দাগনভূঞা সড়কের ফুটপাথ দখল করে অবৈধভাবে টঙ দোকান বসানোর কারণে গুরুত্বপূর্ণ জিরো পয়েন্ট সড়কে জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। দাগনভূঞা কেন্দ্রিক মহাসড়কটি ফোর লেন হওয়ার পরও সিএনজি অটোরিক্সা ও ফুটপাত দখলের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে ছাত্র-ছাত্রী ও পথচারীরা।
উপজেলা প্রশাসন ও পৌর প্রশাসকের অফিস এবং বাসভবনের আধা কিলোর মধ্যে অবৈধ দখলদারদের দাপটে পৌর শহরের জিরো পয়েন্টের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে দীর্ঘ দিন সড়ক সঙ্কুচিত হয়ে আসায় জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি হচ্ছে। আর এসব দোকানে চলে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন। এই বিদ্যুৎ লাইন এক পক্ষ ভাড়া দিয়ে থাকে। দোকান প্রতি দৈনিক ২০ টাকা নেওয়া হয়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জিরো পয়েন্টের আতাতুর্ক স্কুলের গেইট থেকে চৌমুহনী রোড়ে ডাক বাংলা পর্যন্ত সড়কের উভয় অবৈধ টঙ দোকান বসে চা সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে। দাগনভূঞা পৌর শহরে ফুটপাত দখল করে পাশাপাশি দোকান নিয়ে ফলের ব্যবসা করছেন শতাধিকের অধিক। দোকানীদের তথ্য মতে, ঘরের মালিকরা বছর বছর সিকিউরিটি বাড়াচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এদিকে ফুটপাতে বসানো দোকানীদের জায়গা বা ফুট হিসেব করে নিচ্ছেন কয়েক লাখ টাকা করে (আধিপত্য)। মাসিক ভাড়া সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা। স্থায়ী দোকানদার থেকে এডভান্স নিচ্ছেন ২০/৩০ লাখ টাকার মধ্যে।
এত টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে তিনি কি লসে ব্যবসা করবেন? মোটেও না। এজন্য ফেনী থেকে দাগনভূঞা ফলের মুল্যর ব্যবধান অনেক। এটাও এক ধরনের সিন্ডিকেট তবে ব্যাবসায়ীদের মন্তব্য তারা প্রতিমাসে খরচ ও লভ্যাংশ বাড়াতে ফলের দাম নিচ্ছেন যেমন খুশী তেমন। অর্থাৎ দর কষাকষি। মধ্যেখানে দিনদিন ফলের দাম বৃদ্ধির কারনে নিরব কষ্ট মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের। তাদের বিষয়ে কেউ ভাবেননি কোন পরিবার মাসে এক কেজি বা দুই কেজি ফল কিনতে কতটা বেগ পোহাতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে পজিশন নিয়ে এক] সিন্ডিকেট দুই] ফল ব্যবসায়ীরা লস দিয়ে ব্যবসা করবেন না। লাভবান হচ্ছেন বা শোষন করছেন পজিশন বিক্রেতা কিংবা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের দোকান মালিকরা। পরিসংখ্যানে দেখা যায় ফেনী জেলায় দাগনভূঞা উপজেলা পৌর শহরে ফল কেনা-বেচার বিশাল মার্কেট চাহিদা অনুযায়ী। ফরেন রেমিট্যান্স বৈদেশিক পরিবার বেশী থাকায় এখানে দরদাম নিয়ে তেমন একটা ইফেক্ট পড়ছেনা। পৌর মেয়র সাহেব ফল সিন্ডিকেট বিষয়ে আগামীতে পদক্ষেপ গ্রহনের জোর দাবি সচেতনমহলের।
ফুটপাত পজিশন কারা বিক্রি করেন কারা বসান আবার কারা উঠিয়ে দেন এসব বিষয়ে রয়েছে নানান মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তবে পৌর মেয়র জানান, যার তার দোকানের সামনে বসিয়ে দেন বিভিন্ন ধরনের দোকান যার ভাড়া নেন স্থায়ী দোকানীরা। নিয়মানুযায়ী তারাই সৌন্দর্য ও যানযট সৃষ্টি এবং পৌরসভার নিয়মনীতির বাহিরে কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এটা বেশীদিন হতে দেয়া যায়না। আগামীতে কঠোরভাবে এ বিষয়ে পর্যায়ক্রমে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করা হবেও জানান তিনি।
দাগনভূঞা আতাতুর্ক সরকারি মড়েল প্রাথমিক বিদ্যালয় গেইট সংলগ্ন ফুটপাত দখল করে দোকান। চারলেন সড়ক নির্মান কাজ চলমানে ভ্রাম্যমান দোকানীদের নিয়ে চলছে নিরব বানিজ্য। একবার তুলে দিবেন আবার বসাবেন। অবস্থা দেখে মনে হয় দখল করতে পারলেই পারমানেন্ট। গরীব অসহায় হতদরিদ্র দোকানীদের নিয়ে আর কতদিন চলবে জায়গার ফুট বিক্রি করার বানিজ্য। এ বিষয়ে এক ফুটপাত দোকানী জানান, এগুলো অনেক হিসেব নিকাশ আছে আপনি বুঝবেন না। কারা বুঝবেন এ বিষয় প্রশ্ন রয়ে যায়। বিদ্যালয় কতৃপক্ষ নিরব ভূমিকা পালন করছেন বলে জানান অভিভাবকগণ।
ফুটপাতের প্রতিটি দোকান থেকে ২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত দৈনিক হারে তোলা হয়। এটির একটি অংশ চলে যায় বিটের টাকা নামে প্রশাসনের কাছে। বিভিন্ন সময় পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে আবার দখল কায়েম হচ্ছে। মূলত রাজনৈতিক পরিচয় বহন করে এক শ্রেণীর সুবিধাভোগী যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তখন তার হয়ে সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করে থাকে।
ফুটপাতের ব্যাবসায়ীরা বলেন, বাজারের ইজারাদার ফয়েজ মিয়া আমাদের থেকে দৈনিক গন্ডি হিসেবে টাকা কালেকশন করে।
বাজারের ডাকের নিয়ম অনুযায়ী পৌরসভা থেকে কাচা বাজারের ডাক দেওয়া হয়েছে। ফুটপাতের ব্যাবসা অবৈধ। এখান থেকে গন্ডি নেওয়ার বিধান নেই। দাগনভূঞা বাজারের ইজারাদার ফয়েজ মিয়া বলেন, আমরা পৌরসভা থেকে বাজারের ডাক নিয়েছি তাই আমরা প্রতিদিন টাকা কালেশন করি। ফুটপাতের কিছু দোকান থেকেও তোলা হয়।
পৌর মেয়র জানান, যার তার দোকানের সামনে বসিয়ে দেন বিভিন্ন ধরনের দোকান যার ভাড়া নেন স্থায়ী দোকানীরা। নিয়মানুযায়ী তারাই সৌন্দর্য ও যানযট সৃষ্টি এবং পৌরসভার নিয়মনীতির বাহিরে কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এটা বেশীদিন হতে দেয়া যায়না। আগামীতে কঠোরভাবে এ বিষয়ে পর্যায়ক্রমে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করা হবেও জানান তিনি। ফুটপাতের ইজারার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন আমরা ফুটপাত ইজারা দিতে যাব কেন। ফুটপাতের থেকে গন্ডি নেওয়ারকোন বিধান নেই।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিবেদিতা চাকমার কাছে জনদুর্ভোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা অভিযান করে আসার পর আবার ফুটপাত দখল হয়ে যায়। আমরা সকলের সহযোগীতা কামনা করছি। জনদুর্ভোগ লাঘবে উপজেলায় অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

























