০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

খরচ বাড়বে কোরবানির পশু ক্রয়ে, ক্রেতা কমার আশঙ্কা

চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশুর সরবরাহ বেশি থাকলেও গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি। ফলে কোরবানির পশু কিনতে ক্রেতাদের ২৫-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি খরচের চাপে পড়তে হবে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। বাজারে সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা যখন চাপের মধ্যে তখন কোরবানির পশু বিক্রি নিয়েও খামারিদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাজশাহীর সওদাগর অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী আরাফাত রুবেল বলেন, ‘তিন মণ ওজনের একটি গরু গত বছর বিক্রি করেছি ৭০-৮০ হাজার টাকায়। এবার সেটা ১ লাখ টাকায় বিক্রি করতে হবে।’বাজারে বেশি দামে গরু বিক্রি হওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন বগুড়া সদরের খামারি আলহাজ্ব শেখ। তিনি বলেন, ‘খাবারের দামের প্রভাব এবার কোরবানির হাটে পড়বে। যে গরু গত বছর ৬০ হাজার টাকায় পাওয়া গেছে; একই সাইজের গরু এবার ৭৫ হাজার টাকায় কিনতে হবে। তবে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি থাকায় এবার ছোট গরুই বেশি বিক্রি হবে। অনেকে আবার গরু থেকে সরে এসে ছাগল-ভেড়া কোরবানি করবে।’রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, কুষ্টিয়া, রংপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম সহ কয়েকটি জেলার খামারিরা জানান, মাস তিনেক আগেও প্রতি বস্তা (৪০ কেজি) ভুষির মূল্য ছিল ১৩০০-১৪০০ টাকা। এখন ভুষি কিনতে হচ্ছে ১৭৫০-১৮০০ টাকায়। খৈলের প্রতি বস্তার (৪০ কেজি) বাজারদর আগে ছিল ১৪০০-১৫০০ টাকা। এখন খৈলের বস্তার দাম ২০০০ টাকা। এছাড়া ধানের কুঁড়ার দাম দ্বিগুণ হওয়ায় এখন খামারিদের প্রতি বস্তা কিনতে হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়। বাংলাদেশ ডেইরি ফারমারস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, গবাদিপশুর উৎপাদনে প্রায় ৬৬ শতাংশ ব্যয় হয় খাদ্য উৎপাদনে। এক বছরের ব্যবধানে খাদ্য ও খাদ্য উপাদানের দাম বেড়েছে গড়ে ৪৬ শতাংশ, যা গরু লালনপালনের মোট খরচের ৩০ শতাংশ। সে হিসাবে খামারি ও চাষিরা দামের ক্ষেত্রে যদি এই ৩০ শতাংশ খরচও সমন্বয় করতে পারেন, তবে তারা লাভ করতে পারবেন। খামারিরা বলছেন, প্রাণিখাদ্যের উৎপাদন খরচ এমনভাবে বাড়িয়েছে, পশুর দাম না বাড়িয়ে কোন উপায় নেই। তবে বাড়তি দামে বিক্রি করলেও গত বছরের তুলনায় লাভ কমে যাবে। আবার বাড়তি দামের কারণে বিক্রি কমে যাওয়ারও শঙ্কা রয়েছে। কারণ বাজারে সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের খরচ বেড়েছে। এই খরচ সামাল দিতে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছে, কোরবানি করা নিয়ে অনেকেই দ্বিধান্বিত থাকবে। যারা একটি ছোট বা মাঝারি গরু দিয়ে কোরবানি করতো তারা হয়তো শেয়ারে কোরবানি করবে, অনেকে ছাগল-ভেড়া কোরবানির দিকে বেশি ঝুঁকবে। বাংলাদেশ ডেইরি ফারমারস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এবার ছোট গরু, ছাগল ও ভেড়ার দিকে ঝুঁকতে পারেন ক্রেতারা। ইতোমধ্যেই বাজারে এর প্রভাব লক্ষ্য করছি।’প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা: মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা অবশ্য দাবি করছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘করোনা সাধারণ মানুষকে যে সংকটে ফেলেছিল তা থেকে মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে এবারে কোরবানির সংখ্যা বাড়বে। দাম কিছুটা বাড়লেও ধর্মীয় কারণেই মানুষ কোরবানি দিবে।’খরচ বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে দাম বৃদ্ধির একটি চিত্র তুলে ধরে রাজশাহীর নাবা ডেইরি অ্যান্ড ক্যাটল ফার্মের ম্যানেজার মো: আসাদুজ্জামান বলেন, ‘৭২টি গরুর মধ্যে ৫ মণ ওজনের সাতটা গরু বিক্রি করেছি। একেকটি গরু ১ লাখ ৩৭ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৫১ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। যা গত বছরের তুলনায় ২৫-৩০ শতাংশ বেশি। গত বছর এই ওজনের গরুতে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করেছিলাম, কিন্তু বেশি দাম দিয়ে বিক্রি করেও এবারে ১০-১২ হাজার টাকার বেশি লাভ করতে পারিনি।’প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর বলছে, আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে দেশে গরু, ছাগল, ভেড়া সহ অন্যান্য প্রাণী মিলিয়ে দেশে ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এর মধ্যে ৪৬ লাখ ১১ হাজার ৩৮৩টি গরু ও মহিষ এবং ৭৫ লাখ ১১ হাজার ৫৯৭টি ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। গত বছর কোরবানিযোগ্য পশু ছিল ১ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি। এর মধ্যে কোরবানি হয়েছে ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি পশু। এর আগের বছরও অর্থাৎ ২০২০ সালে কোরবানি হয়েছে ৯৪ লাখ ৫০ হাজারের বেশি পশু। এই সংখ্যাটা কোভিডের আগের বছরগুলোতে ১ কোটি ছাড়িয়ে যেত। কোরবানির পশুর যথেষ্ট সরবরাহ থাকার কথা উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘এগ্রো ফার্মগুলো হাটের পরিবর্তে অনলাইনে তাদের ব্যবসা জমিয়েছেন। এতে অনেক মানুষ হয়রানি থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এবছর মোট কোরবানির পশুর ২৫ শতাংশ ডিজিটাল ব্যবস্থায় বিপণনের আমাদের লক্ষ্য রয়েছে।’সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছর মানুষ করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে না পারার কারণে কোরবানির পরিমাণ কম হয়েছে। গত বছরের কোরবানির সংখ্যা ছিল গত ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ বছর যখন মানুষ কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, ঠিক তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশে-বিদেশে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এতে মানুষ এখন বাড়তি খরচের চাপে পড়েছে, সীমিত আয়ের মানুষগুলো সংসার খরচের চাপেই হিমশিম খাচ্ছে, খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছে, বাড়তি ব্যয় কাটছাঁট করে চলছে। এই পরিস্থিতিতে কোরবানির পশুর দাম বৃদ্ধির কারণে এবারো কোরবানির পরিমাণ কমে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডেইরি ফারমারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুদ্দিন খান শুভ্র বলেন, ‘করোনার কারণে দুই বছর ধরে আমরা ক্ষতির মুখে পড়েছি। এবার সেটা পুষিয়ে নেওয়ার আশা থাকলেও গোখাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি আমাদের জন্য মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেকেই কোরবানি কমিয়ে দিবে। যারা হয়তো একটি গরু দিত তারা শেয়ারে দিবে বা ছাগল-ভেড়াতে চলে যাবে। এটা আমাদের জন্য শঙ্কা তৈরি করেছে।’

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

একজন ব্যবসায়ী বান্ধব নেতা ওয়াহিদুল হাসান দিপু

খরচ বাড়বে কোরবানির পশু ক্রয়ে, ক্রেতা কমার আশঙ্কা

প্রকাশিত : ১২:০০:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুন ২০২২

চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশুর সরবরাহ বেশি থাকলেও গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি। ফলে কোরবানির পশু কিনতে ক্রেতাদের ২৫-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি খরচের চাপে পড়তে হবে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। বাজারে সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা যখন চাপের মধ্যে তখন কোরবানির পশু বিক্রি নিয়েও খামারিদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাজশাহীর সওদাগর অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী আরাফাত রুবেল বলেন, ‘তিন মণ ওজনের একটি গরু গত বছর বিক্রি করেছি ৭০-৮০ হাজার টাকায়। এবার সেটা ১ লাখ টাকায় বিক্রি করতে হবে।’বাজারে বেশি দামে গরু বিক্রি হওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন বগুড়া সদরের খামারি আলহাজ্ব শেখ। তিনি বলেন, ‘খাবারের দামের প্রভাব এবার কোরবানির হাটে পড়বে। যে গরু গত বছর ৬০ হাজার টাকায় পাওয়া গেছে; একই সাইজের গরু এবার ৭৫ হাজার টাকায় কিনতে হবে। তবে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি থাকায় এবার ছোট গরুই বেশি বিক্রি হবে। অনেকে আবার গরু থেকে সরে এসে ছাগল-ভেড়া কোরবানি করবে।’রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, কুষ্টিয়া, রংপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম সহ কয়েকটি জেলার খামারিরা জানান, মাস তিনেক আগেও প্রতি বস্তা (৪০ কেজি) ভুষির মূল্য ছিল ১৩০০-১৪০০ টাকা। এখন ভুষি কিনতে হচ্ছে ১৭৫০-১৮০০ টাকায়। খৈলের প্রতি বস্তার (৪০ কেজি) বাজারদর আগে ছিল ১৪০০-১৫০০ টাকা। এখন খৈলের বস্তার দাম ২০০০ টাকা। এছাড়া ধানের কুঁড়ার দাম দ্বিগুণ হওয়ায় এখন খামারিদের প্রতি বস্তা কিনতে হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়। বাংলাদেশ ডেইরি ফারমারস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, গবাদিপশুর উৎপাদনে প্রায় ৬৬ শতাংশ ব্যয় হয় খাদ্য উৎপাদনে। এক বছরের ব্যবধানে খাদ্য ও খাদ্য উপাদানের দাম বেড়েছে গড়ে ৪৬ শতাংশ, যা গরু লালনপালনের মোট খরচের ৩০ শতাংশ। সে হিসাবে খামারি ও চাষিরা দামের ক্ষেত্রে যদি এই ৩০ শতাংশ খরচও সমন্বয় করতে পারেন, তবে তারা লাভ করতে পারবেন। খামারিরা বলছেন, প্রাণিখাদ্যের উৎপাদন খরচ এমনভাবে বাড়িয়েছে, পশুর দাম না বাড়িয়ে কোন উপায় নেই। তবে বাড়তি দামে বিক্রি করলেও গত বছরের তুলনায় লাভ কমে যাবে। আবার বাড়তি দামের কারণে বিক্রি কমে যাওয়ারও শঙ্কা রয়েছে। কারণ বাজারে সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের খরচ বেড়েছে। এই খরচ সামাল দিতে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছে, কোরবানি করা নিয়ে অনেকেই দ্বিধান্বিত থাকবে। যারা একটি ছোট বা মাঝারি গরু দিয়ে কোরবানি করতো তারা হয়তো শেয়ারে কোরবানি করবে, অনেকে ছাগল-ভেড়া কোরবানির দিকে বেশি ঝুঁকবে। বাংলাদেশ ডেইরি ফারমারস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এবার ছোট গরু, ছাগল ও ভেড়ার দিকে ঝুঁকতে পারেন ক্রেতারা। ইতোমধ্যেই বাজারে এর প্রভাব লক্ষ্য করছি।’প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা: মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা অবশ্য দাবি করছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘করোনা সাধারণ মানুষকে যে সংকটে ফেলেছিল তা থেকে মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে এবারে কোরবানির সংখ্যা বাড়বে। দাম কিছুটা বাড়লেও ধর্মীয় কারণেই মানুষ কোরবানি দিবে।’খরচ বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে দাম বৃদ্ধির একটি চিত্র তুলে ধরে রাজশাহীর নাবা ডেইরি অ্যান্ড ক্যাটল ফার্মের ম্যানেজার মো: আসাদুজ্জামান বলেন, ‘৭২টি গরুর মধ্যে ৫ মণ ওজনের সাতটা গরু বিক্রি করেছি। একেকটি গরু ১ লাখ ৩৭ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৫১ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। যা গত বছরের তুলনায় ২৫-৩০ শতাংশ বেশি। গত বছর এই ওজনের গরুতে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করেছিলাম, কিন্তু বেশি দাম দিয়ে বিক্রি করেও এবারে ১০-১২ হাজার টাকার বেশি লাভ করতে পারিনি।’প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর বলছে, আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে দেশে গরু, ছাগল, ভেড়া সহ অন্যান্য প্রাণী মিলিয়ে দেশে ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এর মধ্যে ৪৬ লাখ ১১ হাজার ৩৮৩টি গরু ও মহিষ এবং ৭৫ লাখ ১১ হাজার ৫৯৭টি ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। গত বছর কোরবানিযোগ্য পশু ছিল ১ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি। এর মধ্যে কোরবানি হয়েছে ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি পশু। এর আগের বছরও অর্থাৎ ২০২০ সালে কোরবানি হয়েছে ৯৪ লাখ ৫০ হাজারের বেশি পশু। এই সংখ্যাটা কোভিডের আগের বছরগুলোতে ১ কোটি ছাড়িয়ে যেত। কোরবানির পশুর যথেষ্ট সরবরাহ থাকার কথা উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘এগ্রো ফার্মগুলো হাটের পরিবর্তে অনলাইনে তাদের ব্যবসা জমিয়েছেন। এতে অনেক মানুষ হয়রানি থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এবছর মোট কোরবানির পশুর ২৫ শতাংশ ডিজিটাল ব্যবস্থায় বিপণনের আমাদের লক্ষ্য রয়েছে।’সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছর মানুষ করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে না পারার কারণে কোরবানির পরিমাণ কম হয়েছে। গত বছরের কোরবানির সংখ্যা ছিল গত ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ বছর যখন মানুষ কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, ঠিক তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশে-বিদেশে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এতে মানুষ এখন বাড়তি খরচের চাপে পড়েছে, সীমিত আয়ের মানুষগুলো সংসার খরচের চাপেই হিমশিম খাচ্ছে, খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছে, বাড়তি ব্যয় কাটছাঁট করে চলছে। এই পরিস্থিতিতে কোরবানির পশুর দাম বৃদ্ধির কারণে এবারো কোরবানির পরিমাণ কমে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডেইরি ফারমারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুদ্দিন খান শুভ্র বলেন, ‘করোনার কারণে দুই বছর ধরে আমরা ক্ষতির মুখে পড়েছি। এবার সেটা পুষিয়ে নেওয়ার আশা থাকলেও গোখাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি আমাদের জন্য মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেকেই কোরবানি কমিয়ে দিবে। যারা হয়তো একটি গরু দিত তারা শেয়ারে দিবে বা ছাগল-ভেড়াতে চলে যাবে। এটা আমাদের জন্য শঙ্কা তৈরি করেছে।’