১২:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪

পাবনায় আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে প্রায় আধাঘন্টা সড়ক অবরোধ

সুজানগর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা ও লুটপাটের মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছে শাহিন সমর্থকরা। বুধবার (৩ জুলাই) দুপুর ১২ টার দিকে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের চিনাখড়া বাজার এলাকায় এ মানবন্ধনে অংশ নেয় শাহিনের কয়েক শত সমর্থক। মানববন্ধন শেষে প্রায় আধাঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে মানবন্ধনকারীরা। এসময় সকল প্রকার যানবহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে ওই এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। আধাঘন্টা বিক্ষোভ শেষে সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
বিভিন্ন স্লোগানে বিক্ষোভকারীরা শাহিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করেন। একইসাথে দ্রুত এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আ. ওহাব নিয়ন্ত্রিত একটি গুন্ডা বাহিনী সুজানগরে হামলা মারধর সহ নানা তান্ডব চালাচ্ছে। এদিকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে শাহিন ও তার সমর্থকদের। এসময় এমন প্রহসনের মামলা থেকে শাহিনের অব্যাহতি দাবি করে আলামিন ও মোজাহার বিশ্বাসের প্রকৃত হত্যাকারীদের শাস্তির দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
এব্যাপারে মানবন্ধনে অংশ নেয়া সুজানগর পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম রেজা, উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী সুবোধ কুমার নটো ও পৌর আ.লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ কথা বলেন গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে।
তারা বলেন, খোদ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আ. ওহাব এবং দুদক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানের নির্দেশে উপজেলার রানীনগরের যুবলীগ কর্মী আলামিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এঘটনায় নিহতের পরিবার প্রকৃত হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মানুষের বিপদের কথা শুনে আলামিন কখনো বসে থাকেনি। অর্থ দিয়ে, শ্রম দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এজন্য আলামিনের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিলো। উপজেলা নির্বাচনে আনারসের ভোট করা  ও তার এই জনপ্রিয়তার জন্য তাকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এরপর শুনেছি সেখানে একটি গোলমাল বাধে। এতে আহত হন আ.লীগ কর্মী মোজাহার বিশ্বাস। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৭ জুন তিনি মারা যান। অগত্যাই আমরা শুনতে পাই এই মোজাহার বিশ্বাস হত্যা ও ওই এলাকায় বিভিন্ন বাড়িঘর লুটপাটের অভিযোগে করা মামলায় শাহিনুজ্জামান শাহিনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
তারা বলেন, রাজনৈতিক হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে শাহিন সহ নিরীহ অনেকের নামেই এ মামলা করিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আ. ওহাব। এ মামলা দায়েরের আগে কর্মী বাহিনী নিয়ে তারা কয়েক দফায় বৈঠকও করেছেন। এই মামলা নিছক প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়। এ ন্যাক্কারজনক ও প্রহসনের মামলার তীব্র নিন্দা জানাই। দ্রুত এ মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি হত্যায় প্রকৃত জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।
এদিকে শাহিনুজ্জামান শাহিনকে মোজাহার বিশ্বাস হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী দাবি করেছেন সুজানগর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আ. ওহাব। তিনি বলেন, একটি ঘটনায় আলামিন নিহত হন। এরপর শাহিনুজ্জামান শাহিন নিজে ওই এলাকায় উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দিয়ে রাতভর বিভিন্ন বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছেন। অসংখ্য লোককে আহত করেছেন। মোজাহার বিশ্বাসও আহত হন। পরে মারা যান।
তিনি বলেন, এই ঘটনায় আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। নিহতের ছেলে বড় সরকারি অফিসার। শিক্ষিত পরিবার। তারাই নিজেদের মত করে মামলা করেছেন। মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। পরে শুনেছি।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুন মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে আলামিনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে আ.লীগ সভাপতি আ. ওহাবের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এঘটনার দিন রাতে ওই এলাকার আ. ওহাবের সমর্থকদের কয়েকটি বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন দুদক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানের বাবা মোজাহার বিশ্বাস। পরে গত ২৭ জুন মারা যান তিনি। আলামিন হত্যার ঘটনায় দুদক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করে আলামিনের পরিবার। অন্যদিকে মোজাহার বিশ্বাস হত্যার ঘটনায় আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিনকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের হয়। তবে দুটি হত্যা মামলায় আসামিদের কাউকেই এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
ট্যাগ :

পাবনায় আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে প্রায় আধাঘন্টা সড়ক অবরোধ

প্রকাশিত : ০৯:৩৫:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪
সুজানগর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা ও লুটপাটের মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছে শাহিন সমর্থকরা। বুধবার (৩ জুলাই) দুপুর ১২ টার দিকে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের চিনাখড়া বাজার এলাকায় এ মানবন্ধনে অংশ নেয় শাহিনের কয়েক শত সমর্থক। মানববন্ধন শেষে প্রায় আধাঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে মানবন্ধনকারীরা। এসময় সকল প্রকার যানবহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে ওই এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। আধাঘন্টা বিক্ষোভ শেষে সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
বিভিন্ন স্লোগানে বিক্ষোভকারীরা শাহিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করেন। একইসাথে দ্রুত এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আ. ওহাব নিয়ন্ত্রিত একটি গুন্ডা বাহিনী সুজানগরে হামলা মারধর সহ নানা তান্ডব চালাচ্ছে। এদিকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে শাহিন ও তার সমর্থকদের। এসময় এমন প্রহসনের মামলা থেকে শাহিনের অব্যাহতি দাবি করে আলামিন ও মোজাহার বিশ্বাসের প্রকৃত হত্যাকারীদের শাস্তির দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
এব্যাপারে মানবন্ধনে অংশ নেয়া সুজানগর পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম রেজা, উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী সুবোধ কুমার নটো ও পৌর আ.লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ কথা বলেন গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে।
তারা বলেন, খোদ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আ. ওহাব এবং দুদক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানের নির্দেশে উপজেলার রানীনগরের যুবলীগ কর্মী আলামিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এঘটনায় নিহতের পরিবার প্রকৃত হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মানুষের বিপদের কথা শুনে আলামিন কখনো বসে থাকেনি। অর্থ দিয়ে, শ্রম দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এজন্য আলামিনের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিলো। উপজেলা নির্বাচনে আনারসের ভোট করা  ও তার এই জনপ্রিয়তার জন্য তাকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এরপর শুনেছি সেখানে একটি গোলমাল বাধে। এতে আহত হন আ.লীগ কর্মী মোজাহার বিশ্বাস। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৭ জুন তিনি মারা যান। অগত্যাই আমরা শুনতে পাই এই মোজাহার বিশ্বাস হত্যা ও ওই এলাকায় বিভিন্ন বাড়িঘর লুটপাটের অভিযোগে করা মামলায় শাহিনুজ্জামান শাহিনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
তারা বলেন, রাজনৈতিক হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে শাহিন সহ নিরীহ অনেকের নামেই এ মামলা করিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আ. ওহাব। এ মামলা দায়েরের আগে কর্মী বাহিনী নিয়ে তারা কয়েক দফায় বৈঠকও করেছেন। এই মামলা নিছক প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়। এ ন্যাক্কারজনক ও প্রহসনের মামলার তীব্র নিন্দা জানাই। দ্রুত এ মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি হত্যায় প্রকৃত জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।
এদিকে শাহিনুজ্জামান শাহিনকে মোজাহার বিশ্বাস হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী দাবি করেছেন সুজানগর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আ. ওহাব। তিনি বলেন, একটি ঘটনায় আলামিন নিহত হন। এরপর শাহিনুজ্জামান শাহিন নিজে ওই এলাকায় উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দিয়ে রাতভর বিভিন্ন বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছেন। অসংখ্য লোককে আহত করেছেন। মোজাহার বিশ্বাসও আহত হন। পরে মারা যান।
তিনি বলেন, এই ঘটনায় আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। নিহতের ছেলে বড় সরকারি অফিসার। শিক্ষিত পরিবার। তারাই নিজেদের মত করে মামলা করেছেন। মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। পরে শুনেছি।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুন মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে আলামিনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে আ.লীগ সভাপতি আ. ওহাবের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এঘটনার দিন রাতে ওই এলাকার আ. ওহাবের সমর্থকদের কয়েকটি বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন দুদক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানের বাবা মোজাহার বিশ্বাস। পরে গত ২৭ জুন মারা যান তিনি। আলামিন হত্যার ঘটনায় দুদক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করে আলামিনের পরিবার। অন্যদিকে মোজাহার বিশ্বাস হত্যার ঘটনায় আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিনকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের হয়। তবে দুটি হত্যা মামলায় আসামিদের কাউকেই এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।