০২:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

ডিসেম্বর থেকে গান করবো না: আঁখি আলমগীর

  • বাবুল হৃদয়
  • প্রকাশিত : ০৬:৫৭:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ নভেম্বর ২০২০
  • 18

আধুনিক গানের জগতে আঁখি আলমগীর একটি অত্যন্ত সুপরিচিত নাম। যতক্ষণ মঞ্চে থাকেন, দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দিয়ে। গানের পাশাপাশি রয়েছে তার সদা উচ্ছল, বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তিত্ব এবং ছন্দময় উপস্থিতি। গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে তিনি টিভি, চলচ্চিত্র, মঞ্চে গেয়ে চলেছেন ক্লান্তিহীণ। তার জনপ্রিয়তায় এখনো চিড় ধরেনি এতোটুকু। এছাড়া গানের পাশাপাশি শিল্পী হিসেবে মডেলিং ও উপস্থাপনাও করেছেন। বর্তমানে নানা ধরণের স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে তাঁর। বিজনেস বাংলাদেশ-এর সাথে ক্যারিয়ারের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন আঁখি আলমগীর। সাক্ষাতকার নিয়েছেন বাবুল হৃদয়

কেমন আছেন?

আঁখি আলমগীর: ভালো, আপনি কেমন আছেন?
জী, ভালো আছি

ব্যস্ততা কেমন যাচ্ছে?
আঁখি আলমগীর: করোনার কারণে খুব একটা ব্যন্ততা নেই। মাঝে বন্ধন বিশ্বাসের সিনেমা ‘ছায়াবৃক্ষ’র একটি গান করলাম, টুকটাক স্টেজ শো, কিছু টিভি অনুষ্ঠান করেছি এখন করোনার প্রকোপ আবার বেড়ে গেছে। এমন থাকলে ডিসেম্বর থেকে আর বাইরে গিয়ে আর গান করবো না। দেখেন না আমরা যারা বাইরে গিয়ে নিয়তিম কাজ করছি তারই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছি। আল্লাহ সবাইকে যেন করোনা থেকে মুক্তি দেয়।

স্টেজ শোতে আপনি বেশি ব্যস্ত থাকেন , স্টেজ শোতে গান গাওয়া অনেক পরিশ্রমের ব্যাপার। ফিটনেস ধরে রাখাটা কতটা জরুরি?

আঁখি আলমগীর: ঠিকই ধরেছেন, শোতে অনেক এনার্জি লাগে। তাই ফিটনেস খুবই জরুরি। আমরা হয়তো গানের রেওয়াজ করছি, কিন্তু ফিটনেস নিয়ে ভাবছি না—এটা মোটেও ঠিক না। উত্তরাধিকার সূত্রে আমি বেশ সৌভাগ্যবান, আমার বাবা (চিত্রনায়ক আলমগীর) অনেক ফিট, তাঁর দিক থেকে পেয়ে গেছি। তারপরও হাঁটাহাঁটি করি। খাওয়া-দাওয়ায় বাছ – বিচার তো আছেই। কিছু রুটিন মেনটেইন করে আল্লাহর রহমতে ফিট আছি।

কলকাতায় শিল্পী কুমার শানুর সঙ্গে একই স্টেজে গান করেছিলেন-

আঁখি আলমগীর:  কুমার শানু আমার পছন্দের শিল্পী, কলকাতায় আমরা দুজনে একইসঙ্গে দুই ঘণ্টা করে গান গেয়েছি। সেখানে সম্মানিতও হলাম। পুরো ব্যাপারটাই ছিল স্বপ্নের মতো। তাঁর সঙ্গে একই মঞ্চে গান গাওয়া অনেক আনন্দের ব্যপার ছিল।

নতুন কোনো মঞ্চে গাইবার স্বপ্ন দেখেন?
আঁখি আলমগীর: লন্ডনের রয়্যাল অ্যালবার্ট হল অথবা সিডনির অপেরা হাউস মিলনায়তন।

বাসায় রেওয়াজ করা হয়?
আঁখি আলমগীর: হয়, তবে আমি যে অনেক বেশি চর্চা করি তাও কিন্তু না। তবে আমি পেশাদার। যে কাজটা করি কিংবা এতদিন করেছি—খুবই নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে করেছি। কখনোই দর্শকদের ঠকাইনি, আয়োজককে ঠকাইনি, নিজেকেও নিজে ঠকাইনি। পেশাদারত্ব ছিল, আছে—এটাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আমার কোনো অর্জনে আনন্দ হয়, কিন্তু বড় করে দেখিনি। আমি মনে করি, এর বাইরেও জীবন আছে, সুখে থাকার আরও অনেক অনুষঙ্গ আছে।

প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি কেমন ছিল-
আঁখি আলমগীর: আনুষ্ঠানিকভাবে খবরটি শোনার পর যে অনুভূতি হয়েছে তা সীমাহীন আনন্দের। আমার মা ছিলেন আমার বাসায়। মা-মেয়ে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কাঁদছিলাম। সেটা ছিল আনন্দের কান্না। আমি ১৯৮৪ সালে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় বাবার সঙ্গেই প্রয়াত আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘ভাত দে’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলাম। শিশুশিল্পী হিসেবে সেই ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি।

আপনার শৈশব নিয়ে বলুন?
আঁখি আলমগীর: আমার শৈশব ছিল খুবই আনন্দের। বাইরে থেকে চাকচিক্যময় মনে হলেও আসলে জীবন ছিল সাদামাটা। কোথাও আধিক্য ছিল না মোটেই। সবকিছুই পরিশ্রম আর মেধা দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে।

তিন বছর বয়স থেকে গান শেখা শুরু এর পরের কথা শুনি-
আঁখি আলমগীর: গানে আমার মা-বাবার অনুপ্রেরনা ছিল বলেই আজো গান নিয়ে আছি। গানে বেশি উৎসাহ পেয়েছি পরিবারের সবার কাছ থেকিই । বাবা-মা ই হল আমার গানের সবচেয়ে বড় ভক্ত এবং সমালোচক। শুরুতে ক্লাসিক্যাল শিখলেও দর্শকপ্রিয়তা পাই আধুনীক গান করে। পড়াশোনা আইন নিয়ে হলেও কখন যে পেশাদার শিল্পী হয়ে গেলেন টেরও পাইনি। আমি কলেজে পড়ার সময় প্রথম সিনেমায় প্লে ব্যাক করি পরিচালক দেলোয়ার ঝন্টুর ছবিতে । তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারে নিয়মিত হ্ই।

একক গানের প্রথম ক্যাসেট কখন বাজারে আসে, মনে আছে?

আঁখি আলমগীর: ১৯৯৭ সালের ৭ ই জানুয়ারী আমার একক গানের প্রথম ক্যাসেট বাজারে আসে। খুব কম সময়ে দশ হাজার কপি ক্যাসেট বিক্রী হয়। ১৯৯৮ সাল থেকে স্টেজে নিয়মি গাইতে শুরু করি। আনন্দের খবর ভারতের বিখ্যাত গীতিকার পুলক বন্দোপাধ্যায় আর জন্য কয়েকটি গান লেখেন এবং প্রণব ঘোষের সুরে আঁখি সেইসব গান করেছি। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।

আপনার প্রিয় শিল্পী কারা?

আঁখি আলমগীর: আমার সংগীতের দেবী ভারতের কিংবদন্তী লতা মাঙ্গেশকারের। এছাড়াও দেশে আছেন সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, শাহনাজ রহমতুল্লাহ, সুবীর নন্দী, আবদুল হাদী সহ আরো অনেক শিল্পী।

গান নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

আঁখি আলমগীর: আজ পর্যন্ত কোনও পরিকল্পনা করি নাই। গান নিয়েই থাকতে চাই। গান এমন একটি বিষয় যেটি চলমান। গান নিয়েই থাকতে চাই।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

 

 

জনপ্রিয়

ডিসেম্বর থেকে গান করবো না: আঁখি আলমগীর

প্রকাশিত : ০৬:৫৭:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ নভেম্বর ২০২০

আধুনিক গানের জগতে আঁখি আলমগীর একটি অত্যন্ত সুপরিচিত নাম। যতক্ষণ মঞ্চে থাকেন, দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দিয়ে। গানের পাশাপাশি রয়েছে তার সদা উচ্ছল, বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তিত্ব এবং ছন্দময় উপস্থিতি। গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে তিনি টিভি, চলচ্চিত্র, মঞ্চে গেয়ে চলেছেন ক্লান্তিহীণ। তার জনপ্রিয়তায় এখনো চিড় ধরেনি এতোটুকু। এছাড়া গানের পাশাপাশি শিল্পী হিসেবে মডেলিং ও উপস্থাপনাও করেছেন। বর্তমানে নানা ধরণের স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে তাঁর। বিজনেস বাংলাদেশ-এর সাথে ক্যারিয়ারের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন আঁখি আলমগীর। সাক্ষাতকার নিয়েছেন বাবুল হৃদয়

কেমন আছেন?

আঁখি আলমগীর: ভালো, আপনি কেমন আছেন?
জী, ভালো আছি

ব্যস্ততা কেমন যাচ্ছে?
আঁখি আলমগীর: করোনার কারণে খুব একটা ব্যন্ততা নেই। মাঝে বন্ধন বিশ্বাসের সিনেমা ‘ছায়াবৃক্ষ’র একটি গান করলাম, টুকটাক স্টেজ শো, কিছু টিভি অনুষ্ঠান করেছি এখন করোনার প্রকোপ আবার বেড়ে গেছে। এমন থাকলে ডিসেম্বর থেকে আর বাইরে গিয়ে আর গান করবো না। দেখেন না আমরা যারা বাইরে গিয়ে নিয়তিম কাজ করছি তারই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছি। আল্লাহ সবাইকে যেন করোনা থেকে মুক্তি দেয়।

স্টেজ শোতে আপনি বেশি ব্যস্ত থাকেন , স্টেজ শোতে গান গাওয়া অনেক পরিশ্রমের ব্যাপার। ফিটনেস ধরে রাখাটা কতটা জরুরি?

আঁখি আলমগীর: ঠিকই ধরেছেন, শোতে অনেক এনার্জি লাগে। তাই ফিটনেস খুবই জরুরি। আমরা হয়তো গানের রেওয়াজ করছি, কিন্তু ফিটনেস নিয়ে ভাবছি না—এটা মোটেও ঠিক না। উত্তরাধিকার সূত্রে আমি বেশ সৌভাগ্যবান, আমার বাবা (চিত্রনায়ক আলমগীর) অনেক ফিট, তাঁর দিক থেকে পেয়ে গেছি। তারপরও হাঁটাহাঁটি করি। খাওয়া-দাওয়ায় বাছ – বিচার তো আছেই। কিছু রুটিন মেনটেইন করে আল্লাহর রহমতে ফিট আছি।

কলকাতায় শিল্পী কুমার শানুর সঙ্গে একই স্টেজে গান করেছিলেন-

আঁখি আলমগীর:  কুমার শানু আমার পছন্দের শিল্পী, কলকাতায় আমরা দুজনে একইসঙ্গে দুই ঘণ্টা করে গান গেয়েছি। সেখানে সম্মানিতও হলাম। পুরো ব্যাপারটাই ছিল স্বপ্নের মতো। তাঁর সঙ্গে একই মঞ্চে গান গাওয়া অনেক আনন্দের ব্যপার ছিল।

নতুন কোনো মঞ্চে গাইবার স্বপ্ন দেখেন?
আঁখি আলমগীর: লন্ডনের রয়্যাল অ্যালবার্ট হল অথবা সিডনির অপেরা হাউস মিলনায়তন।

বাসায় রেওয়াজ করা হয়?
আঁখি আলমগীর: হয়, তবে আমি যে অনেক বেশি চর্চা করি তাও কিন্তু না। তবে আমি পেশাদার। যে কাজটা করি কিংবা এতদিন করেছি—খুবই নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে করেছি। কখনোই দর্শকদের ঠকাইনি, আয়োজককে ঠকাইনি, নিজেকেও নিজে ঠকাইনি। পেশাদারত্ব ছিল, আছে—এটাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আমার কোনো অর্জনে আনন্দ হয়, কিন্তু বড় করে দেখিনি। আমি মনে করি, এর বাইরেও জীবন আছে, সুখে থাকার আরও অনেক অনুষঙ্গ আছে।

প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি কেমন ছিল-
আঁখি আলমগীর: আনুষ্ঠানিকভাবে খবরটি শোনার পর যে অনুভূতি হয়েছে তা সীমাহীন আনন্দের। আমার মা ছিলেন আমার বাসায়। মা-মেয়ে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কাঁদছিলাম। সেটা ছিল আনন্দের কান্না। আমি ১৯৮৪ সালে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় বাবার সঙ্গেই প্রয়াত আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘ভাত দে’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলাম। শিশুশিল্পী হিসেবে সেই ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি।

আপনার শৈশব নিয়ে বলুন?
আঁখি আলমগীর: আমার শৈশব ছিল খুবই আনন্দের। বাইরে থেকে চাকচিক্যময় মনে হলেও আসলে জীবন ছিল সাদামাটা। কোথাও আধিক্য ছিল না মোটেই। সবকিছুই পরিশ্রম আর মেধা দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে।

তিন বছর বয়স থেকে গান শেখা শুরু এর পরের কথা শুনি-
আঁখি আলমগীর: গানে আমার মা-বাবার অনুপ্রেরনা ছিল বলেই আজো গান নিয়ে আছি। গানে বেশি উৎসাহ পেয়েছি পরিবারের সবার কাছ থেকিই । বাবা-মা ই হল আমার গানের সবচেয়ে বড় ভক্ত এবং সমালোচক। শুরুতে ক্লাসিক্যাল শিখলেও দর্শকপ্রিয়তা পাই আধুনীক গান করে। পড়াশোনা আইন নিয়ে হলেও কখন যে পেশাদার শিল্পী হয়ে গেলেন টেরও পাইনি। আমি কলেজে পড়ার সময় প্রথম সিনেমায় প্লে ব্যাক করি পরিচালক দেলোয়ার ঝন্টুর ছবিতে । তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারে নিয়মিত হ্ই।

একক গানের প্রথম ক্যাসেট কখন বাজারে আসে, মনে আছে?

আঁখি আলমগীর: ১৯৯৭ সালের ৭ ই জানুয়ারী আমার একক গানের প্রথম ক্যাসেট বাজারে আসে। খুব কম সময়ে দশ হাজার কপি ক্যাসেট বিক্রী হয়। ১৯৯৮ সাল থেকে স্টেজে নিয়মি গাইতে শুরু করি। আনন্দের খবর ভারতের বিখ্যাত গীতিকার পুলক বন্দোপাধ্যায় আর জন্য কয়েকটি গান লেখেন এবং প্রণব ঘোষের সুরে আঁখি সেইসব গান করেছি। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।

আপনার প্রিয় শিল্পী কারা?

আঁখি আলমগীর: আমার সংগীতের দেবী ভারতের কিংবদন্তী লতা মাঙ্গেশকারের। এছাড়াও দেশে আছেন সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, শাহনাজ রহমতুল্লাহ, সুবীর নন্দী, আবদুল হাদী সহ আরো অনেক শিল্পী।

গান নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

আঁখি আলমগীর: আজ পর্যন্ত কোনও পরিকল্পনা করি নাই। গান নিয়েই থাকতে চাই। গান এমন একটি বিষয় যেটি চলমান। গান নিয়েই থাকতে চাই।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ