০৮:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫
দায়িত্ব দেয়ার ছড়াছড়ি, দূর্নীতি ঢাকতে কৌশলী

ম্যানেজ পাওয়ারে এখনও বহাল ওয়াসা এমডি ফজলুল্লাহ

চট্টগ্রাম ওয়াসা এমডি একেএম ফজলুল্লাহ ২০০৯ সালে প্রথম দফায় নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় মেয়াদ বাড়িয়ে আর পদ ছাড়তে হয়নি। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন, যে কারণে বারেবারে তিনি চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডির দায়িত্ব পান। ৫ আগস্ট সরকারপ্রধান পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর ঢাকা ওয়াসা এমডি পদত্যাগ করেন। কিন্তু নানা অনিয়ম-দুর্র্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ থাকার পরও পদত্যাগ করেনি চট্টগ্রাম ওয়াসা এমডিকে। সরকারের পক্ষ তাঁর চুক্তি বাতিল করা হচ্ছে এমন গুঞ্জন আসলেও এখনো তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। কেউ কেউ বলছেন, সাবেক সরকারের আমলের ম্যানেজ পাওয়ার এখনো কাজ করছে ফজলুল্লাহর ক্ষেত্রে।

৮২ বছর বয়সি চট্টগ্রাম ওয়াসা এমডি প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ জন্ম ১৯৪২ সালে। তিনি চট্টগ্রাম ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় কর্তব্যে অবহেলার জন্য বরখাস্ত হন। ১৯৯৮ সালে তিনি চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। পরে তিনি সোশ্যাল সেভিংস এন্ড কো অপারেটিভ ক্রেডিট লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হন। সাধারণ গ্রাহকদের কোট কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ১/১১ এর সময় তিনি গ্রেপ্তারও হন দুইবার। সেসময় তিনি জেলও খাটেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০০৯ সালের জুলাই মাসে তিনি দলীয় কোটায় ওয়াসার চেয়ারম্যান পদে আসেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ড গঠনের পর চেয়ারম্যান পদের চেয়ে ক্ষমতাশালী করা হয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদকে। তাই চেয়ারম্যান পদ বাদ দিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদেই আসীন হন ফজলুল্লাহ। সেই থেকে বর্তমান পর্যন্ত আট দফা মেয়াদ বাড়িয়ে ১৫ বছর ধরে স্বপদে বহাল রয়েছেন তিনি। গড়ে তুলেছেন অনিয়ম, দুর্নীতির এক বিশাল রাজত্ব। তাঁর আমলে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পাঁচটি বড় প্রকল্প নেওয়া হয়। এর মধ্যে কোনো প্রকল্পের কাজই নির্ধারিত মেয়াদে শেষ হয়নি। ব্যয়ও বাড়াতে হয়েছে তিনটির। নগরে পানির সংকটও কাটেনি। বরং অন্তত ১২ বার বাড়ানো হয়েছে পানির দাম।

চট্টগ্রাম ওয়াসার এই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এমডি স্যারের ম্যানেজ পাওয়ার ভালো। সবাইকে তিনি ম্যানেজ করতে পারেন। অন্য সংস্থার প্রধানরা যেখানে অফিস করতে ভয় পাচ্ছেন, সেখানে এতো অভিযোগ থাকার পরও এমডি স্যার অফিস করছেন। মনে হচ্ছে আগের মতো তিনি সব কিছু ম্যানেজ করেছেন।

গত ১৫ বছরে চট্টগ্রাম ওয়াসার অধীনে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। বাস্তবায়িত হয়েছে বড় পাঁচটি প্রকল্প। নিজের এক ডজনেরও বেশি আত্মীয় স্বজনকে দিয়েছেন চাকরি। এমনকি সুয়্যারেজ প্রকল্পের কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে নিজের মেয়ে সুমাইয়া বিনতে ফজলুল্লাহর প্রতিষ্ঠানকে। কাগজে পত্রে বাস্তবায়নাধীন ও শেষ হওয়া প্রকল্পগুলোর ঠিকাদার বিদেশি প্রতিষ্ঠান হলেও কৌশলে উপ-ঠিকাদার হিসবে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাবান নেতারা বাগিয়ে নেয় কাজ। নেতাদের সাথে ভাগভাটোয়ারার মাধ্যমে পাচার হয়েছে অর্থ। সময় ক্ষেপনের মাধ্যমে বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের ব্যয়ও।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসা ফজলুল্লাহ দূর্নীতির গডফাদার। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। আওয়ামী লীগ সরকারের বিশ্বস্থ লোক হিসাবে ১৫বছর টানা ওয়াসার পদ দখল করে রেখে ১২বার পানির দাম বাড়িয়েছে। নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে বোর্ড গঠন করেছে। জনবল নিয়োগ থেকে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ কোনো কিছু বাদ রাখেনি। দুদকে মামলা থাকার পরও তাকে আটকানো যায়নি। উন্নয়নের গল্প শুনিয়ে সে প্রতারণা করেছে। বিভিন্ন সংস্থায় সংস্কার হলেও চট্টগ্রাম ওয়াসা এমডি এখনো বহাল আছে। চট্টগ্রামে তাঁর বিচার হওয়া দরকার।

চট্টগ্রাম ওয়াসা এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বলেন, সরকার বলেছে, ‘সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল’। কিন্তু মনে হচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা সেটার আওতামুক্ত। ধারাবাহিকভাবে অনিয়ম-দুর্র্নীতি করেছে এমডি ফজলুল্লাহ। মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ওনি হিসাব-নিকাশ করে চলেন। এখনো সেই হিসাব-নিকাশেই আছে মনে হচ্ছে।

ওয়াসার এমডি আধিপত্য বিস্তার করে জ্যৈষ্ঠতা ভেঙে পছন্দের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রকল্পের পরিচালক ও নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব দিয়েছেন। নিজের ভাগ্নি-ভাগ্নিজামাই থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজনকে চাকুরি ও ঠিকাদার হিসাবে কাজ দিয়েছেন। এমনকি ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও অনেককে সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে অবৈধভাবে চলতি দায়িত্ব ও অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছেন। গুঞ্জন চলছে, যে কোনো সময় পালাতে পারেন আমেরিকার গ্রিনকার্ডধারী প্রকৌশলী ফজলুল্লাহ। ইতিমধ্যে দেশ ছাড়ার যাবতীয় অনুমতিও নিয়ে রেখেছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, আমি যদি চট্টগ্রাম শহর ছেড়ে যেতাম বহুত আগে যেতাম। আমার তো মনে বল আছে। আমি তো অন্যায় কিছু করিনি। চট্টগ্রাম শহরকে ধারণ করছি। আমি যতগুলো প্রকল্প আনছি, করছি আর কেউ তো করেনি। আমি কেন পালিয়ে যাব?

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন তো সবাই দাবি নিয়ে আসতেছে। এমনে অসুবিধার কিছু নেই। অতিরিক্ত দায়িত্বগুলো চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দাবির সামনে কি করবো? যেটা দেয়া যায়, লস নেই সেটা দেয়া। আগে আমরা চিন্তা করেছিলাম একসাথে সবাইকে প্রমোশন দিব। কিন্তু সেটা হয়নি। এখন চলতি দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে, দিয়ে দিলাম।

এদিকে সরকার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন সংস্থায় যখন সংস্কার কাজ চলমান সে সময়ে এসে চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের সভা আহবান করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার অনলাইন ফ্লাটফর্ম জুমে এ সভা আহ্বান করা হয়। গত ১৮ আগষ্ট ওয়াসা সচিব শাহিদা ফাতেমা চৌধুরী স্বাক্ষরিত নোটিশে এ সভা আহ্বান করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে বোর্ড সভা আহ্বান করা নিয়ে তুমুল বিতর্কের জন্ম দেয়। বিতর্কের মুখে গতকাল বোর্ডসভা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানায় ওয়াসা এমডি ফজলুল্লাহ।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/এমএফ

দায়িত্ব দেয়ার ছড়াছড়ি, দূর্নীতি ঢাকতে কৌশলী

ম্যানেজ পাওয়ারে এখনও বহাল ওয়াসা এমডি ফজলুল্লাহ

প্রকাশিত : ০৫:০৫:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪

চট্টগ্রাম ওয়াসা এমডি একেএম ফজলুল্লাহ ২০০৯ সালে প্রথম দফায় নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় মেয়াদ বাড়িয়ে আর পদ ছাড়তে হয়নি। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন, যে কারণে বারেবারে তিনি চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডির দায়িত্ব পান। ৫ আগস্ট সরকারপ্রধান পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর ঢাকা ওয়াসা এমডি পদত্যাগ করেন। কিন্তু নানা অনিয়ম-দুর্র্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ থাকার পরও পদত্যাগ করেনি চট্টগ্রাম ওয়াসা এমডিকে। সরকারের পক্ষ তাঁর চুক্তি বাতিল করা হচ্ছে এমন গুঞ্জন আসলেও এখনো তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। কেউ কেউ বলছেন, সাবেক সরকারের আমলের ম্যানেজ পাওয়ার এখনো কাজ করছে ফজলুল্লাহর ক্ষেত্রে।

৮২ বছর বয়সি চট্টগ্রাম ওয়াসা এমডি প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ জন্ম ১৯৪২ সালে। তিনি চট্টগ্রাম ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় কর্তব্যে অবহেলার জন্য বরখাস্ত হন। ১৯৯৮ সালে তিনি চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। পরে তিনি সোশ্যাল সেভিংস এন্ড কো অপারেটিভ ক্রেডিট লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হন। সাধারণ গ্রাহকদের কোট কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ১/১১ এর সময় তিনি গ্রেপ্তারও হন দুইবার। সেসময় তিনি জেলও খাটেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০০৯ সালের জুলাই মাসে তিনি দলীয় কোটায় ওয়াসার চেয়ারম্যান পদে আসেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ড গঠনের পর চেয়ারম্যান পদের চেয়ে ক্ষমতাশালী করা হয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদকে। তাই চেয়ারম্যান পদ বাদ দিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদেই আসীন হন ফজলুল্লাহ। সেই থেকে বর্তমান পর্যন্ত আট দফা মেয়াদ বাড়িয়ে ১৫ বছর ধরে স্বপদে বহাল রয়েছেন তিনি। গড়ে তুলেছেন অনিয়ম, দুর্নীতির এক বিশাল রাজত্ব। তাঁর আমলে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পাঁচটি বড় প্রকল্প নেওয়া হয়। এর মধ্যে কোনো প্রকল্পের কাজই নির্ধারিত মেয়াদে শেষ হয়নি। ব্যয়ও বাড়াতে হয়েছে তিনটির। নগরে পানির সংকটও কাটেনি। বরং অন্তত ১২ বার বাড়ানো হয়েছে পানির দাম।

চট্টগ্রাম ওয়াসার এই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এমডি স্যারের ম্যানেজ পাওয়ার ভালো। সবাইকে তিনি ম্যানেজ করতে পারেন। অন্য সংস্থার প্রধানরা যেখানে অফিস করতে ভয় পাচ্ছেন, সেখানে এতো অভিযোগ থাকার পরও এমডি স্যার অফিস করছেন। মনে হচ্ছে আগের মতো তিনি সব কিছু ম্যানেজ করেছেন।

গত ১৫ বছরে চট্টগ্রাম ওয়াসার অধীনে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। বাস্তবায়িত হয়েছে বড় পাঁচটি প্রকল্প। নিজের এক ডজনেরও বেশি আত্মীয় স্বজনকে দিয়েছেন চাকরি। এমনকি সুয়্যারেজ প্রকল্পের কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে নিজের মেয়ে সুমাইয়া বিনতে ফজলুল্লাহর প্রতিষ্ঠানকে। কাগজে পত্রে বাস্তবায়নাধীন ও শেষ হওয়া প্রকল্পগুলোর ঠিকাদার বিদেশি প্রতিষ্ঠান হলেও কৌশলে উপ-ঠিকাদার হিসবে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাবান নেতারা বাগিয়ে নেয় কাজ। নেতাদের সাথে ভাগভাটোয়ারার মাধ্যমে পাচার হয়েছে অর্থ। সময় ক্ষেপনের মাধ্যমে বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের ব্যয়ও।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসা ফজলুল্লাহ দূর্নীতির গডফাদার। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। আওয়ামী লীগ সরকারের বিশ্বস্থ লোক হিসাবে ১৫বছর টানা ওয়াসার পদ দখল করে রেখে ১২বার পানির দাম বাড়িয়েছে। নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে বোর্ড গঠন করেছে। জনবল নিয়োগ থেকে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ কোনো কিছু বাদ রাখেনি। দুদকে মামলা থাকার পরও তাকে আটকানো যায়নি। উন্নয়নের গল্প শুনিয়ে সে প্রতারণা করেছে। বিভিন্ন সংস্থায় সংস্কার হলেও চট্টগ্রাম ওয়াসা এমডি এখনো বহাল আছে। চট্টগ্রামে তাঁর বিচার হওয়া দরকার।

চট্টগ্রাম ওয়াসা এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বলেন, সরকার বলেছে, ‘সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল’। কিন্তু মনে হচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা সেটার আওতামুক্ত। ধারাবাহিকভাবে অনিয়ম-দুর্র্নীতি করেছে এমডি ফজলুল্লাহ। মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ওনি হিসাব-নিকাশ করে চলেন। এখনো সেই হিসাব-নিকাশেই আছে মনে হচ্ছে।

ওয়াসার এমডি আধিপত্য বিস্তার করে জ্যৈষ্ঠতা ভেঙে পছন্দের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রকল্পের পরিচালক ও নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব দিয়েছেন। নিজের ভাগ্নি-ভাগ্নিজামাই থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজনকে চাকুরি ও ঠিকাদার হিসাবে কাজ দিয়েছেন। এমনকি ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও অনেককে সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে অবৈধভাবে চলতি দায়িত্ব ও অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছেন। গুঞ্জন চলছে, যে কোনো সময় পালাতে পারেন আমেরিকার গ্রিনকার্ডধারী প্রকৌশলী ফজলুল্লাহ। ইতিমধ্যে দেশ ছাড়ার যাবতীয় অনুমতিও নিয়ে রেখেছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, আমি যদি চট্টগ্রাম শহর ছেড়ে যেতাম বহুত আগে যেতাম। আমার তো মনে বল আছে। আমি তো অন্যায় কিছু করিনি। চট্টগ্রাম শহরকে ধারণ করছি। আমি যতগুলো প্রকল্প আনছি, করছি আর কেউ তো করেনি। আমি কেন পালিয়ে যাব?

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন তো সবাই দাবি নিয়ে আসতেছে। এমনে অসুবিধার কিছু নেই। অতিরিক্ত দায়িত্বগুলো চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দাবির সামনে কি করবো? যেটা দেয়া যায়, লস নেই সেটা দেয়া। আগে আমরা চিন্তা করেছিলাম একসাথে সবাইকে প্রমোশন দিব। কিন্তু সেটা হয়নি। এখন চলতি দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে, দিয়ে দিলাম।

এদিকে সরকার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন সংস্থায় যখন সংস্কার কাজ চলমান সে সময়ে এসে চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের সভা আহবান করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার অনলাইন ফ্লাটফর্ম জুমে এ সভা আহ্বান করা হয়। গত ১৮ আগষ্ট ওয়াসা সচিব শাহিদা ফাতেমা চৌধুরী স্বাক্ষরিত নোটিশে এ সভা আহ্বান করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে বোর্ড সভা আহ্বান করা নিয়ে তুমুল বিতর্কের জন্ম দেয়। বিতর্কের মুখে গতকাল বোর্ডসভা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানায় ওয়াসা এমডি ফজলুল্লাহ।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/এমএফ