০৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রত্যাশার অধিক গতি তিন মেগা প্রকল্পে

  • তাকী জোবায়ের
  • প্রকাশিত : ১২:০০:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • 27

সরকারের তিনটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের হার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। যে কারণে প্রকল্পগুলোতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। প্রকল্প তিনটি হচ্ছে- পদ্মা রেল সংযোগ, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর। এছাড়া মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ প্রত্যাশিত মাত্রায়ই রয়েছে। এজন্য মেট্রেরেলে (এআরটি-৬) মূল বরাদ্দ না কমিয়ে অপরিবর্তিত রাখা হচ্ছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের এডিপি সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে সংশোধিত এডিপির জন্য প্রকল্পভিত্তিক চাহিদা চাওয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সরকারের ফাস্ট ট্রাকে থাকা প্রকল্পগুলো মধ্যে পদ্মা রেল সংযোগ, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রকল্প তিনটির বাস্তবায়নের হার লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি। সাধারণত, প্রতি বছরই প্রকল্প বাস্তবায়নের গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভর করে সংশোধিত এডিপি’তে বরাদ্দ কমানো বা বাড়ানো হয়। তবে প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানোর রেকর্ড খুব একটা নেই। এবার করোনা মহামারির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীর তদারকিতে থাকা ফাস্ট ট্রাকের এই প্রকল্পগুলোতে আশাতীত গতি এসেছে।
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে রেলওয়ে মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের বাস্তবায়ন গতি বাড়ায় অর্থের চাহিদাও বেড়েছে। এ কারণে চলতি অর্থবছরে এই প্রকল্পে ১৮০১ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। শেষ হবে ২০২৪ সালের জুনে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৪ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৩৪ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৩৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এই প্রকল্পটিতে বর্তমানে তেমন কোনো জটিলতা নেই বলে জানা গেছে।
মাতারবাড়িতে ৬০০ মেগাওয়াটের ২টি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল পাওয়ার প্রকল্পের কাজের গতি বাড়ায় বাড়ছে অর্থব্যয়ও। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে যেখানে বরাদ্দের মাত্র ৩০ শতাংশ ব্যয় হয়েছিল, পাঁচ মাস শেষে এসে নভেম্বরে তা ৪২ শতাংশ হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৩৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। কাজের গতি বাড়ায় মূল বরাদ্দের চেয়ে ৫২৮ কোটি টাকা বাড়তি বরাদ্দ চেয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটি ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা। নভেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৪ হাজার ৪৪৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় দুটি প্যাকেজের মধ্যে প্যাকেজ ১.১-এর প্রিপারেটরি ওয়ার্ক ফর পাওয়ার প্ল্যান্ট ও পোর্ট ফ্যাসিলিটিজের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। প্যাকেজ ১.২-এর পাওয়ার প্ল্যান্ট ও পোর্ট ফ্যাসিলিটিজের কাজ ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ, পোর্ট-প্ল্যান্ট প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন ও পরামর্শক সেবা ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ, পল্লী বিদ্যুতায়ন শতভাগ, টাউনশিপের ভূমি উন্নয়ন ৩৩ শতাংশ, পূর্ত কাজ (আবসিক) ৩ শতাংশ, পূর্ত কাজ (অনাবাসিক) ১৯ দশমিক ২৩ শতাংশ হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য কাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে।
এছাড়াও পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে মূল বরাদ্দ ৩৫০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ কোটি এবং পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণে নেয়া পৃথক প্রকল্পের বরাদ্দ ৩৫০ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৬০০ কোটি টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলছে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পটি। নভেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে দুই হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮০ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি ৭৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ফাস্টট্র্যাক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে প্রকল্পের আওতায় বেশকিছু কাজ ব্যাহত হয়েছে। এগুলো হলো : ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসন কাজের ১৪টি প্যাকেজের কাজ, নির্মিতব্য বিভিন্ন জলযানগুলোর বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট ও জাহাজের ট্রায়াল ডেলিভারি, প্রশিক্ষণ এবং বন্দরের ডিটেইল মাস্টার প্ল্যান কার্যক্রম। তবে এখন এসব কাজ আবার পুরোদমে শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাজধানীবাসীর যানজট মুক্তির স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। এডিপিতে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পে ব্যয়ের যে লক্ষ্য ধরা হয়েছিল, সংশোধিত এডিপিতে তা বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রকল্পে চলতি অর্থবছরের জন্য ৫৫৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে ব্যয় হয়েছে ৯৯৫ কোটি টাকা। ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানীর কর্র্মকতারা জানান, কোভিডের কারণে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ থাকলেও এখন তা আবার শুরু হয়েছে। তবে জাপানের পরামর্শকদের অনেকেই এখনো বাংলাদেশে আসেননি। শীগগিরই তারা আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনো কাজের গতি ধীর হলেও অর্থবছরের বাকি সময়ে গতি বাড়বে। বাড়বে ব্যয়ও। এ কারণে মূল বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব করা হয়নি।
২০১২ সালের জুলাই থেকে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে। নভেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সার্বিক অগ্রগতি ৫২ দশমিক ২৪ শতাংশ। পর্যায়ভিত্তিক অগ্রগতি উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম পর্যায় ৭৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায় ৪৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত তৃতীয় পর্যায় ৪১ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
উত্তরায় ডিপো এলাকার সব ধরনের রেললাইন বসানোর কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখানে কর্মরত একাধিক ইঞ্জিনিয়ার জানান, ডিপো এলাকায় পাথরসহ এবং পাথর ছাড়া দুই রকম লাইন বসানো হচ্ছে। ১৯ কিলোমিটার এ রেললাইনের কাজ মার্চে পুরোপুরি শেষ হবে। এ ছাড়া রেল চালানোর জন্য ডিপো এলাকায় ১৩২ কেভি রিসিভিং বিদ্যুৎ গ্রিড সাব-স্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে। ডেসকো পর্যন্ত লাইন স্থাপন করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি এটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ওভারহেড ক্যাটেনারি সিস্টেম (উপরে তার ঝুলে থাকার জন্য) মেট্রোরেল টেস্ট এরিয়া পর্যন্ত স্থাপন শেষ হয়েছে। ভায়াডাক্টের ওপর রেললাইন স্থাপনের কাজ উত্তরা ডিপো এলাকা থেকে মিরপুর ডিওএইচএস পর্যন্ত শেষ হয়েছে। প্রতিদিন ১০০ মিটার করে রেললাইন বসানোর কাজ এগিয়ে চলছে।
তিনটি স্টেশনে বিদ্যুতের ইকুইপমেন্ট পৌঁছে গেছে। আগারগাঁও পর্যন্ত স্টেশনগুলোর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পোর্টাল মাস্ট (তার ঝোলানোর বিশেষ পোল) স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। রাত-দিন মিলিয়ে এ প্রকল্পে প্রায় ২৫০-৩০০ শ্রমিক কাজ করছেন।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

চট্টগ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় বহিস্কৃত যুবদলের দুই নেতা, নিহত জুবায়ের যুবলীগের কর্মী

প্রত্যাশার অধিক গতি তিন মেগা প্রকল্পে

প্রকাশিত : ১২:০০:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১

সরকারের তিনটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের হার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। যে কারণে প্রকল্পগুলোতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। প্রকল্প তিনটি হচ্ছে- পদ্মা রেল সংযোগ, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর। এছাড়া মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ প্রত্যাশিত মাত্রায়ই রয়েছে। এজন্য মেট্রেরেলে (এআরটি-৬) মূল বরাদ্দ না কমিয়ে অপরিবর্তিত রাখা হচ্ছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের এডিপি সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে সংশোধিত এডিপির জন্য প্রকল্পভিত্তিক চাহিদা চাওয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সরকারের ফাস্ট ট্রাকে থাকা প্রকল্পগুলো মধ্যে পদ্মা রেল সংযোগ, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রকল্প তিনটির বাস্তবায়নের হার লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি। সাধারণত, প্রতি বছরই প্রকল্প বাস্তবায়নের গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভর করে সংশোধিত এডিপি’তে বরাদ্দ কমানো বা বাড়ানো হয়। তবে প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানোর রেকর্ড খুব একটা নেই। এবার করোনা মহামারির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীর তদারকিতে থাকা ফাস্ট ট্রাকের এই প্রকল্পগুলোতে আশাতীত গতি এসেছে।
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে রেলওয়ে মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের বাস্তবায়ন গতি বাড়ায় অর্থের চাহিদাও বেড়েছে। এ কারণে চলতি অর্থবছরে এই প্রকল্পে ১৮০১ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। শেষ হবে ২০২৪ সালের জুনে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৪ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৩৪ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৩৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এই প্রকল্পটিতে বর্তমানে তেমন কোনো জটিলতা নেই বলে জানা গেছে।
মাতারবাড়িতে ৬০০ মেগাওয়াটের ২টি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল পাওয়ার প্রকল্পের কাজের গতি বাড়ায় বাড়ছে অর্থব্যয়ও। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে যেখানে বরাদ্দের মাত্র ৩০ শতাংশ ব্যয় হয়েছিল, পাঁচ মাস শেষে এসে নভেম্বরে তা ৪২ শতাংশ হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৩৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। কাজের গতি বাড়ায় মূল বরাদ্দের চেয়ে ৫২৮ কোটি টাকা বাড়তি বরাদ্দ চেয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটি ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা। নভেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৪ হাজার ৪৪৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় দুটি প্যাকেজের মধ্যে প্যাকেজ ১.১-এর প্রিপারেটরি ওয়ার্ক ফর পাওয়ার প্ল্যান্ট ও পোর্ট ফ্যাসিলিটিজের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। প্যাকেজ ১.২-এর পাওয়ার প্ল্যান্ট ও পোর্ট ফ্যাসিলিটিজের কাজ ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ, পোর্ট-প্ল্যান্ট প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন ও পরামর্শক সেবা ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ, পল্লী বিদ্যুতায়ন শতভাগ, টাউনশিপের ভূমি উন্নয়ন ৩৩ শতাংশ, পূর্ত কাজ (আবসিক) ৩ শতাংশ, পূর্ত কাজ (অনাবাসিক) ১৯ দশমিক ২৩ শতাংশ হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য কাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে।
এছাড়াও পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে মূল বরাদ্দ ৩৫০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ কোটি এবং পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণে নেয়া পৃথক প্রকল্পের বরাদ্দ ৩৫০ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৬০০ কোটি টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলছে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পটি। নভেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে দুই হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮০ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি ৭৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ফাস্টট্র্যাক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে প্রকল্পের আওতায় বেশকিছু কাজ ব্যাহত হয়েছে। এগুলো হলো : ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসন কাজের ১৪টি প্যাকেজের কাজ, নির্মিতব্য বিভিন্ন জলযানগুলোর বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট ও জাহাজের ট্রায়াল ডেলিভারি, প্রশিক্ষণ এবং বন্দরের ডিটেইল মাস্টার প্ল্যান কার্যক্রম। তবে এখন এসব কাজ আবার পুরোদমে শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাজধানীবাসীর যানজট মুক্তির স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। এডিপিতে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পে ব্যয়ের যে লক্ষ্য ধরা হয়েছিল, সংশোধিত এডিপিতে তা বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রকল্পে চলতি অর্থবছরের জন্য ৫৫৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে ব্যয় হয়েছে ৯৯৫ কোটি টাকা। ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানীর কর্র্মকতারা জানান, কোভিডের কারণে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ থাকলেও এখন তা আবার শুরু হয়েছে। তবে জাপানের পরামর্শকদের অনেকেই এখনো বাংলাদেশে আসেননি। শীগগিরই তারা আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনো কাজের গতি ধীর হলেও অর্থবছরের বাকি সময়ে গতি বাড়বে। বাড়বে ব্যয়ও। এ কারণে মূল বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব করা হয়নি।
২০১২ সালের জুলাই থেকে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে। নভেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সার্বিক অগ্রগতি ৫২ দশমিক ২৪ শতাংশ। পর্যায়ভিত্তিক অগ্রগতি উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম পর্যায় ৭৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায় ৪৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত তৃতীয় পর্যায় ৪১ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
উত্তরায় ডিপো এলাকার সব ধরনের রেললাইন বসানোর কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখানে কর্মরত একাধিক ইঞ্জিনিয়ার জানান, ডিপো এলাকায় পাথরসহ এবং পাথর ছাড়া দুই রকম লাইন বসানো হচ্ছে। ১৯ কিলোমিটার এ রেললাইনের কাজ মার্চে পুরোপুরি শেষ হবে। এ ছাড়া রেল চালানোর জন্য ডিপো এলাকায় ১৩২ কেভি রিসিভিং বিদ্যুৎ গ্রিড সাব-স্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে। ডেসকো পর্যন্ত লাইন স্থাপন করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি এটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ওভারহেড ক্যাটেনারি সিস্টেম (উপরে তার ঝুলে থাকার জন্য) মেট্রোরেল টেস্ট এরিয়া পর্যন্ত স্থাপন শেষ হয়েছে। ভায়াডাক্টের ওপর রেললাইন স্থাপনের কাজ উত্তরা ডিপো এলাকা থেকে মিরপুর ডিওএইচএস পর্যন্ত শেষ হয়েছে। প্রতিদিন ১০০ মিটার করে রেললাইন বসানোর কাজ এগিয়ে চলছে।
তিনটি স্টেশনে বিদ্যুতের ইকুইপমেন্ট পৌঁছে গেছে। আগারগাঁও পর্যন্ত স্টেশনগুলোর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পোর্টাল মাস্ট (তার ঝোলানোর বিশেষ পোল) স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। রাত-দিন মিলিয়ে এ প্রকল্পে প্রায় ২৫০-৩০০ শ্রমিক কাজ করছেন।