০৮:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

বইমেলায় নিষ্প্রভ ‘লিটল ম্যাগ চত্বর’

লিটল ম্যাগাজিন! আদুরে নামটা ‘লিটল ম্যাগ’ বা ‘লিট ম্যাগস’ নামে। যাকে বাংলায় বলে ‘ছোট কাগজ’ বা ‘ক্ষুদ্র সাহিত্যকোষ। এই লিটল ম্যাগাজিন কবে প্রথম প্রকাশিত হয়েছে তার সঠিক ইতিহাস জানা নেই। তবে অনেকের মতে আঠারো শতকের মাঝামাঝিতে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন শহর থেকে প্রকাশিত ‘ডায়াল’ (১৮৪০-৪৪) কাগজটিই প্রথম লিটল ম্যাগ। বাংলায় ‘লিটল ম্যাগাজিন’ শব্দটি প্রথম ব্যাবহার করেন কবি বুদ্ধদেব বসু ১৯৫৩ সালের সাপ্তাহিক ‘দেশ’ কাগজের মে সংখ্যায় প্রকাশিত তার ‘সাহিত্যপত্র’ নামক প্রবন্ধে। অপর এক তথ্যমতে বর্তমান বাংলাদেশ অঞ্চলে মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী ও সুচরিত চৌধুরী প্রথম লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেন। সেটি ছিল ‘সীমান্ত’ (১৯৪৭-৫২)।

এটি কোন অর্থে ছোট তা বলা মুশকিল। সেই তো ঢাউস-ঢাউস সাহিত্য ম্যাগাজিনও বের হয়েছে এবং হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, কোন মানদণ্ডে ছোট কাগজ তা নিয়ে বিতর্ক বিদ্যমান। মূলত প্রথাবিরুদ্ধ একটি আন্দোলন ছিল এই লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ। যাতে নতুন বা অখ্যাত কবিরাই কবিতা লিখবেন এবং সেটি হবে অবাণিজ্যিক ভিত্তিতে। লক্ষ্য হলো কবিতাকে পণ্য করা যাবে না। পরবর্তীকালে এই গণ্ডি ভেঙ্গে গেছে। সংযুক্ত হয়েছে প্রবন্ধ, গল্প, নাটক, চলচ্চিত্র, সাক্ষাৎকার, গ্রন্থালোচনা, শিল্পকলা বিভিন্ন ধরনের সাহিত্য উপাদান। বইমেলা শুরু হওয়ার কয়েক বছর পর ২০০১ সালের দিকে কবি ও লিটল ম্যাগ আন্দোলনকারী ওবায়েদ আকাশ তার ‘শালুক’ ও অন্য দুই একজন বাংলা একাডেমির বহেড়া তলায় লিটল ম্যাগ নিয়ে নিজ উদ্যোগে বসতে শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে মেলায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

লম্বা ও কঠোর আন্দোলনের পর ২০০৬ সাল থেকে বইমেলায় বাংলা একাডেমির সংশ্লিষ্টতায় সংযোজিত হয় লিটল ম্যাগ কর্নার। মেলা বাংলা একাডেমি থেকে বেরিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসলে দাবি ওঠে লিটল ম্যাগ চত্বরের পরিসর বাড়ানোর। সেই দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে লিটল ম্যাগও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে আসা হয়। এক সময় লিটল ম্যাগ চত্বরে দিনভর আড্ডা চলতো তরুণ লেখক ও প্রকাশকদের। তরুণ পাঠকরাও ভীড় করতেন এখানে। সচেতন পাঠক ও লেখকদের মাঝে চলত সমসাময়িক বিষয়ে তর্ক বিতর্ক। প্রথাবিরোধী প্রকাশনার কারণে সাহসী ও সংস্কারপন্থী লেখক ও পাঠকদের মূল আবেগের জায়গা ছিল লিটল ম্যগাজিন। কিন্তু ক্রমেই যেন জৌলুশ হারাচ্ছে বইমেলার ‘লিটল ম্যাগাজিন চত্বর’। গত বছরের খরা কাটিয়ে এবারের বইমেলা জমে উঠলেও নিষ্প্রভ এই চত্বর।

বৃহস্পতিবার ১২৭টি লিটল ম্যাগ স্টলের মধ্যে মাত্র ১৫ থেকে ২০টি তাদের স্টল খুলেছে। যারা খুলেছে তাদের অনেকেই স্টল খোলা রেখে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যারা বসে আছেন তারা কাটাচ্ছেন অবসর সময়। নিজেদের মধ্যে গল্প করছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। ক্রেতা নেই বললেই চলে। লিটল ম্যাগাজিন লাল সবুজের সম্পাদক অ্যাডভোকেট শিমূল পারভীন। তিনি বলেন, ‘মেলা ভালোই হচ্ছে, তবে ম্যাগাজিন আর কত জনই কিনে। এটা লেখকদের প্ল্যাটফর্ম, যারা নিজের খরচে লেখা চাপাতে পারে না, এটা তাদের জন্য প্রথম প্ল্যাটফর্ম। বাংলাদেশ, কলকাতাসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই তরুণ লেখকদের প্রথম লেখার কাগজ হলো এই লিটল ম্যাগাজিন। তাই এটিকে অবহেলা করা যাবে না।

এটি তরুণ লেখকদের প্রথম ভালোবাসা হওয়া উচিত। সেভাবে হয়তো আমাদের এখানে প্রচার হয়নি। সবাই সক্রিয় থাকলে এটি অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’লিটল ম্যাগাজিন লিরিক ১৯৮২ সালে যাত্রা শুরু করে। নিয়মিত প্রকাশ হতো এ পত্রিকা। এক সময় এতে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মাহমুদুল হকরা। কালের পরিক্রমায় এখন তা অনিয়মিত। লিটল ম্যাগ চত্বরে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা হয় এর সম্পাদক এজাজ ইউসুফীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা লিটল ম্যাগাজিন যারা করি, তারা সাহিত্যের প্রচলিত যে ধারা আছে তার বাইরে গিয়ে বিশেষ করে তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে এগুলো প্রকাশ করি। লিটল ম্যাগাজিন মানে ছোট না, এটা অনেক বড় চিন্তাকে ধারণ করতে পারে।

যারা আজকে বড় বড় লেখক তাদের অনেকেই এই লিটল ম্যাগাজিনের হাত ধরে বড় লেখক হয়ে উঠেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মাহমুদুল হক। ছোট কাগজ মানে হলো প্রতিষ্ঠান বিরোধীতা। অনেকে বাণিজ্যিকভাবে চাকচিক্য নিয়ে বই বের করে, আসলে ভেতরে কিছুই নেই। আমাদের প্রকাশনায় হয়তো চাকচিক্য নেই, তবে ঐতিহ্যগতভাবে বাংলা সাহিত্যের সার রয়েছে। লিটল ম্যাগাজিনের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো গোষ্ঠীবদ্ধতা। নতুন লেখক আবিষ্কারের জন্য এর প্রয়োজন রয়েছে। লিটল ম্যাগ চত্বর আগের পরিবেশ হারিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এক সময় লিটল ম্যাগাজিন চত্বর মানেই ছিল তরুণদের আড্ডা, গল্প, সাহিত্য নিয়ে তর্ক বিতর্ক।

এখন আর সেই পরিবেশটা নেই। এখন আমরা আট-দশটি স্টল নিয়ে বসেছি, হয়তো টুকটাক বিক্রিও হচ্ছে। ইন্টারনেট, আকাশ সংস্কৃতি ও তরুণদের বই বিমুখতা আমাদের ব্যথিত করে। তবুও আমরা আশাহত হতে চাই না। এখনও সারা বাংলাদেশে লিটল ম্যাগাজিনের চর্চা হচ্ছে। কোনও সাহসী লেখা প্রকাশের ক্ষেত্রে হয়তো বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো সাহস করে না। সেটি প্রকাশের জন্যই লিটল ম্যাগাজিন। হয়তো সাময়িকভাবে এতে ভাটা পড়েছে, তবে আমরা আশাবাদী এটি আবার তার জৌলুশ ফিরে পাবে। লেখক নকীব আহমেদ বলেন, ‘প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে যে লেখা সেগুলো লিটল ম্যাগাজিনই প্রকাশ করে। ভালো ভালো লেখকরাই এগুলোতে লিখছেন।

সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে তরুণরা খুব সহজেই লেখা প্রকাশ করতে পারে বলে ওদিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। লিটল ম্যাগাজিনে আসলে একটা সংগ্রামের বিষয় আছে। যারা লেখে তারাই আবার প্রেসে কাজ করে, যারা অ্যাক্টিভিস্ট, তারাই লেখক। তরুণরা সেই স্ট্রাগলের মধ্যে যেতে চায় না বলে তারা এদিকে আসে না।’শুক্রবার মেলা শুরু সকাল ১১টায়, থাকছে শিশু প্রহর শুক্রবার অমর একুশে বইমেলার ১১তম দিনে মেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। মেলায় থাকছে শিশু প্রহর। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিশু প্রহর ঘোষণা করেছে বাংলা একাডেমি।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সংবিধান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফউজুল আজিম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সাহিদা বেগম এবং কুতুব আজাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক খুরশীদা বেগম। এদিন মেলায় নতুন বই এসেছে ১০৬টি।

ট্যাগ :

বীরগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

বইমেলায় নিষ্প্রভ ‘লিটল ম্যাগ চত্বর’

প্রকাশিত : ১২:০০:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

লিটল ম্যাগাজিন! আদুরে নামটা ‘লিটল ম্যাগ’ বা ‘লিট ম্যাগস’ নামে। যাকে বাংলায় বলে ‘ছোট কাগজ’ বা ‘ক্ষুদ্র সাহিত্যকোষ। এই লিটল ম্যাগাজিন কবে প্রথম প্রকাশিত হয়েছে তার সঠিক ইতিহাস জানা নেই। তবে অনেকের মতে আঠারো শতকের মাঝামাঝিতে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন শহর থেকে প্রকাশিত ‘ডায়াল’ (১৮৪০-৪৪) কাগজটিই প্রথম লিটল ম্যাগ। বাংলায় ‘লিটল ম্যাগাজিন’ শব্দটি প্রথম ব্যাবহার করেন কবি বুদ্ধদেব বসু ১৯৫৩ সালের সাপ্তাহিক ‘দেশ’ কাগজের মে সংখ্যায় প্রকাশিত তার ‘সাহিত্যপত্র’ নামক প্রবন্ধে। অপর এক তথ্যমতে বর্তমান বাংলাদেশ অঞ্চলে মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী ও সুচরিত চৌধুরী প্রথম লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেন। সেটি ছিল ‘সীমান্ত’ (১৯৪৭-৫২)।

এটি কোন অর্থে ছোট তা বলা মুশকিল। সেই তো ঢাউস-ঢাউস সাহিত্য ম্যাগাজিনও বের হয়েছে এবং হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, কোন মানদণ্ডে ছোট কাগজ তা নিয়ে বিতর্ক বিদ্যমান। মূলত প্রথাবিরুদ্ধ একটি আন্দোলন ছিল এই লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ। যাতে নতুন বা অখ্যাত কবিরাই কবিতা লিখবেন এবং সেটি হবে অবাণিজ্যিক ভিত্তিতে। লক্ষ্য হলো কবিতাকে পণ্য করা যাবে না। পরবর্তীকালে এই গণ্ডি ভেঙ্গে গেছে। সংযুক্ত হয়েছে প্রবন্ধ, গল্প, নাটক, চলচ্চিত্র, সাক্ষাৎকার, গ্রন্থালোচনা, শিল্পকলা বিভিন্ন ধরনের সাহিত্য উপাদান। বইমেলা শুরু হওয়ার কয়েক বছর পর ২০০১ সালের দিকে কবি ও লিটল ম্যাগ আন্দোলনকারী ওবায়েদ আকাশ তার ‘শালুক’ ও অন্য দুই একজন বাংলা একাডেমির বহেড়া তলায় লিটল ম্যাগ নিয়ে নিজ উদ্যোগে বসতে শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে মেলায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

লম্বা ও কঠোর আন্দোলনের পর ২০০৬ সাল থেকে বইমেলায় বাংলা একাডেমির সংশ্লিষ্টতায় সংযোজিত হয় লিটল ম্যাগ কর্নার। মেলা বাংলা একাডেমি থেকে বেরিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসলে দাবি ওঠে লিটল ম্যাগ চত্বরের পরিসর বাড়ানোর। সেই দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে লিটল ম্যাগও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে আসা হয়। এক সময় লিটল ম্যাগ চত্বরে দিনভর আড্ডা চলতো তরুণ লেখক ও প্রকাশকদের। তরুণ পাঠকরাও ভীড় করতেন এখানে। সচেতন পাঠক ও লেখকদের মাঝে চলত সমসাময়িক বিষয়ে তর্ক বিতর্ক। প্রথাবিরোধী প্রকাশনার কারণে সাহসী ও সংস্কারপন্থী লেখক ও পাঠকদের মূল আবেগের জায়গা ছিল লিটল ম্যগাজিন। কিন্তু ক্রমেই যেন জৌলুশ হারাচ্ছে বইমেলার ‘লিটল ম্যাগাজিন চত্বর’। গত বছরের খরা কাটিয়ে এবারের বইমেলা জমে উঠলেও নিষ্প্রভ এই চত্বর।

বৃহস্পতিবার ১২৭টি লিটল ম্যাগ স্টলের মধ্যে মাত্র ১৫ থেকে ২০টি তাদের স্টল খুলেছে। যারা খুলেছে তাদের অনেকেই স্টল খোলা রেখে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যারা বসে আছেন তারা কাটাচ্ছেন অবসর সময়। নিজেদের মধ্যে গল্প করছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। ক্রেতা নেই বললেই চলে। লিটল ম্যাগাজিন লাল সবুজের সম্পাদক অ্যাডভোকেট শিমূল পারভীন। তিনি বলেন, ‘মেলা ভালোই হচ্ছে, তবে ম্যাগাজিন আর কত জনই কিনে। এটা লেখকদের প্ল্যাটফর্ম, যারা নিজের খরচে লেখা চাপাতে পারে না, এটা তাদের জন্য প্রথম প্ল্যাটফর্ম। বাংলাদেশ, কলকাতাসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই তরুণ লেখকদের প্রথম লেখার কাগজ হলো এই লিটল ম্যাগাজিন। তাই এটিকে অবহেলা করা যাবে না।

এটি তরুণ লেখকদের প্রথম ভালোবাসা হওয়া উচিত। সেভাবে হয়তো আমাদের এখানে প্রচার হয়নি। সবাই সক্রিয় থাকলে এটি অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’লিটল ম্যাগাজিন লিরিক ১৯৮২ সালে যাত্রা শুরু করে। নিয়মিত প্রকাশ হতো এ পত্রিকা। এক সময় এতে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মাহমুদুল হকরা। কালের পরিক্রমায় এখন তা অনিয়মিত। লিটল ম্যাগ চত্বরে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা হয় এর সম্পাদক এজাজ ইউসুফীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা লিটল ম্যাগাজিন যারা করি, তারা সাহিত্যের প্রচলিত যে ধারা আছে তার বাইরে গিয়ে বিশেষ করে তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে এগুলো প্রকাশ করি। লিটল ম্যাগাজিন মানে ছোট না, এটা অনেক বড় চিন্তাকে ধারণ করতে পারে।

যারা আজকে বড় বড় লেখক তাদের অনেকেই এই লিটল ম্যাগাজিনের হাত ধরে বড় লেখক হয়ে উঠেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মাহমুদুল হক। ছোট কাগজ মানে হলো প্রতিষ্ঠান বিরোধীতা। অনেকে বাণিজ্যিকভাবে চাকচিক্য নিয়ে বই বের করে, আসলে ভেতরে কিছুই নেই। আমাদের প্রকাশনায় হয়তো চাকচিক্য নেই, তবে ঐতিহ্যগতভাবে বাংলা সাহিত্যের সার রয়েছে। লিটল ম্যাগাজিনের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো গোষ্ঠীবদ্ধতা। নতুন লেখক আবিষ্কারের জন্য এর প্রয়োজন রয়েছে। লিটল ম্যাগ চত্বর আগের পরিবেশ হারিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এক সময় লিটল ম্যাগাজিন চত্বর মানেই ছিল তরুণদের আড্ডা, গল্প, সাহিত্য নিয়ে তর্ক বিতর্ক।

এখন আর সেই পরিবেশটা নেই। এখন আমরা আট-দশটি স্টল নিয়ে বসেছি, হয়তো টুকটাক বিক্রিও হচ্ছে। ইন্টারনেট, আকাশ সংস্কৃতি ও তরুণদের বই বিমুখতা আমাদের ব্যথিত করে। তবুও আমরা আশাহত হতে চাই না। এখনও সারা বাংলাদেশে লিটল ম্যাগাজিনের চর্চা হচ্ছে। কোনও সাহসী লেখা প্রকাশের ক্ষেত্রে হয়তো বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো সাহস করে না। সেটি প্রকাশের জন্যই লিটল ম্যাগাজিন। হয়তো সাময়িকভাবে এতে ভাটা পড়েছে, তবে আমরা আশাবাদী এটি আবার তার জৌলুশ ফিরে পাবে। লেখক নকীব আহমেদ বলেন, ‘প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে যে লেখা সেগুলো লিটল ম্যাগাজিনই প্রকাশ করে। ভালো ভালো লেখকরাই এগুলোতে লিখছেন।

সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে তরুণরা খুব সহজেই লেখা প্রকাশ করতে পারে বলে ওদিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। লিটল ম্যাগাজিনে আসলে একটা সংগ্রামের বিষয় আছে। যারা লেখে তারাই আবার প্রেসে কাজ করে, যারা অ্যাক্টিভিস্ট, তারাই লেখক। তরুণরা সেই স্ট্রাগলের মধ্যে যেতে চায় না বলে তারা এদিকে আসে না।’শুক্রবার মেলা শুরু সকাল ১১টায়, থাকছে শিশু প্রহর শুক্রবার অমর একুশে বইমেলার ১১তম দিনে মেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। মেলায় থাকছে শিশু প্রহর। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিশু প্রহর ঘোষণা করেছে বাংলা একাডেমি।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সংবিধান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফউজুল আজিম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সাহিদা বেগম এবং কুতুব আজাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক খুরশীদা বেগম। এদিন মেলায় নতুন বই এসেছে ১০৬টি।