০৫:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

৮০ হেক্টর জমিতে মেটে আলুর চাষ: বাম্পার ফলনের আশা

চৌগাছায় বাণিজ্যিকভাবে ৮০ হেক্টর জমিতে মেটে আলুর চাষ

যশোরের চৌগাছায় বাণিজ্যিকভাবে ৮০ হেক্টর জমিতে মেটে আলুর চাষ হয়েছে। আবহাওয়া মেটে আলু চাষের উপযোগী হওয়ায় অধিক ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার নিচু এলাকা ছাড়া প্রায় সব এলাকায় কমবেশি মেটে আলুর চাষ হয়েছে, যার পরিমাণ ৮০ হেক্টর জমি। কৃষকেরা মূলত দেশিয় নানা জাতের মেটে আলুর চাষ করেন।

উপজেলার মির্জাপুর, জগদীশপুর, স্বর্পরাজপুর, তেহরি, মুক্তদাহ গ্রামের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা ব্যাপকভাবে মেটে আলুর চাষ করেছেন। অধিকাংশ জমিতেই মাচায় চাষ করা হয়েছে। তবে এর জন্য নতুন করে কোনো মাচা তৈরি করতে হয়নি কৃষকের। মেটে আলু বপনের আগে ওই জমিতে ঝিঙে কিংবা উচ্ছে মাচায় চাষ করেছেন। এসব ফসল উঠে যাওয়ার পর মেটে আলু সেই মাচায় উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

বর্তমানে প্রতিটি মাচায় মেটে আলুর সবুজ পাতা আর সাপের মত আঁকাবাকা লতা এক অপরুপ সৌন্দর্য বহন করে চলেছে। মেটে আলু দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন গড় আলু, মেটে আলু, গুইচ্যা আলু, লেমা আলু, ধুসড়ী আলু, আলতাপাট, চুবড়ি আলু, হরিণখালি, মাছরাঙ্গা, হাতিপায়া, মৌ প্রভৃতি নামে পরিচিতি লাভ করলেও মূলত ৪ থেকে ৫টির মত জাত আছে বলে জানা গেছে।

উপজেলার জগদীশপুর গ্রামের মাঠে কথা হয় কৃষক মজিবর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, প্রায় এক দশক ধরে এ অঞ্চলের কৃষকেরা ফসলের জমিতে মেটে আলুর চাষ করেন এবং ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এবছর তিনি ১ বিঘা জমিতে মেটে আলুর চাষ করেছেন। কৃষক মজিবরের মত ওই মাঠে রেজাউল করিম ১০ কাঠা, সেলিম রেজা ১০ কাঠা, জমশের আলী ১ বিঘা, গোলাম আলী ১০ কাঠা, আনিছুর রহমান ১৫ কাঠা, সুলতান হোসেন ১০ কাঠা জমিতে মেটে আলুর চাষ করেছেন।

কৃষকরা বলেন, বাংলা সনের বৈশাখ কিংবা জ্যৈষ্ঠ মাসে জমিতে মেটে আলুর বীজ বপন করতে হয়। ওই সময়ে জমিতে উচ্ছে কিংবা ঝিঙের চাষ থাকে। এই ফসল মরে যাওয়ার সাথে সাথে মেটে আলুর লতা মাচায় (বানে) উঠিয়ে দিতে হয়। কোন সার বা বিষ ছাড়াই শীতের শুরুতে আলু উঠতে শুরু করে। পোকা মাকড়ের উৎপাত কম সে কারণে কীটনাশক ব্যবহার করা লাগে না। বলাচলে বিনা খরচে ৫ থেকে ৬ মাসে কৃষক এই ফসলের টাকা হাতে পায়। ভালো ফলন হলে বিঘা প্রতি ১ লাখ হতে দেড় লাখ টাকার আলু বিক্রি করা সম্ভব। আলু উঠে গেলে ওই জমিত বোরো ধান কিংবা মসুরের চাষ করা হয় বলে তারা জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সমরেন বিশ্বাস বলেন, মেটে আলু চাষে ব্যয় ও পরিশ্রম দুটোই অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে কম। সে কারণে দিন দিন কৃষকের কাছে মেটে আলুর চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ এলাকায় দেশি নানা জাতের মেটে আলুর চাষ হয় বলে তিনি জানান।

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব

৮০ হেক্টর জমিতে মেটে আলুর চাষ: বাম্পার ফলনের আশা

প্রকাশিত : ০৪:০২:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

যশোরের চৌগাছায় বাণিজ্যিকভাবে ৮০ হেক্টর জমিতে মেটে আলুর চাষ হয়েছে। আবহাওয়া মেটে আলু চাষের উপযোগী হওয়ায় অধিক ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার নিচু এলাকা ছাড়া প্রায় সব এলাকায় কমবেশি মেটে আলুর চাষ হয়েছে, যার পরিমাণ ৮০ হেক্টর জমি। কৃষকেরা মূলত দেশিয় নানা জাতের মেটে আলুর চাষ করেন।

উপজেলার মির্জাপুর, জগদীশপুর, স্বর্পরাজপুর, তেহরি, মুক্তদাহ গ্রামের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা ব্যাপকভাবে মেটে আলুর চাষ করেছেন। অধিকাংশ জমিতেই মাচায় চাষ করা হয়েছে। তবে এর জন্য নতুন করে কোনো মাচা তৈরি করতে হয়নি কৃষকের। মেটে আলু বপনের আগে ওই জমিতে ঝিঙে কিংবা উচ্ছে মাচায় চাষ করেছেন। এসব ফসল উঠে যাওয়ার পর মেটে আলু সেই মাচায় উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

বর্তমানে প্রতিটি মাচায় মেটে আলুর সবুজ পাতা আর সাপের মত আঁকাবাকা লতা এক অপরুপ সৌন্দর্য বহন করে চলেছে। মেটে আলু দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন গড় আলু, মেটে আলু, গুইচ্যা আলু, লেমা আলু, ধুসড়ী আলু, আলতাপাট, চুবড়ি আলু, হরিণখালি, মাছরাঙ্গা, হাতিপায়া, মৌ প্রভৃতি নামে পরিচিতি লাভ করলেও মূলত ৪ থেকে ৫টির মত জাত আছে বলে জানা গেছে।

উপজেলার জগদীশপুর গ্রামের মাঠে কথা হয় কৃষক মজিবর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, প্রায় এক দশক ধরে এ অঞ্চলের কৃষকেরা ফসলের জমিতে মেটে আলুর চাষ করেন এবং ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এবছর তিনি ১ বিঘা জমিতে মেটে আলুর চাষ করেছেন। কৃষক মজিবরের মত ওই মাঠে রেজাউল করিম ১০ কাঠা, সেলিম রেজা ১০ কাঠা, জমশের আলী ১ বিঘা, গোলাম আলী ১০ কাঠা, আনিছুর রহমান ১৫ কাঠা, সুলতান হোসেন ১০ কাঠা জমিতে মেটে আলুর চাষ করেছেন।

কৃষকরা বলেন, বাংলা সনের বৈশাখ কিংবা জ্যৈষ্ঠ মাসে জমিতে মেটে আলুর বীজ বপন করতে হয়। ওই সময়ে জমিতে উচ্ছে কিংবা ঝিঙের চাষ থাকে। এই ফসল মরে যাওয়ার সাথে সাথে মেটে আলুর লতা মাচায় (বানে) উঠিয়ে দিতে হয়। কোন সার বা বিষ ছাড়াই শীতের শুরুতে আলু উঠতে শুরু করে। পোকা মাকড়ের উৎপাত কম সে কারণে কীটনাশক ব্যবহার করা লাগে না। বলাচলে বিনা খরচে ৫ থেকে ৬ মাসে কৃষক এই ফসলের টাকা হাতে পায়। ভালো ফলন হলে বিঘা প্রতি ১ লাখ হতে দেড় লাখ টাকার আলু বিক্রি করা সম্ভব। আলু উঠে গেলে ওই জমিত বোরো ধান কিংবা মসুরের চাষ করা হয় বলে তারা জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সমরেন বিশ্বাস বলেন, মেটে আলু চাষে ব্যয় ও পরিশ্রম দুটোই অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে কম। সে কারণে দিন দিন কৃষকের কাছে মেটে আলুর চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ এলাকায় দেশি নানা জাতের মেটে আলুর চাষ হয় বলে তিনি জানান।

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব