০২:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জুনে মেট্রোরেলের ট্রায়াল

ভিসা জটিলতায় পড়ে জাপানে ইন্সপেকশনের জন্য যেতে পারেনি মেট্রোরেল সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি দল। এতে মেট্রোরেলের কোচ নির্ধারিত সময়ে না পৌঁছানোয় এপ্রিলের পরিবর্তে জুনে হবে মেট্রোরেলের ট্রায়াল। জানা গেছে, গত জানুয়ারিতেই ইন্সপেকশন শেষে জাপান থেকে জাহাজে করে দেশের প্রথম মেট্রোরেলের কোচ আনার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে ভিসা জটিলায় জাপান যেতে পারেননি বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল। তাই বিকল্প হিসেবে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সেরে নেয়া হয়েছে ইন্সপেকসন ও অনলাইন ভিজুয়্যাল ট্রায়াল। দেশে বসেই ভিজুয়্যাল ট্রায়াল দেখে দেয়া হয়েছে ছাড়পত্র। এরই মধ্যে শিপমেন্টের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ফেব্রুয়ারিতে জাপানের পোর্ট অব কবে থেকে রওনা দিচ্ছে দেশের প্রথম মেট্রোরেল। সেক্ষেত্রে এপ্রিলের পরিবর্তে জুনে হবে ট্রায়াল রান। কর্তৃপক্ষ বলছে, সব ঠিক থাকলে চলতি মাসের ২০ ফেব্রুয়ারি জাপানের কবে বন্দর থেকে রওনা দেবে মেট্রোরেলের কোচ। মোংলা বন্দর হয়ে দিয়াবাড়ীর ডিপোতে জাহাজটি নোঙ্গর করবে ২৩ এপ্রিল। দ্বিতীয় ট্রেনটি ১৫ এপ্রিল রওনা দিয়ে দিয়াবাড়ীতে পৌঁছাবে ১৬ জুন। এরপরের ট্রেনটি ওবে বন্দর থেকে রওনা দিয়ে দিয়াবাড়ীতে আসবে চলতি বছর ১৩ আগস্ট। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক এম এ ছিদ্দিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, তৃতীয় পক্ষের ইন্সেপেকশন এবং টেস্ট অনলাইনের মাধ্যমে আমাদের ইঞ্জিনিয়াররার দেখেছেন। আর কোচ নিয়ে আসার একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আরো জানান, এপ্রিলের পরিবর্তে জুনে ট্রায়াল রান শুরু হবে। সেক্ষেত্রে পাঁচটি স্টেশনেই এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে। আর নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে দিনরাত মিলিয়ে তিন শিফটে কাজ চলছে। রাজধানীবাসীর যানজট মুক্তির স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। এডিপিতে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পে ব্যয়ের যে লক্ষ্য ধরা হয়েছিল, সংশোধিত এডিপিতে তা বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রকল্পে চলতি অর্থবছরের জন্য ৫৫৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে ব্যয় হয়েছে ৯৯৫ কোটি টাকা। ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানীর র্কর্মকতারা জানান, কোভিডের কারণে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ থাকলেও এখন তা আবার শুরু হয়েছে। তবে জাপানের পরামর্শকদের অনেকেই এখনো বাংলাদেশে আসেননি। শীগগিরই তারা আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনো কাজের গতি ধীর হলেও অর্থবছরের বাকি সময়ে গতি বাড়বে। বাড়বে ব্যয়ও। এ কারণে মূল বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব করা হয়নি। ২০১২ সালের জুলাই থেকে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে। নভেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সার্বিক অগ্রগতি ৫২ দশমিক ২৪ শতাংশ। পর্যায়ভিত্তিক অগ্রগতি উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম পর্যায় ৭৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায় ৪৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত তৃতীয় পর্যায় ৪১ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
উত্তরায় ডিপো এলাকার সব ধরনের রেললাইন বসানোর কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখানে কর্মরত একাধিক ইঞ্জিনিয়ার জানান, ডিপো এলাকায় পাথরসহ এবং পাথর ছাড়া দুই রকম লাইন বসানো হচ্ছে। ১৯ কিলোমিটার এ রেললাইনের কাজ মার্চে পুরোপুরি শেষ হবে। এ ছাড়া রেল চালানোর জন্য ডিপো এলাকায় ১৩২ কেভি রিসিভিং বিদ্যুৎ গ্রিড সাব-স্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে। ডেসকো পর্যন্ত লাইন স্থাপন করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি এটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ওভারহেড ক্যাটেনারি সিস্টেম (উপরে তার ঝুলে থাকার জন্য) মেট্রোরেল টেস্ট এরিয়া পর্যন্ত স্থাপন শেষ হয়েছে। ভায়াডাক্টের ওপর রেললাইন স্থাপনের কাজ উত্তরা ডিপো এলাকা থেকে মিরপুর ডিওএইচএস পর্যন্ত শেষ হয়েছে। প্রতিদিন ১০০ মিটার করে রেললাইন বসানোর কাজ এগিয়ে চলছে। তিনটি স্টেশনে বিদ্যুতের ইকুইপমেন্ট পৌঁছে গেছে। আগারগাঁও পর্যন্ত স্টেশনগুলোর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পোর্টাল মাস্ট (তার ঝোলানোর বিশেষ পোল) স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। রাত-দিন মিলিয়ে এ প্রকল্পে প্রায় ২৫০-৩০০ শ্রমিক কাজ করছেন।

ট্যাগ :

জুনে মেট্রোরেলের ট্রায়াল

প্রকাশিত : ১২:০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ভিসা জটিলতায় পড়ে জাপানে ইন্সপেকশনের জন্য যেতে পারেনি মেট্রোরেল সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি দল। এতে মেট্রোরেলের কোচ নির্ধারিত সময়ে না পৌঁছানোয় এপ্রিলের পরিবর্তে জুনে হবে মেট্রোরেলের ট্রায়াল। জানা গেছে, গত জানুয়ারিতেই ইন্সপেকশন শেষে জাপান থেকে জাহাজে করে দেশের প্রথম মেট্রোরেলের কোচ আনার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে ভিসা জটিলায় জাপান যেতে পারেননি বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল। তাই বিকল্প হিসেবে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সেরে নেয়া হয়েছে ইন্সপেকসন ও অনলাইন ভিজুয়্যাল ট্রায়াল। দেশে বসেই ভিজুয়্যাল ট্রায়াল দেখে দেয়া হয়েছে ছাড়পত্র। এরই মধ্যে শিপমেন্টের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ফেব্রুয়ারিতে জাপানের পোর্ট অব কবে থেকে রওনা দিচ্ছে দেশের প্রথম মেট্রোরেল। সেক্ষেত্রে এপ্রিলের পরিবর্তে জুনে হবে ট্রায়াল রান। কর্তৃপক্ষ বলছে, সব ঠিক থাকলে চলতি মাসের ২০ ফেব্রুয়ারি জাপানের কবে বন্দর থেকে রওনা দেবে মেট্রোরেলের কোচ। মোংলা বন্দর হয়ে দিয়াবাড়ীর ডিপোতে জাহাজটি নোঙ্গর করবে ২৩ এপ্রিল। দ্বিতীয় ট্রেনটি ১৫ এপ্রিল রওনা দিয়ে দিয়াবাড়ীতে পৌঁছাবে ১৬ জুন। এরপরের ট্রেনটি ওবে বন্দর থেকে রওনা দিয়ে দিয়াবাড়ীতে আসবে চলতি বছর ১৩ আগস্ট। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক এম এ ছিদ্দিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, তৃতীয় পক্ষের ইন্সেপেকশন এবং টেস্ট অনলাইনের মাধ্যমে আমাদের ইঞ্জিনিয়াররার দেখেছেন। আর কোচ নিয়ে আসার একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আরো জানান, এপ্রিলের পরিবর্তে জুনে ট্রায়াল রান শুরু হবে। সেক্ষেত্রে পাঁচটি স্টেশনেই এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে। আর নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে দিনরাত মিলিয়ে তিন শিফটে কাজ চলছে। রাজধানীবাসীর যানজট মুক্তির স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। এডিপিতে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পে ব্যয়ের যে লক্ষ্য ধরা হয়েছিল, সংশোধিত এডিপিতে তা বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রকল্পে চলতি অর্থবছরের জন্য ৫৫৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে ব্যয় হয়েছে ৯৯৫ কোটি টাকা। ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানীর র্কর্মকতারা জানান, কোভিডের কারণে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ থাকলেও এখন তা আবার শুরু হয়েছে। তবে জাপানের পরামর্শকদের অনেকেই এখনো বাংলাদেশে আসেননি। শীগগিরই তারা আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনো কাজের গতি ধীর হলেও অর্থবছরের বাকি সময়ে গতি বাড়বে। বাড়বে ব্যয়ও। এ কারণে মূল বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব করা হয়নি। ২০১২ সালের জুলাই থেকে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে। নভেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সার্বিক অগ্রগতি ৫২ দশমিক ২৪ শতাংশ। পর্যায়ভিত্তিক অগ্রগতি উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম পর্যায় ৭৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায় ৪৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত তৃতীয় পর্যায় ৪১ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
উত্তরায় ডিপো এলাকার সব ধরনের রেললাইন বসানোর কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখানে কর্মরত একাধিক ইঞ্জিনিয়ার জানান, ডিপো এলাকায় পাথরসহ এবং পাথর ছাড়া দুই রকম লাইন বসানো হচ্ছে। ১৯ কিলোমিটার এ রেললাইনের কাজ মার্চে পুরোপুরি শেষ হবে। এ ছাড়া রেল চালানোর জন্য ডিপো এলাকায় ১৩২ কেভি রিসিভিং বিদ্যুৎ গ্রিড সাব-স্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে। ডেসকো পর্যন্ত লাইন স্থাপন করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি এটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ওভারহেড ক্যাটেনারি সিস্টেম (উপরে তার ঝুলে থাকার জন্য) মেট্রোরেল টেস্ট এরিয়া পর্যন্ত স্থাপন শেষ হয়েছে। ভায়াডাক্টের ওপর রেললাইন স্থাপনের কাজ উত্তরা ডিপো এলাকা থেকে মিরপুর ডিওএইচএস পর্যন্ত শেষ হয়েছে। প্রতিদিন ১০০ মিটার করে রেললাইন বসানোর কাজ এগিয়ে চলছে। তিনটি স্টেশনে বিদ্যুতের ইকুইপমেন্ট পৌঁছে গেছে। আগারগাঁও পর্যন্ত স্টেশনগুলোর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পোর্টাল মাস্ট (তার ঝোলানোর বিশেষ পোল) স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। রাত-দিন মিলিয়ে এ প্রকল্পে প্রায় ২৫০-৩০০ শ্রমিক কাজ করছেন।