ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমেদ। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক, ওয়ান ইলেভেনে কারা নির্যাতিত ত্যাগী রাজনীতিবিদ, কর্ণফুলীতে বহু নেতা সৃষ্টির কারিগর খ্যাত এই নেতা এবার চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। জনপ্রতিনিধিদের ভোটে তিনি মূল্যায়িত হওয়ায় কর্ণফুলীবাসী ও তৃণমূলের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত।
সাবেক তুখোড় ওই ছাত্রনেতা ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমেদ সুদীর্ঘ ৪০ বছর ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। দলের জন্য বহু ত্যাগ রয়েছে তাঁর।
এবার কর্ণফুলী উপজেলা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আংশিক ১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনী এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচিত হলেন তিনি। ৯২ ভোটের মধ্যে তিনি ঘুড়ি প্রতীকে সর্বোচ্চ ৮৬ ভোট পেয়ে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ রাশেদুল হাসান তালা প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ৫ ভোট। বিষয়টি জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমেদ এর রাজনৈতিক জীবন:
১৯৮২ সালে চট্টগ্রাম সিটি কলেজে তাঁর রাজনৈতিক পথচলা শুরু হয়। ৯০ সালে কলেজ শাখার কমিটিতে তিনি ছাত্রলীগের নির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হন। ৯০ এর গণঅভ্যূদয় ও আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ময়দানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বিএনপি সরকারের আমলে (৯১ সালে) লালদীঘি ময়দানে মিটিং পন্ড করতে গিয়ে পুলিশি হয়রানির শিকার হন। নগরীর জিপিও মোড় এলাকায় শিবিরের ক্যাডার নাছিরের সাথে রাজপথে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়ান।
১৯৯৬ সালে নিজ গ্রাম কর্ণফুলীতে এসে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ গঠন করেন। জামায়াত-শিবিরে সম্পৃক্ত থাকা ছেলেদের সুকৌশলে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদে একীভূত করে। তরুণদের মুখে প্রথম জয়বাংলা শ্লোগান শেখান। তৎকালিন শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদে প্রথম আহ্বায়ক কমিটিতে জায়গা পেয়েছিলেন-ইঞ্জিনিয়ার নাজিম উদ্দিন (আহ্বায়ক) ও ইঞ্জিনিয়ার রাশেদুর রহমান মিলন (সদস্য সচিব)।
১৯৮৭ সালে দুরন্ত দুর্বার গঠন হলে সেখানে দায়িত্ব ছিলেন ক্রীড়া সম্পাদকের। পরে উপদেষ্টা পদে আসীন হন। ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ভাইয়ের হাত ধরে দক্ষিণ চট্টগ্রামে সরাসরি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বাবু ভাইয়ের পক্ষে প্রচারণায় নেমে ভোটের মাঠে তাক লাগান। চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের খোয়াজনগর কেন্দ্রে স্বাধীনতার পর প্রথম বিপুল ভোটে বাবু ভাইকে এগিয়ে রেখে নজর কাড়েন। ২০০১ থেকে ২০১৯ প্রতিটি নির্বাচনে নৌকার জয়ের ধারা অব্যাহত রাখেন। বিএনপি জোট সরকার আমলে মামলা-হামলা ও বহু নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাঁকে।
এমনকি ২০০৫ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তিনি আটক হন। ২ মাস ১৩ দিন কারাগারে ছিলেন। ২০০১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। একই সাথে কর্ণফুলী থানা আওয়ামী লীগের এডহক কমিটির সদস্য (২০১৪-২০১৭ ইং পর্যন্ত) ছিলেন। ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক নিবাচিত হন। সেই থেকে দীর্ঘ ৯ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলায় বেশ কয়েকবার কারাবরণ করেছেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি কতৃক গাড়ি-ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা বিরোধী আন্দোলনে মাঠে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১/১১ সময় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির নির্বাহী সদস্য হিসেবে দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ কর্তৃক প্রতিটা কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্তির লক্ষ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আন্দোলন ও সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন। দল ও কর্মীর প্রতি ভালোবাসার এমন উদাহরণে বেশ আলোচিতও ছিলেন তিনি।
বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ


























