র্যাব-৪ বিগত দিনগুলোতে কিশোর গ্যাং অপরাধ নির্মূলে সাফল্যজনক অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ১১ অক্টোবর ২০২২ রাতে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর লিখন হত্যা মামলার আলোচিত কিশোর গ্যাং গ্রুপের লিডার মোঃ রনি (১৯) সহ তার অপর তিন সহযোগী রাকিব (১৮), মোঃ জিলানী (১৮) এবং মোঃ সোহাগ (১৯)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং এই মামলার স্বাক্ষী প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে জানা যায় যে, আশুলিয়া থানাধীন পলাশবাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং মাদকের অপব্যবহারসহ নানা অপরাধে জড়িত কিশোর গ্যাং কালচারের প্রবণতা রয়েছে। সেখানে কাইচ্চাবাড়ি গ্যাং এবং গোচারটেক ভাই বেরাদার গ্যাং নামে দুটি পৃথক কিশোর গ্যাং রয়েছে যারা এলাকায় ইভটিজিং, ছোটখাট ছিনতাই, মাদক সেবন ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সার্বক্ষণিক দাঙ্গা হাঙ্গামায় লিপ্ত থাকে ।গ্রেফতারকৃত আসামী রনি কাইচ্চাবারি কিশোর গ্যাং গ্রুপের লিডার এবং তার দলে ১০/১৫ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
বিষয়টি আদর কাইচ্চাবাড়ি কিশোর গ্যাং লিডার রনি’কে জানালে রনি এবং তার গ্রুপ এই ঘটনার প্রতিশোধ গ্রহণের পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ০৪ জুলাই ২০২২ তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ০৬.৩০ ঘটিকার সময় আশুলিয়া পলাশবাড়ি গোচারারটেক ইস্টার্ন হাউজিং মাঠের পাশে লোহার রড ও ধারালো দেশীয় অস্ত্রসহ রনির দল অবস্থান করে।
সেসময় ভিকটিম মেহেদী’কে আকস্মিকভাবে ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে যেতে দেখে ধৃত আসামী রনি ও তার কিশোর গ্যাং গ্রুপ মেহেদীর পথরোধ করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে বেদম মারপিট করতে থাকে। ঘটনস্থলের অদুরে মৃত ভিকটিম লিখন (১৮) মাঠে বসে মোবাইল ব্যবহার করছিল। এসময় তার বন্ধু ভিকটিম মেহেদী’কে মারধর করতে দেখে তার জীবন বাচাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেহেদী’কে বাচানোর চেষ্টা করে। এসময় কাইচ্চাবাড়ি কিশোর গ্যাং সদস্যরা রনি’র নেত্বেত্বে ভিকটিম মেহেদীর সাথে ভিকটিম লিখনকেও এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে আসামীদের লোহার রডের আঘাতে ভিকটিম লিখন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে হামলাকারীরা গুরুতর আহত লিখন এবং মেহেদী’কে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিমদ্বয়’কে উদ্ধার করে ভিকটিম লিখন’কে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এবং অপর ভিকটিম মেহেদী’কে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। আহত ভিকটিম মেহেদী চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলেও অপর গুরুতর আহত ভিকটিম লিখন গত ০৫ জুলাই ২০২২ তারিখ সকালে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুরণ করেন।
এ ঘটনায় ভিকটিমের চাঁচা শরীফুল ইসলাম বাবু বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ধৃত আসামী রনি, এনায়েতসহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেকের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ।ঘটনার পর থেকেই কাইচ্চাবাড়ি গ্রুপের কিশোর গ্যাং লিডার রনিসহ অন্যান্য আসামীরা দিনাজপুর, রংপুর, পটুয়াখালী, বরিশাল, ঝালকাঠি ও গাজীপুরে আত্মগোপনে ছিল এবং এসময় তারা কোন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেনি।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের’কে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।এই ধরনের কিশোর অপরাধীদের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব


























