০১:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

মামলা থেকে বাঁচতে বিবৃতি কিনেছেন ড. ইউনূস!

দেশের একমাত্র নোবেল লরিয়েট ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মামলা থেকে বাঁচতে এবং স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভাড়াটে জনসংযোগ আর নিউজওয়্যারকে ব্যবহার করে বিবৃতি আদায় করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। এর আগে টাকার বিনিময়ে মার্কিন পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও ছাপিয়েছিলেন তিনি। ব্যয়বহুল এসব বিজ্ঞাপন ছাপানো এবং বিবৃতি আদায়ের লক্ষ্য একটাই – বিচার এড়ানো।

দেশে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় বিচার চলছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে সাক্ষ্যগ্রহণ। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানা অথবা কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হবে তাকে।

মামলা মোকাবিলায় দেশের আদালতে আইনী সব সুযোগ নিয়েছেন ড. ইউনূস। আইনী লড়াইয়ে হেরে এবার বিচারককে প্রভাবিত করতে ভিন্ন কৌশলে হাঁটছেন এ নোবেল বিজয়ী। নিজের পক্ষে শতাধিক নোবেল বিজয়ীসহ ১৮৩ বিশিষ্ট ব্যক্তির স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোভিত্তিক ভাড়াটে জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান সিজিওয়ান পিআর নিউজওয়্যার গত ২৭ আগস্ট তাদের ওয়েবসাইটে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করে।

সিজিওয়ান পিআর মূলত টাকার বিনিময়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে থাকে। আর সিজিওয়ন পিআরকে বিবৃতিটি সরবরাহ করে নাগরিকদের ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করা আরেকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা সিভিক কাভারেজ। এ সংস্থাটির অন্যতম প্রধান ব্যক্তি স্যাম ডেলি হ্যারিস মূলত ইউনূসের ঘনিষ্ঠজন।

মাস দুয়েক আগের কথা। বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে ইউনূসের পক্ষে খেলা চিঠি দেন ৪০ বিশ্ব নেতা। অভিযোগ আছে, লবিস্টের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন আকারে ওই বিবৃতি দেয়াতে খরচ করা হয় ৮০ লাখ টাকা।

মামলা ঠেকাতে ও বিচার এড়াতে টাকা খরচ করে দেয়ানো এমন বিবৃতি সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির অপকৌশল বলে মনে করেন বাদীপক্ষের আইনজীবীরা।

এর আগে, দানকর ফাঁকির মামলা নিয়েও গড়িমসি করেন ড.ইউনূস। এ আদালত, সে আদালত ঘুরে সবশেষ ২৩ জুলাই সর্বোচ্চ আদালত বলেন, প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা কর পরিশোধ করতেই হবে তাকে। দুদিন পরই বকেয়া দানকর হিসেবে ১২ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৬০৮ টাকা পরিশোধ করেন ইউনূস।

সবশেষ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রমিকের টাকা পাচারের অভিযোগে আরেকটি মামলা হয়েছে। ২১ কোটি টাকারও বেশি পাওনার অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের ১৮ শ্রমিকের করা এ মামলায় তার বিরুদ্ধে সমনও জারি করেছেন আদালত। এছাড়া ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে তিন হাজার কোটি টাকা পাচার অভিযোগের তদন্ত চলছে।

এদিকে, মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সকালে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করতে প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্ব নেতাদের দেয়া চিঠিকে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ বলে দাবি করেছেন মামলা সংশ্লিষ্ট সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এ সময় ড. ইউনূসের মামলার বিষয়ে বিশ্বনেতাদের মাতামাতি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ‘বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের আইন ও বিচার বিভাগকে না জেনে, পর্যালোচনা না করে অযাচিতভাবে বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করছেন। তারা আদালতে ড. ইউনূসের মামলা নিয়ে এত মাতামাতি করছেন কেন আমার বুঝে আসে না।’

খুরশীদ আলম খান বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ ধারণা পোষণ না করার অনুরোধ জানিয়ে বিশ্ব নেতাদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান। বলেন, ‘বাংলাদেশে আসুন, দেখুন কত স্বচ্ছতার সাথে ড. ইউনূসের মামলার বিচারকাজ চলছে। শুধু ড. ইউনূসের কথায় বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ ধারণা পোষণ করবেন না।’

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :

মামলা থেকে বাঁচতে বিবৃতি কিনেছেন ড. ইউনূস!

প্রকাশিত : ০৩:৪৮:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৩

মামলা থেকে বাঁচতে এবং স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভাড়াটে জনসংযোগ আর নিউজওয়্যারকে ব্যবহার করে বিবৃতি আদায় করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। এর আগে টাকার বিনিময়ে মার্কিন পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও ছাপিয়েছিলেন তিনি। ব্যয়বহুল এসব বিজ্ঞাপন ছাপানো এবং বিবৃতি আদায়ের লক্ষ্য একটাই – বিচার এড়ানো।

দেশে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় বিচার চলছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে সাক্ষ্যগ্রহণ। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানা অথবা কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হবে তাকে।

মামলা মোকাবিলায় দেশের আদালতে আইনী সব সুযোগ নিয়েছেন ড. ইউনূস। আইনী লড়াইয়ে হেরে এবার বিচারককে প্রভাবিত করতে ভিন্ন কৌশলে হাঁটছেন এ নোবেল বিজয়ী। নিজের পক্ষে শতাধিক নোবেল বিজয়ীসহ ১৮৩ বিশিষ্ট ব্যক্তির স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোভিত্তিক ভাড়াটে জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান সিজিওয়ান পিআর নিউজওয়্যার গত ২৭ আগস্ট তাদের ওয়েবসাইটে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করে।

সিজিওয়ান পিআর মূলত টাকার বিনিময়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে থাকে। আর সিজিওয়ন পিআরকে বিবৃতিটি সরবরাহ করে নাগরিকদের ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করা আরেকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা সিভিক কাভারেজ। এ সংস্থাটির অন্যতম প্রধান ব্যক্তি স্যাম ডেলি হ্যারিস মূলত ইউনূসের ঘনিষ্ঠজন।

মাস দুয়েক আগের কথা। বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে ইউনূসের পক্ষে খেলা চিঠি দেন ৪০ বিশ্ব নেতা। অভিযোগ আছে, লবিস্টের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন আকারে ওই বিবৃতি দেয়াতে খরচ করা হয় ৮০ লাখ টাকা।

মামলা ঠেকাতে ও বিচার এড়াতে টাকা খরচ করে দেয়ানো এমন বিবৃতি সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির অপকৌশল বলে মনে করেন বাদীপক্ষের আইনজীবীরা।

এর আগে, দানকর ফাঁকির মামলা নিয়েও গড়িমসি করেন ড.ইউনূস। এ আদালত, সে আদালত ঘুরে সবশেষ ২৩ জুলাই সর্বোচ্চ আদালত বলেন, প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা কর পরিশোধ করতেই হবে তাকে। দুদিন পরই বকেয়া দানকর হিসেবে ১২ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৬০৮ টাকা পরিশোধ করেন ইউনূস।

সবশেষ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রমিকের টাকা পাচারের অভিযোগে আরেকটি মামলা হয়েছে। ২১ কোটি টাকারও বেশি পাওনার অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের ১৮ শ্রমিকের করা এ মামলায় তার বিরুদ্ধে সমনও জারি করেছেন আদালত। এছাড়া ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে তিন হাজার কোটি টাকা পাচার অভিযোগের তদন্ত চলছে।

এদিকে, মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সকালে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করতে প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্ব নেতাদের দেয়া চিঠিকে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ বলে দাবি করেছেন মামলা সংশ্লিষ্ট সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এ সময় ড. ইউনূসের মামলার বিষয়ে বিশ্বনেতাদের মাতামাতি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ‘বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের আইন ও বিচার বিভাগকে না জেনে, পর্যালোচনা না করে অযাচিতভাবে বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করছেন। তারা আদালতে ড. ইউনূসের মামলা নিয়ে এত মাতামাতি করছেন কেন আমার বুঝে আসে না।’

খুরশীদ আলম খান বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ ধারণা পোষণ না করার অনুরোধ জানিয়ে বিশ্ব নেতাদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান। বলেন, ‘বাংলাদেশে আসুন, দেখুন কত স্বচ্ছতার সাথে ড. ইউনূসের মামলার বিচারকাজ চলছে। শুধু ড. ইউনূসের কথায় বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ ধারণা পোষণ করবেন না।’

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ