০২:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

সুরমার বুকে এখন অসংখ্য চর

সিলেট অঞ্চলের দীর্ঘতম নদী সুরমায় জেগেছে অসংখ্য ছোট-বড় চর। এ সব চরে খেলছে বালকেরা। কোথাও আবার রোপণ করা হয়েছে সবজি। কোথাও তৈরি হয়েছে হেঁটে চলার পথ। অনেক স্থানে হাঁটুজল থাকায় হেঁটে নদী পার হচ্ছেন অনেকে।অনেক স্থানে নদী সরু নালার মতো হয়ে গেছে। এতে নাব্য সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে পণ্যবাহী নৌযান (বলগেড) চলাচল। এ সব যান আটকে আছে চরে। ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করলেও পানির গভীরতা কম থাকায় ডুবোচরে আটকে গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগছে কয়েকগুণ।

সুরমা নদীর কানাইঘাট উপজেলা অংশের কিছু এলাকা সরেজমিন ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। একই দৃশ্য দেখা গেছে, সিলেট নগরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া অংশেও। নগরের কুশিঘাট থেকে কাজীর বাজার সেতু হয়ে টুকেরবাজার তেমুখী পর্যন্ত নদীর বিভিন্নস্থানে পলি জমে জেগে উঠেছে চর। এই অংশে নাব্য সংকটের পাশাপাশি নদীতে আর্বজনা ফেলার কারণে পানির রঙেও এসেছে পরিবর্তন। কালচে রঙ ধারণ করা নদীর পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

নদীতীরের বাসিন্দারা জানান, এক সময় সারা বছর নদীতে বড় নৌযান চলাচল করতো; পণ্য পরিবহন করা হতো এসব নৌযানে। এখন বছরের অর্ধেক সময় নদীতে পানি থাকে না। তখন স্রোতস্বিনী সুরমা সরু খালে পরিণত হয়। পানির গভীরতা এতটা কমে যায় যে, হেঁটে নদী পারাপার করা যায়।

পাউবো সূত্র জানায়, সুরমা নদীর উৎসমুখ থেকে ২৬ কিলোমিটার অভিন্ন সীমান্ত নদী হিসেবে চিহ্নিত। এজন্য এককভাবে কোনো দেশের পক্ষে নদী খনন করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সচিব পর্যায়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। ১৯৯৯ সালে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের মাধ্যমে নদীর উৎসমুখ খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে জরিপে আটকে আছে সেই উদ্যোগ।

অবশ্য ২০১৮ সালে সিলেট সদর উপজেলার কানিশাইলে ৬০০ মিটার সুরমা নদী খনন করা হয়। এ সময় সিলেট সদর উপজেলা এবং কানাইঘাট উপজেলার কয়েকটি অংশে নদী খননের জন্য প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুজ্জামান সরকার জানান, শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি প্রবাহ কমে যায়, এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। নাব্য সংকটের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখছে। আপাতত সুরমা খননের প্রকল্প নেই বলে জানান তিনি।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

সুরমার বুকে এখন অসংখ্য চর

প্রকাশিত : ১২:০১:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ মার্চ ২০২১

সিলেট অঞ্চলের দীর্ঘতম নদী সুরমায় জেগেছে অসংখ্য ছোট-বড় চর। এ সব চরে খেলছে বালকেরা। কোথাও আবার রোপণ করা হয়েছে সবজি। কোথাও তৈরি হয়েছে হেঁটে চলার পথ। অনেক স্থানে হাঁটুজল থাকায় হেঁটে নদী পার হচ্ছেন অনেকে।অনেক স্থানে নদী সরু নালার মতো হয়ে গেছে। এতে নাব্য সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে পণ্যবাহী নৌযান (বলগেড) চলাচল। এ সব যান আটকে আছে চরে। ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করলেও পানির গভীরতা কম থাকায় ডুবোচরে আটকে গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগছে কয়েকগুণ।

সুরমা নদীর কানাইঘাট উপজেলা অংশের কিছু এলাকা সরেজমিন ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। একই দৃশ্য দেখা গেছে, সিলেট নগরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া অংশেও। নগরের কুশিঘাট থেকে কাজীর বাজার সেতু হয়ে টুকেরবাজার তেমুখী পর্যন্ত নদীর বিভিন্নস্থানে পলি জমে জেগে উঠেছে চর। এই অংশে নাব্য সংকটের পাশাপাশি নদীতে আর্বজনা ফেলার কারণে পানির রঙেও এসেছে পরিবর্তন। কালচে রঙ ধারণ করা নদীর পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

নদীতীরের বাসিন্দারা জানান, এক সময় সারা বছর নদীতে বড় নৌযান চলাচল করতো; পণ্য পরিবহন করা হতো এসব নৌযানে। এখন বছরের অর্ধেক সময় নদীতে পানি থাকে না। তখন স্রোতস্বিনী সুরমা সরু খালে পরিণত হয়। পানির গভীরতা এতটা কমে যায় যে, হেঁটে নদী পারাপার করা যায়।

পাউবো সূত্র জানায়, সুরমা নদীর উৎসমুখ থেকে ২৬ কিলোমিটার অভিন্ন সীমান্ত নদী হিসেবে চিহ্নিত। এজন্য এককভাবে কোনো দেশের পক্ষে নদী খনন করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সচিব পর্যায়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। ১৯৯৯ সালে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের মাধ্যমে নদীর উৎসমুখ খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে জরিপে আটকে আছে সেই উদ্যোগ।

অবশ্য ২০১৮ সালে সিলেট সদর উপজেলার কানিশাইলে ৬০০ মিটার সুরমা নদী খনন করা হয়। এ সময় সিলেট সদর উপজেলা এবং কানাইঘাট উপজেলার কয়েকটি অংশে নদী খননের জন্য প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুজ্জামান সরকার জানান, শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি প্রবাহ কমে যায়, এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। নাব্য সংকটের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখছে। আপাতত সুরমা খননের প্রকল্প নেই বলে জানান তিনি।