১০:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সুপেয় পানি সংকটে লক্ষাধিক বাসিন্দা

বছরজুড়েই সুপেয় পানির সংকট থাকে ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট উপজেলায়। তবে শুষ্ক মৌসুমে এ সংকট আরো তীব্র হয়। দু-তিন মাস ধরে সুপেয় পানির সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই দুই উপজেলার দুটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক বাসিন্দা। অনেকে বাধ্য হয়ে পুকুর ও কুয়ার দূষিত পানি পান করছে। এতে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন। সুপেয় পানি সংকট নিরসনে জনপ্রতিনিধিদের কাছে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দেশ উন্নত হচ্ছে ঘটছে প্রযুক্তির বিকাশ। দুর্গম পাহাড়েও মানুষ এখন সুপেয় পানি পাচ্ছে। অথচ সীমান্তবর্তী দুই উপজেলার লক্ষাধিক বাসিন্দা কয়েক বছর ধরে সুপেয় পানি সংকটে ভুগছে। বর্তমানে অত্যাধুনিক টিউবওয়েল, গভীর নলক‚প, বিদ্যুত্চালিত মোটর ব্যবহার করে খাবার পানি সংগ্রহ করা হলেও এ দুই উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো যায়নি এসব সুবিধা। তাই নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পানিই তাদের একমাত্র ভরসা। এ অবস্থায় ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। স্থানীয় সূত্রটি জানায়, ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী ১ নং দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের দীঘলবাগ, ঘিলাগড়া গোবরচুনা গ্রামের শতাধিক পরিবার ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার হালুয়াঘাটের ১ নং গাজীরভিটা ইউনিয়নের ভুটিয়াপাড়া ও ডুমনিকুড়া এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবার দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করছেন উত্তোলিত ক‚পের পানি। এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে এক কলস পানি যেন সোনার হরিণ। স্থানীয় বাসিন্দা ছফির উদ্দিন বলেন, আমাদের গ্রামে কোনো টিউবওয়েল নেই। নেই কোনো ডিপটিউবওয়েল। কাজেই আমাদের বাধ্য হয়েই ক‚পের পানি পান করতে হয়। আমাদের সামর্থ্য নেই গভীর নলক‚প বা মোটরচালিত নলক‚প স্থাপনের। আমরা সরকারের কাছে সুপেয় পানির ব্যবস্থার জন্য একাধিকবার আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সুলেখা মং বলেন, এখানকার পাহাড়ি মাটিতে নলক‚প স্থাপন অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কারো পক্ষে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে নলক‚প স্থাপন সম্ভব হয় না। বিদ্যুৎ না থাকায় এসব এলাকায় গভীর নলক‚প স্থাপন সম্ভব হয় না। আমরা সরকারিভাবে পানি সরবরাহের দাবি জানাই।

ধোবাউড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় বিগত সময়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ২০টি রিংওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। আপাতত রিংওয়েল আর দেয়া হচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করব যন্ত্রের মাধ্যমে টিউবওয়েল স্থাপনের জন্য। সেক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে রিংওয়েল স্থাপন করা হবে। হালুয়াঘাট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। ভুক্তভোগীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী বরাদ্দে বিষয়টি অগ্রাধিকার থাকবে।

ট্যাগ :

সুপেয় পানি সংকটে লক্ষাধিক বাসিন্দা

প্রকাশিত : ১২:৪২:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

বছরজুড়েই সুপেয় পানির সংকট থাকে ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট উপজেলায়। তবে শুষ্ক মৌসুমে এ সংকট আরো তীব্র হয়। দু-তিন মাস ধরে সুপেয় পানির সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই দুই উপজেলার দুটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক বাসিন্দা। অনেকে বাধ্য হয়ে পুকুর ও কুয়ার দূষিত পানি পান করছে। এতে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন। সুপেয় পানি সংকট নিরসনে জনপ্রতিনিধিদের কাছে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দেশ উন্নত হচ্ছে ঘটছে প্রযুক্তির বিকাশ। দুর্গম পাহাড়েও মানুষ এখন সুপেয় পানি পাচ্ছে। অথচ সীমান্তবর্তী দুই উপজেলার লক্ষাধিক বাসিন্দা কয়েক বছর ধরে সুপেয় পানি সংকটে ভুগছে। বর্তমানে অত্যাধুনিক টিউবওয়েল, গভীর নলক‚প, বিদ্যুত্চালিত মোটর ব্যবহার করে খাবার পানি সংগ্রহ করা হলেও এ দুই উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো যায়নি এসব সুবিধা। তাই নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পানিই তাদের একমাত্র ভরসা। এ অবস্থায় ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। স্থানীয় সূত্রটি জানায়, ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী ১ নং দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের দীঘলবাগ, ঘিলাগড়া গোবরচুনা গ্রামের শতাধিক পরিবার ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার হালুয়াঘাটের ১ নং গাজীরভিটা ইউনিয়নের ভুটিয়াপাড়া ও ডুমনিকুড়া এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবার দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করছেন উত্তোলিত ক‚পের পানি। এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে এক কলস পানি যেন সোনার হরিণ। স্থানীয় বাসিন্দা ছফির উদ্দিন বলেন, আমাদের গ্রামে কোনো টিউবওয়েল নেই। নেই কোনো ডিপটিউবওয়েল। কাজেই আমাদের বাধ্য হয়েই ক‚পের পানি পান করতে হয়। আমাদের সামর্থ্য নেই গভীর নলক‚প বা মোটরচালিত নলক‚প স্থাপনের। আমরা সরকারের কাছে সুপেয় পানির ব্যবস্থার জন্য একাধিকবার আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সুলেখা মং বলেন, এখানকার পাহাড়ি মাটিতে নলক‚প স্থাপন অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কারো পক্ষে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে নলক‚প স্থাপন সম্ভব হয় না। বিদ্যুৎ না থাকায় এসব এলাকায় গভীর নলক‚প স্থাপন সম্ভব হয় না। আমরা সরকারিভাবে পানি সরবরাহের দাবি জানাই।

ধোবাউড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় বিগত সময়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ২০টি রিংওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। আপাতত রিংওয়েল আর দেয়া হচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করব যন্ত্রের মাধ্যমে টিউবওয়েল স্থাপনের জন্য। সেক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে রিংওয়েল স্থাপন করা হবে। হালুয়াঘাট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। ভুক্তভোগীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী বরাদ্দে বিষয়টি অগ্রাধিকার থাকবে।