০৬:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সড়কে ঝড়ল ২০ প্রাণ

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, মিরপুর, টেকনাফ ঝিনাইদহ, বগুড়া, লালমনিরহাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
যাত্রাবাড়ী : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের চাপায় নুরুল হক (৩৫) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। বুধবার সকালের দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় দুই বাসের দুই স্টাফকে আটক করেছে পুলিশ। আটক মাসুদ জানান, যাত্রাবাড়ী মোড়ে আট নম্বর রোডের বাস থামানো অবস্থায় ছিল। ওই ব্যক্তি বাসটির পেছন দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় একই রোডের আরেকটি বাস দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিতে ধাক্কা লাগায়। এতে নুরুল হক দুই বাসের মাঝে চাপা পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবিহিত করা হয়েছে। নিহতের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর সদর বলে জানা গেছে। বাচ্চু মিয়া আরও জানান, হাসপাতাল থেকে বাস দুটির স্টাফ মাসুদ ও নুর নবীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
মিরপুর : রাজধানীর শাহ আলী থানার মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় লুৎফর রহমান (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত দশটার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মেয়ে লুবনা আক্তার বলেন, আমার বাবা মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকা দিয়ে মসজিদে যাওয়ার পথে একটি ট্রাক ধাক্কা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ঢামেকে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী গ্রামে। বর্তমানে মিরপুরের রয়েল সিটি এলাকায় থাকি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।
রামপুরা : রাজধানীর রামপুরা কাঁচা বাজারের সামনে দুই বাসের চাপায় নাজমুল (১৭) নামে আরেক বাসের কন্ডাক্টর নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত নাজমুল রাঈদা পরিবহনের একটি বাসের কন্ডাক্টর ছিলেন। ওই বাসের চালক আব্দুল জলিল হাওলাদার বলেন, উত্তরা থেকে পোস্তগোলা যাওয়ার সময় আমার বাসের কন্ডাক্টর নাজমুল চলন্ত অবস্থায় বাস থেকে দৌড়ে নেমে বাঁ পাশের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় বাঁয়ে থাকা আরেকটি বাসের সামনের পড়ে সে। বাসটির চালক দ্রুত থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সামনে ছিল ধীরগতির হামিম পরিবহনের আরেকটি বাস। এতে ওই বাসটি হামিম পরিবহনের বাসটির পেছন গিয়ে ধাক্কা লাগিয়ে দেয়। দুই বাসের মাঝে চাপা পড়েন নাজমুল। তিনি আরও বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। চালক জলিল জানান, নিহত নাজমুল কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার উদিয়ার পার গ্রামের শমসের মিয়ার ছেলে। কাজের সুবাদে তিনি সায়দাবাদে এক পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। নিহতের বাবা পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যাওয়ার পর সেটির ওপরে একটি ট্রাক উঠে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ১১ ব্যক্তি এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২০/২৫ জন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বারোবাজার হাইওয়ে থানার ওসি শেখ মেসবাহ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খুলনা থেকে কুষ্টিয়াগামী গড়াই পরিবহনের একটি বাস ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বারোবাজার এলাকায় এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ঠিক সে মুহূর্তে বিপরীত দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি ট্রাক ব্রেক কষার চেষ্টা করলেও না পেরে বাসটির মাঝ বরাবর আঘাত হানে। এতে বাসটিরে সামনের ও মাঝের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। তিনি জানান, ঘটনাস্থলেই নারী-পুরুষ-শিশুসহ অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর পথে আরও একজন মারা গেছেন। ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে তাদের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, বাসটির সামনের এবং মাঝামাঝি অংশ দুমড়ে মুচড়ে গেছে। এটি ছিটকে রাস্তার একপাশে পড়ে আছে। আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ভিড় করছেন। দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি পড়ে আচে। সড়কে চলছে উদ্ধার তৎপরতা। কালীগঞ্জ ফায়ার স্টেশন অফিসার মামুনুর রশিদ জানান, বাসটির কমবেশি সব যাত্রী হতাহত হয়েছেন। আমরা আহতদের উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। নিহতদের লাশ উদ্ধার করে মর্গে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উদ্ধার কাজ চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো সম্ভব হবে।
টেকনাফ : কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের হোয়াইক্যং উনচিপ্রাং এলাকায় মিনিবাসচাপায় সিএনজি যাত্রী একই পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো পাঁচ জন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বাসচালক বেলাল উদ্দিনকে আটক করেছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন হোয়াইক্যং হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জাকির হোসেন। নিহতরা হলেন- টেকনাফের হ্নীলার মরিচ্যা ঘোনা এলাকার মৃত শহর মল্লুকের ছেলে সালামত উল্লাহ (৬০), তার ছেলে নজরুল ইসলাম (২৮) এবং নজরুল ইসলামের শিশু কন্যা মরিয়ম (১)। আহতরা হলেন- দেলোযার, রোকেয়া, নুর নাহার, মোহানা এবং নুর মোস্তাফা সাকিব। তারা সবাই নিহত সালামত উল্লাহের পরিবারের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শী আবুল মঞ্জুর বলেন, সকাল ১০টার দিকে টেকনাফগামী পালকি মিনিবাস (কক্সবাজার-জ-১১-২৩৮) এবং কক্সবাজারমুখী সিএনজি’র (কক্সবাজার-থ-১১-৮৭৪৬) সংঘর্ষ হয়। বেপরোয়া গতির মিনিবাসের চাপায় সিএনজিটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ভেতরে আটকা পড়েন যাত্রীদের সবাই। তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা মিলে দ্রুত গাড়ির ভেতর থেকে আহতদের উদ্ধার করি। কিন্তু ঘটনাস্থলে মারা যান নজরুল। বাকিদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সালামত উল্লাহ ও শিশুটি মারা যায় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। হোয়াইক্যং হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জাকির হোসেন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার খবর নজরুলের মরদেহ উদ্ধার করি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় বাসচালককে আটক করা হয়েছে। গাড়ি দুটি আমাদের হেফাজতে রয়েছে। প্রথমে চারজন মারা যাওয়ার কথা প্রচার পেলেও তিনজনের মরদেহই মিলেছে। তবে বাকি আহতদের মাঝে আরো কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
লালমনিরহাট : ডাক্তার দেখিয়ে নানার সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল নুরি আক্তার (১৩)। এ সময় একটি ট্রাক তাদের রিকশাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তার নানা আব্দুর রশিদ (৫০) ও রিকশাচালক হাবিবুর রহমান (৩৫) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার দুরাকুটি বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বুলবুল আহমেদ। প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ডাক্তার দেখাতে সকালে নানার সঙ্গে উপজেলার মোগলহাট গিয়েছিল নুরি। রিকশায় করে বাড়ি ফেরার পথে বালুভর্তি একটি ট্রাক তাদের রিকশাটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সে উপজেলার দুর্গাপুরের দক্ষিণ গোবধার ভিতরকুটি এলাকার নজির হোসেনের মেয়ে। এদিকে, এ ঘটনায় ওই ট্রাকটির চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে। তবে স্থানীয়রা ট্রাকটিকে আটক করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় দুরাকুটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সালেকুজ্জামান সালেক।
বগুড়া : বগুড়ায় মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাবা ও ছেলে মারা গেছেন। গুরুতর আহত হয়ে বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি আছেন মা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের পেরীহাটা এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বগুড়া গাবতলীর দূর্গাহাটা ইউনিয়নের বাইগুণী প্রামানিকপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (৬০) ও তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫৫), ছেলে মুন্নার মোটরসাইকেলে করে উপজেলার নশিপুর ইউনিয়নে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। পেরীহাট পৌঁছালে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের বিদ্যুতের খুটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান বাবা জাহিদুল ইসলাম। গুরুতর আহত অবস্থায় মা ও ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ছেলে মুন্না মারা যায়। বিষয়টি বাগবাড়ী ফাড়ীর ইনচার্জ এসআই আব্দুল খালেক নিশ্চিত করেছেন।

ট্যাগ :

৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব কর্মচারীকে সম্পদের হিসাব দিতে হবে 

সড়কে ঝড়ল ২০ প্রাণ

প্রকাশিত : ১২:০১:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, মিরপুর, টেকনাফ ঝিনাইদহ, বগুড়া, লালমনিরহাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
যাত্রাবাড়ী : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের চাপায় নুরুল হক (৩৫) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। বুধবার সকালের দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় দুই বাসের দুই স্টাফকে আটক করেছে পুলিশ। আটক মাসুদ জানান, যাত্রাবাড়ী মোড়ে আট নম্বর রোডের বাস থামানো অবস্থায় ছিল। ওই ব্যক্তি বাসটির পেছন দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় একই রোডের আরেকটি বাস দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিতে ধাক্কা লাগায়। এতে নুরুল হক দুই বাসের মাঝে চাপা পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবিহিত করা হয়েছে। নিহতের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর সদর বলে জানা গেছে। বাচ্চু মিয়া আরও জানান, হাসপাতাল থেকে বাস দুটির স্টাফ মাসুদ ও নুর নবীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
মিরপুর : রাজধানীর শাহ আলী থানার মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় লুৎফর রহমান (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত দশটার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মেয়ে লুবনা আক্তার বলেন, আমার বাবা মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকা দিয়ে মসজিদে যাওয়ার পথে একটি ট্রাক ধাক্কা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ঢামেকে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী গ্রামে। বর্তমানে মিরপুরের রয়েল সিটি এলাকায় থাকি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।
রামপুরা : রাজধানীর রামপুরা কাঁচা বাজারের সামনে দুই বাসের চাপায় নাজমুল (১৭) নামে আরেক বাসের কন্ডাক্টর নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত নাজমুল রাঈদা পরিবহনের একটি বাসের কন্ডাক্টর ছিলেন। ওই বাসের চালক আব্দুল জলিল হাওলাদার বলেন, উত্তরা থেকে পোস্তগোলা যাওয়ার সময় আমার বাসের কন্ডাক্টর নাজমুল চলন্ত অবস্থায় বাস থেকে দৌড়ে নেমে বাঁ পাশের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় বাঁয়ে থাকা আরেকটি বাসের সামনের পড়ে সে। বাসটির চালক দ্রুত থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সামনে ছিল ধীরগতির হামিম পরিবহনের আরেকটি বাস। এতে ওই বাসটি হামিম পরিবহনের বাসটির পেছন গিয়ে ধাক্কা লাগিয়ে দেয়। দুই বাসের মাঝে চাপা পড়েন নাজমুল। তিনি আরও বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। চালক জলিল জানান, নিহত নাজমুল কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার উদিয়ার পার গ্রামের শমসের মিয়ার ছেলে। কাজের সুবাদে তিনি সায়দাবাদে এক পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। নিহতের বাবা পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যাওয়ার পর সেটির ওপরে একটি ট্রাক উঠে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ১১ ব্যক্তি এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২০/২৫ জন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বারোবাজার হাইওয়ে থানার ওসি শেখ মেসবাহ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খুলনা থেকে কুষ্টিয়াগামী গড়াই পরিবহনের একটি বাস ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বারোবাজার এলাকায় এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ঠিক সে মুহূর্তে বিপরীত দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি ট্রাক ব্রেক কষার চেষ্টা করলেও না পেরে বাসটির মাঝ বরাবর আঘাত হানে। এতে বাসটিরে সামনের ও মাঝের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। তিনি জানান, ঘটনাস্থলেই নারী-পুরুষ-শিশুসহ অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর পথে আরও একজন মারা গেছেন। ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে তাদের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, বাসটির সামনের এবং মাঝামাঝি অংশ দুমড়ে মুচড়ে গেছে। এটি ছিটকে রাস্তার একপাশে পড়ে আছে। আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ভিড় করছেন। দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি পড়ে আচে। সড়কে চলছে উদ্ধার তৎপরতা। কালীগঞ্জ ফায়ার স্টেশন অফিসার মামুনুর রশিদ জানান, বাসটির কমবেশি সব যাত্রী হতাহত হয়েছেন। আমরা আহতদের উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। নিহতদের লাশ উদ্ধার করে মর্গে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উদ্ধার কাজ চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো সম্ভব হবে।
টেকনাফ : কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের হোয়াইক্যং উনচিপ্রাং এলাকায় মিনিবাসচাপায় সিএনজি যাত্রী একই পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো পাঁচ জন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বাসচালক বেলাল উদ্দিনকে আটক করেছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন হোয়াইক্যং হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জাকির হোসেন। নিহতরা হলেন- টেকনাফের হ্নীলার মরিচ্যা ঘোনা এলাকার মৃত শহর মল্লুকের ছেলে সালামত উল্লাহ (৬০), তার ছেলে নজরুল ইসলাম (২৮) এবং নজরুল ইসলামের শিশু কন্যা মরিয়ম (১)। আহতরা হলেন- দেলোযার, রোকেয়া, নুর নাহার, মোহানা এবং নুর মোস্তাফা সাকিব। তারা সবাই নিহত সালামত উল্লাহের পরিবারের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শী আবুল মঞ্জুর বলেন, সকাল ১০টার দিকে টেকনাফগামী পালকি মিনিবাস (কক্সবাজার-জ-১১-২৩৮) এবং কক্সবাজারমুখী সিএনজি’র (কক্সবাজার-থ-১১-৮৭৪৬) সংঘর্ষ হয়। বেপরোয়া গতির মিনিবাসের চাপায় সিএনজিটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ভেতরে আটকা পড়েন যাত্রীদের সবাই। তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা মিলে দ্রুত গাড়ির ভেতর থেকে আহতদের উদ্ধার করি। কিন্তু ঘটনাস্থলে মারা যান নজরুল। বাকিদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সালামত উল্লাহ ও শিশুটি মারা যায় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। হোয়াইক্যং হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জাকির হোসেন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার খবর নজরুলের মরদেহ উদ্ধার করি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় বাসচালককে আটক করা হয়েছে। গাড়ি দুটি আমাদের হেফাজতে রয়েছে। প্রথমে চারজন মারা যাওয়ার কথা প্রচার পেলেও তিনজনের মরদেহই মিলেছে। তবে বাকি আহতদের মাঝে আরো কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
লালমনিরহাট : ডাক্তার দেখিয়ে নানার সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল নুরি আক্তার (১৩)। এ সময় একটি ট্রাক তাদের রিকশাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তার নানা আব্দুর রশিদ (৫০) ও রিকশাচালক হাবিবুর রহমান (৩৫) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার দুরাকুটি বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বুলবুল আহমেদ। প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ডাক্তার দেখাতে সকালে নানার সঙ্গে উপজেলার মোগলহাট গিয়েছিল নুরি। রিকশায় করে বাড়ি ফেরার পথে বালুভর্তি একটি ট্রাক তাদের রিকশাটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সে উপজেলার দুর্গাপুরের দক্ষিণ গোবধার ভিতরকুটি এলাকার নজির হোসেনের মেয়ে। এদিকে, এ ঘটনায় ওই ট্রাকটির চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে। তবে স্থানীয়রা ট্রাকটিকে আটক করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় দুরাকুটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সালেকুজ্জামান সালেক।
বগুড়া : বগুড়ায় মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাবা ও ছেলে মারা গেছেন। গুরুতর আহত হয়ে বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি আছেন মা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের পেরীহাটা এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বগুড়া গাবতলীর দূর্গাহাটা ইউনিয়নের বাইগুণী প্রামানিকপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (৬০) ও তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫৫), ছেলে মুন্নার মোটরসাইকেলে করে উপজেলার নশিপুর ইউনিয়নে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। পেরীহাট পৌঁছালে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের বিদ্যুতের খুটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান বাবা জাহিদুল ইসলাম। গুরুতর আহত অবস্থায় মা ও ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ছেলে মুন্না মারা যায়। বিষয়টি বাগবাড়ী ফাড়ীর ইনচার্জ এসআই আব্দুল খালেক নিশ্চিত করেছেন।