ইউরোপে প্রবেশ এবং স্থায়ী হওয়ার ক্ষেত্রে অভিবাসন প্রত্যাশীদের পছন্দের তালিকায় অন্যতম দেশ পর্তুগাল। এই চাহিদাকে পুঁজি করে পর্তুগালের লিসবনে একটি জালিয়াত চক্র গড়ে তুলেছেন একাধিক বাংলাদেশি। এমনই অভিযোগ এনে সম্প্রতি পর্তুগালের লিসবনে একটি অপরাধমূলক সংস্থাকে ভেঙে দিয়েছে ফরেন অ্যান্ড বর্ডার সার্ভিস-সেফ। এই সংস্থাটি বাংলাদেশী নাগরিকদের বসবাসের অনুমতি দেওয়ার জন্য প্রতারণামূলক প্রকল্পের মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসন এবং নথি জালিয়াতির অপরাধে জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে পর্তুগাল।
গত ২৭ অক্টোবর অপারেশন ‘রাইট টাইম’ নামে এ অভিযান পরিচালনা করেন সেফ-এর ১০ জন পরিদর্শক। এসময় কয়েকটি কম্পিউটার এবং বিভিন্ন ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়। অভিযুক্তরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহেদুল ইসলাম, আকিব রাহমান; সিলেটের সাহেদ আহমেদ তামজিদ।
সেফ জানিয়েছে, প্রতারকচক্রটি একটি কোম্পানির মাধ্যমে মার্টিম মনিজ এলাকায় রুয়া ডো বেনফর্মোসোতে এক সেট মিথ্যা নথি বিক্রি করেছিল- এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রটির আস্তানা ভেঙে দেওয়া হয়। এছাড়াও সংস্থাটি পর্তুগিজ আবাসিক পারমিট পাওয়ার অনুমতি সংক্রান্ত ভুয়া প্রত্যায়িত নথি সরবরাহ করেছিল।
পর্তুগিজ অথরিটির অভিযানের পর খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতারকচক্রটির মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন অভিবাসনপ্রত্যাশী বহু বাংলাদেশী, পাকিস্তানি ও ভারতীয় নাগরিক। এছাড়া চক্রটি সেজদা এন্টারপ্রাইজ, সেজদা কনসালটেন্সি, সেজদা ট্রাভেল, সেজদা স্টুডিও, সেজদা ইসলামিক শপ, সেজদা হিজামা সেন্টার, সেজদা হেয়ার ড্রেসার, সেজদা এডভোকেট সার্ভিস, সেজদা হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম নামে অনেকগুলো অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেছে।
এই চক্রটির আরেকটি প্রতিষ্ঠানগুলো সেজদা মানি ট্রান্সফার। যেটির পরিচালনা দায়িত্বে রয়েছেন আকিব রহমান ও সাহেদুল ইসলাম। এটি মূলত হুন্ডি কারবার। এর মাধ্যমে তারা প্রতি মাসে লাখ লাখ ইউরো মানি লন্ডারিং করে থাকে বলে অভিযোগে জানানো হয়। এছাড়া তাদের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সেজদা কনসালটেন্সির মূল দায়িত্বে রয়েছেন সাহেদ আহমেদ তামজিদ। এই কনসালটেন্সির ব্যানারে তারা অবৈধ ঠিকানা বিক্রি, অবৈধ কোম্পানির কন্ট্রাক্ট বিক্রি, ডুপ্লিকেট ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়ে দেওয়া, ৫০০ ইউরোর বিনিময়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি এবং বাংলাদেশ অ্যাম্বাসিসহ সকল প্রকার অবৈধ সিল ব্যবহার করে ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রসেস করে থাকে। প্রত্যেক লাইসেন্স বাবদ তারা ২- ৩ হাজার ইউরো করে নিয়েছে তারা। এভাবে তারা লাখ লাখ ইউরো হাতিয়ে নিয়েছে।
এ ঘটনায় মূল আসামিসহ সবার বিরুদ্ধে সেফ মামলা করেছে এবং অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। এতে বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং দেশের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।
বিজনেস বাংলাদেশ/একে

























