১১:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

রূপগঞ্জে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েও থেমে যাননি এডভোকেট জহিরুল ইসলাম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় এরকম সময়ে রূপগঞ্জ থানার মানুষের কাছে আশীর্বাদ হয়ে এসেছিলেন এমন একজন যিনি নিজেও ছোটবেলায় হারিয়েছিলেন দৃষ্টিশক্তি। তিনি এডভোকেট জহিরুল ইসলাম। ছোটবেলায় টাইফয়েডে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েও থেমে যাননি জহিরুল। লেখাপড়া করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন অন্তরে পুষে রেখেছিলেন। বাবা ছিলেন পাটকলের কর্মী। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দৃষ্টিশক্তি হারানো ছেলেদের পড়ালেখার উপযুক্ত ব্যবস্থা ছিল না। তাই মিরপুরে বিশেষ চাহিদা স্কুলে শিশু শ্রেণী এবং ১৯৯৩ সালে দ্যি সেলফিশ আর্মি স্কুল থেকে ১৯৯৭ সালে পঞ্চম শ্রেণী পাস করেন। ১৯৯৮ সালে জামালপুর সিংহজানী বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৩ সালে মাধ্যমিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

২০০৩ সালে এসএসসি পাস করে ভর্তি হন নারায়ণগঞ্জের সরকারি আদমজী এম ডব্লিউ কলেজে। সেখান থেকে ২০০৫ সালে এইচএসসি পাস করেন। ২০০৫-৬ সেশনে ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। ২০০৯ সালে সেখান থেকেই এলএলবি( অনার্স) পাস করেন। এবং ২০১০ সালে এলএলএম(মাস্টার্স) পাস করেন। ২০১৩ সালে বার কাউন্সিল থেকে সনদ প্রাপ্ত হন। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সদস্য আছেন ।

কম সময়েই আইন ব্যবসায় সুনাম অর্জন করেন তিনি। চোখের আলো না থাকা তার এ পর্যন্ত আসায় কোন বাধা তৈরি করতে পারেনি। কিন্তু অন্তরের আলোয় তিনি ঠিকই দেখেছেন অন্য সব শারীরিক সীমাবদ্ধ মানুষের কষ্ট ও সংগ্রাম। তাই স্বার্থপরের মত চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। প্রতিষ্ঠা করেছেন রূপগঞ্জ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ, যার বর্তমান সভাপতি তিনি। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনটি রূপগঞ্জের প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

বিপদ-আপদে যেমন ত্রাণ দিয়েছে; তেমনই কেউ নির্যাতিত হলে তার প্রতিকার করেছে। বেকারদের স্বাবলম্বী করার ব্যবস্থা করেছে। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছে। বিবাহযোগ্য মেয়েদের বিয়ের খরচ জুগিয়েছে। সবশেষ করোনা মহামারীর সময়ে জহিরুল ইসলাম ও তার সংগঠনের উদ্যোগে রূপগঞ্জের ৮শ’র বেশি প্রতিবন্ধীর পরিবারকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। লকডাউনের অনিশ্চিত সময়ে এ কার্যক্রম ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যক্তিজীবনে এডভোকেট জহিরুল ইসলাম, পিতাঃ মৃত গোলবক্স ভূঁইয়া, মাতাঃ মজিরম বেগম,গ্রামের বাড়ি অইরাবো ৩ নং ওয়ার্ড তারাবো পৌরসভা। জহিরুল ইসলাম বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। ছেলে তাহমিদ ইসলাম তাজ(৯) সে হলি চাইল্ড স্কুলে লেখাপড়া করে। মেয়ে জারিন ইসলাম প্রথনা(৫) । জহিরুল ইসলাম শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে জয় করেছেন। একজন পিতা, স্বামী, আইনজীবী ও সমাজসেবক হিসেবে সফলতার সাথে নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। স্কুলে থাকাকালীন সময়ে বিতর্কসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ bh

 

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

রূপগঞ্জে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েও থেমে যাননি এডভোকেট জহিরুল ইসলাম

প্রকাশিত : ০৬:৪১:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর ২০২২

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় এরকম সময়ে রূপগঞ্জ থানার মানুষের কাছে আশীর্বাদ হয়ে এসেছিলেন এমন একজন যিনি নিজেও ছোটবেলায় হারিয়েছিলেন দৃষ্টিশক্তি। তিনি এডভোকেট জহিরুল ইসলাম। ছোটবেলায় টাইফয়েডে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েও থেমে যাননি জহিরুল। লেখাপড়া করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন অন্তরে পুষে রেখেছিলেন। বাবা ছিলেন পাটকলের কর্মী। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দৃষ্টিশক্তি হারানো ছেলেদের পড়ালেখার উপযুক্ত ব্যবস্থা ছিল না। তাই মিরপুরে বিশেষ চাহিদা স্কুলে শিশু শ্রেণী এবং ১৯৯৩ সালে দ্যি সেলফিশ আর্মি স্কুল থেকে ১৯৯৭ সালে পঞ্চম শ্রেণী পাস করেন। ১৯৯৮ সালে জামালপুর সিংহজানী বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৩ সালে মাধ্যমিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

২০০৩ সালে এসএসসি পাস করে ভর্তি হন নারায়ণগঞ্জের সরকারি আদমজী এম ডব্লিউ কলেজে। সেখান থেকে ২০০৫ সালে এইচএসসি পাস করেন। ২০০৫-৬ সেশনে ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। ২০০৯ সালে সেখান থেকেই এলএলবি( অনার্স) পাস করেন। এবং ২০১০ সালে এলএলএম(মাস্টার্স) পাস করেন। ২০১৩ সালে বার কাউন্সিল থেকে সনদ প্রাপ্ত হন। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সদস্য আছেন ।

কম সময়েই আইন ব্যবসায় সুনাম অর্জন করেন তিনি। চোখের আলো না থাকা তার এ পর্যন্ত আসায় কোন বাধা তৈরি করতে পারেনি। কিন্তু অন্তরের আলোয় তিনি ঠিকই দেখেছেন অন্য সব শারীরিক সীমাবদ্ধ মানুষের কষ্ট ও সংগ্রাম। তাই স্বার্থপরের মত চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। প্রতিষ্ঠা করেছেন রূপগঞ্জ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ, যার বর্তমান সভাপতি তিনি। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনটি রূপগঞ্জের প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

বিপদ-আপদে যেমন ত্রাণ দিয়েছে; তেমনই কেউ নির্যাতিত হলে তার প্রতিকার করেছে। বেকারদের স্বাবলম্বী করার ব্যবস্থা করেছে। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছে। বিবাহযোগ্য মেয়েদের বিয়ের খরচ জুগিয়েছে। সবশেষ করোনা মহামারীর সময়ে জহিরুল ইসলাম ও তার সংগঠনের উদ্যোগে রূপগঞ্জের ৮শ’র বেশি প্রতিবন্ধীর পরিবারকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। লকডাউনের অনিশ্চিত সময়ে এ কার্যক্রম ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যক্তিজীবনে এডভোকেট জহিরুল ইসলাম, পিতাঃ মৃত গোলবক্স ভূঁইয়া, মাতাঃ মজিরম বেগম,গ্রামের বাড়ি অইরাবো ৩ নং ওয়ার্ড তারাবো পৌরসভা। জহিরুল ইসলাম বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। ছেলে তাহমিদ ইসলাম তাজ(৯) সে হলি চাইল্ড স্কুলে লেখাপড়া করে। মেয়ে জারিন ইসলাম প্রথনা(৫) । জহিরুল ইসলাম শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে জয় করেছেন। একজন পিতা, স্বামী, আইনজীবী ও সমাজসেবক হিসেবে সফলতার সাথে নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। স্কুলে থাকাকালীন সময়ে বিতর্কসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ bh