০২:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাড়ছে পদ্মার পানি প্লাবিত হচ্ছে নিন্মঞ্চল

পানিবন্দী এলাকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে হঠাৎ করেই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এক সপ্তাহে পানি বেড়েছে ১২০ সেন্টিমিটার, পানি বন্দী ১০ হাজার মানুষ। গত এক সপ্তাহে নদীতে পানি বেড়েছে প্রায় ১২০ সেন্টিমিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, পদ্মার পানি বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করেছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই পদ্মার পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষ ও স্থানীয়রা আশংকা করছেন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ইতিমধ্যে উপজেলার দুই ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে বেশকিছু জমির ফসল। লোকালয়ে বা জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ার আশংকা রয়েছেন দুই ইউনিয়নের লোকজন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে, গত ১০ দিন ধরে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ভারতে থেকে ফারাক্কা হয়ে পদ্মায় পানি পড়ছে। ফলে প্রতিদিন গড়ে ১২ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতাল মঙ্গলবার সকালে ভাগজোত পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৪.৫৯ সেন্টিমিটার। বিপদসীমা রয়েছে ১৫.৭০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। অর্থাৎ বিপদসীমার ১১১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকলে আাগামী শুক্র-শনিবার পর্যন্ত বিপদসীমা অতিক্রম করার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মা নদীতে প্রতিদিনই পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দু’দিন আগেও যেসব এলাকা পানিশুন্য ছিল। এখন সেইসব এলাকায় পদ্মার পানি ঢুকেছে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সোনাতলা, চল্লিশপাড়া, চরপাড়া, চিলমারী ইউনিয়নের চিলমারী, চরচিলমারী, মানিকেরচরসহ কয়েক গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অচিরেই চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পড়বে বলে এলাকাবাসীর আশংকা। চিলমারী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষের চলাচলের বেশকিছু মেঠোপথ পানিতে তলিয়ে যাওয়া ওইসব এলাকার শিক্ষার্থী পানি পাড়ি দিয়ে অতিকষ্টে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দুই ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়বে বলে ওইসকল গ্রামে বসবাসকারীরা জানিয়েছেন। এদিকে গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার ফিলিপনগর, মরিচা, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের শতাধিক হেক্টর জমির মরিচ ক্ষেত , কলা ক্ষেত, ধান, মাসকলাই সহ বিভিন্ন ধরনের ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। চরাঞ্চলের মানুষ অভ্যস্থ হওয়ায় এসময় তেমন কোন ফসল করেনা। যারা নীচু এলাকায় মাসকলাইয়ের বীজ বপন করেছিল তাদের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। তবে তা উল্লেখযোগ্য না।

চিলমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ জানান, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিলমারীর মানিকেরচর সহ বেশকিছু নীচু এলাকায় পানি প্রবেশ করায় মানুষের চলাচলের সমস্যা হচ্ছে। নীচু এলাকায় এসময় চাষকরা মাসকলাই ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে নতুন নতুন এলাকা পানিবন্দী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
রামকৃষ্ণপুর ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষক কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তবে বাড়িঘরে এখনও পানি প্রবেশ করেনি। এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল জব্বার বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত প্রস্ততি রয়েছে। বন্যার দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব

 

জনপ্রিয়

বাড়ছে পদ্মার পানি প্লাবিত হচ্ছে নিন্মঞ্চল

প্রকাশিত : ০৩:৪৩:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে হঠাৎ করেই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এক সপ্তাহে পানি বেড়েছে ১২০ সেন্টিমিটার, পানি বন্দী ১০ হাজার মানুষ। গত এক সপ্তাহে নদীতে পানি বেড়েছে প্রায় ১২০ সেন্টিমিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, পদ্মার পানি বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করেছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই পদ্মার পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষ ও স্থানীয়রা আশংকা করছেন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ইতিমধ্যে উপজেলার দুই ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে বেশকিছু জমির ফসল। লোকালয়ে বা জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ার আশংকা রয়েছেন দুই ইউনিয়নের লোকজন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে, গত ১০ দিন ধরে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ভারতে থেকে ফারাক্কা হয়ে পদ্মায় পানি পড়ছে। ফলে প্রতিদিন গড়ে ১২ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতাল মঙ্গলবার সকালে ভাগজোত পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৪.৫৯ সেন্টিমিটার। বিপদসীমা রয়েছে ১৫.৭০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। অর্থাৎ বিপদসীমার ১১১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকলে আাগামী শুক্র-শনিবার পর্যন্ত বিপদসীমা অতিক্রম করার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মা নদীতে প্রতিদিনই পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দু’দিন আগেও যেসব এলাকা পানিশুন্য ছিল। এখন সেইসব এলাকায় পদ্মার পানি ঢুকেছে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সোনাতলা, চল্লিশপাড়া, চরপাড়া, চিলমারী ইউনিয়নের চিলমারী, চরচিলমারী, মানিকেরচরসহ কয়েক গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অচিরেই চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পড়বে বলে এলাকাবাসীর আশংকা। চিলমারী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষের চলাচলের বেশকিছু মেঠোপথ পানিতে তলিয়ে যাওয়া ওইসব এলাকার শিক্ষার্থী পানি পাড়ি দিয়ে অতিকষ্টে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দুই ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়বে বলে ওইসকল গ্রামে বসবাসকারীরা জানিয়েছেন। এদিকে গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার ফিলিপনগর, মরিচা, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের শতাধিক হেক্টর জমির মরিচ ক্ষেত , কলা ক্ষেত, ধান, মাসকলাই সহ বিভিন্ন ধরনের ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। চরাঞ্চলের মানুষ অভ্যস্থ হওয়ায় এসময় তেমন কোন ফসল করেনা। যারা নীচু এলাকায় মাসকলাইয়ের বীজ বপন করেছিল তাদের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। তবে তা উল্লেখযোগ্য না।

চিলমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ জানান, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিলমারীর মানিকেরচর সহ বেশকিছু নীচু এলাকায় পানি প্রবেশ করায় মানুষের চলাচলের সমস্যা হচ্ছে। নীচু এলাকায় এসময় চাষকরা মাসকলাই ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে নতুন নতুন এলাকা পানিবন্দী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
রামকৃষ্ণপুর ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষক কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তবে বাড়িঘরে এখনও পানি প্রবেশ করেনি। এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল জব্বার বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত প্রস্ততি রয়েছে। বন্যার দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব