০২:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪

স্পেনের চতুর্থ নাকি ইংল্যান্ডের প্রথম শিরোপা ?

ফুটবল বিশারদদের অধিকাংশ পূর্বাভাসেই তুলনামূলক ফেবারিট বলা হচ্ছে স্পেনকে। তার কারণ আর কিছু নয়, তরুণ আর অভিজ্ঞতার মিশেলে গড়া লুইস দে লা ফুয়েন্তের দলটি। পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই তারা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে আসছে। স্পেন গ্রুপপর্ব শেষ করেছিল সবার শীর্ষে থেকে। জর্জিয়াকে ৪-১ গোলে হারানোর পর, জার্মানি-ফ্রান্সকে হারিয়েছে সমান ২-১ ব্যবধানে। এভাবে ২০১২ সালের পর এই প্রথম তারা কোনো বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালেও উঠে গেছে। তাদের সামনে এখন আর কেবল একটাই বাধা, ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইউরোর শিরোপা ছোঁয়াই বড় লক্ষ্য ৬৩ বছর বয়সী লা ফুয়েন্তের।

৩০ দিন, ৫০ ম্যাচ এবং ১১৪ গোল। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আগে এটি পুরো আসরের হালখাতা। যাতে নতুন অঙ্ক যোগ করতে যাচ্ছে ইউরোপের দুই জায়ান্ট স্পেন এবং ইংল্যান্ড। এই দুই পরাশক্তি আজ (রোববার) রাতে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায় বার্লিনে ইউরোর শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। স্পেনের লক্ষ্য চতুর্থবারের চ্যাম্পিয়নশিপ, অন্যদিকে গতবারের রানারআপ ইংলিশরা প্রথম শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে।

তার দলে আছে লামিনে ইয়ামাল ও নিকো উইলিয়ামসের মতো তরুণ গতিসম্পন্ন তারকা। আছেন দানি ওলমো, রদ্রিগো, ফ্যাবিয়ান রুইজ কিংবা আলভারো মোরাতাদের মতো অভিজ্ঞরা। দানি কারভাহাল, ফার্নান্দো নাচো কিংবা গোলবারে সিমন্সরাও তাদের প্রতিপক্ষকে শক্ত চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত। অন্যদিকে, ইংল্যান্ডেরও আক্রমণভাগ থেকে শুরু করে গোলবার পর্যন্ত তারকায় ঠাসা একটি দল। হ্যারি কেইন, জ্যুড বেলিংহাম, ফিল ফোডেন, ডেকলান রাইস ও পিকফোর্ডরাও সমান তালে লড়াই জমিয়ে তুলতে পারেন।

তবে ইংলিশ থ্রি লায়ন্সদের জন্য এই ম্যাচ অনেক আক্ষেপ ঘোচানোর। তারা একবারই ফাইনাল খেলেছিল গত আসরে। কিন্তু সেখানে তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয় ইতালির বিপক্ষে হেরে। এবার টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলছে মহাদেশীয় সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতায়। অন্যদিকে ২০০৮ ও ২০১২ সালে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড স্প্যানিশদের দখলে। এর আগে ১৯৬৪ আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়াও রানারআপ হয়েছে একবার।

দুই দলের জন্যই ইউরো ফাইনাল মাইলফলকের। স্পেন জিতলে পাবে এই আসরের চতুর্থ শিরোপা। হবে ইউরোর রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন। অন্যদিকে, ইংল্যান্ড জিতলে তারা পাবে প্রথমবার ইউরো জয়ের স্বাদ। চার বছর আগেই ফাইনালে গিয়েছিল তারা। তবে ইতালির কাছে সেবার নিজেদের ঘরের মাঠেই স্বপ্নভঙ্গ হয় ইংলিশদের। এবার নিজেদের নামের বিচারে আশানুরূপ ফর্ম দেখাতে না পারলেও, ফাইনালে উঠেই বুঝিয়ে দিয়েছে শিরোপার লড়াইয়েও তারা বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না!

এবার দেখা যাক দুই দলের মুখোমুখি পরিসংখ্যান। উভয়ের দ্বৈরথে অবশ্য এগিয়ে রয়েছে ইংল্যান্ড। এখন পর্যন্ত স্পেন-ইংল্যান্ড সবমিলিয়ে ২৭ বার মুখোমুখি হয়েছে। ইংল্যান্ড জিতেছে ১৪টিতে, হেরেছে ১০টিতে, তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। যদিও গত ছয় বছরে সাক্ষাৎ হয়নি স্পেন-ইংল্যান্ডের। সাম্প্রতিককালে এই প্রথম স্পেন-ইংল্যান্ড দ্বৈরথ হতে চলেছে। দুই দেশের সর্বশেষ দেখা হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর। সেবার নেশন্স লিগের লিগ পর্বে ৩-২ গোলের ব্যবধানে জয় পায় ইংল্যান্ড।

কাউকেই পরিষ্কার ফেবারিট ভাবতে নারাজ স্পেন কোচ দে লা ফুয়েন্তে। তিনি বলছেন, ‘আমরা জানি বিশ্লেষণ কীভাবে চলে, ফাইনালে কেউ ফেবারিট নয়, যেমনটা নকআউট পর্বেও ছিল না। ফেবারিট বেছে নেওয়াও আমাদের কাজ নয়। বল নিয়ে আমরা ডমিনেট করার চেষ্টা করব এবং কাউন্টার অ্যাটাক এড়াতেও সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। আমাদের সবারই ম্যাচ জয়ের অনেক সুযোগ রয়েছে।’

ইংল্যান্ড কোচ সাউথগেটও ভয়হীন খেলারই ইঙ্গিত দিয়েছেন, ‘ফাইনালে কী হতে পারে, এটা নিয়ে ভয় নেই আমার, কারণ সবকিছু দেখে ফেলেছি ইতোমধ্যে। ছেলেদেরকে আমি ভয়ডরহীন দেখতে চাই, কারণ আমাদের যদি হারার ভয় না থাকে, তাহলে জয়ের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। অনেক রেকর্ড ভাঙা হয়ে গেছে। তবে আমরা জানি, এই কাজটা এখনও বাকি আছে। গোটা ফুটবল বিশ্বের সম্মান আদায় করে নিতে হলে এই ট্রফি আমাদের জিততে হবে। রূপকথায় বিশ্বাস নেই আমার, তবে অবশ্যই স্বপ্ন দেখায় বিশ্বাস করি এবং বড় স্বপ্ন দেখছি আমরা।’

 

বিজনেস বাংলাদেশ/এমএফ

স্পেনের চতুর্থ নাকি ইংল্যান্ডের প্রথম শিরোপা ?

প্রকাশিত : ০৮:২৪:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪

ফুটবল বিশারদদের অধিকাংশ পূর্বাভাসেই তুলনামূলক ফেবারিট বলা হচ্ছে স্পেনকে। তার কারণ আর কিছু নয়, তরুণ আর অভিজ্ঞতার মিশেলে গড়া লুইস দে লা ফুয়েন্তের দলটি। পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই তারা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে আসছে। স্পেন গ্রুপপর্ব শেষ করেছিল সবার শীর্ষে থেকে। জর্জিয়াকে ৪-১ গোলে হারানোর পর, জার্মানি-ফ্রান্সকে হারিয়েছে সমান ২-১ ব্যবধানে। এভাবে ২০১২ সালের পর এই প্রথম তারা কোনো বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালেও উঠে গেছে। তাদের সামনে এখন আর কেবল একটাই বাধা, ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইউরোর শিরোপা ছোঁয়াই বড় লক্ষ্য ৬৩ বছর বয়সী লা ফুয়েন্তের।

৩০ দিন, ৫০ ম্যাচ এবং ১১৪ গোল। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আগে এটি পুরো আসরের হালখাতা। যাতে নতুন অঙ্ক যোগ করতে যাচ্ছে ইউরোপের দুই জায়ান্ট স্পেন এবং ইংল্যান্ড। এই দুই পরাশক্তি আজ (রোববার) রাতে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায় বার্লিনে ইউরোর শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। স্পেনের লক্ষ্য চতুর্থবারের চ্যাম্পিয়নশিপ, অন্যদিকে গতবারের রানারআপ ইংলিশরা প্রথম শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে।

তার দলে আছে লামিনে ইয়ামাল ও নিকো উইলিয়ামসের মতো তরুণ গতিসম্পন্ন তারকা। আছেন দানি ওলমো, রদ্রিগো, ফ্যাবিয়ান রুইজ কিংবা আলভারো মোরাতাদের মতো অভিজ্ঞরা। দানি কারভাহাল, ফার্নান্দো নাচো কিংবা গোলবারে সিমন্সরাও তাদের প্রতিপক্ষকে শক্ত চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত। অন্যদিকে, ইংল্যান্ডেরও আক্রমণভাগ থেকে শুরু করে গোলবার পর্যন্ত তারকায় ঠাসা একটি দল। হ্যারি কেইন, জ্যুড বেলিংহাম, ফিল ফোডেন, ডেকলান রাইস ও পিকফোর্ডরাও সমান তালে লড়াই জমিয়ে তুলতে পারেন।

তবে ইংলিশ থ্রি লায়ন্সদের জন্য এই ম্যাচ অনেক আক্ষেপ ঘোচানোর। তারা একবারই ফাইনাল খেলেছিল গত আসরে। কিন্তু সেখানে তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয় ইতালির বিপক্ষে হেরে। এবার টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলছে মহাদেশীয় সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতায়। অন্যদিকে ২০০৮ ও ২০১২ সালে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড স্প্যানিশদের দখলে। এর আগে ১৯৬৪ আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়াও রানারআপ হয়েছে একবার।

দুই দলের জন্যই ইউরো ফাইনাল মাইলফলকের। স্পেন জিতলে পাবে এই আসরের চতুর্থ শিরোপা। হবে ইউরোর রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন। অন্যদিকে, ইংল্যান্ড জিতলে তারা পাবে প্রথমবার ইউরো জয়ের স্বাদ। চার বছর আগেই ফাইনালে গিয়েছিল তারা। তবে ইতালির কাছে সেবার নিজেদের ঘরের মাঠেই স্বপ্নভঙ্গ হয় ইংলিশদের। এবার নিজেদের নামের বিচারে আশানুরূপ ফর্ম দেখাতে না পারলেও, ফাইনালে উঠেই বুঝিয়ে দিয়েছে শিরোপার লড়াইয়েও তারা বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না!

এবার দেখা যাক দুই দলের মুখোমুখি পরিসংখ্যান। উভয়ের দ্বৈরথে অবশ্য এগিয়ে রয়েছে ইংল্যান্ড। এখন পর্যন্ত স্পেন-ইংল্যান্ড সবমিলিয়ে ২৭ বার মুখোমুখি হয়েছে। ইংল্যান্ড জিতেছে ১৪টিতে, হেরেছে ১০টিতে, তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। যদিও গত ছয় বছরে সাক্ষাৎ হয়নি স্পেন-ইংল্যান্ডের। সাম্প্রতিককালে এই প্রথম স্পেন-ইংল্যান্ড দ্বৈরথ হতে চলেছে। দুই দেশের সর্বশেষ দেখা হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর। সেবার নেশন্স লিগের লিগ পর্বে ৩-২ গোলের ব্যবধানে জয় পায় ইংল্যান্ড।

কাউকেই পরিষ্কার ফেবারিট ভাবতে নারাজ স্পেন কোচ দে লা ফুয়েন্তে। তিনি বলছেন, ‘আমরা জানি বিশ্লেষণ কীভাবে চলে, ফাইনালে কেউ ফেবারিট নয়, যেমনটা নকআউট পর্বেও ছিল না। ফেবারিট বেছে নেওয়াও আমাদের কাজ নয়। বল নিয়ে আমরা ডমিনেট করার চেষ্টা করব এবং কাউন্টার অ্যাটাক এড়াতেও সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। আমাদের সবারই ম্যাচ জয়ের অনেক সুযোগ রয়েছে।’

ইংল্যান্ড কোচ সাউথগেটও ভয়হীন খেলারই ইঙ্গিত দিয়েছেন, ‘ফাইনালে কী হতে পারে, এটা নিয়ে ভয় নেই আমার, কারণ সবকিছু দেখে ফেলেছি ইতোমধ্যে। ছেলেদেরকে আমি ভয়ডরহীন দেখতে চাই, কারণ আমাদের যদি হারার ভয় না থাকে, তাহলে জয়ের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। অনেক রেকর্ড ভাঙা হয়ে গেছে। তবে আমরা জানি, এই কাজটা এখনও বাকি আছে। গোটা ফুটবল বিশ্বের সম্মান আদায় করে নিতে হলে এই ট্রফি আমাদের জিততে হবে। রূপকথায় বিশ্বাস নেই আমার, তবে অবশ্যই স্বপ্ন দেখায় বিশ্বাস করি এবং বড় স্বপ্ন দেখছি আমরা।’

 

বিজনেস বাংলাদেশ/এমএফ