১১:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাঁধ রক্ষায় গাছ লাগাতে হবে

উপকূলীয় বাঁধ সংস্কার কাজ পরিদর্শন করে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, ‘শুধু বাঁধ বাঁধলেই হবে না, বাঁধ সুরক্ষায় গাছ লাগিয়ে ভরে তুলতে হবে। বাঁধ যাতে আর না ভাঙে সেজন্য গাছ লাগিয়ে জঙ্গল তৈরি করতে হবে। নদীর স্রোতের টানে বাঁধ ভাঙন রোধে জেগে ওঠা চর কেটে স্রোতের দিক পরিবর্তন করতে হবে। শনিবার সকালে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের হিজলিয়া কোলা এলাকায় সুপার সাইক্লোন আম্পানে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী। এসময় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশ দেন। জাহিদ ফারুক বলেন, হিজলিয়া কোলা ভাঙন কবলিত বাঁধের পূর্ব পাশে নদীর বুকে জেগে ওঠা চরের মাটি কেটে ভাঙনের শিকার নদীরকূল রক্ষা করতে হবে। গাছ লাগিয়ে জঙ্গলে পরিণত করতে হবে। তবেই টেকসই হবে বেড়িবাঁধ। তা না হলে বাঁধ টিকবে না। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নদীর তীরে বনায়ন করতে হবে। আম্পানে দেখেছি যেখানে গাছগাছালি ছিল সেখানে বাঁধে ভাঙন কম হয়েছে। গাছ না থাকলে নদীর তীর, ঘরবাড়ি রক্ষা করা যায় না। অজুহাত না দিয়ে এলাকায় গাছ লাগান। গাছের বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সবাই মানসিকভাবে প্রস্তুতি না নিলে সরকারের পক্ষে রক্ষা করা সম্ভব না। সরকার ও জনগণ একসঙ্গে কাজ না করলে এলাকার মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না। প্রকল্প অনুযায়ী কোথায় কোথায় বাঁধের কাজ শেষ, কোথায় আবার ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ষাটের দশকে জোয়ার-ভাটা ঠেকাতে নদীতে বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে উঁচু ও টেইসই বাঁধ দিতে হচ্ছে। এতে অনেক টাকা লাগবে। চাইলেই তো টাকার আয়োজন করা যায় না। টাকার জন্য দাতা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। উপকূলের মানুষের জন্য টেকসই বাঁধ নির্মাণ হবেই ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, সরকার সব করে দেবে। তবে বাঁধ সুরক্ষার দায়িত্ব জনগণের। আগামী বর্ষার আগেই বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করতে সরকার কাজ করছে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিকল্যাণমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক-এমপি, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকন উদ দৌলা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) ড. মো. মিজানুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী রফিকউল্লাহ, শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের প্রমুখ। প্রতিমন্ত্রী জানান, সাতক্ষীরা ও খুলনার কয়রা এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। উপকূলের ভাঙন কবলিত ১২টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ বাঁধার দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ জায়গায় সেনাবাহিনী কাজ সম্পন্ন করেছে। ১২টি প্রকল্পে সেনাবাহিনীকে ৭৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। শনিবার সকালে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী শ্যামনগরের দুর্গবাটী, কামালকাটি, বিড়ালাক্ষী, আশাশুনির শ্রীউলা ইউনিয়ের হাজরাখালি, ঘোলা ত্রিমোহিনী ও হিজলিয়া কোলা, প্রতানগরের হরিষখালী এলাকা পরিদর্শন করেন। এর আগে শুক্রবার তিনি সুন্দরবন উপকূলীয় সাতক্ষীরা শ্যামনগরের দাতিনাখালী, লেবুবুনিয়া, খুলনা জেলার কয়রার গোলখালী, বেদকাশী, হরিণখোলা, আশাশুনি উপজেলার চাকলা ও কুড়িকাউনিয়া ভাঙন এলাকার পরিদর্শন করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।

ট্যাগ :

চট্টগ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় বহিস্কৃত যুবদলের দুই নেতা, নিহত জুবায়ের যুবলীগের কর্মী

বাঁধ রক্ষায় গাছ লাগাতে হবে

প্রকাশিত : ১২:০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

উপকূলীয় বাঁধ সংস্কার কাজ পরিদর্শন করে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, ‘শুধু বাঁধ বাঁধলেই হবে না, বাঁধ সুরক্ষায় গাছ লাগিয়ে ভরে তুলতে হবে। বাঁধ যাতে আর না ভাঙে সেজন্য গাছ লাগিয়ে জঙ্গল তৈরি করতে হবে। নদীর স্রোতের টানে বাঁধ ভাঙন রোধে জেগে ওঠা চর কেটে স্রোতের দিক পরিবর্তন করতে হবে। শনিবার সকালে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের হিজলিয়া কোলা এলাকায় সুপার সাইক্লোন আম্পানে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী। এসময় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশ দেন। জাহিদ ফারুক বলেন, হিজলিয়া কোলা ভাঙন কবলিত বাঁধের পূর্ব পাশে নদীর বুকে জেগে ওঠা চরের মাটি কেটে ভাঙনের শিকার নদীরকূল রক্ষা করতে হবে। গাছ লাগিয়ে জঙ্গলে পরিণত করতে হবে। তবেই টেকসই হবে বেড়িবাঁধ। তা না হলে বাঁধ টিকবে না। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নদীর তীরে বনায়ন করতে হবে। আম্পানে দেখেছি যেখানে গাছগাছালি ছিল সেখানে বাঁধে ভাঙন কম হয়েছে। গাছ না থাকলে নদীর তীর, ঘরবাড়ি রক্ষা করা যায় না। অজুহাত না দিয়ে এলাকায় গাছ লাগান। গাছের বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সবাই মানসিকভাবে প্রস্তুতি না নিলে সরকারের পক্ষে রক্ষা করা সম্ভব না। সরকার ও জনগণ একসঙ্গে কাজ না করলে এলাকার মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না। প্রকল্প অনুযায়ী কোথায় কোথায় বাঁধের কাজ শেষ, কোথায় আবার ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ষাটের দশকে জোয়ার-ভাটা ঠেকাতে নদীতে বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে উঁচু ও টেইসই বাঁধ দিতে হচ্ছে। এতে অনেক টাকা লাগবে। চাইলেই তো টাকার আয়োজন করা যায় না। টাকার জন্য দাতা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। উপকূলের মানুষের জন্য টেকসই বাঁধ নির্মাণ হবেই ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, সরকার সব করে দেবে। তবে বাঁধ সুরক্ষার দায়িত্ব জনগণের। আগামী বর্ষার আগেই বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করতে সরকার কাজ করছে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিকল্যাণমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক-এমপি, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকন উদ দৌলা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) ড. মো. মিজানুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী রফিকউল্লাহ, শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের প্রমুখ। প্রতিমন্ত্রী জানান, সাতক্ষীরা ও খুলনার কয়রা এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। উপকূলের ভাঙন কবলিত ১২টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ বাঁধার দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ জায়গায় সেনাবাহিনী কাজ সম্পন্ন করেছে। ১২টি প্রকল্পে সেনাবাহিনীকে ৭৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। শনিবার সকালে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী শ্যামনগরের দুর্গবাটী, কামালকাটি, বিড়ালাক্ষী, আশাশুনির শ্রীউলা ইউনিয়ের হাজরাখালি, ঘোলা ত্রিমোহিনী ও হিজলিয়া কোলা, প্রতানগরের হরিষখালী এলাকা পরিদর্শন করেন। এর আগে শুক্রবার তিনি সুন্দরবন উপকূলীয় সাতক্ষীরা শ্যামনগরের দাতিনাখালী, লেবুবুনিয়া, খুলনা জেলার কয়রার গোলখালী, বেদকাশী, হরিণখোলা, আশাশুনি উপজেলার চাকলা ও কুড়িকাউনিয়া ভাঙন এলাকার পরিদর্শন করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।