০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

পাটের বাম্পার ফলনে লাভবান কৃষক

চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার হলেও করোনার কারণে প্রথমদিকে বাজারে দাম ভাল না পাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও বর্তমানে বাজারে চাহিদা ও দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভবান দিনাজপুরের কৃষক।

দিনাজপুরে চলতি মৌসুমের শুরুতে আগাম বর্ষায় নষ্ট হয়েছে অনেক জমির পাট। আবার উৎপাদন খরচের সঙ্গে বাজার মূল্যের অসমতা এবং সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ থাকায় উৎপাদিত পাটের সঠিক মূল্য পাবেন কি-না, তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন পাট চাষিরা। তবে বর্তমানে বাজারে পাটের দাম কিছুটা বাড়ায় খুশি কৃষক।

অপরদিকে, পাট পণ্যের দ্বিগুণ রপ্তানি বৃদ্ধি, পণ্যের মোড়কে পাটের ব্যাগ বাধ্যতামূলকসহ ব্যবহারে বহুমাত্রিকতার কারণে আরও লাভের আশায় জেলায় এবার লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ১৭৮ হেক্টর জমিতে বেশি পাট চাষ হয়েছে।

তবে অতিবৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাটের কিছুটা ক্ষতি হলেও উৎপাদিত পাটের বর্তমানে বাজার মূল্য বাড়ায় লাভবান হবে কৃষক এমনটাই মনে করছেন কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৩ হাজার ৯৩৬ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমি। পাট শ্রাবণ মাসে কাটা শুরু হয়ে ভাদ্র মাসের শেষ পর্যন্ত চলে।
বিভিন্ন উপজেলায় তোষাসহ কয়েক জাতের পাট চাষ হয়েছে। জেলায় চিরিরবন্দর, খানসামা, কাহারোলে বেশি পাট চাষ হয়েছে। আবহাওয়া ভাল হওয়ায় এবং পাটের রোগবালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় পাটের এবার বাম্পার হয়েছে।

বিভিন্ন গ্রামে দেখা যায়, শ্রাবণের ঝরা বৃষ্টির পানিতে এসব পাট পচিয়ে আগেই ঘরে তুলছেন কৃষকরা। তবে এখনও পাট কেটে জাগ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন হাজারো কৃষক। এবার বর্ষায় নদী-নালা, খাল-বিলে পর্যাপ্ত পানি থাকায় পাট জাগ দিতে কোনো সমস্যা হয়নি।

এছাড়া, পাটের ফলন ভালো হওয়ায় প্রতি বিঘায় ১০ থেকে ১৪ মণ পাট পাওয়া গেছে। গত বছর প্রতি মণ পাট বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকায়। এখন বাজারে সেই পাট প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১৫০ থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকায়।

কাহারোলের নয়াবাদ গ্রামের পাট চাষি অতুল চন্দ্র রায় জানান, অধিক মজুরী দিয়ে শ্রমিক নিয়ে জমি থেকে পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাট ছড়ানো ও শুকানো সেই পাট বাজারে বিক্রি করতে গেলে সে তুলনায় দাম কম পাওয়া যাচ্ছে।

ঈশানপুর গ্রামের পাট চাষি রবীন্দ্রনাথ বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। তাতে পাট উৎপাদন হয়েছে ১০ মণ। গত ২১ জুলাই কাহারোল হাটে প্রতি মণ পাট বিক্রি হয় ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায়। তবে বর্তমানে বাজারে দাম ভালো। প্রতি মণ পাট ২১০০ থেকে ২২০০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

খানসামা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আফজাল হোসেন বলেন, খানসামায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। উপজেলায় পাট চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ১৫০ হেক্টর।

বিজনেস বাংলাদেশ / ইমরান

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

পাটের বাম্পার ফলনে লাভবান কৃষক

প্রকাশিত : ০২:৪২:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অগাস্ট ২০২০

চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার হলেও করোনার কারণে প্রথমদিকে বাজারে দাম ভাল না পাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও বর্তমানে বাজারে চাহিদা ও দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভবান দিনাজপুরের কৃষক।

দিনাজপুরে চলতি মৌসুমের শুরুতে আগাম বর্ষায় নষ্ট হয়েছে অনেক জমির পাট। আবার উৎপাদন খরচের সঙ্গে বাজার মূল্যের অসমতা এবং সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ থাকায় উৎপাদিত পাটের সঠিক মূল্য পাবেন কি-না, তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন পাট চাষিরা। তবে বর্তমানে বাজারে পাটের দাম কিছুটা বাড়ায় খুশি কৃষক।

অপরদিকে, পাট পণ্যের দ্বিগুণ রপ্তানি বৃদ্ধি, পণ্যের মোড়কে পাটের ব্যাগ বাধ্যতামূলকসহ ব্যবহারে বহুমাত্রিকতার কারণে আরও লাভের আশায় জেলায় এবার লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ১৭৮ হেক্টর জমিতে বেশি পাট চাষ হয়েছে।

তবে অতিবৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাটের কিছুটা ক্ষতি হলেও উৎপাদিত পাটের বর্তমানে বাজার মূল্য বাড়ায় লাভবান হবে কৃষক এমনটাই মনে করছেন কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৩ হাজার ৯৩৬ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমি। পাট শ্রাবণ মাসে কাটা শুরু হয়ে ভাদ্র মাসের শেষ পর্যন্ত চলে।
বিভিন্ন উপজেলায় তোষাসহ কয়েক জাতের পাট চাষ হয়েছে। জেলায় চিরিরবন্দর, খানসামা, কাহারোলে বেশি পাট চাষ হয়েছে। আবহাওয়া ভাল হওয়ায় এবং পাটের রোগবালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় পাটের এবার বাম্পার হয়েছে।

বিভিন্ন গ্রামে দেখা যায়, শ্রাবণের ঝরা বৃষ্টির পানিতে এসব পাট পচিয়ে আগেই ঘরে তুলছেন কৃষকরা। তবে এখনও পাট কেটে জাগ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন হাজারো কৃষক। এবার বর্ষায় নদী-নালা, খাল-বিলে পর্যাপ্ত পানি থাকায় পাট জাগ দিতে কোনো সমস্যা হয়নি।

এছাড়া, পাটের ফলন ভালো হওয়ায় প্রতি বিঘায় ১০ থেকে ১৪ মণ পাট পাওয়া গেছে। গত বছর প্রতি মণ পাট বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকায়। এখন বাজারে সেই পাট প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১৫০ থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকায়।

কাহারোলের নয়াবাদ গ্রামের পাট চাষি অতুল চন্দ্র রায় জানান, অধিক মজুরী দিয়ে শ্রমিক নিয়ে জমি থেকে পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাট ছড়ানো ও শুকানো সেই পাট বাজারে বিক্রি করতে গেলে সে তুলনায় দাম কম পাওয়া যাচ্ছে।

ঈশানপুর গ্রামের পাট চাষি রবীন্দ্রনাথ বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। তাতে পাট উৎপাদন হয়েছে ১০ মণ। গত ২১ জুলাই কাহারোল হাটে প্রতি মণ পাট বিক্রি হয় ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায়। তবে বর্তমানে বাজারে দাম ভালো। প্রতি মণ পাট ২১০০ থেকে ২২০০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

খানসামা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আফজাল হোসেন বলেন, খানসামায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। উপজেলায় পাট চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ১৫০ হেক্টর।

বিজনেস বাংলাদেশ / ইমরান