গত ১৫ বছর জেল-জুলুম, হামলা-মামলাসহ নানা প্রতিকূলতায় রাজনীতির মাঠে কোণঠাসা ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। চট্টগ্রামেও দলটির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে করা হয় হাজারেরও অধিক মামলা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে পারেনি এই দলটি। তবে মাঠে সক্রিয় না থাকলেও ভেতরে ভেতরে নিজেদের সংগঠনের কাজ ঠিকই চালিয়ে গেছেন তাদের নেতাকর্মীরা।
চট্টগ্রামে আগে থেকেই জামায়াতের ভালো অবস্থান ছিল। চট্টগ্রামে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা মিলিয়ে তিনটি সাংগঠনিক শাখায় বিভক্ত হয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াত।তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর আবারও মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে জামায়াত। এখন রাজনীতির মাঠে ব্যাপকভাবে সক্রিয় তারা। নিজেদের ঘাঁটি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। দ্রুত দল গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। সাধারণ মানুষের কাছে দাওয়াত ও সংগঠনের ইতিবাচক দিক তুলে ধরার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতনের চিত্রও জানান দিচ্ছেন বিভিন্ন কর্মসূচিতে।
কর্মী সুসংগঠিত করাসহ হারানো নেতাকর্মীদের ফেরানোর দিকে এখন বেশি নজর তাদের। রয়েছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলার বাইরে না যাওয়ার নির্দেশনাও। এরই মধ্যে আগামী আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য চট্টগ্রাম জেলার ১৬টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি। এদের মধ্যে অন্তত ১০টি আসনে জয়ের জন্য আটঘাট বেঁধে মাঠে নামতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।জানা যায়, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) অধ্যক্ষ নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আলাউদ্দিন শিকদার, চট্টগ্রাম৪ ( সীতাকুণ্ড) আনোয়ারুল সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) শাহজাহান মঞ্জুর, চট্টগ্রাম ৭ (রাঙ্গুনিয়া) অধ্যক্ষ আমিরুজ্জামান, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) ডা. আবু নাসের, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি- বাকলিয়া). ডা. ফজলুল হক, চট্টগ্রাম-১০ (খুলশী-পাহাড়তলী- হালিশহর) অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) শফিউল আলম,চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) ইঞ্জিনিয়ার লোকমান, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান, চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) ডা.শাহাতৎ হোসাইন, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে শাহজাহান চৌধুরি, চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে জহিরুল ইসলাম।তবে উল্লেখিত আসন গুলোতে বিএনপির রয়েছে হেভিওয়েট প্রার্থী।
দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন,জামায়াতের ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় জনগণের কাছে যাবেন এবং তাদের মাধ্যমে দল তার অবস্থান সম্পর্কে একটি ধারণা পাবে। বিভিন্ন জায়গায় দলীয় প্রার্থীদের প্রস্তুতির সুযোগ দেয়ার জন্য হয়তো কোথাও কোথাও নাম ঘোষণা করা হচ্ছে। তারা হয়তো দলকে প্রস্তুত করবেন স্থানীয়ভাবে।যদিও মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই নির্বাচন নিয়েই দূরত্ব তৈরি হয় জামায়াত ও তার সাবেক মিত্র বিএনপির মধ্যে।
বিএনপি শুরু থেকেই দ্রুত নির্বাচনের দাবি করলেও জামায়াত নির্বাচনের আগে সংস্কারের কথা বলে আসছে।
বিজনেস বাংলাদেশ/ডিএস