০৮:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কাটুই কাটছে কৃষকের সপ্ন, দুশ্চিন্তায় কৃষক

দক্ষিনাঞ্চলের সবথেকে জনপ্রিয় ও বানিজ্যিকভাবে লাভজনক ফসলের নাম তরমুজ। যার সবথেকে বেশি উৎপাদন বাংলাদেশের সর্বদক্ষিনে অবস্থিত পটুয়াখালী জেলার সাগর ও নদী বেষ্ঠিত উপজেলা রাঙ্গাবালীতে। শীত মৌসুমে হাজারো কৃষকের সপ্নজুড়ে এই তরমুজ। করোনা মহামারীর কারনে ভালো দাম ও ট্রান্সপোর্ট সংকটের গত বছর নষ্ট হয়েছে হাজারো কৃষকের সপ্ন। তবে এবছর করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক থাকায় তরমুজ ঘিরে আবার নতুন সপ্ন দেখছেন কৃষকরা। তবে তাদের সপ্নে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে কাটুই নামক এক ধরনের বিষাক্ত পোকা। যার কামড়ে তরমুজ গাছের গোড়ায় পচন ধরে এবং মারা যায়। এছাড়াও রয়েছে নাম না জানা রোগ যার প্রভাবে প্রথমে গাছের মাথা লাল হয়ে একটা দুটো ডাল তারপরে মারা যাচ্ছে গাছ। । এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে রাঙ্গাবালীর অধিকাংশ কৃষক। তাদের ধারনা এই পোকার আক্রমন ও গাছ মরে যাওয়া বন্ধ না হলে এবারো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হবেন তারা। সরেজমিনে দেখা গেছে রাঙ্গাবালীর বেশিরভাগ তরমুজ ক্ষেতেই রয়েছে এমন সমস্যা। তবে কৃষি কর্মকর্তার দাবী সমস্যা চিহ্নিত করে বালাইনাষক ব্যবহারে মিলতে পারে এর প্রতিকার। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে এবছর এ পর্যন্ত রাঙ্গাবালীতে ৫২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। নতুন করে প্রস্ততি নিচ্ছেন আরও অনেকেই। জানতে চাইলে চর ইমারশনের তরমুজ কৃষক বেলাল প্যাদা জানান, গত বছর বৃষ্টি ও করোনার কারনে আমার ৫লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। ক্ষতি পূরনের জন্য এবার আবারও তরমুজ দিলাম । কিন্তু তাতে কোন লাভ দেখছিনা। এনিয়ে একই জমিতে ৪ বার বীজ রোপন করছি । প্রতিবার একই সমস্যা গাছ মরে যায়। অন্য জায়গা থেকে মাটি এনে এই তরমুজে গাচের গোড়ায় দিয়েছিলাম । ভাবছি হয়তো সমাধান পাবো কিন্তু তাও কোন সমাধান পাইনি। এরকম চললে এবার সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবো। এখন একমাত্র আল¬াহ্র ওপরে ভরসা। একই এলাকার চাষী মিথেল হাওলাদার জানান, গত বছর বীজ রোপনের পরপরই বৃষ্টির কারনে সেই বীজ ধুয়ে যায়। পরে নতুন করে চাষ করে আবারও বীজ রোপন করি , ফলনও ভালো ছিল। তবে করোনার কারনে বাজারজাত না করতে পারায় ক্ষেতেই মিশে গেছে । লোকসান মিটাতে ঋন নিয়ে এবার ২ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করলাম। গাছের গড়ন প্রথেমে ভালো থাকলেও হঠাৎ করে ফলনসহ গাছ মরে যাচ্ছে। তার উপরে কাটুই পোকার আক্রমনও আছে। তরমুজ চাষী মফিদুল হাং জানান, তরমুজ গাছের যখন চার পাতা ছাড়লো তখনই গাছের মাথা লাল হয়ে ১৬০ শতাংশ জমির চারা মরে গেছে। এখন পূনরায় বীজ বপন করলাম তাও একই অবস্থা। তরমুজ চাষী নিজাম উদ্দিন জানান, কাটুই পোকার আক্রমন বেশি থাকলেও ওষুধ দিলে তা চলে যায় , তবে গাছ যে কি কারনে মারা যাচ্ছে তা এখন পর্যন্ত কেউই ধরতে পারছি না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, অনেক সময় কাটুই পোকা গাছের গোড়া কেটে দেয়। কিংবা গোড়া পচা রোগের কারনে গাছ মরে যায়। তবে সমস্যা চিহ্নিত করে বালাইনাশক ব্যাবহারে এর প্রতিকার মিলবে বলে তার দাবি । তিনি আরও জানান, কৃষকের সেবায় উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক মাঠে থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

ট্যাগ :

৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব কর্মচারীকে সম্পদের হিসাব দিতে হবে 

কাটুই কাটছে কৃষকের সপ্ন, দুশ্চিন্তায় কৃষক

প্রকাশিত : ১২:৪৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

দক্ষিনাঞ্চলের সবথেকে জনপ্রিয় ও বানিজ্যিকভাবে লাভজনক ফসলের নাম তরমুজ। যার সবথেকে বেশি উৎপাদন বাংলাদেশের সর্বদক্ষিনে অবস্থিত পটুয়াখালী জেলার সাগর ও নদী বেষ্ঠিত উপজেলা রাঙ্গাবালীতে। শীত মৌসুমে হাজারো কৃষকের সপ্নজুড়ে এই তরমুজ। করোনা মহামারীর কারনে ভালো দাম ও ট্রান্সপোর্ট সংকটের গত বছর নষ্ট হয়েছে হাজারো কৃষকের সপ্ন। তবে এবছর করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক থাকায় তরমুজ ঘিরে আবার নতুন সপ্ন দেখছেন কৃষকরা। তবে তাদের সপ্নে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে কাটুই নামক এক ধরনের বিষাক্ত পোকা। যার কামড়ে তরমুজ গাছের গোড়ায় পচন ধরে এবং মারা যায়। এছাড়াও রয়েছে নাম না জানা রোগ যার প্রভাবে প্রথমে গাছের মাথা লাল হয়ে একটা দুটো ডাল তারপরে মারা যাচ্ছে গাছ। । এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে রাঙ্গাবালীর অধিকাংশ কৃষক। তাদের ধারনা এই পোকার আক্রমন ও গাছ মরে যাওয়া বন্ধ না হলে এবারো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হবেন তারা। সরেজমিনে দেখা গেছে রাঙ্গাবালীর বেশিরভাগ তরমুজ ক্ষেতেই রয়েছে এমন সমস্যা। তবে কৃষি কর্মকর্তার দাবী সমস্যা চিহ্নিত করে বালাইনাষক ব্যবহারে মিলতে পারে এর প্রতিকার। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে এবছর এ পর্যন্ত রাঙ্গাবালীতে ৫২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। নতুন করে প্রস্ততি নিচ্ছেন আরও অনেকেই। জানতে চাইলে চর ইমারশনের তরমুজ কৃষক বেলাল প্যাদা জানান, গত বছর বৃষ্টি ও করোনার কারনে আমার ৫লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। ক্ষতি পূরনের জন্য এবার আবারও তরমুজ দিলাম । কিন্তু তাতে কোন লাভ দেখছিনা। এনিয়ে একই জমিতে ৪ বার বীজ রোপন করছি । প্রতিবার একই সমস্যা গাছ মরে যায়। অন্য জায়গা থেকে মাটি এনে এই তরমুজে গাচের গোড়ায় দিয়েছিলাম । ভাবছি হয়তো সমাধান পাবো কিন্তু তাও কোন সমাধান পাইনি। এরকম চললে এবার সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবো। এখন একমাত্র আল¬াহ্র ওপরে ভরসা। একই এলাকার চাষী মিথেল হাওলাদার জানান, গত বছর বীজ রোপনের পরপরই বৃষ্টির কারনে সেই বীজ ধুয়ে যায়। পরে নতুন করে চাষ করে আবারও বীজ রোপন করি , ফলনও ভালো ছিল। তবে করোনার কারনে বাজারজাত না করতে পারায় ক্ষেতেই মিশে গেছে । লোকসান মিটাতে ঋন নিয়ে এবার ২ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করলাম। গাছের গড়ন প্রথেমে ভালো থাকলেও হঠাৎ করে ফলনসহ গাছ মরে যাচ্ছে। তার উপরে কাটুই পোকার আক্রমনও আছে। তরমুজ চাষী মফিদুল হাং জানান, তরমুজ গাছের যখন চার পাতা ছাড়লো তখনই গাছের মাথা লাল হয়ে ১৬০ শতাংশ জমির চারা মরে গেছে। এখন পূনরায় বীজ বপন করলাম তাও একই অবস্থা। তরমুজ চাষী নিজাম উদ্দিন জানান, কাটুই পোকার আক্রমন বেশি থাকলেও ওষুধ দিলে তা চলে যায় , তবে গাছ যে কি কারনে মারা যাচ্ছে তা এখন পর্যন্ত কেউই ধরতে পারছি না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, অনেক সময় কাটুই পোকা গাছের গোড়া কেটে দেয়। কিংবা গোড়া পচা রোগের কারনে গাছ মরে যায়। তবে সমস্যা চিহ্নিত করে বালাইনাশক ব্যাবহারে এর প্রতিকার মিলবে বলে তার দাবি । তিনি আরও জানান, কৃষকের সেবায় উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক মাঠে থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।