০৪:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিবিরের ঢাবি শাখার সেক্রেটারির পরিচয় জানা গেল, পদ ছিল ছাত্রলীগেও

সভাপতির পরিচয় প্রকাশের পর তুমুল আলোচনার মধ্যে সামনে এলো ইসলামি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারির পরিচয় ৷ এস এম ফরহাদ নামে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদদীন হলে৷ তিনি ছাত্রলীগেরও পদধারী ছিলেন৷

রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এস এম ফরহাদের রাজনৈতিক পরিচয় সামনে আসার পর নানা আলোচনা তৈরি হয়৷

এরপর খোঁজ নিয়ে এস এম ফরহাদের ছাত্রশিবিরের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে৷ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দায়িত্বশীল এক নেতা নামপ্রকাশ না করার শর্তে এস এম ফরহাদের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।

এ ব্যাপারে ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েমের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তাকে পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেওয়ার পর ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েমের পরিচয় সামনে আসে৷

তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র৷ সাদিক ও ফরহাদ দুজনই চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন৷

রবিবার রাতে শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি জেনারেল এস এম ফরহাদের পরিচয় সামনে এলে তার পরিচিতজনদের অনেকে বিস্ময়প্রকাশ করেন৷ ফরহাদ ২০২২-২৩ বর্ষে কবি জসীমউদদীন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন৷

ক্লাবে এর ঠিক আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এ এস এম কামরুল ইসলাম৷ শুধু তা-ই নয়, জসীমউদদীন হলে চার বছর ধরে ফরহাদের সঙ্গে একই কক্ষে (৩০৮ নম্বর) থেকেছেন তিনি৷

ফরহাদের রাজনৈতিক পরিচয় শুনে বিস্মিত কামরুল রাতে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মানুষ অবাক হয়৷ মাঝেমধ্যে প্রচণ্ড অবাক হয়৷ কেউ কেউ অবাক হয়ে আকাশ থেকে পড়ে৷’

ফরহাদের ছাত্রশিবিরের রাজনৈতিক পরিচয় সামনে আসার পর আরেকটি পরিচয়ও সামনে এসেছে৷ সেটি হলো তিনি ২০২২ সালের নভেম্বরে ঘোষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক৷

এ নিয়ে ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা দেখা গেছে৷ ওই কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর তালিকায় তার নাম দেখা গেছে।

কবি জসীমউদদীন হল ডিবেটিং ক্লাবের একটি ইফতার অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কারিগরি শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এস এম রাকিব সিরাজীর সঙ্গে ফরহাদের একটি ছবি এবং তানভীর হাসানকে ফরহাদের ফুল দেওয়ার আরেকটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে৷

এদিকে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তেই ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা প্রকাশ্যে আসছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম৷

তিনি রবিবার বলেন, তাদের সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পুরো কমিটি খুব দ্রুতই প্রকাশ করা হবে৷

তিনি বলেন, ‘গত সাড়ে ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের আন্ডারগ্রাউন্ড পলিটিক্স (গোপন রাজনীতি) করতে বাধ্য করেছে৷ আমাদের দানব আকারে হাজির করা হয়েছে৷ এটি থেকে আমরা নিস্তার চাই৷ প্রত্যেকে প্রত্যেকের রাজনৈতিক চর্চা করবে, সবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে, কারও ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া হবে না- সেটাই আমাদের চাওয়া ৷’

ট্যাগ :

শিবিরের ঢাবি শাখার সেক্রেটারির পরিচয় জানা গেল, পদ ছিল ছাত্রলীগেও

প্রকাশিত : ০১:৫৭:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সভাপতির পরিচয় প্রকাশের পর তুমুল আলোচনার মধ্যে সামনে এলো ইসলামি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারির পরিচয় ৷ এস এম ফরহাদ নামে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদদীন হলে৷ তিনি ছাত্রলীগেরও পদধারী ছিলেন৷

রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এস এম ফরহাদের রাজনৈতিক পরিচয় সামনে আসার পর নানা আলোচনা তৈরি হয়৷

এরপর খোঁজ নিয়ে এস এম ফরহাদের ছাত্রশিবিরের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে৷ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দায়িত্বশীল এক নেতা নামপ্রকাশ না করার শর্তে এস এম ফরহাদের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।

এ ব্যাপারে ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েমের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তাকে পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেওয়ার পর ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েমের পরিচয় সামনে আসে৷

তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র৷ সাদিক ও ফরহাদ দুজনই চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন৷

রবিবার রাতে শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি জেনারেল এস এম ফরহাদের পরিচয় সামনে এলে তার পরিচিতজনদের অনেকে বিস্ময়প্রকাশ করেন৷ ফরহাদ ২০২২-২৩ বর্ষে কবি জসীমউদদীন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন৷

ক্লাবে এর ঠিক আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এ এস এম কামরুল ইসলাম৷ শুধু তা-ই নয়, জসীমউদদীন হলে চার বছর ধরে ফরহাদের সঙ্গে একই কক্ষে (৩০৮ নম্বর) থেকেছেন তিনি৷

ফরহাদের রাজনৈতিক পরিচয় শুনে বিস্মিত কামরুল রাতে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মানুষ অবাক হয়৷ মাঝেমধ্যে প্রচণ্ড অবাক হয়৷ কেউ কেউ অবাক হয়ে আকাশ থেকে পড়ে৷’

ফরহাদের ছাত্রশিবিরের রাজনৈতিক পরিচয় সামনে আসার পর আরেকটি পরিচয়ও সামনে এসেছে৷ সেটি হলো তিনি ২০২২ সালের নভেম্বরে ঘোষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক৷

এ নিয়ে ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা দেখা গেছে৷ ওই কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর তালিকায় তার নাম দেখা গেছে।

কবি জসীমউদদীন হল ডিবেটিং ক্লাবের একটি ইফতার অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কারিগরি শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এস এম রাকিব সিরাজীর সঙ্গে ফরহাদের একটি ছবি এবং তানভীর হাসানকে ফরহাদের ফুল দেওয়ার আরেকটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে৷

এদিকে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তেই ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা প্রকাশ্যে আসছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম৷

তিনি রবিবার বলেন, তাদের সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পুরো কমিটি খুব দ্রুতই প্রকাশ করা হবে৷

তিনি বলেন, ‘গত সাড়ে ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের আন্ডারগ্রাউন্ড পলিটিক্স (গোপন রাজনীতি) করতে বাধ্য করেছে৷ আমাদের দানব আকারে হাজির করা হয়েছে৷ এটি থেকে আমরা নিস্তার চাই৷ প্রত্যেকে প্রত্যেকের রাজনৈতিক চর্চা করবে, সবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে, কারও ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া হবে না- সেটাই আমাদের চাওয়া ৷’