০৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাছে গাছে আমের মুকুল

মধূমাসের প্রধান আকর্ষণ আম, যা মৌসুমে ছোট-বড় সকলের দৈনন্দিন খাবারের পছন্দের তালিকায় থাকে। পাকা আম খাওয়ার পাশাপাশি কাঁচা আমের ভর্তা, চাটনি অনেকের প্রিয় খাদ্য। বাঙালি যেন প্রতীক্ষায় থাকে জৈষ্ঠ্যের খরতাপের, যখন হৃদয় শীতল করবে এই সুমিষ্ট ফল। প্রতীক্ষার অবসান হতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে বাতাসে এখনি সুবাস ছড়াচ্ছে থোকায় থোকায় ফুটে থাকা আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। সবুজ পাতার বেষ্টনিতে হলুদ মুকুলে রুপ বদলেছে আমগাছ গুলোর। অনায়াসে যেকারো দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম সে। শীত ঋতুর শেষদিক এখন। এর পরেই আসছে ঋতুরাজ বসন্ত। বসন্ত গেলেই শেষ হবে প্রতীক্ষার পালা। এখন সেই মধু মাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল। চট্টগ্রামের মীরসরাই উপেজলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, সারি সারি আম গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয়রা। এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাণিজ্যিক বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলো। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। গ্রামীণ পবিরেশে বেড়ে উঠা বিভিন্নস্থানে থাকা নানা প্রজাতীর আমগাছের সাথে সাম্প্রতিককালে যুক্ত হয়েছে আম্রপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসাপা প্রভৃতি। এগুলো স্থানীয় লোকজন বিভিন্নস্থানে জমি ভরাট করে বাগান তৈরী করে এসব গাছ লাগিয়ে চাহিদামত আমের ফলন করছেন। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানিয়েছেন বাগান মালিকরা। মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জের স্থানীয় এক বাগান মালিক আনোয়ার হোসেন বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, তার বাগানে লাগানো আম গাছে একমাস আগে থেকে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। আবার কিছু গাছে মুকুল বের হচ্ছে। তিনি আরো জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ঔষধ স্প্রে করছেন তিনি। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘু নাথ নাহা বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, “মীরসরাইয়ে স্থানীয় আমের গাছ ছাড়াও বাণিজ্যিক বাগান আছে প্রায় ৯৫ হেক্টর জমিতে। এরমধ্য প্রায় ৩০ হাজার আমগাছ আছে। স্থানীয় আম বাগানীরা যেকোন পরামর্শের জন্য আসলে আমরা তাদের প্রয়োজনীয় পারামর্শ প্রদান করছি।” আম গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, মূলত আবহাওয়াগত কারণে দেশীয় জাতের গাছে আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে। এ সময় বাগানে বসবাস করা হপার বা ফুদকী পোকা মুকুলের ক্ষতি করে। এ পোকা দমনে বালইনাশক স্প্রে করতে হবে। তবে এখন যেহেতু কুয়াশা বেশি পড়ছে তাই এখন স্প্রে করে খুব ভালো ফল পাবেন না চাষীরা। কারণ ঠান্ডার কারণে এমনিতেই হপার পোকা গাছের বাকলে লুকিয়ে থাকবে। তবে আরও কিছুদিন পরে স্প্রে দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে নিয়ে সালফার জাতীয় ছত্রাক নাসক স্প্রে করা যাবে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

চট্টগ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় বহিস্কৃত যুবদলের দুই নেতা, নিহত জুবায়ের যুবলীগের কর্মী

গাছে গাছে আমের মুকুল

প্রকাশিত : ১২:০১:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১

মধূমাসের প্রধান আকর্ষণ আম, যা মৌসুমে ছোট-বড় সকলের দৈনন্দিন খাবারের পছন্দের তালিকায় থাকে। পাকা আম খাওয়ার পাশাপাশি কাঁচা আমের ভর্তা, চাটনি অনেকের প্রিয় খাদ্য। বাঙালি যেন প্রতীক্ষায় থাকে জৈষ্ঠ্যের খরতাপের, যখন হৃদয় শীতল করবে এই সুমিষ্ট ফল। প্রতীক্ষার অবসান হতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে বাতাসে এখনি সুবাস ছড়াচ্ছে থোকায় থোকায় ফুটে থাকা আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। সবুজ পাতার বেষ্টনিতে হলুদ মুকুলে রুপ বদলেছে আমগাছ গুলোর। অনায়াসে যেকারো দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম সে। শীত ঋতুর শেষদিক এখন। এর পরেই আসছে ঋতুরাজ বসন্ত। বসন্ত গেলেই শেষ হবে প্রতীক্ষার পালা। এখন সেই মধু মাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল। চট্টগ্রামের মীরসরাই উপেজলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, সারি সারি আম গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয়রা। এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাণিজ্যিক বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলো। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। গ্রামীণ পবিরেশে বেড়ে উঠা বিভিন্নস্থানে থাকা নানা প্রজাতীর আমগাছের সাথে সাম্প্রতিককালে যুক্ত হয়েছে আম্রপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসাপা প্রভৃতি। এগুলো স্থানীয় লোকজন বিভিন্নস্থানে জমি ভরাট করে বাগান তৈরী করে এসব গাছ লাগিয়ে চাহিদামত আমের ফলন করছেন। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানিয়েছেন বাগান মালিকরা। মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জের স্থানীয় এক বাগান মালিক আনোয়ার হোসেন বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, তার বাগানে লাগানো আম গাছে একমাস আগে থেকে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। আবার কিছু গাছে মুকুল বের হচ্ছে। তিনি আরো জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ঔষধ স্প্রে করছেন তিনি। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘু নাথ নাহা বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, “মীরসরাইয়ে স্থানীয় আমের গাছ ছাড়াও বাণিজ্যিক বাগান আছে প্রায় ৯৫ হেক্টর জমিতে। এরমধ্য প্রায় ৩০ হাজার আমগাছ আছে। স্থানীয় আম বাগানীরা যেকোন পরামর্শের জন্য আসলে আমরা তাদের প্রয়োজনীয় পারামর্শ প্রদান করছি।” আম গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, মূলত আবহাওয়াগত কারণে দেশীয় জাতের গাছে আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে। এ সময় বাগানে বসবাস করা হপার বা ফুদকী পোকা মুকুলের ক্ষতি করে। এ পোকা দমনে বালইনাশক স্প্রে করতে হবে। তবে এখন যেহেতু কুয়াশা বেশি পড়ছে তাই এখন স্প্রে করে খুব ভালো ফল পাবেন না চাষীরা। কারণ ঠান্ডার কারণে এমনিতেই হপার পোকা গাছের বাকলে লুকিয়ে থাকবে। তবে আরও কিছুদিন পরে স্প্রে দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে নিয়ে সালফার জাতীয় ছত্রাক নাসক স্প্রে করা যাবে।