয়। ফলে তাদের মধ্যে এক ধরণের আতঙ্ক দেখা দিচ্ছে, যে কারণে দরপতন ঘটছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ডিএসইতে মূল্যসূচকের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।

রোববার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ১১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৬৩টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৩টির দাম। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫৭০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দু’টি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩১৯ পয়েন্টে।

বাজারটিতে রোববার মোট ২২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৮৮ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার। সে হিসাবে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৬৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। টাকার অংকে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির মোট ১০ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেলভো কেমিক্যালের ৮ শেয়ার লেনদেন হয়েছে কোটি ৩ লাখ টাকার। আর ৭ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আমরা নেটওয়ার্কস।

লেনদেনে এরপর রয়েছে- কুইন সাউথ টেক্সটাইল, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনিক হোটেল, গ্রামীণ ফোন, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, ফরচুন সুজ এবং মুন্নু সিরামিক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ৩৮ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

রোববার বাজারটিতে মোট ২২৭টি প্রতিষ্ঠানের ১৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে ৬৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১২৭টির; আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির দাম।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার মনোনয়নপত্র জমা

শেয়ারবাজারে প্রথম কার্যদিবসে দরপতন

প্রকাশিত : ১০:২০:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মার্চ ২০১৮

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে রোববার সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়, শেয়ারবাজারের চলমান সঙ্কট উত্তরণে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা যে প্রস্তাব দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয় তা বিশেষ বিবেচনায় মেনে নিয়েছে। সেই সঙ্গে তা বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে। ওই সংবাদ প্রচার হওয়ার পরই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরে আসে উভয় বাজারের মূল্যসূচক।

ফলে টানা চার কার্যদিবস দরপতনের পর শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। তবে এক কার্যদিবসের ব্যবধানে রোববার আবার দরপতন ঘটলো। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএমবিএ এবং ডিবিএ অর্থমন্ত্রী তাদের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে এমন ঘোষণা দিলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তা বিশ্বাস করতে পারছেন না। যতক্ষণ এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা না আসছে, ততক্ষণ এক ধরণের আতঙ্ক থেকেই যাচ্ছে। তবে বর্তমানে যে দরপতন দেখা দিয়েছে এর কোনো যুক্তি সংগত কারণ নেই। যারা এখন শেয়ার বিক্রি করছেন তারা ভুল করছেন।

share-bazar

ডিএসইর পরিচালক শরীফ আতাউর রহমান বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, ব্যাংকের ঋণ আমানত অনুপাত এবং এক্সপোজার নিয়ে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের যে দাবি ছিল অর্থ মন্ত্রণালয় তা মেনে নিয়েছে এবং সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অর্থমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। এটি খুবই ইতিবাচক সংবাদ। এমন সংবাদের পর দরপতনের কোনো কারণ নেই। যারা এখন শেয়ার বিক্রি করছেন, তারা ভুল করছেন। এখন শেয়ার ধরে রাখলে সামনে ভালো মুনাফা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীদের উচিত সব সময় ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করা।

ডিএসইর সাবেক পরিচালক শাকিল রিজভী বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, ব্যাংকের এক্সপোজার গণনা এবং ঋণ আমানত অনুপাত বিষয়ে আমরা যে দাবি জানিয়ে আসছিলাম অর্থমন্ত্রী তা মেনে নিয়েছেন। তবে এটি বাস্তবায়নের নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরণের সংশয় রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখন বিনিয়োগকারীরা অনেক সঠিক সংবাদও বিশ্বাস করতে চায় না। কারণ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে বিভিন্ন তথ্য ছড়ানো হয়। ফলে তাদের মধ্যে এক ধরণের আতঙ্ক দেখা দিচ্ছে, যে কারণে দরপতন ঘটছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ডিএসইতে মূল্যসূচকের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।

রোববার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ১১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৬৩টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৩টির দাম। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫৭০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দু’টি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩১৯ পয়েন্টে।

বাজারটিতে রোববার মোট ২২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৮৮ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার। সে হিসাবে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৬৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। টাকার অংকে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির মোট ১০ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেলভো কেমিক্যালের ৮ শেয়ার লেনদেন হয়েছে কোটি ৩ লাখ টাকার। আর ৭ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আমরা নেটওয়ার্কস।

লেনদেনে এরপর রয়েছে- কুইন সাউথ টেক্সটাইল, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনিক হোটেল, গ্রামীণ ফোন, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, ফরচুন সুজ এবং মুন্নু সিরামিক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ৩৮ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

রোববার বাজারটিতে মোট ২২৭টি প্রতিষ্ঠানের ১৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে ৬৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১২৭টির; আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির দাম।