০৪:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আবারো কার্গো খালাস বন্ধ, ভোগান্তিতে প্রবাসীরা

দুই সপ্তাহের অধিক সময় চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমান বন্দরে কার্গো খালাস বন্ধ রেখেছিল চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস।
গেল সোমবার চালু করা হয়। তিনদিনে প্রবাসীদের ৩২ টি কন্সাইনমেন্ট খালাস করার পর আবারো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে শাহ বিমান বন্দরে কার্গো পণ্য খালাস।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সব ধরনের কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষ হলেও বৃহস্পতিবার থেকে কোন কার্গো পণ্য খালাস করা হয় নি। বিমানবন্দর সুত্রে জানা যায়, সব ধরনের যাচাই বাছাই সম্পন্ন হওয়া কার্গো পণ্য খালাস করার নির্দেশনা থাকলেও বিমানবন্দরের দায়িত্বে থাকা কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মাসুদ হাসান অজ্ঞাত কারণে কার্গো খালাস বন্ধ রেখেছেন।

সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের ঘুষ বাণিজ্যের দফারফা না হবার কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কার্গো পণ্য খালাস। এরআগে চল্লিশ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে কার্গো পণ্য খালাস চালু করা হয়। তবে সেটিকে আইওয়াশ বলছেন ভুক্তভোগী প্রবাসীরা।

এ বিষয়ে জানতে বেশ কয়েক দফা মুঠোফোনে ফোন করে সাড়া মেলেনি ডেপুটি কমিশনার মাসুদ হাসানের। এসএমএস পাঠালেও কোন সাড়া দেননি তিনি। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরের কয়েকজন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায় ডিসি কাস্টমস কোন পণ্য খালাস করা হবে না বলে তাদের জানিয়ে দিয়েছেন। রবিবার বিকেলে এ কথা জানানোর পর সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে পড়েন ডেপুটি কমিশনার।

বিদেশ ফেরত যাত্রীর ৭২ টি পাসপোর্টের ইমিগ্রেশন যাচাই রিপোর্ট দিয়েছিলেন বিমানবন্দর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। পণ্য ছাড় নেবার জন্য ‘এ’ ফরম জমা দেয়া হয়েছে অনেক যাত্রীর ব্যাগেজের বিপরীতে। যাবতীয় যাচাই বাছাই সম্পন্ন হবার পরও পণ্য খালাস বন্ধ করে দেয় কতৃপক্ষ। এ বিষয়ে জানতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের যোগাযোগ করা হলে জানা যায় বিমানবন্দরে কার্গো খালাস বন্ধ রাখার কোন নির্দেশনা দেয়া হয় নি।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী প্রবাসী আহমেদ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে অপেক্ষায় রাখা হয়েছে। দিবো দিচ্ছি বলে। কিন্তু তিনদিন টিমেতালে কাজ করার পর ডেপুটি কমিশনার নাকি নিজের ইচ্ছায় আবারও কার্গো খালাস বন্ধ করে দিয়েছেন। বিদেশ থেকে দেশে এসে এমন ভোগান্তির কথা বলে বোঝানো যাবে না। ‘

সরেজমিনে বিমানবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, কার্গো পণ্য খালাস করতে অপেক্ষায় রয়েছেন বেশকিছু সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী। তাদের সাথে প্রবাসীদের কয়েকজনকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি সপ্তাহে একটি কার্গো ফ্লাইট অবতরণ করতো। বিমানবন্দর কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে কার্গো ফ্লাইট আসা বন্ধ রয়েছে এক মাস যাবত। ওয়ারহাউজে কার্গো পণ্যের জন্য জাযগা না থাকার অজুহাতে বন্ধ রয়েছে কার্গো ফ্লাইট। একারণে সরকার প্রতি কার্গো থেকে চল্লিশ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা যাত্রীরা দেশে ফেরার সময় ব্যাগেজ রুলের অতিরিক্ত পণ্য কার্গো পাঠিয়ে থাকেন। জানা যায়, কার্গো ফ্লাইটে আসা পণ্যের আশি শতাংশই প্রবাসীদের। তাদের পক্ষে সিএন্ডএফ এসব পণ্য ছাড় করিয়ে থাকে। কিন্তু সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং ঘুষ বাণিজ্যের কারণে দীর্ঘ একমাস ধরে কার্যত অচল রয়েছে কার্গো পণ্য খালাস।

বিমানবন্দরে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পালন করা ডেপুটি কমিশনার মাসুদুর রহমান, সহকারী কমিশনার জয়নাল আবেদীনের কারণে পণ্য খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে। বিমানবন্দরে কার্গো পণ্য পুনরায় খালাস চালু করতে সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের কাছে জনৈক আরিফের মাধ্যমে চল্লিশ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হয়েছে। ঘুষের টাকা না পৌঁছার কারণে নানা অজুহাতে পণ্য খালাস বন্ধ রেখে নিলামের ভয় দেখানো হচ্ছে- এমন অভিযোগ সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের।

এদিকে, কার্গো খালাস বন্ধ রাখার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী ও প্রবাসীরা বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন। দুই সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে কার্গো খালাসের কাজ বন্ধ রেখেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। কি কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে কর্তৃপক্ষ সেই বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নাই সংস্থাটির। আর কার্গো খালাস ও ফ্লাইট না আসার ফলে বিদেশ থেকে পাঠানো পণ্য সংগ্রহ করতে পারছেন না প্রবাসীরা। এ কারণে স্থানীয় সিএনএফ ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আবারো কার্গো খালাস বন্ধ, ভোগান্তিতে প্রবাসীরা

প্রকাশিত : ১২:০৪:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২

দুই সপ্তাহের অধিক সময় চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমান বন্দরে কার্গো খালাস বন্ধ রেখেছিল চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস।
গেল সোমবার চালু করা হয়। তিনদিনে প্রবাসীদের ৩২ টি কন্সাইনমেন্ট খালাস করার পর আবারো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে শাহ বিমান বন্দরে কার্গো পণ্য খালাস।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সব ধরনের কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষ হলেও বৃহস্পতিবার থেকে কোন কার্গো পণ্য খালাস করা হয় নি। বিমানবন্দর সুত্রে জানা যায়, সব ধরনের যাচাই বাছাই সম্পন্ন হওয়া কার্গো পণ্য খালাস করার নির্দেশনা থাকলেও বিমানবন্দরের দায়িত্বে থাকা কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মাসুদ হাসান অজ্ঞাত কারণে কার্গো খালাস বন্ধ রেখেছেন।

সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের ঘুষ বাণিজ্যের দফারফা না হবার কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কার্গো পণ্য খালাস। এরআগে চল্লিশ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে কার্গো পণ্য খালাস চালু করা হয়। তবে সেটিকে আইওয়াশ বলছেন ভুক্তভোগী প্রবাসীরা।

এ বিষয়ে জানতে বেশ কয়েক দফা মুঠোফোনে ফোন করে সাড়া মেলেনি ডেপুটি কমিশনার মাসুদ হাসানের। এসএমএস পাঠালেও কোন সাড়া দেননি তিনি। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরের কয়েকজন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায় ডিসি কাস্টমস কোন পণ্য খালাস করা হবে না বলে তাদের জানিয়ে দিয়েছেন। রবিবার বিকেলে এ কথা জানানোর পর সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে পড়েন ডেপুটি কমিশনার।

বিদেশ ফেরত যাত্রীর ৭২ টি পাসপোর্টের ইমিগ্রেশন যাচাই রিপোর্ট দিয়েছিলেন বিমানবন্দর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। পণ্য ছাড় নেবার জন্য ‘এ’ ফরম জমা দেয়া হয়েছে অনেক যাত্রীর ব্যাগেজের বিপরীতে। যাবতীয় যাচাই বাছাই সম্পন্ন হবার পরও পণ্য খালাস বন্ধ করে দেয় কতৃপক্ষ। এ বিষয়ে জানতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের যোগাযোগ করা হলে জানা যায় বিমানবন্দরে কার্গো খালাস বন্ধ রাখার কোন নির্দেশনা দেয়া হয় নি।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী প্রবাসী আহমেদ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে অপেক্ষায় রাখা হয়েছে। দিবো দিচ্ছি বলে। কিন্তু তিনদিন টিমেতালে কাজ করার পর ডেপুটি কমিশনার নাকি নিজের ইচ্ছায় আবারও কার্গো খালাস বন্ধ করে দিয়েছেন। বিদেশ থেকে দেশে এসে এমন ভোগান্তির কথা বলে বোঝানো যাবে না। ‘

সরেজমিনে বিমানবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, কার্গো পণ্য খালাস করতে অপেক্ষায় রয়েছেন বেশকিছু সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী। তাদের সাথে প্রবাসীদের কয়েকজনকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি সপ্তাহে একটি কার্গো ফ্লাইট অবতরণ করতো। বিমানবন্দর কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে কার্গো ফ্লাইট আসা বন্ধ রয়েছে এক মাস যাবত। ওয়ারহাউজে কার্গো পণ্যের জন্য জাযগা না থাকার অজুহাতে বন্ধ রয়েছে কার্গো ফ্লাইট। একারণে সরকার প্রতি কার্গো থেকে চল্লিশ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা যাত্রীরা দেশে ফেরার সময় ব্যাগেজ রুলের অতিরিক্ত পণ্য কার্গো পাঠিয়ে থাকেন। জানা যায়, কার্গো ফ্লাইটে আসা পণ্যের আশি শতাংশই প্রবাসীদের। তাদের পক্ষে সিএন্ডএফ এসব পণ্য ছাড় করিয়ে থাকে। কিন্তু সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং ঘুষ বাণিজ্যের কারণে দীর্ঘ একমাস ধরে কার্যত অচল রয়েছে কার্গো পণ্য খালাস।

বিমানবন্দরে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পালন করা ডেপুটি কমিশনার মাসুদুর রহমান, সহকারী কমিশনার জয়নাল আবেদীনের কারণে পণ্য খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে। বিমানবন্দরে কার্গো পণ্য পুনরায় খালাস চালু করতে সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের কাছে জনৈক আরিফের মাধ্যমে চল্লিশ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হয়েছে। ঘুষের টাকা না পৌঁছার কারণে নানা অজুহাতে পণ্য খালাস বন্ধ রেখে নিলামের ভয় দেখানো হচ্ছে- এমন অভিযোগ সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের।

এদিকে, কার্গো খালাস বন্ধ রাখার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী ও প্রবাসীরা বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন। দুই সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে কার্গো খালাসের কাজ বন্ধ রেখেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। কি কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে কর্তৃপক্ষ সেই বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নাই সংস্থাটির। আর কার্গো খালাস ও ফ্লাইট না আসার ফলে বিদেশ থেকে পাঠানো পণ্য সংগ্রহ করতে পারছেন না প্রবাসীরা। এ কারণে স্থানীয় সিএনএফ ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব