০৪:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সবার জন্য টিকা নিশ্চিত হচ্ছে

  • মেহেদী আরাফাত
  • প্রকাশিত : ১২:০১:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • 25

আঠের ঊর্ধ্ব সকল নাগরিকের জন্য করোনা ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। জাতীয় কভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশের ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ টিকা কিনেছে সরকার। এছাড়া করোনা টিকা ক্রয়ের জন্য বিশ্বব্যাংক ৪ হাজার ২৪০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় সাত কোটি মানুষের করোনা টিকা নিশ্চিত হয়েছে। বাকি আরও প্রায় সাত কোটি মানুষের জন্য করোনা টিকা সংগ্রহের উদ্দেশে অর্থসংস্থানে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। এজন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
করোনার টিকা কিনতে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থায়ন সংগ্রহের বিষয়ে সম্প্রতি সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভা করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহে ইআরডির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও অর্থ বিভাগ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছে অর্থায়নের অনুরোধ জানিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা অর্থায়নের বিষয়ে আগ্রহও প্রকাশ করেছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ জানিয়েছে, আগামিতে বাকি জনগোষ্ঠীর জন্য ভ্যাকসিন সংগ্রহে ৯ হাজার কোটি থেকে ১৪ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হতে পারে। তবে ভ্যাকসিনের দাম কম বা বেশি হওয়ার ওপর এ অর্থের পরিমাণ নির্ভর করবে। উন্নয়ন সহযোগীরা যদি এক্ষেত্রে এগিয়ে না আসে, তাহলে ভ্যাকসিন কিনতে সরকার বাজেট থেকে টাকা দেবে। তবে বর্তমানে বাংলাদেশকে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান সহজ শর্তে আর্থিক সহায়তা বা ঋণ দিতে চাচ্ছে। তাই সরকারও তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেয়ার চেষ্টা করছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই সভায় জানানো হয়েছিল, জাপান সরকার (জাইকা) ভ্যাকসিন ক্রয় ও স্বাস্থ্যসেবা বা শিক্ষার উন্নয়নের লক্ষ্যে ৩০০ থেকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার তথা ২ হাজার ৮৪৪ থেকে ২ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা ঋণের বিষয়ে এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক কর্তৃক গঠিত ‘এশিয়া ভ্যাকসিন অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি’ তহবিল থেকে ভ্যাকসিন ক্রয় ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণের জন্য ৫০ কোটি ডলার ঋণের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। জাইকার বাজেট সাপোর্টের আওতায় ঋণ চুক্তি সইয়ের আগে কিছু অ্যাকশন প্ল্যান চূড়ান্ত করতে হবে। পাশাপাশি অর্থ ছাড়ের আগে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে কিছু ‘পলিসি অ্যাকশন’ অর্জন করতে হবে। এছাড়া সম্প্রতি এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ হিসেবে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এদিকে প্রথমবারের মতো ফ্রেঞ্চ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এএফডি) স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়নের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সভায় জানানো হয়, আলোচনাধীন উৎসগুলো থেকে প্রয়োজনীয় টিকার অর্থ মেটানো সম্ভব। বাজেট সাপোর্টের আওতায় প্রদত্ত সহায়তা সরাসরি অর্থ বিভাগ পাবে। তবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্ধারিত পলিসি অ্যাকশন বাস্তবায়নের জন্য অর্থ বিভাগ থেকে প্রয়োজনানুযায়ী অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে। উল্লেখ্য, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে প্রস্তুতকৃত যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’র তিন কোটি ডোজ কিনেছে সরকার। এর মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ গত ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে পৌঁছেছে। এর আগে ২১ জানুয়ারি ২০ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড বাংলাদেশকে উপহার পাঠায় ভারত। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সরকারের হাতে রয়েছে ৭০ লাখ ডোজ টিকা। আগামি ২২ ফেব্রুয়ারি টিকার দ্বিতীয় চালান দেশে আসছে বলে জানা গেছে।

ট্যাগ :

সবার জন্য টিকা নিশ্চিত হচ্ছে

প্রকাশিত : ১২:০১:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১

আঠের ঊর্ধ্ব সকল নাগরিকের জন্য করোনা ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। জাতীয় কভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশের ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ টিকা কিনেছে সরকার। এছাড়া করোনা টিকা ক্রয়ের জন্য বিশ্বব্যাংক ৪ হাজার ২৪০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় সাত কোটি মানুষের করোনা টিকা নিশ্চিত হয়েছে। বাকি আরও প্রায় সাত কোটি মানুষের জন্য করোনা টিকা সংগ্রহের উদ্দেশে অর্থসংস্থানে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। এজন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
করোনার টিকা কিনতে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থায়ন সংগ্রহের বিষয়ে সম্প্রতি সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভা করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহে ইআরডির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও অর্থ বিভাগ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছে অর্থায়নের অনুরোধ জানিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা অর্থায়নের বিষয়ে আগ্রহও প্রকাশ করেছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ জানিয়েছে, আগামিতে বাকি জনগোষ্ঠীর জন্য ভ্যাকসিন সংগ্রহে ৯ হাজার কোটি থেকে ১৪ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হতে পারে। তবে ভ্যাকসিনের দাম কম বা বেশি হওয়ার ওপর এ অর্থের পরিমাণ নির্ভর করবে। উন্নয়ন সহযোগীরা যদি এক্ষেত্রে এগিয়ে না আসে, তাহলে ভ্যাকসিন কিনতে সরকার বাজেট থেকে টাকা দেবে। তবে বর্তমানে বাংলাদেশকে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান সহজ শর্তে আর্থিক সহায়তা বা ঋণ দিতে চাচ্ছে। তাই সরকারও তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেয়ার চেষ্টা করছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই সভায় জানানো হয়েছিল, জাপান সরকার (জাইকা) ভ্যাকসিন ক্রয় ও স্বাস্থ্যসেবা বা শিক্ষার উন্নয়নের লক্ষ্যে ৩০০ থেকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার তথা ২ হাজার ৮৪৪ থেকে ২ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা ঋণের বিষয়ে এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক কর্তৃক গঠিত ‘এশিয়া ভ্যাকসিন অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি’ তহবিল থেকে ভ্যাকসিন ক্রয় ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণের জন্য ৫০ কোটি ডলার ঋণের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। জাইকার বাজেট সাপোর্টের আওতায় ঋণ চুক্তি সইয়ের আগে কিছু অ্যাকশন প্ল্যান চূড়ান্ত করতে হবে। পাশাপাশি অর্থ ছাড়ের আগে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে কিছু ‘পলিসি অ্যাকশন’ অর্জন করতে হবে। এছাড়া সম্প্রতি এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ হিসেবে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এদিকে প্রথমবারের মতো ফ্রেঞ্চ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এএফডি) স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়নের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সভায় জানানো হয়, আলোচনাধীন উৎসগুলো থেকে প্রয়োজনীয় টিকার অর্থ মেটানো সম্ভব। বাজেট সাপোর্টের আওতায় প্রদত্ত সহায়তা সরাসরি অর্থ বিভাগ পাবে। তবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্ধারিত পলিসি অ্যাকশন বাস্তবায়নের জন্য অর্থ বিভাগ থেকে প্রয়োজনানুযায়ী অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে। উল্লেখ্য, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে প্রস্তুতকৃত যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’র তিন কোটি ডোজ কিনেছে সরকার। এর মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ গত ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে পৌঁছেছে। এর আগে ২১ জানুয়ারি ২০ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড বাংলাদেশকে উপহার পাঠায় ভারত। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সরকারের হাতে রয়েছে ৭০ লাখ ডোজ টিকা। আগামি ২২ ফেব্রুয়ারি টিকার দ্বিতীয় চালান দেশে আসছে বলে জানা গেছে।