০৫:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

টানা তিনবার চা উৎপাদনে দ্বিতীয় উত্তরাঞ্চল

উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় (পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারী) প্রতি বছরই বাড়ছে চায়ের আবাদ এবং উৎপাদন।
সদ্য সমাপ্ত (২০২৩) মৌসুমে ১২ হাজার ১৩২ দশমিক ১৮ একর সমতল জমির ৩০টি চা বাগান এবং ৮ হাজারেরও অধিক ক্ষুদ্রায়তনের চা বাগান থেকে চা উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার ২৩০ কেজি।
যা বিগত বছরের তুলনায় এক লাখ ৬৫ হাজার ২২৬ কেজি বেশি। এই উৎপাদনে টানা তিনবারের মত দ্বিতীয় অবস্থান দখলে এ অঞ্চল। বৃহস্পতিবার সকালে পঞ্চগড়স্থ বাংলাদেশ চা বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষিবিদ আমির হোসেন তথ্য নিশ্চিত করেন।
চা বোর্ড জানান, এবছর এসব বাগান থেকে ৮ কোটি ৬১ লাখ ৪৬ হাজার ৭০৪ কেজি সবুজ কাঁচা চা পাতা উত্তোলন করা হয়। যা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাটের চলমান ২৮ টি কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে এক কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার ২৩০ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। এই উৎপাদন জাতীয় উৎপাদনের ১৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
চা বোর্ড জানিয়েছে, ২০২২ সালে এ অঞ্চলে চা আবাদের পরিমাণ ছিলো ১২ হাজার ৭৯ দশমিক ০৬ একর। উৎপাদন হয়েছিলো এক কোটি ৭৭ লাখ ৫৯ হাজার ২২৬ কেজি। সেই তুলনায় গত এক বছরে আবাদ বেড়েছে ৫৩ দশমিক ১২ একর। আর উৎপাদন বেড়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার ২২৬ কেজি।
চা বোর্ড আরো জানিয়েছে, সিলেট অঞ্চলের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম চা উৎপাদন অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে পঞ্চগড়। পঞ্চগড়কে অনুসরণ করে চা চাষে এগিয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলা। একসময়ের পতিত গো-চারণ ভূমি এখন চায়ের সবুজ পাতায় ভরে উঠছে। আন্তর্জাতিক মানের চা উৎপাদন হওয়ায় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এ অঞ্চলের চা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারেও। চা-বাগানের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠায় সৃষ্টি হয়েছে মানুষের কর্মসংস্থান।
চা বোর্ডের তথ্য মতে, উত্তরবঙ্গের ৫ জেলার মোট ১২ হাজার ১৩২ দশমিক ১৮ একর সমতল জমির চা আবাদের মধ্যে পঞ্চগড়েই ১০ হাজার ২৬৭ দশমিক ২৮ একর। এছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে এক হাজার ৪৫৭ দশমিক ২৯ একর, লালমনিরহাটে ২৪৮ দশমিক ০২ একর, দিনাজপুরে ৮৯ একর এবং নীলফামারীতে ৭০ দশমিক ৫৯ একর আবাদ রয়েছ।
পঞ্চগড়স্থ বাংলাদেশ চা বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, ‘সমতল ভূমিতে চা চাষের জন্য পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। ১৯৯৬ সালে সর্বপ্রথম পঞ্চগড়ে চা চাষের পরিকল্পপনা হাতে নেয়া হয় এবং ২০০০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষুদ্র পর্যায়ে চা চাষ শুরু হয়। বিগত বছরগুলোতে এ অঞ্চলে চা চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও এবার তেমন বাড়েনি।
তিনি বলেন, টানা তিনবারের মত এ অঞ্চল চা উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে। কিন্তু উৎপাদনের তুলনায় বাজারজাত পর্যাপ্ত না হওয়ায় ন্যায্য দাম নিয়ে সঙ্কায় রয়েছে সংশ্লিষ্টরা। ফলে ক্ষুদ্র চাষিরাও কাঁচা পাতার দাম পাচ্ছেন না। ন্যায্য দাম এবং বাজারজাতে জটিলতা না হলে আবাদ এবং উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পেত।
তিনি আরো বলেন, ‘চা চাষ সম্প্রসারণে চাষিদের বিভিন্ন সহায়তার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করে স্বল্পমূল্যে উন্নত জাতের চারা সরবরাহ করা হচ্ছে। ‘ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুলে’র মাধ্যমে কর্মশালা হচ্ছে। চাষিদের সমস্যা সমাধানে ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ নামে একটি মোবাইল এপস চালু করা হয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ে একটি পেস্ট ম্যানেজমেন্ট ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে চাষিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, রোগবালাই ও পোকা দমনে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সহায়তা দেয়া হয়।’

শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আসলামের মামলা প্রত্যাহারের দাবি

টানা তিনবার চা উৎপাদনে দ্বিতীয় উত্তরাঞ্চল

প্রকাশিত : ০৩:৫২:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় (পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারী) প্রতি বছরই বাড়ছে চায়ের আবাদ এবং উৎপাদন।
সদ্য সমাপ্ত (২০২৩) মৌসুমে ১২ হাজার ১৩২ দশমিক ১৮ একর সমতল জমির ৩০টি চা বাগান এবং ৮ হাজারেরও অধিক ক্ষুদ্রায়তনের চা বাগান থেকে চা উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার ২৩০ কেজি।
যা বিগত বছরের তুলনায় এক লাখ ৬৫ হাজার ২২৬ কেজি বেশি। এই উৎপাদনে টানা তিনবারের মত দ্বিতীয় অবস্থান দখলে এ অঞ্চল। বৃহস্পতিবার সকালে পঞ্চগড়স্থ বাংলাদেশ চা বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষিবিদ আমির হোসেন তথ্য নিশ্চিত করেন।
চা বোর্ড জানান, এবছর এসব বাগান থেকে ৮ কোটি ৬১ লাখ ৪৬ হাজার ৭০৪ কেজি সবুজ কাঁচা চা পাতা উত্তোলন করা হয়। যা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাটের চলমান ২৮ টি কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে এক কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার ২৩০ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। এই উৎপাদন জাতীয় উৎপাদনের ১৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
চা বোর্ড জানিয়েছে, ২০২২ সালে এ অঞ্চলে চা আবাদের পরিমাণ ছিলো ১২ হাজার ৭৯ দশমিক ০৬ একর। উৎপাদন হয়েছিলো এক কোটি ৭৭ লাখ ৫৯ হাজার ২২৬ কেজি। সেই তুলনায় গত এক বছরে আবাদ বেড়েছে ৫৩ দশমিক ১২ একর। আর উৎপাদন বেড়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার ২২৬ কেজি।
চা বোর্ড আরো জানিয়েছে, সিলেট অঞ্চলের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম চা উৎপাদন অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে পঞ্চগড়। পঞ্চগড়কে অনুসরণ করে চা চাষে এগিয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলা। একসময়ের পতিত গো-চারণ ভূমি এখন চায়ের সবুজ পাতায় ভরে উঠছে। আন্তর্জাতিক মানের চা উৎপাদন হওয়ায় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এ অঞ্চলের চা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারেও। চা-বাগানের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠায় সৃষ্টি হয়েছে মানুষের কর্মসংস্থান।
চা বোর্ডের তথ্য মতে, উত্তরবঙ্গের ৫ জেলার মোট ১২ হাজার ১৩২ দশমিক ১৮ একর সমতল জমির চা আবাদের মধ্যে পঞ্চগড়েই ১০ হাজার ২৬৭ দশমিক ২৮ একর। এছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে এক হাজার ৪৫৭ দশমিক ২৯ একর, লালমনিরহাটে ২৪৮ দশমিক ০২ একর, দিনাজপুরে ৮৯ একর এবং নীলফামারীতে ৭০ দশমিক ৫৯ একর আবাদ রয়েছ।
পঞ্চগড়স্থ বাংলাদেশ চা বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, ‘সমতল ভূমিতে চা চাষের জন্য পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। ১৯৯৬ সালে সর্বপ্রথম পঞ্চগড়ে চা চাষের পরিকল্পপনা হাতে নেয়া হয় এবং ২০০০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষুদ্র পর্যায়ে চা চাষ শুরু হয়। বিগত বছরগুলোতে এ অঞ্চলে চা চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও এবার তেমন বাড়েনি।
তিনি বলেন, টানা তিনবারের মত এ অঞ্চল চা উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে। কিন্তু উৎপাদনের তুলনায় বাজারজাত পর্যাপ্ত না হওয়ায় ন্যায্য দাম নিয়ে সঙ্কায় রয়েছে সংশ্লিষ্টরা। ফলে ক্ষুদ্র চাষিরাও কাঁচা পাতার দাম পাচ্ছেন না। ন্যায্য দাম এবং বাজারজাতে জটিলতা না হলে আবাদ এবং উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পেত।
তিনি আরো বলেন, ‘চা চাষ সম্প্রসারণে চাষিদের বিভিন্ন সহায়তার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করে স্বল্পমূল্যে উন্নত জাতের চারা সরবরাহ করা হচ্ছে। ‘ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুলে’র মাধ্যমে কর্মশালা হচ্ছে। চাষিদের সমস্যা সমাধানে ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ নামে একটি মোবাইল এপস চালু করা হয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ে একটি পেস্ট ম্যানেজমেন্ট ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে চাষিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, রোগবালাই ও পোকা দমনে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সহায়তা দেয়া হয়।’