০৮:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মুমিনুলের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম মানেই যেন মুমিনুল হকের ব্যাটে রানের ফোয়ারা! চট্টগ্রামের পয়মন্ত ভেন্যুতে শনিবার দশম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। এই সেঞ্চুরিতে মুমিনুল ছাড়িয়ে গেছেন তামিম ইকবালকে। টেস্টে এতদিন সবচেয়ে বেশি ৯ সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন তামিম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মুমিনুলের ব্যাট। তার ব্যাটে ভর করে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২০০ ছাড়িয়েছে। লিডও ৪০০’র কাছাকাছি। মুমিনুলকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া লিটন দাসও পেয়েছেন ফিফটি। যদিও ৬৯ রানে ফিরেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। লিটনের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর আউট হয়ে গেছেন মুমিনুলও। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে কেমার রোচের হাতে ধরা পড়ার আগে খেলেছেন ১১৫ রানের ঝলমলে ইনিংস। ১৮২ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ১০ বাউন্ডারিতে। আগের দিনে ৩০ রান নিয়ে চতুর্থ দিনে মাঠে নামেন মুমিনুল। লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফসেঞ্চুরি। ব্যক্তিগত ৮৩ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যান মুমিনুল। বিরতি থেকে ফিরে তুলে নেন ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। রাকিম কর্নওয়ালের বলটি কভারের দিকে ঠেলে সিঙ্গেল নিয়ে পূরণ করেন দশম সেঞ্চুরি। ১৭৩ বলে মাইলফলকটি স্পর্শ করতে মুমিনুল মেরেছেন ৯টি বাউন্ডারি।
ইতিহাসে মুমিনুলের পাশে কেউ নেই : অ্যাডিলেডে যা মাইকেল ক্লার্ক, গলে যা কুমার সাঙ্গাকারা আর মাহেলা জয়াবর্ধনে, চট্টগ্রামে মুমিনুল হকও তা-ই! হেঁয়ালি নয়, ক্রিকেটের পরিসংখ্যানই তা বলে। চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিনে আজ সেঞ্চুরি পেতেই একটা ছোট্ট তালিকায় ক্রিকেটের কিংবদন্তিদের পাশে নিজের নামটি লিখিয়ে নিয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। তালিকাটা কিসের? একই মাঠে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির। এ নিয়ে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৭টি সেঞ্চুরি হলো মুমিনুলের। কক্সবাজারের ছেলের জন্য চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামটা তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঘরের মাঠই। নিজ ঘরে মুমিনুল বেশ সাবলীল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আজ দারুণ নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরিটা পেয়ে গেছেন মুমিনুল। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। এরপর তো করোনাভাইরাসের হানায় আর টেস্টই খেলা হয়নি বাংলাদেশের। করোনাকে পাশ কাটিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই টেস্ট দিয়ে বাংলাদেশ লাল বলের ক্রিকেটে ফিরেছে, আর ফিরতেই মুমিনুলের সেঞ্চুরি! তামিম ইকবালকে (৯) টপকে বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডই এখন তাঁর। শুধু কি তাুই, টেস্ট ইতিহাসে একটি জায়গায় মুমিনুলের পাশে কেউ নেই।
ঘরের বাইরে সেঞ্চুরির আগে দেশের মাটিতে মুমিনুলের মতো এত সেঞ্চুরি টেস্ট ইতিহাসে আর কারও নেই।জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শনিবার সেঞ্চুরি পূর্ণ হতেই কিংবদন্তিদের সঙ্গে একই সারিতে উঠে গেছে মুমিনুলের নাম। একটু অবশ্য ভুল বলা হলো! কিংবদন্তিদের সারিতে তো আগেও ছিলেন। একই মাঠে ৬ সেঞ্চুরি এর আগে মুমিনুল ছাড়াও আরও ৫ ব্যাটসম্যানের ব্যাটে ৬ বার দেখেছিল ক্রিকেট। নামগুলো দেখে নিন মাইকেল ভন, রস টেলর, রিকি পন্টিং (দুই মাঠে), ম্যাথু হেইডেন ও গ্রাহাম গুচ। সেখান থেকে একটু ‘পদোন্নতি’ হলো মুমিনুলের। পন্টিং-হেইডেনদের ছাড়িয়ে বসে গেলেন ক্লার্ক-সাঙ্গা-জয়ার পাশে।অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি মাইকেল ক্লার্ক ৭টি সেঞ্চুরি করেছিলেন অ্যাডিলেড ওভালে। শ্রীলঙ্কার দুই কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনের ৭টি করে সেঞ্চুরি আবার একই মাঠে গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম।তবে একটা জায়গায় সাঙ্গা-জয়াকেও ছাপিয়ে ক্লার্কের সমতায় মুমিনুল। ম্যাচ খেলার সংখ্যায়। গলে ৭টি সেঞ্চুরি পেতে সাঙ্গাকারার লেগেছিল ২৩ ম্যাচ, জয়াবর্ধনেরও তা-ই। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই টেস্টটি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মুমিনুলের ক্যারিয়ারে দশম টেস্ট। ক্লার্কও অ্যাডিলেডে ৭ সেঞ্চুরি করেছিলেন ১০ টেস্টে। এক মাঠে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁতে চট্টগ্রামে আরও ৪টি সেঞ্চুরি করতে হবে মুমিনুলকে। সেই মুকূট এই মুহূর্তে জয়াবর্ধনেরই দখলে। কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ২৭ ম্যাচে ১১টি সেঞ্চুরি করেছেন লঙ্কান সাবেক ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তালিকার দুই নম্বরে আছেন ব্যাটিংয়ের শেষ কথা যাঁকে মানা হয়, সেই ডন ব্র্যাডম্যান। অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ৯টি সেঞ্চুরি করেছেন মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। আর সেটি করেছেন মাত্র ১১ ম্যাচে! এক মাঠে ৯ সেঞ্চুরি আছে দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিসেরও। কেপটাউনে ৯ সেঞ্চুরি পেতে ক্যালিস খেলেছেন ২২ ম্যাচ। সেঞ্চুরির পর আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আউট হয়ে যান মুমিনুল। সেঞ্চুরির পর আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আউট হয়ে যান মুমিনুল।এক মাঠে ৮ সেঞ্চুরিও শুধু এক ব্যাটসম্যানের ব্যাটেই দেখেছে ক্রিকেট—সাঙ্গাকারা। কলম্বোতে তাঁর ৮ সেঞ্চুরি পেতে খেলতে হয়েছে ২২ ম্যাচ। মুমিনুলের অবশ্য এই রেকর্ডের পথে আপাতত শুধু দুজন ব্যাটসম্যানের দিকে নজর রাখতে হবে। দুজনই নিউজিল্যান্ডের—রস টেলর ও কেন উইলিয়ামসন।একই মাঠে ৪টি বা তার বেশি সেঞ্চুরি আছে—এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এখনো খেলছেন শুধু এ দুজনই। টেলরের ৬টি সেঞ্চুরি হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে, আর উইলিয়ামসন একই মাঠে করেছেন ৫টি সেঞ্চুরি।ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান টেস্টটি ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে অভিষিক্ত মুমিনুলের ক্যারিয়ারের ৪১তম। তবে মজার ব্যাপার, এর মধ্যে যে ১০টি সেঞ্চুরি করেছেন মুমিনুল, সব কটিই দেশের মাটিতে। এতেও একটা রেকর্ড হয়েছে মুমিনুলের।
বিদেশের মাটিতে কোনো সেঞ্চুরি করার আগেই দেশের মাটিতে এত সেঞ্চুরি টেস্ট ইতিহাসে আর কারও নেই! ৪১ টেস্টের মধ্যে ২৪টি মুমিনুল খেলেছেন দেশের মাটিতে। এই ‘রেকর্ডে’ মুমিনুল পেরিয়ে গেছেন সাবেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান অ্যালান ল্যাম্বকে। ক্যারিয়ারে ১৪ সেঞ্চুরির মধ্যে প্রথম ৯টিই ল্যাম্ব করেছিলেন দেশের মাটিতে, দশম সেঞ্চুরিটি আসে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ভারতের রোহিত শর্মার এখন পর্যন্ত দেশের মাটিতে ৬টি সেঞ্চুরি, বিদেশে একটিও নেই। ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান চান্দু বোর্দে বিদেশে সেঞ্চুরিহীন থেকে দেশের মাটিতে করেছেন ৫টি সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রডের বাবা ক্রিস ব্রড আবার এদিক থেকে ১৮০ ডিগ্রি ব্যতিক্রম। ক্যারিয়ারে ৬টি সেঞ্চুরি করেছিলেন সিনিয়র ব্রড, সব কটিই বিদেশের মাটিতে!

 

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

লোহাগাড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দিনমজুরের মৃত্যু, গাছেই ঝুলছিল ম’র’দে’হ

মুমিনুলের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি

প্রকাশিত : ১২:০১:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম মানেই যেন মুমিনুল হকের ব্যাটে রানের ফোয়ারা! চট্টগ্রামের পয়মন্ত ভেন্যুতে শনিবার দশম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। এই সেঞ্চুরিতে মুমিনুল ছাড়িয়ে গেছেন তামিম ইকবালকে। টেস্টে এতদিন সবচেয়ে বেশি ৯ সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন তামিম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মুমিনুলের ব্যাট। তার ব্যাটে ভর করে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২০০ ছাড়িয়েছে। লিডও ৪০০’র কাছাকাছি। মুমিনুলকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া লিটন দাসও পেয়েছেন ফিফটি। যদিও ৬৯ রানে ফিরেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। লিটনের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর আউট হয়ে গেছেন মুমিনুলও। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে কেমার রোচের হাতে ধরা পড়ার আগে খেলেছেন ১১৫ রানের ঝলমলে ইনিংস। ১৮২ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ১০ বাউন্ডারিতে। আগের দিনে ৩০ রান নিয়ে চতুর্থ দিনে মাঠে নামেন মুমিনুল। লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফসেঞ্চুরি। ব্যক্তিগত ৮৩ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যান মুমিনুল। বিরতি থেকে ফিরে তুলে নেন ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। রাকিম কর্নওয়ালের বলটি কভারের দিকে ঠেলে সিঙ্গেল নিয়ে পূরণ করেন দশম সেঞ্চুরি। ১৭৩ বলে মাইলফলকটি স্পর্শ করতে মুমিনুল মেরেছেন ৯টি বাউন্ডারি।
ইতিহাসে মুমিনুলের পাশে কেউ নেই : অ্যাডিলেডে যা মাইকেল ক্লার্ক, গলে যা কুমার সাঙ্গাকারা আর মাহেলা জয়াবর্ধনে, চট্টগ্রামে মুমিনুল হকও তা-ই! হেঁয়ালি নয়, ক্রিকেটের পরিসংখ্যানই তা বলে। চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিনে আজ সেঞ্চুরি পেতেই একটা ছোট্ট তালিকায় ক্রিকেটের কিংবদন্তিদের পাশে নিজের নামটি লিখিয়ে নিয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। তালিকাটা কিসের? একই মাঠে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির। এ নিয়ে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৭টি সেঞ্চুরি হলো মুমিনুলের। কক্সবাজারের ছেলের জন্য চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামটা তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঘরের মাঠই। নিজ ঘরে মুমিনুল বেশ সাবলীল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আজ দারুণ নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরিটা পেয়ে গেছেন মুমিনুল। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। এরপর তো করোনাভাইরাসের হানায় আর টেস্টই খেলা হয়নি বাংলাদেশের। করোনাকে পাশ কাটিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই টেস্ট দিয়ে বাংলাদেশ লাল বলের ক্রিকেটে ফিরেছে, আর ফিরতেই মুমিনুলের সেঞ্চুরি! তামিম ইকবালকে (৯) টপকে বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডই এখন তাঁর। শুধু কি তাুই, টেস্ট ইতিহাসে একটি জায়গায় মুমিনুলের পাশে কেউ নেই।
ঘরের বাইরে সেঞ্চুরির আগে দেশের মাটিতে মুমিনুলের মতো এত সেঞ্চুরি টেস্ট ইতিহাসে আর কারও নেই।জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শনিবার সেঞ্চুরি পূর্ণ হতেই কিংবদন্তিদের সঙ্গে একই সারিতে উঠে গেছে মুমিনুলের নাম। একটু অবশ্য ভুল বলা হলো! কিংবদন্তিদের সারিতে তো আগেও ছিলেন। একই মাঠে ৬ সেঞ্চুরি এর আগে মুমিনুল ছাড়াও আরও ৫ ব্যাটসম্যানের ব্যাটে ৬ বার দেখেছিল ক্রিকেট। নামগুলো দেখে নিন মাইকেল ভন, রস টেলর, রিকি পন্টিং (দুই মাঠে), ম্যাথু হেইডেন ও গ্রাহাম গুচ। সেখান থেকে একটু ‘পদোন্নতি’ হলো মুমিনুলের। পন্টিং-হেইডেনদের ছাড়িয়ে বসে গেলেন ক্লার্ক-সাঙ্গা-জয়ার পাশে।অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি মাইকেল ক্লার্ক ৭টি সেঞ্চুরি করেছিলেন অ্যাডিলেড ওভালে। শ্রীলঙ্কার দুই কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনের ৭টি করে সেঞ্চুরি আবার একই মাঠে গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম।তবে একটা জায়গায় সাঙ্গা-জয়াকেও ছাপিয়ে ক্লার্কের সমতায় মুমিনুল। ম্যাচ খেলার সংখ্যায়। গলে ৭টি সেঞ্চুরি পেতে সাঙ্গাকারার লেগেছিল ২৩ ম্যাচ, জয়াবর্ধনেরও তা-ই। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই টেস্টটি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মুমিনুলের ক্যারিয়ারে দশম টেস্ট। ক্লার্কও অ্যাডিলেডে ৭ সেঞ্চুরি করেছিলেন ১০ টেস্টে। এক মাঠে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁতে চট্টগ্রামে আরও ৪টি সেঞ্চুরি করতে হবে মুমিনুলকে। সেই মুকূট এই মুহূর্তে জয়াবর্ধনেরই দখলে। কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ২৭ ম্যাচে ১১টি সেঞ্চুরি করেছেন লঙ্কান সাবেক ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তালিকার দুই নম্বরে আছেন ব্যাটিংয়ের শেষ কথা যাঁকে মানা হয়, সেই ডন ব্র্যাডম্যান। অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ৯টি সেঞ্চুরি করেছেন মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। আর সেটি করেছেন মাত্র ১১ ম্যাচে! এক মাঠে ৯ সেঞ্চুরি আছে দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিসেরও। কেপটাউনে ৯ সেঞ্চুরি পেতে ক্যালিস খেলেছেন ২২ ম্যাচ। সেঞ্চুরির পর আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আউট হয়ে যান মুমিনুল। সেঞ্চুরির পর আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আউট হয়ে যান মুমিনুল।এক মাঠে ৮ সেঞ্চুরিও শুধু এক ব্যাটসম্যানের ব্যাটেই দেখেছে ক্রিকেট—সাঙ্গাকারা। কলম্বোতে তাঁর ৮ সেঞ্চুরি পেতে খেলতে হয়েছে ২২ ম্যাচ। মুমিনুলের অবশ্য এই রেকর্ডের পথে আপাতত শুধু দুজন ব্যাটসম্যানের দিকে নজর রাখতে হবে। দুজনই নিউজিল্যান্ডের—রস টেলর ও কেন উইলিয়ামসন।একই মাঠে ৪টি বা তার বেশি সেঞ্চুরি আছে—এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এখনো খেলছেন শুধু এ দুজনই। টেলরের ৬টি সেঞ্চুরি হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে, আর উইলিয়ামসন একই মাঠে করেছেন ৫টি সেঞ্চুরি।ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান টেস্টটি ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে অভিষিক্ত মুমিনুলের ক্যারিয়ারের ৪১তম। তবে মজার ব্যাপার, এর মধ্যে যে ১০টি সেঞ্চুরি করেছেন মুমিনুল, সব কটিই দেশের মাটিতে। এতেও একটা রেকর্ড হয়েছে মুমিনুলের।
বিদেশের মাটিতে কোনো সেঞ্চুরি করার আগেই দেশের মাটিতে এত সেঞ্চুরি টেস্ট ইতিহাসে আর কারও নেই! ৪১ টেস্টের মধ্যে ২৪টি মুমিনুল খেলেছেন দেশের মাটিতে। এই ‘রেকর্ডে’ মুমিনুল পেরিয়ে গেছেন সাবেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান অ্যালান ল্যাম্বকে। ক্যারিয়ারে ১৪ সেঞ্চুরির মধ্যে প্রথম ৯টিই ল্যাম্ব করেছিলেন দেশের মাটিতে, দশম সেঞ্চুরিটি আসে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ভারতের রোহিত শর্মার এখন পর্যন্ত দেশের মাটিতে ৬টি সেঞ্চুরি, বিদেশে একটিও নেই। ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান চান্দু বোর্দে বিদেশে সেঞ্চুরিহীন থেকে দেশের মাটিতে করেছেন ৫টি সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রডের বাবা ক্রিস ব্রড আবার এদিক থেকে ১৮০ ডিগ্রি ব্যতিক্রম। ক্যারিয়ারে ৬টি সেঞ্চুরি করেছিলেন সিনিয়র ব্রড, সব কটিই বিদেশের মাটিতে!