কুড়িগ্রামের রৌমারী বালু উত্তোলন কারি ড্রেজার সিন্ডিকেট দিনদিন মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে। খালবিল, নদনদী, পুকুর , জলাশয়, এমনকি ফসলী জমিও রেহাই পায়নি তাদের কাছ থেকে। নদনদীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে সরকারের ও উচ্চ আদালতের কড়া নিদের্শনা থাকলেও কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় এক শ্রেণীর বালু ব্যবসায়ী চক্র ড্রেজার ও কাকড়া গাড়ী (ট্রাক্টর) দিয়ে বালু উত্তোলন ও কাঁচা-পাকা গ্রামীণ সড়ক দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু আনানেওয়া করছে।
বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান চালালেও আবার যেন কোন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় বহাল তবিয়তে বালু উত্তোলনের কাজ চলতে থাকে। এমন লুকোচুড়ি খেলায় নদী পারের মানুষ গুলো ভ‚মিহীন বাস্তহারার পথে। অপরিকল্পিত ভাবে যার যেমন খুশি নদী বা নদীর কিনার থেকে বালু উত্তোলনের ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়ার সাথে সাথে ব্রহ্মপুত্র নদ, সোনাভরি, হললি, জিঞ্জিরামসহ ছোট ছোট খালবিল ডোবানালা নদীর তীব্র ¯্রােত বেড়ে যাওয়ায় ভাঙ্গন শুরু হয়। এতে হুমকির মুখে পড়ে চরশৌলমারী, বন্দবেড় যাদুরচর খেরুয়ারচর, ঘুঘুমারী, খেদাইমারী, বলদমারা, বাগুয়ারচর, পশ্চিম খনজনমারা, ফলুয়ারচর, পালেরচর, কুটিরচর, বাঘমারা, মিয়ারচর মুখতোলা, দিগলাপাড়া, ধনারচর, বকবান্দাসহ প্রায় ১৭টি গ্রামের মানুষের ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বালু সিন্ডিকেটটি ব্রহ্মœপুত্র নদের ঘুঘুমারী থেকে বলদমারা হয়ে ফলুয়ারচর নৌকাঘাট পযর্ন্ত প্রতিদিন অবৈধ ড্রেজার ও কাকড়ার মাধ্যমে বালু উত্তোলন ও পরিবহন করছে। বর্তমানে ফলুয়ারচর ঘাটে বালু উত্তোলনে জিয়ারুল ইসলাম, বাবলু মিয়া ও কবিরের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। অপরদিকে ট্রাক্টর চলাচলে রাস্তা গুলি ভেঙ্গে যাওয়ায় মানুষ চরম ভোগান্তিতে পরছে। একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় জমজমাট ভাবে বালু ব্যবসায়ীরা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বারবার সংবাদ প্রকাশ হলেও, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন।
বালু ব্যবসায়ী চক্রে জড়িত কুটিরচর গ্রামের বালু মামলার হাজতবাস বাবলু মিয়া, কবির হোসেন, বাগুয়ারচর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, বাগুয়ারচর গ্রামের হায়দার আলী, বাইটকামারী গ্রামের আমজাদ হোসেন, বাগুয়ারচর গ্রামের রফিকুল, দিগলাপাড়া গ্রামের কামাল উদ্দিন, ধনারচর গ্রামের আজিবর রহমান বাইটকামারী গ্রামের আফসার আলী, দুবলাবাড়ী গ্রামের ইব্রাহীম, জন্তির কান্দা গ্রামের বাবু মিয়া, বোল্লাপাড়া, নুরনবী,হাসান আলী, আব্দুর রাজ্জাক, শাহা আলম, তারিকুল্যাহ, কালাম, নাসির উদ্দিন, কাশেম, মাজম আলী, কুটিরচর খানপাড়া এলাকার ছবির খান, ছোরমান খান, রিয়াজুল হক, ফলুয়ারচর গ্রামের আবু সাইদ মিয়া, বাগুয়ারচর গ্রামের জিয়াউরসহ অনেকেই।
অভিযোগ করে বলেন, কুটিরচর গ্রামের জিয়ারুল ইসলাম, ধনারচর গ্রামের সামছুল আলম, লিয়াকত হোসেন, বাগুয়ারচর গ্রামের আমজাদ হোসেন, আব্দুস সবুর, বলদমারা গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা বদিউজ্জামান, হাফেজ আলী, চরখেদাইমারী গ্রামের আলমেজ আলী, আব্দুর রশিদসহ অনেকেই জানান, ফলুয়ারচর নৌকা ঘাট থেকে ঘুঘুমারী নৌকাঘাট পর্যন্ত নদী থেকে যেভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও কাকড়া দিয়ে বালু আনানেওয়া করছে এভাবে বালু তোলা অব্যাহত থাকলে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে অবস্থিত গ্রামগুলো নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। বালু ব্যবসায়ী চক্রদের গ্রামবাসীরা বাধা দিলে তাদেরকেও নানা ভাবে ভয়ভীতির হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়।
এবিষয়ে অভিযোগকারী জিয়ারুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন থেকে ফলুয়ারচর ঘাট আমার জমি সংলগ্ন ঘাটের কিনারা ভেঙ্গে অবৈধ কাকড়ার মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এভাবে আর কয়েকদিন উত্তোলন করলে ফলুয়ারচর নৌকাঘাট বিলিন হবে। অন্যদিকে পানি বাড়ার সাথে সাথে নদের পারের মানুষ ভাঙ্গন কবলে পরবে। বালু উত্তোলনে বাধা দিলে আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখায় ও মারার হুমকি দেয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূবন আখতারের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে, তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি।
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব
চেয়ারম্যান কবীর হোসেন বলেন,