০৯:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার আমাদের জন্য কি হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে?

স্মার্টফোন! যোগাযোগের মাধ্যম ছাড়াও আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলতে ডিভাইসটির গুরুত্ব অনস্বীকার্য। স্মার্টফোন আমাদের প্রায় সবারই এখন সর্বক্ষণের সঙ্গী। আমরা কি’না করতে পারি এই ডিভাইসটির মাধ্যমে। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছি এই স্মার্টফোনই আবার আমাদের ক্ষতির কারন হতে পারে?

এতদিন আমরা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কøাসের ফাঁকে ফাঁকে কিংবা অবসর সময়ে অনলাইনে থাকতাম। সারাদিন ক্লাস শেষে রাতে দেখতাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুরা কে কি শেয়ার করেছে, মেসেঞ্জার কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাটিং কিংবা দেখে নিতাম সারাদিনের সর্বশেষ খবরাখবর বা নিউজ আপডেট।

 

কিন্তু নোভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের ফলে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নিজ গৃহে অহর্নিশি অবস্থান কওে সময় কাটাতে গিয়ে আমরা অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি এই স্মার্টফোন বা ল্যাপটপের উপর। সারাদিন সময় কাটছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, গেইম খেলে, মুভি দেখে বা অনলাইনে বিভিন্ন শিক্ষা মুলক ভিডিও দেখে।

 

দীর্ঘ ছুটিতে অনেকে স্মার্টফোনের মাধ্যমেই পড়ছি বইগুলোর পিডিএফ ভার্সন। রাত-দিন এতবেশি স্মার্টফোন ব্যবহার আমাদের অজান্তেই আমাদের কত বেশি ক্ষতি করে চলছে সে বিষয়ে আমরা কি সচেতন?

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। যার ফলশ্রুতিতে মাথাব্যথা, মনোযোগ হ্রাস, রুক্ষ কিংবা খিটখিটে মেজাজ, অনিয়ন্ত্রিত ঘুম, অবসন্নতা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মুখের চর্মরোগ এবং হতাশার কারণ হতে পারে। স্মার্টফোন এবং অন্যান্য ডিভাইসের স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য চোখে চাপ ও ব্যাথার সৃষ্টি করে।

 

এটি চোখের কর্নিয়া এমনকি দৃষ্টি শক্তিরও ক্ষতিসাধন করতে পারে। দীর্ঘসময় ধওে ইন্টারনেট ব্রাউজিং কিংবা টেক্সট করার সময় আমরা ঘাড় নিচু করে থাকি যার ফলে ঘাড়ে ব্যাথা হতে পারে। শুধুমাত্র রেডিও তরঙ্গই এই জাতীয় লক্ষণগুলির একমাত্র কারণ নয়। এছাড়া নিউরোজনিক ক্যান্সার ও উচ্চরক্ত চাপের মত জটিল রোগেরও কারণ হতে পারে অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার।

অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার পরিবারের সঙ্গেও আমাদের দুরত্ব সৃষ্টি করছে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অবিভাবক অভিযোগ করেন যে, তাদের সন্তান স্মার্টফোনের সাথে তাদের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করছে। যখন তারা তাদের স্মার্টফোনে থাকাকালীন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, ৪৪ শতাংশ তাদের স্মার্টফোনে ফিরে আসতে অস্থিরবোধ কওে এবং শতাংশ তাদের পরিবারের সাথে বিরক্ত হয় এবং তাদের ছেড়ে যেতে বলে।

 

যখন অন্যরা তাদের স্মার্টফোন ব্যবহার করে তখন প্রায় ৫৩.৩ শতাংশ নিজেকে নিরাপত্তাহীন বোধ করে। সমীক্ষা থেকে বোঝা যায়, অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যাবহার আমাদের আসক্তি’র দিকে নিয়ে যেতে পারে। যা আমাদের সর্বপ্রকার ঝুকির

কারন হতে পারে। সুতরাং নিজের স্বাস্থ্যঝুকি কমাতে ও সুন্দর জীবন গঠনে স্মার্টফোনের দায়িত্বশীল এবং পরিমিত ব্যবহারই হতে পারে বিকল্প পথ।

লেখক ঃ জহুরুল ইসলাম, শিক্ষার্থী, শিল্প উৎপাদন ও প্রকৌশল বিভাগ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

বিএফআইইউ প্রধানের ‘ভিডিও ফাঁস’ বিশেষজ্ঞদের দাবি এআই দারা নির্মিত ষড়যন্ত্র

অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার আমাদের জন্য কি হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে?

প্রকাশিত : ০৩:৩১:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০

স্মার্টফোন! যোগাযোগের মাধ্যম ছাড়াও আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলতে ডিভাইসটির গুরুত্ব অনস্বীকার্য। স্মার্টফোন আমাদের প্রায় সবারই এখন সর্বক্ষণের সঙ্গী। আমরা কি’না করতে পারি এই ডিভাইসটির মাধ্যমে। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছি এই স্মার্টফোনই আবার আমাদের ক্ষতির কারন হতে পারে?

এতদিন আমরা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কøাসের ফাঁকে ফাঁকে কিংবা অবসর সময়ে অনলাইনে থাকতাম। সারাদিন ক্লাস শেষে রাতে দেখতাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুরা কে কি শেয়ার করেছে, মেসেঞ্জার কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাটিং কিংবা দেখে নিতাম সারাদিনের সর্বশেষ খবরাখবর বা নিউজ আপডেট।

 

কিন্তু নোভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের ফলে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নিজ গৃহে অহর্নিশি অবস্থান কওে সময় কাটাতে গিয়ে আমরা অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি এই স্মার্টফোন বা ল্যাপটপের উপর। সারাদিন সময় কাটছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, গেইম খেলে, মুভি দেখে বা অনলাইনে বিভিন্ন শিক্ষা মুলক ভিডিও দেখে।

 

দীর্ঘ ছুটিতে অনেকে স্মার্টফোনের মাধ্যমেই পড়ছি বইগুলোর পিডিএফ ভার্সন। রাত-দিন এতবেশি স্মার্টফোন ব্যবহার আমাদের অজান্তেই আমাদের কত বেশি ক্ষতি করে চলছে সে বিষয়ে আমরা কি সচেতন?

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। যার ফলশ্রুতিতে মাথাব্যথা, মনোযোগ হ্রাস, রুক্ষ কিংবা খিটখিটে মেজাজ, অনিয়ন্ত্রিত ঘুম, অবসন্নতা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মুখের চর্মরোগ এবং হতাশার কারণ হতে পারে। স্মার্টফোন এবং অন্যান্য ডিভাইসের স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য চোখে চাপ ও ব্যাথার সৃষ্টি করে।

 

এটি চোখের কর্নিয়া এমনকি দৃষ্টি শক্তিরও ক্ষতিসাধন করতে পারে। দীর্ঘসময় ধওে ইন্টারনেট ব্রাউজিং কিংবা টেক্সট করার সময় আমরা ঘাড় নিচু করে থাকি যার ফলে ঘাড়ে ব্যাথা হতে পারে। শুধুমাত্র রেডিও তরঙ্গই এই জাতীয় লক্ষণগুলির একমাত্র কারণ নয়। এছাড়া নিউরোজনিক ক্যান্সার ও উচ্চরক্ত চাপের মত জটিল রোগেরও কারণ হতে পারে অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার।

অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার পরিবারের সঙ্গেও আমাদের দুরত্ব সৃষ্টি করছে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অবিভাবক অভিযোগ করেন যে, তাদের সন্তান স্মার্টফোনের সাথে তাদের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করছে। যখন তারা তাদের স্মার্টফোনে থাকাকালীন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, ৪৪ শতাংশ তাদের স্মার্টফোনে ফিরে আসতে অস্থিরবোধ কওে এবং শতাংশ তাদের পরিবারের সাথে বিরক্ত হয় এবং তাদের ছেড়ে যেতে বলে।

 

যখন অন্যরা তাদের স্মার্টফোন ব্যবহার করে তখন প্রায় ৫৩.৩ শতাংশ নিজেকে নিরাপত্তাহীন বোধ করে। সমীক্ষা থেকে বোঝা যায়, অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যাবহার আমাদের আসক্তি’র দিকে নিয়ে যেতে পারে। যা আমাদের সর্বপ্রকার ঝুকির

কারন হতে পারে। সুতরাং নিজের স্বাস্থ্যঝুকি কমাতে ও সুন্দর জীবন গঠনে স্মার্টফোনের দায়িত্বশীল এবং পরিমিত ব্যবহারই হতে পারে বিকল্প পথ।

লেখক ঃ জহুরুল ইসলাম, শিক্ষার্থী, শিল্প উৎপাদন ও প্রকৌশল বিভাগ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়