১০:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

উৎসবের আমেজে ভ্যাকসিন

করোনার টিকা নিতে প্রতিদিনই আগ্রহ বাড়ছে মানুষের। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে টিকা নিতে আসা চল্লিশোর্ধ্ব মানুষের ভিড়ও বাড়ছে। অনলাইনে নিবন্ধন কিংবা হাসপাতালে এসে নিবন্ধন শেষে টিকা কার্ড দেখিয়ে মিলছে টিকা। নির্ধারিত তারিখ ছাড়াও কোনো কোনো হাসপাতালে টিকা কার্ড নিয়ে গেলে দেয়া হচ্ছে টিকা।রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে অন্যান্য দিনের তুলনায় লোকসমাগম বেড়েছে। সারা দেশে গণটিকাদান কর্মসূচির পঞ্চম দিনে বৃহস্পতিবার সারা দেশে টিকা নিয়েছেন ২লাখ ৪ হাজার ৫শত ৪০জন। এ নিয়ে মোট টিকা নিয়েছেন। ৫ লাখ ৪২ হাজার ৩শত ৯ জন। তবে টিকা গ্রহণকারীদের অনেকেই বলছেন, হাসপাতালে করোনার টিকাকেন্দ্রগুলো কোথায়, তা খুঁজে নিতে কষ্ট হচ্ছে। টিকাকেন্দ্রের তথ্য ও নির্দেশনা আরও স্পষ্ট হলে মানুষের জন্য সুবিধা হতো। কেউ কেউ হাসপাতালের টিকাকেন্দ্র খুঁজে পেতে সময় লাগায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। করোনার গণটিকা কার্যক্রমের পঞ্চম দিনে এসে সবচেয়ে বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার। টিকাদানকেন্দ্রে টিকা কার্ড নিয়ে এলে টিকা দেওয়া হচ্ছে। মোট আটটি বুথে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ দিন করোনার টিকা দেয়া হয়েছে ১ হাজার ১৩৮ জনকে। গত বুধবার দেয়া হয়েছিল ৯৬০ জনকে। মঙ্গলবার টিকা নিয়েছিলেন ৭৬০ জন। টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড় দিনকে দিন বাড়ছে উল্লেখ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার হাসপাতালে মানুষের চাপ অনেক বেশি ছিল। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত টিকা দেওয়ার কথা। কিন্তু এরপরও মানুষ এসেছেন। নিবন্ধন করে টিকা দেওয়া হয়েছে। এখান থেকে কাউকে ফেরত যেতে দেওয়া হচ্ছে না। মুগদা হাসপাতালে মোট আটটি বুথে করোনার টিকা দেয়া হচ্ছে। এই হাসপাতালে বৃহস্পতিবার প্রায় ১ হাজার ৩০০-এর বেশি করোনার টিকা দেয়া হয়েছে। গণটিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর বৃহস্পতিবারই এই হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি টিকা দেওয়া হলো। আগের দিন বুধবার টিকা দেওয়া হয়েছিল ৯০৬ জনকে। মঙ্গলবার দেওয়া হয়েছিল ৩৬৭ জনকে। সকাল ১০টায় মুগদা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালটির তিনতলায় করোনা টিকাদানকেন্দ্রের সামনে কয়েক শ মানুষের কেউ চেয়ারে বসে, কেউবা দাঁড়িয়ে আছেন। টিকা কার্ড যাচাই করে একে একে ১০ জন করে ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে। নির্ধারিত বুথে টিকা নেওয়া শেষে তাঁরা আধা ঘণ্টার জন্য বিশ্রাম নিচ্ছেন। এদিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার টিকা নিয়েছেন ১ হাজার ৩০ জন। ১০টি বুথে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়। এই হাসপাতালে টিকা কার্ড নিয়ে এলেই টিকা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিনটি বুথে স্পট নিবন্ধন করা হয়। সকাল পৌনে ১০টায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আসেন ৭০ বছর বয়সী রোকসানা বেগম। তাঁর পায়ে ব্যথা, সঙ্গে শারীরিক জটিলতাও আছে। বেলা দেড়টার দিকেও তাঁর স্পট নিবন্ধন হয়নি। তাঁর ছেলে আরবাব প্রথম আলোকে বলেন, ‘বয়স্ক মানুষকে নিয়ে এলাম। এখন বলছে, নিবন্ধন হবে না। যিনি নিবন্ধনের দায়িত্বে তিনি ভাত খেতে গেছেন।’ ৭০ বছর বয়সী মহসেনা বেগম তাঁর নাতনি মাফলুফা ফাইজা ইসলামের সঙ্গে হুইলচেয়ারে করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে টিকা নিতে এসেছেন। মাফলুফা প্রথম আলোকে বলেন, টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে করোনা টিকাকেন্দ্র খুঁজে পেতে সমস্যা হয়েছে। এত বড় হাসপাতাল; আরও ব্যানার, দিকনির্দেশনা থাকলে ভালো হতো। এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন এখন থেকে আর কেন্দ্রে নিবন্ধন করা যাবে না। তিনি বলেন, যারা করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন তারাই এখন আগে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন। অযথা গুজব না ছড়াতে সবার প্রতি আহবান জানান জাহিদ মালেক।

ট্যাগ :

৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব কর্মচারীকে সম্পদের হিসাব দিতে হবে 

উৎসবের আমেজে ভ্যাকসিন

প্রকাশিত : ১২:০১:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২১

করোনার টিকা নিতে প্রতিদিনই আগ্রহ বাড়ছে মানুষের। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে টিকা নিতে আসা চল্লিশোর্ধ্ব মানুষের ভিড়ও বাড়ছে। অনলাইনে নিবন্ধন কিংবা হাসপাতালে এসে নিবন্ধন শেষে টিকা কার্ড দেখিয়ে মিলছে টিকা। নির্ধারিত তারিখ ছাড়াও কোনো কোনো হাসপাতালে টিকা কার্ড নিয়ে গেলে দেয়া হচ্ছে টিকা।রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে অন্যান্য দিনের তুলনায় লোকসমাগম বেড়েছে। সারা দেশে গণটিকাদান কর্মসূচির পঞ্চম দিনে বৃহস্পতিবার সারা দেশে টিকা নিয়েছেন ২লাখ ৪ হাজার ৫শত ৪০জন। এ নিয়ে মোট টিকা নিয়েছেন। ৫ লাখ ৪২ হাজার ৩শত ৯ জন। তবে টিকা গ্রহণকারীদের অনেকেই বলছেন, হাসপাতালে করোনার টিকাকেন্দ্রগুলো কোথায়, তা খুঁজে নিতে কষ্ট হচ্ছে। টিকাকেন্দ্রের তথ্য ও নির্দেশনা আরও স্পষ্ট হলে মানুষের জন্য সুবিধা হতো। কেউ কেউ হাসপাতালের টিকাকেন্দ্র খুঁজে পেতে সময় লাগায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। করোনার গণটিকা কার্যক্রমের পঞ্চম দিনে এসে সবচেয়ে বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার। টিকাদানকেন্দ্রে টিকা কার্ড নিয়ে এলে টিকা দেওয়া হচ্ছে। মোট আটটি বুথে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ দিন করোনার টিকা দেয়া হয়েছে ১ হাজার ১৩৮ জনকে। গত বুধবার দেয়া হয়েছিল ৯৬০ জনকে। মঙ্গলবার টিকা নিয়েছিলেন ৭৬০ জন। টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড় দিনকে দিন বাড়ছে উল্লেখ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার হাসপাতালে মানুষের চাপ অনেক বেশি ছিল। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত টিকা দেওয়ার কথা। কিন্তু এরপরও মানুষ এসেছেন। নিবন্ধন করে টিকা দেওয়া হয়েছে। এখান থেকে কাউকে ফেরত যেতে দেওয়া হচ্ছে না। মুগদা হাসপাতালে মোট আটটি বুথে করোনার টিকা দেয়া হচ্ছে। এই হাসপাতালে বৃহস্পতিবার প্রায় ১ হাজার ৩০০-এর বেশি করোনার টিকা দেয়া হয়েছে। গণটিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর বৃহস্পতিবারই এই হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি টিকা দেওয়া হলো। আগের দিন বুধবার টিকা দেওয়া হয়েছিল ৯০৬ জনকে। মঙ্গলবার দেওয়া হয়েছিল ৩৬৭ জনকে। সকাল ১০টায় মুগদা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালটির তিনতলায় করোনা টিকাদানকেন্দ্রের সামনে কয়েক শ মানুষের কেউ চেয়ারে বসে, কেউবা দাঁড়িয়ে আছেন। টিকা কার্ড যাচাই করে একে একে ১০ জন করে ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে। নির্ধারিত বুথে টিকা নেওয়া শেষে তাঁরা আধা ঘণ্টার জন্য বিশ্রাম নিচ্ছেন। এদিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার টিকা নিয়েছেন ১ হাজার ৩০ জন। ১০টি বুথে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়। এই হাসপাতালে টিকা কার্ড নিয়ে এলেই টিকা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিনটি বুথে স্পট নিবন্ধন করা হয়। সকাল পৌনে ১০টায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আসেন ৭০ বছর বয়সী রোকসানা বেগম। তাঁর পায়ে ব্যথা, সঙ্গে শারীরিক জটিলতাও আছে। বেলা দেড়টার দিকেও তাঁর স্পট নিবন্ধন হয়নি। তাঁর ছেলে আরবাব প্রথম আলোকে বলেন, ‘বয়স্ক মানুষকে নিয়ে এলাম। এখন বলছে, নিবন্ধন হবে না। যিনি নিবন্ধনের দায়িত্বে তিনি ভাত খেতে গেছেন।’ ৭০ বছর বয়সী মহসেনা বেগম তাঁর নাতনি মাফলুফা ফাইজা ইসলামের সঙ্গে হুইলচেয়ারে করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে টিকা নিতে এসেছেন। মাফলুফা প্রথম আলোকে বলেন, টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে করোনা টিকাকেন্দ্র খুঁজে পেতে সমস্যা হয়েছে। এত বড় হাসপাতাল; আরও ব্যানার, দিকনির্দেশনা থাকলে ভালো হতো। এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন এখন থেকে আর কেন্দ্রে নিবন্ধন করা যাবে না। তিনি বলেন, যারা করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন তারাই এখন আগে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন। অযথা গুজব না ছড়াতে সবার প্রতি আহবান জানান জাহিদ মালেক।