০২:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

সড়কে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে দুর্ঘটনা

কলাপাড়ায় ১২টি ইউনিয়ন এবং দুটি পৌরসভায় শহর ও গ্রাম এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইজিবাইক, চালাচ্ছে অপ্রাপ্ত বয়স্করা। যে বয়সে কিশোরদের হাতে থাকার কথা বই-খাতা ও কলম, সেখানে কোন প্রকার প্রশিক্ষন ছাড়া এসব ইজিবাইকের স্টিয়ারিং অপ্রাপ্তদের হাতে থাকায় প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। নেয়া হচ্ছে না কোনরকম ব্যবস্থা। গ্রাম্য সড়ক থেকে শুরু করে মহাসড়কগুলো এখন ইজিবাইকের দখলে। চালকরা কোন নিয়মনীতি না মেনে শহরের মধ্যে চালাচ্ছে এ ইজিবাইক। যেখানে-সেখানে ইজিবাইক থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করছে। চলাচলরত অসংখ্য ইজিবাইকের কারনে শহরের মধ্যে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় যানজটের। চালকদের মধ্যে অপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষন প্রাপ্ত না হওয়ায় যত্রতত্র ঘটছে দুর্ঘটনা।

কলাপাড়া পৌরসভা ও তথ্য সুত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের দিকে প্রথমে কলাপাড়া শহরে অল্প কিছু সংখ্যক ইজিবাইক দেখা গেলেও বর্তমানে প্রায় ৮০০ অটো চলাচল করছে। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে নতুন করে অনুমোদন দেয়া হয়েছে আটো বড় ৪৭৭টি, মিশুক আটো ছোট ৩১০টি, আটো রিসকা ৭২ টি। এছাড়া ও দেখা গেছে, কুয়াকাটা পৌরসভার ও আমতলী শহরে থেকে কলাপাড়া শহরে অনেক চালক গাড়ী চালাতে এখানে আসে।

শুক্রবার সরেজমিনে কলাপাড়ার বিভিন্ন সড়কে ঘুরে দেখা যায়, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যারা ইজিবাইক চালাচ্ছেন তাদের মধ্যে ১২-১৩ বছরের কম বয়সের কিশোরেরাও রয়েছে। এখন প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ইজিবাইক সড়কে নামানো হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ এই সব ইজিবাইক শুধু মাত্র পৌর এলাকায় চালানোর অনুমতি দিলেও তারা যাত্রী নিয়ে মহাসড়কে দ্রæতগতির যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যাত্রী বহন করেছে। এই সব ইজিবাইক চালকদের মধ্যে কেউ কেউ মাঠের কৃষি শ্রমিক অথবা আগে রিকশা/ভ্যান চালাতেন। আবার কেউ কেউ বয়সে কিশোর। এদের শত করা ৮০ জন চালকেই জানেন না কিভাবে রাস্তা ইজিবাইক চালাতে হয়।

তারপরও তারা নিয়মিত মহাসড়ক ছাড়াও গ্রামাঞ্চলের সড়কে ৮ জন করে যাত্রী নিয়ে দ্রুত গতিতে চালিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা শহর থেকে গ্রাম এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইজিবাইক। আর এসব চালাচ্ছে অপ্রাপ্ত বয়স্করা। রাস্তার মাঝখানে গাড়ি ঘুরানো যত্রযত পার্কিং ও অদক্ষ চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো কারনে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাজারো মানুষ। এছাড়া যানজটের বিশেষ কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ইজিবাইক। কোন প্রশিক্ষন ছাড়াই এবং রাস্তার নিয়মনীতি না জেনেই গাড়ি চালানোর কারনে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে জরুরি কাজে নিয়োজিত সরকারি, বেসরকারি, যাত্রীবাহী গাড়িসহ, রোগবাহী এম্বুলেন্স সঠিক সময়ে তাদের গন্তব্য পোঁছতে পারছে না। এমনকি এই ইজিবাইক কোন বৈধ কাগজপত্র নেই বললেই চলে। পৌর শহরে সদর রোডে দেখা যায় প্রতিদিনই ইজিবাইক কারনে যানজট লেগেই আছে। সরকারি ভাবে এদের নিয়ন্ত্রন না করলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে ইজিবাইক চালকেরা। ইজিবাইক সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে মিশুক।

ভুক্তভোগী অনেক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সকালে স্কুল-কলেজে যাওয়ার সময়ে তারা প্রতিনিয়তই যানযটের শিকার হচ্ছে। তাদের অভিযোগ শহরে চলাচলরত ইজিবাইক চালকরা কোন নিয়ম-শৃঙ্খলার তোয়াক্কা না করে সড়কে ইচ্ছা মত ইজিবাইক ঘুরিয়ে ফেলতে যায়। আবার রাস্তার ভাঙ্গা অংশ পরিহার করে ভাল অংশ দিয়ে যেতে চায়। ফলে তারা ঘন ঘন রাস্তায় এপাশ ওপাশ করে পথ চলে। এ অবস্থা মটর সাইকেলসহ দ্রুত গতির পরিবহন পেছন থেকে আগে উঠতে গেলে ইজিবাইক ধাক্কা লেগে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটে। ইজিবাইক চালকদের খামখেয়ালিতে শহরের মধ্যে সৃষ্ট যানজট এখন প্রতিদিনের চিত্র। এ অবস্থায় সঠিক সময়ে স্কুল-কলেজে পৌছতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা। সাধারন পথচারিদের অভিযোগ, ইজিবাইক চালকেরা শহরের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে সেখানে তাদের বাইক পাকিং করার কারনে সৃষ্ট যানজটে ৩ মিনিটের রাস্তা কখনো কখনো ১ ঘন্টা সময় লেগে যায়।

ইজিবাইক চালক মো, ছদরুল সিকদার জানান, ৪ বছর ধরে ইজিবাইক চালিয়ে ৫ সদস্যের সংসারের জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। তবে তিনি স্বীকার করেন প্রতিদিন যে হারে নতুন নতুন ইজিবাইক রাস্তায় নামছে তাতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তার অভিযোগ নতুন ইজিবাইক চালকেরা আইন কানুন মানে না। কে কত টাকার ভাড়া আয় করবে তারা সেই প্রতিযোগীতায় ব্যস্ত। এ কারনে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা বাড়ছে। আরেক ইজিবাইক চালক মো: ইমন উদ্দিন বলেন, ৩ বছর ধরে ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। আগে অনেক পয়সা রোজগার হতো কিন্তু এখন ইজিবাইক সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার রোজগার কমে যাচ্ছে। তিনি কথায় কথায় বলেন বর্তমানে শহরে এমন অবস্থা যেন মানুষের চেয়ে ইজিবাইক বেশি হয়ে গেছে।

পথচারি ছিদ্দিক মিয়া জানান, শহরের ভিতরে চলাচলরত ইজিবাইক দেখলে মনে হয় এটা যেন ইজিবাইক শহর। অনেক চালক অছেন যারা অন্য পেশার কাজ করে বিকালে শহরে এসে ইজিবাইক চালান। ফলে বিকালে শহরে অটো উপস্থিতি থাকে সারা দিনের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। তার অভিযোগ এ সমস্ত চালকদের কোন প্রশিক্ষন নেই। এর ফলে রাস্তায় দুইপাশ থেকে আসা যানবাহন চলাচলে বাধাগ্রস্থ হয়ে যান জটের সৃষ্টি হয়। তার অভিযোগ এটা চালকদের ইচ্ছাকৃত যানজটের কারনে ভোগান্তি আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২৪.০৯.২০২২ গত শনিবার দুপুরে বালীয়াতলী ইউপির মুসুল্লিয়াবাদ এলাকায় সড়কে মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রলি ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় ছেলে জিহাদের (১০) মৃত্যুর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মা মুক্তা বেগমেরও মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে বরিশাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এসময় ঘটনাস্থলে নিহত হয় শিশু জিহাদ, এবং তার মায়ের দু-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া একই অটোরিকশার যাত্রী নিহত শিশুর ১২ বছর বয়সী বড় বোন মীম আক্তার, ছোট ভাই জুনায়েদ (০৬) দাদী জাহানারাসহ আরো অন্তত ৭ জন গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসাপাতালে নিয়ে এলে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের বরিশাল সেবাচিমে প্রেরণ করে দায়ীত্বরত চিকিৎসক। অপরদিকে মুক্তা বেগমের দুই শিশু সন্তান ও শাশুড়ি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আর নিহতের বাড়িতে চলছে এখন শোকের মাতম।

কলাপাড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. হুমায়ুন কবির জানান, আমরা একবার ইজিবাইক সমিতির সভাপতিকে নিয়ে বসছি যাতে অপ্রাপ্ত বয়স্করা ইজিবাইক চালাতে না পারে। কিন্তু এখনও তা মানা হয়নি। এখন আবার আগামী মিটিং এ নিয়ে পৌরসভা মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা হবে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্করা যদি কেউ ইজিবাইক চালায় তাহলে এটাতো সরকারী বিধি-নিষেধ অমান্য করা। এ ব্যাপারে মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। যাতে অপ্রাপ্তরা ইজিবাইক চালাতে না পারে, সেব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে ড়িনি জানান।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

ডাকসু নির্বাচনে দুপুরের মধ্যে প্যানেল ঘোষণা করবে ছাত্রদল

সড়কে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে দুর্ঘটনা

প্রকাশিত : ০৩:৩০:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০২২

কলাপাড়ায় ১২টি ইউনিয়ন এবং দুটি পৌরসভায় শহর ও গ্রাম এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইজিবাইক, চালাচ্ছে অপ্রাপ্ত বয়স্করা। যে বয়সে কিশোরদের হাতে থাকার কথা বই-খাতা ও কলম, সেখানে কোন প্রকার প্রশিক্ষন ছাড়া এসব ইজিবাইকের স্টিয়ারিং অপ্রাপ্তদের হাতে থাকায় প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। নেয়া হচ্ছে না কোনরকম ব্যবস্থা। গ্রাম্য সড়ক থেকে শুরু করে মহাসড়কগুলো এখন ইজিবাইকের দখলে। চালকরা কোন নিয়মনীতি না মেনে শহরের মধ্যে চালাচ্ছে এ ইজিবাইক। যেখানে-সেখানে ইজিবাইক থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করছে। চলাচলরত অসংখ্য ইজিবাইকের কারনে শহরের মধ্যে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় যানজটের। চালকদের মধ্যে অপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষন প্রাপ্ত না হওয়ায় যত্রতত্র ঘটছে দুর্ঘটনা।

কলাপাড়া পৌরসভা ও তথ্য সুত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের দিকে প্রথমে কলাপাড়া শহরে অল্প কিছু সংখ্যক ইজিবাইক দেখা গেলেও বর্তমানে প্রায় ৮০০ অটো চলাচল করছে। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে নতুন করে অনুমোদন দেয়া হয়েছে আটো বড় ৪৭৭টি, মিশুক আটো ছোট ৩১০টি, আটো রিসকা ৭২ টি। এছাড়া ও দেখা গেছে, কুয়াকাটা পৌরসভার ও আমতলী শহরে থেকে কলাপাড়া শহরে অনেক চালক গাড়ী চালাতে এখানে আসে।

শুক্রবার সরেজমিনে কলাপাড়ার বিভিন্ন সড়কে ঘুরে দেখা যায়, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যারা ইজিবাইক চালাচ্ছেন তাদের মধ্যে ১২-১৩ বছরের কম বয়সের কিশোরেরাও রয়েছে। এখন প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ইজিবাইক সড়কে নামানো হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ এই সব ইজিবাইক শুধু মাত্র পৌর এলাকায় চালানোর অনুমতি দিলেও তারা যাত্রী নিয়ে মহাসড়কে দ্রæতগতির যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যাত্রী বহন করেছে। এই সব ইজিবাইক চালকদের মধ্যে কেউ কেউ মাঠের কৃষি শ্রমিক অথবা আগে রিকশা/ভ্যান চালাতেন। আবার কেউ কেউ বয়সে কিশোর। এদের শত করা ৮০ জন চালকেই জানেন না কিভাবে রাস্তা ইজিবাইক চালাতে হয়।

তারপরও তারা নিয়মিত মহাসড়ক ছাড়াও গ্রামাঞ্চলের সড়কে ৮ জন করে যাত্রী নিয়ে দ্রুত গতিতে চালিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা শহর থেকে গ্রাম এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইজিবাইক। আর এসব চালাচ্ছে অপ্রাপ্ত বয়স্করা। রাস্তার মাঝখানে গাড়ি ঘুরানো যত্রযত পার্কিং ও অদক্ষ চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো কারনে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাজারো মানুষ। এছাড়া যানজটের বিশেষ কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ইজিবাইক। কোন প্রশিক্ষন ছাড়াই এবং রাস্তার নিয়মনীতি না জেনেই গাড়ি চালানোর কারনে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে জরুরি কাজে নিয়োজিত সরকারি, বেসরকারি, যাত্রীবাহী গাড়িসহ, রোগবাহী এম্বুলেন্স সঠিক সময়ে তাদের গন্তব্য পোঁছতে পারছে না। এমনকি এই ইজিবাইক কোন বৈধ কাগজপত্র নেই বললেই চলে। পৌর শহরে সদর রোডে দেখা যায় প্রতিদিনই ইজিবাইক কারনে যানজট লেগেই আছে। সরকারি ভাবে এদের নিয়ন্ত্রন না করলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে ইজিবাইক চালকেরা। ইজিবাইক সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে মিশুক।

ভুক্তভোগী অনেক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সকালে স্কুল-কলেজে যাওয়ার সময়ে তারা প্রতিনিয়তই যানযটের শিকার হচ্ছে। তাদের অভিযোগ শহরে চলাচলরত ইজিবাইক চালকরা কোন নিয়ম-শৃঙ্খলার তোয়াক্কা না করে সড়কে ইচ্ছা মত ইজিবাইক ঘুরিয়ে ফেলতে যায়। আবার রাস্তার ভাঙ্গা অংশ পরিহার করে ভাল অংশ দিয়ে যেতে চায়। ফলে তারা ঘন ঘন রাস্তায় এপাশ ওপাশ করে পথ চলে। এ অবস্থা মটর সাইকেলসহ দ্রুত গতির পরিবহন পেছন থেকে আগে উঠতে গেলে ইজিবাইক ধাক্কা লেগে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটে। ইজিবাইক চালকদের খামখেয়ালিতে শহরের মধ্যে সৃষ্ট যানজট এখন প্রতিদিনের চিত্র। এ অবস্থায় সঠিক সময়ে স্কুল-কলেজে পৌছতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা। সাধারন পথচারিদের অভিযোগ, ইজিবাইক চালকেরা শহরের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে সেখানে তাদের বাইক পাকিং করার কারনে সৃষ্ট যানজটে ৩ মিনিটের রাস্তা কখনো কখনো ১ ঘন্টা সময় লেগে যায়।

ইজিবাইক চালক মো, ছদরুল সিকদার জানান, ৪ বছর ধরে ইজিবাইক চালিয়ে ৫ সদস্যের সংসারের জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। তবে তিনি স্বীকার করেন প্রতিদিন যে হারে নতুন নতুন ইজিবাইক রাস্তায় নামছে তাতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তার অভিযোগ নতুন ইজিবাইক চালকেরা আইন কানুন মানে না। কে কত টাকার ভাড়া আয় করবে তারা সেই প্রতিযোগীতায় ব্যস্ত। এ কারনে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা বাড়ছে। আরেক ইজিবাইক চালক মো: ইমন উদ্দিন বলেন, ৩ বছর ধরে ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। আগে অনেক পয়সা রোজগার হতো কিন্তু এখন ইজিবাইক সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার রোজগার কমে যাচ্ছে। তিনি কথায় কথায় বলেন বর্তমানে শহরে এমন অবস্থা যেন মানুষের চেয়ে ইজিবাইক বেশি হয়ে গেছে।

পথচারি ছিদ্দিক মিয়া জানান, শহরের ভিতরে চলাচলরত ইজিবাইক দেখলে মনে হয় এটা যেন ইজিবাইক শহর। অনেক চালক অছেন যারা অন্য পেশার কাজ করে বিকালে শহরে এসে ইজিবাইক চালান। ফলে বিকালে শহরে অটো উপস্থিতি থাকে সারা দিনের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। তার অভিযোগ এ সমস্ত চালকদের কোন প্রশিক্ষন নেই। এর ফলে রাস্তায় দুইপাশ থেকে আসা যানবাহন চলাচলে বাধাগ্রস্থ হয়ে যান জটের সৃষ্টি হয়। তার অভিযোগ এটা চালকদের ইচ্ছাকৃত যানজটের কারনে ভোগান্তি আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২৪.০৯.২০২২ গত শনিবার দুপুরে বালীয়াতলী ইউপির মুসুল্লিয়াবাদ এলাকায় সড়কে মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রলি ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় ছেলে জিহাদের (১০) মৃত্যুর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মা মুক্তা বেগমেরও মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে বরিশাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এসময় ঘটনাস্থলে নিহত হয় শিশু জিহাদ, এবং তার মায়ের দু-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া একই অটোরিকশার যাত্রী নিহত শিশুর ১২ বছর বয়সী বড় বোন মীম আক্তার, ছোট ভাই জুনায়েদ (০৬) দাদী জাহানারাসহ আরো অন্তত ৭ জন গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসাপাতালে নিয়ে এলে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের বরিশাল সেবাচিমে প্রেরণ করে দায়ীত্বরত চিকিৎসক। অপরদিকে মুক্তা বেগমের দুই শিশু সন্তান ও শাশুড়ি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আর নিহতের বাড়িতে চলছে এখন শোকের মাতম।

কলাপাড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. হুমায়ুন কবির জানান, আমরা একবার ইজিবাইক সমিতির সভাপতিকে নিয়ে বসছি যাতে অপ্রাপ্ত বয়স্করা ইজিবাইক চালাতে না পারে। কিন্তু এখনও তা মানা হয়নি। এখন আবার আগামী মিটিং এ নিয়ে পৌরসভা মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা হবে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্করা যদি কেউ ইজিবাইক চালায় তাহলে এটাতো সরকারী বিধি-নিষেধ অমান্য করা। এ ব্যাপারে মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। যাতে অপ্রাপ্তরা ইজিবাইক চালাতে না পারে, সেব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে ড়িনি জানান।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব