চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কোনো বাধা ছাড়াই প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে সমুদ্রতল থেকে বালু উত্তোলন করে উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলে নেতিবাচক পরিবর্তন, ভূগর্ভস্থ পানি ও বায়ুদূষণ, প্রাকৃতিক ভূচিত্র নষ্ট করছে। এসব নেতিবাচক প্রভাবের ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে। মানুষও আক্রান্ত হচ্ছে। বালু উত্তোলনে সৃষ্ট বায়ুদূষণে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলের মধ্যে পরিবর্তন ঘটার ফলে তাদের আবাসস্থল যেমন ধ্বংস হচ্ছে। তেমনি তাদের খাদ্যের উৎসও ধ্বংস হচ্ছে। ফলে মৎস্য প্রজনন-প্রক্রিয়া পাল্টে যাওয়ার পাশাপাশি চাষাবাদের জমিও নষ্ট হচ্ছে।
বালু উত্তোলনে পানিদূষণসহ নদীগর্ভের গঠনপ্রক্রিয়া বদলে যাচ্ছে এবং নদী ভাঙছে। পুরো হাইড্রোলজিক্যাল কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বালু উত্তোলনের কাছাকাছি মাটির ক্ষয় যেমন ঘটছে। তেমনি মাটির গুণাগুণও নষ্ট হচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া নলকূপে পানি পাওয়াও কষ্টকর হয়। জলবায়ু পরিবর্তনেও এই বালু উত্তোলনের প্রভাব রয়েছে। উত্তোলন-প্রক্রিয়া ও বালু পরিবহন জলবায়ু পরিবর্তনে সরাসরি ভূমিকা রাখে।
গত চার মাস ধরে উপজেলার কয়েকটি স্থানে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও শিপইয়ার্ড মালিক দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ড্রেজার ব্যবহার করে আসছে। রাত দিন সমুদ্রে চষে বেড়াচ্ছে ১৫/২০টি বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ড্রেজারও।
তারা উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী, কুমিরা ইউনিয়নের বড় কুমিরা, বাড়বকুণ্ড, ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ফুলতল ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আকিলপুর সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ড্রেজার দিয়ে সমুদ্র থেকে বালু তুলে বাল্কহেডে রাখা হচ্ছে। বেড়িবাঁধের ভেতর দিয়ে দেড় থেকে দুই কিলোমিটার পাইপলাইন বসিয়ে সমতলে বালুর স্তুপ করা হয়। পরে এসব বালু ট্রাকে করে বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজন অনুসারে বিক্রি করা হচ্ছে। এদিকে শিপইয়ার্ড মালিকরা সমুদ্র থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তা জাহাজ ভাঙার কারখানার ভিতরে বিশাল আকৃতির পরিখা খনন করে ভর্তি করে রাখছেন। পরে সেখান থেকে এক্সকেভেটরের মাধ্যমে ট্রাক ভর্তি করে ভরাট কাজসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে। আবার কেউ কেউ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বাল্কহেডে ভর্তি করছেন বাল্কহেডে করে বালু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। এভাবেই সীতাকুণ্ড সন্দ্বীপ চ্যানেল এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলন করছেন শিপইয়ার্ড মালিক ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
বালু উত্তোলনের ফলে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় বেশ কিছু গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নির্বিচারে উপকূলীয় বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে। অসংখ্য বন্যপ্রাণী বাস্তচ্যুত হয়েছে। বালুর পানি গ্রামের কৃষি জমি ও বাড়ী ঘরে গড়িয়ে ফসল, গাছপালা, গবাদিপশু ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছে। আলেকদিয়ে, কুমিরা ও জোড়ামতল বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় বর্ষার মৌসুমে নোনা পানি ডুকে প্লাবিত হয়েছে ফসলের মাঠ ও বসতভিটা। শুধু বেড়িবাঁধ নয়, বিলুপ্ত হওয়ার সঙ্কা সরকারের কোটি টাকায় নির্মিত কুমিরা ব্রীজ। বালু উত্তোলনের ফলে ২০২২ সালের মে মাসে ভেঙ্গে যায় ঘাটের জেটি। নতুন করে গড়ে তুলা প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার জেটিরও বেহাল দশা। ফাঁটল ধরেছে সম্পূর্ণ ব্রীজের। ঝুঁকির মধ্যে পারাপার করছেন সাধারণ যাত্রীরা।
ভাঙন দেখা দিয়েছে বেড়িবাঁধে। খসে পড়ছে শত কোটি টাকায় নির্মাণ করা বেড়িবাঁধের হাজার হাজার ব্লক। অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় গুলিয়াখালী, বাঁশবাড়িয়া ও আকিলপুর সমুদ্র সৈকত।
সমুদ্রজুড়ে অনিয়ন্ত্রিত ও অবৈজ্ঞানিক উপায়ে বালু উত্তোলনের ফলে দেশের প্রধান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের প্রবেশমুখ কর্ণফুলীর মোহনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নৌজেটি, পরিবেশ-জীববৈচিত্র ও উপকূলরক্ষার বেড়িবাঁধ। অনিয়ন্ত্রিত বালি উত্তোলন চলতে থাকলে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের প্রবেশমুখ কর্ণফুলীর মোহনায় প্রভাব পড়বে।
এছাড়া সন্দ্বীপ চ্যানেল দিয়ে সন্দ্বীপ, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, হাতিয়াসহ অভ্যন্তরীণ নৌরুটের পণ্যবাহী জাহাজের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।সন্দ্বীপ চ্যানেলে জেগে ওঠা নতুন চরে বর্তমানে যে বে-টার্মিনালের বর্ধিত অংশ হিসেবে ব্যবহারের জন্য নৌজটি করা করা হচ্ছে একসময় এটিও ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
সীতাকুণ্ডের সন্দ্বীপ চ্যানেলটিকে বালু উত্তোলনের বৈধ অঞ্চল বা বালু মহাল ঘোষণা করা হয়নি। ড্রেজিং কার্যক্রম বা বালু উত্তোলনে অনুমোদন নেই জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট কোন সংস্থার। তবুও বালু উত্তোলন থেমে নেই।
দিনরাত সীতাকুণ্ডে উপকূল ধ্বংসের এতসব আগ্রাসী আচরণের পরও নিরব জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। আইন লঙ্ঘন ও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রশাসনকে মেনেজ করে অপরাধীরা সীতাকুণ্ড উপকূলের বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ ড্রেজার ব্যবহার করে উপসাগরের নাব্যতা ব্যাহত করছে। ব্যবসায়ীরা খাড়ি থেকে ফসলি জমিতে বালু নিয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ পাইপ ব্যবহার করছেন। আবার কেউ কেউ দিনরাত ড্রেজারের মাধ্যমে বালু তুলে সকালে ১০০/১৫০ টি বাল্কহেডে বালু ভর্তি করে সেগুলো ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে।
প্রাণনাশের ভয়ে অপরাধীদের পরিচয় গোপন রেখে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত অনেক প্রভাবশালী ও শিপইয়ার্ড মালিকের বিরুদ্ধে সমুদ্র থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগ তুলছেন স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার আকিলপুর এলাকার স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় রাতদিন উপকূল এমনকি সমুদ্রের তলদেশ থেকেও বালু তুলে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন কিছু লোক। ফলে যেকোনো সময় ভেঙে পড়বে সমুদ্র তীরবর্তী অংশ। ফলে উপকূলীয় বনাঞ্চলের পাশাপাশি ক্ষতি হবে বসতবাড়ী ও কৃষিজমিরও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এখান থেকে বালু উত্তোলন করে তারা বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায়। আমরা যদি তাদের নাম বলি তাহলে রাতে ঘরেও থাকতে পারবো না। বালু উত্তোলনের কারণে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। যদি আমরা বালু উত্তোলনে বাঁধা প্রদান করি তাহলে আমাদেরকে ধরে নিয়ে মারবে।
পর্যটকরা বলেন, বাঁশবাড়িয়ার মতই বিনোদনের স্থান ছিল গুলিয়াখালী ও আকিলপুর। কিন্তু স্বার্থান্বেষীরা সমুদ্র থেকে বালু তুলে ধ্বংস করছেন সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থানগুলো। এখন একই কায়দায় সমুদ্রগর্ভ থেকে বালু তুলে গুলিয়াখালী ও আকিলপুরকেও বানানো হচ্ছে মৃত্যুকূপ। এখানকার উপকূলীয় বনভূমিও ধ্বংসের মুখে।
উল্লেখ্য যে, ১৯৮০ দশকে গড়ে ওঠা শিপ ব্রেকিং খাতকে ২০১১ সালে শিল্প ঘোষণা করা হয়। স্ক্র্যাপ জাহাজ কাটার কারণে বিষাক্ত কেমিক্যাল সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় ওই সময় সীতাকুণ্ডের সাতটি মৌজায় জমি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় শিল্পজোন হিসেবে।
নানা সংকটের ফলে এই জোনের ১৮০টি শিপইয়ার্ডের মধ্যে বর্তমানে মাত্র ২২টি চালু আছে। বন্ধ থাকা অনেকগুলো ইয়ার্ড বর্তমানে বালু উত্তোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। তাছাড়া, সমুদ্রে ড্রেজিং বা বালু উত্তোলন করার পূর্বে হাইড্রোগ্রাফি সমীক্ষা করতে হয়। অর্থাৎ নদী বা সমুদ্রের তলদেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বৈজ্ঞানিক উপায়ে ড্রেজিং বা বালু উত্তোলনের রূপরেখা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু শিপইয়ার্ড অঞ্চলে কোন হাইড্রোগ্রাফি সমীক্ষা হয়নি। ফলে বহুমুখী সংকট ও নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
মূলত ২০১৮ সালের দিকে সীতাকুণ্ড চ্যানেলে নতুন চর জেগে ওঠায় শিপইয়ার্ডগুলোতে স্ক্র্যাপ জাহাজ ভিড়তে সমস্যা দেখা দেয়। তখন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ থেকে একটি প্রতিষ্ঠান নিজ খরচে চরের কিছু অংশ ড্রেজিংয়ের জন্য মাত্র ছয় মাসের অনুমোদন পায়। এই চিঠিকে ব্যবহার করে পরে বেশীরভাগ শিপইয়ার্ড ড্রেজিংয়ে নেমে পড়ে। এভাবেই মূলত সমুদ্র চ্যানেলটিতে অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন শুরু হয়।
সে সময়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে অন্তত চার বার পরিদর্শন করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
সর্বশেষ ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর ও ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারী পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে আইনপ্রয়োগসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন। পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়, সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ড ও আকিলপুর সমুদ্র সৈকত এলাকায় তিন লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর ধারা ৫-এর ১ উপ-ধারা অনুযায়ী, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা ৪-এর (খ) অনুযায়ী, সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারী ও বেসরকারী স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। আইন অমান্যকারী দুই বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। বলা বাহুল্য, এসব আইনের কোনো প্রয়োগই সীতাকুণ্ডে দেখা যাচ্ছে না।
সীতাকুণ্ড বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে উপকূলীয় বন ধ্বংস হচ্ছে, পশুপাখির জন্য বিপদ ডেকে আনছে এবং উপকূলের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। তৎপরতায় সীতাকুণ্ড উপকূলীয় বনাঞ্চলের হাজার হাজার গাছ ঝুঁকিতে রয়েছে, শত শত ইতিমধ্যে পড়ে গেছে। সেখানে হরিণসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণী বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোঃ মোজাহিদুর রহমান বলেন, বালু উত্তোলনের অনুমতি ডিসি অফিস দেয় আমরা ত দিনা। এবং বালু উত্তোলনের বৈধ অঞ্চল বা বালু মহাল ঘোষণা করেন ডিসি অফিস আমরা না।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চীফ হাইডোগ্রাফার কমান্ডার মোহাম্মদ শামসিত তাবরীজ বলেন, সমুদ্র থেকে কাউকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সীতাকুণ্ডের সন্দ্বীপ চ্যালেনটিকে বালু উত্তোলনের বৈধ অঞ্চল বা বালু মহাল ঘোষণা করা হয়নি।
বিআইডব্লিউটিএ চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুর রহমান বলেন, সীতাকুণ্ডে সমুদ্র থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি নেই। বালু উত্তোলনের অনুমতির বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে হয়। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া বালু উত্তোলন করে সেটি পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন দেখবে। এই অঞ্চলটিকে বালু মহাল ঘোষণা করা হয়নি।
চট্টগ্রামের সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ আবদুস সাত্তার বলেন যে এই অপরাধ এলাকার সমগ্র সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে। বালু ক্ষেত্র এবং মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে খোলা জায়গা, নদীর তলদেশ ও জলাশয় থেকে বালু উত্তোলন একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ সাদি উর রহিম জাদিদ আজকের বিজনেস বাংলাদেশ পত্রিকাকে বলেন, সীতাকুণ্ড সন্দ্বীপ চ্যানেলে বালু উত্তোলনের অনুমতি বিষয়ে আমাদের কাছে তথ্য নেই। এই চ্যানেলটিকে বালু উত্তোলনের বৈধ অঞ্চল বা বালু মহাল ঘোষণা করা হয়েছে কিনা এটা আমার জানা নেই। এবিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভালো বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, সমুদ্র থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দেখবাল করে। বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে বালু উত্তোলন করা হয়। সুতরাং কেউ যদি অনুমতি না নিয়ে বালু উত্তোলন করে সেটা দেখার দায়িত্ব তাদের।
বিজনেস বাংলাদেশ/ডিএস