০১:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

রাজৈরে ঐতিহ্য হারাচ্ছে খেজুরের গুড়

মাদারীপুরে রাজৈরসহ সীমান্তবর্তী শিবচর , ফরিদপুরের ভাংগা উপজেলা ও গোপালগঞ্জের সদর, মুকসুদপুর উপজেলা ও কোটালীপাড়া উপজেলার আংশিক এলাকায় এক সময় খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত থাকলেও কালের বিবর্তনে তা বিলুপ্তির পথে। প্রচার-প্রচারণা না থাকলেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরের খেজুরের গুড়ের কদর রয়েছে বেশ। পাটালি গুড় ভাঙলে কাচা রসের মদিরা গন্ধ এবং লাল-খয়েরী স্ফটিকের মতো রং আর অতুলনীয় স্বাদ, এই ছিল মাদারীপুর ,গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরের পাটালি গুড়ের আদি আকর্ষণ। অথচ কালের পরিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম থেকে খেজুর গাছ। লোভনীয় খেজুরের রস ও গুড় এক কথায় খেজুর গাছের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে সরকারের উদ্যোগের বিকল্প নেই বলে মনে করেন সচেতন মানুষ।
খেজুর গাছ একদিকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। অন্যদিকে শীতের মৌসুমে মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও লোভনীয় খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে হরেক রকমের পিঠা খাওয়ার চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়। গ্রাম বাংলার মেঠো পথে এক সময়ে সারিবাঁধা খেজুর গাছ দেশের প্রতিটি অঞ্চলেই অসংখ্য হারে দেখা যেত। খেজুর গাছের গ্রাম বাংলার নয়ানোভিরাম সেই পরিবেশ ও ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারীভাবে খেজুর গাছরে চারা রোপনের উদ্যোগ গ্রহণ করলে নতুন করে ফিরে পেতে পারে বিলুপ্তি হওয়া ঐতিহ্য ও নয়ানোভিরাম সেই পরিবেশ। আর নতুন প্রজন্ম খুজে পাবে খেজুরে রস ও গুড়ের আসল গন্ধ।
বর্তমান বাজারে যে সমস্ত খেজুরের গুড় পাওয়া যায় তার অধিকাংশই চিনি, ক্যামিক্যাল ও রং দিয়ে তৈরী।
গ্রামের বয়জষ্ঠ্য কর্মজীবী মো: রতন বলেন, গ্রাম্য মেঠো পথে রাস্তার দুই পাশে আগে হাজার হাজার খেজুর গাছ ছিলো, সকাল হলে তাপাল ভরে সেই রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরী করা হতো এখন আর তা দেখা যায় না। শীত আসলেই খেজুর গাছের রস বের করার জন্য যে প্রস্তুতি চলত তা আগের মতন দেখা যায় না।
তিনি আরো বলেন, সরকারী উদ্যোগে খেজুরের চারা রোপন ও পরিচর্যার কর্মসূচি গ্রহণ করলে নতুন প্রজন্মের কাছে খেজুরের রসের পরিচিত থাকবে ।
এ বিষয়ে ১০ নভেম্বর মঙ্গলবার রাজৈর উপজেলা কৃষি অফিসার জনাব মোঃ ফরহাদুল মিরাজ বলেন, খেঁজুর গাছ প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যে এলাকায় খেজুর ও তাল গাছ যত বেশি সেই এলাকায় বজ্রপাতের সংখ্যা অনেক কম হয়। কারণ খেজুর ও তাল গাছ অনেক লম্বা হয়। ফলে বজ্রপাত মাটিতে আছড়ে পড়ার আগে গাছের মাথার সাথে আঘাত হানে এতে অনেকাংশে বজ্রপাত ধংস হয়ে যায় ফলে মানুষের তেমন কোন ক্ষয়-ক্ষতি হয় না। আমরা উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রামের-গ্রামবাসীকে খেজুর গাছের চারা রোপন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে থাকি।কৃষকরা হাইব্রিড ফলনের দিকে বেশি ঝুকেছে।গাছ কাটা শিল্প শ্রমিকরা বিভিন্ন কাজে দিকে ঝুঁকে পরেছে। তাই এই পেশার লোকজন এখন দেখা যায় না বলেই চলে।
বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি নাগরিকের উপর ছিনতাইকারীর বর্বর হামলা ,দুই ছিনতাইকারী আটক

রাজৈরে ঐতিহ্য হারাচ্ছে খেজুরের গুড়

প্রকাশিত : ০৮:০৫:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১

মাদারীপুরে রাজৈরসহ সীমান্তবর্তী শিবচর , ফরিদপুরের ভাংগা উপজেলা ও গোপালগঞ্জের সদর, মুকসুদপুর উপজেলা ও কোটালীপাড়া উপজেলার আংশিক এলাকায় এক সময় খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত থাকলেও কালের বিবর্তনে তা বিলুপ্তির পথে। প্রচার-প্রচারণা না থাকলেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরের খেজুরের গুড়ের কদর রয়েছে বেশ। পাটালি গুড় ভাঙলে কাচা রসের মদিরা গন্ধ এবং লাল-খয়েরী স্ফটিকের মতো রং আর অতুলনীয় স্বাদ, এই ছিল মাদারীপুর ,গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরের পাটালি গুড়ের আদি আকর্ষণ। অথচ কালের পরিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম থেকে খেজুর গাছ। লোভনীয় খেজুরের রস ও গুড় এক কথায় খেজুর গাছের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে সরকারের উদ্যোগের বিকল্প নেই বলে মনে করেন সচেতন মানুষ।
খেজুর গাছ একদিকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। অন্যদিকে শীতের মৌসুমে মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও লোভনীয় খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে হরেক রকমের পিঠা খাওয়ার চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়। গ্রাম বাংলার মেঠো পথে এক সময়ে সারিবাঁধা খেজুর গাছ দেশের প্রতিটি অঞ্চলেই অসংখ্য হারে দেখা যেত। খেজুর গাছের গ্রাম বাংলার নয়ানোভিরাম সেই পরিবেশ ও ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারীভাবে খেজুর গাছরে চারা রোপনের উদ্যোগ গ্রহণ করলে নতুন করে ফিরে পেতে পারে বিলুপ্তি হওয়া ঐতিহ্য ও নয়ানোভিরাম সেই পরিবেশ। আর নতুন প্রজন্ম খুজে পাবে খেজুরে রস ও গুড়ের আসল গন্ধ।
বর্তমান বাজারে যে সমস্ত খেজুরের গুড় পাওয়া যায় তার অধিকাংশই চিনি, ক্যামিক্যাল ও রং দিয়ে তৈরী।
গ্রামের বয়জষ্ঠ্য কর্মজীবী মো: রতন বলেন, গ্রাম্য মেঠো পথে রাস্তার দুই পাশে আগে হাজার হাজার খেজুর গাছ ছিলো, সকাল হলে তাপাল ভরে সেই রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরী করা হতো এখন আর তা দেখা যায় না। শীত আসলেই খেজুর গাছের রস বের করার জন্য যে প্রস্তুতি চলত তা আগের মতন দেখা যায় না।
তিনি আরো বলেন, সরকারী উদ্যোগে খেজুরের চারা রোপন ও পরিচর্যার কর্মসূচি গ্রহণ করলে নতুন প্রজন্মের কাছে খেজুরের রসের পরিচিত থাকবে ।
এ বিষয়ে ১০ নভেম্বর মঙ্গলবার রাজৈর উপজেলা কৃষি অফিসার জনাব মোঃ ফরহাদুল মিরাজ বলেন, খেঁজুর গাছ প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যে এলাকায় খেজুর ও তাল গাছ যত বেশি সেই এলাকায় বজ্রপাতের সংখ্যা অনেক কম হয়। কারণ খেজুর ও তাল গাছ অনেক লম্বা হয়। ফলে বজ্রপাত মাটিতে আছড়ে পড়ার আগে গাছের মাথার সাথে আঘাত হানে এতে অনেকাংশে বজ্রপাত ধংস হয়ে যায় ফলে মানুষের তেমন কোন ক্ষয়-ক্ষতি হয় না। আমরা উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রামের-গ্রামবাসীকে খেজুর গাছের চারা রোপন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে থাকি।কৃষকরা হাইব্রিড ফলনের দিকে বেশি ঝুকেছে।গাছ কাটা শিল্প শ্রমিকরা বিভিন্ন কাজে দিকে ঝুঁকে পরেছে। তাই এই পেশার লোকজন এখন দেখা যায় না বলেই চলে।
বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ