০২:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

ভাঙন পিছু ছাড়ছে না নদী তীরবর্তী মানুষের

নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে তার বসতবাড়ি। তারপরও মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয়টুকু ছাড়তে রাজি না আড়িয়া বেগম। এজন্য বসতঘর ভেঙে জিনিসপত্র রাস্তার পাশে রেখে প্রখর রৌদের তীব্র গরমে খোলা আকাশের নিচে রান্না চড়িয়েছেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে দৌলতদিয়া ১নং ফেরিঘাট সংলগ্ন ভাঙনকবলিত মজিদ শেখের পাড়ায় এমন চিত্র দেখা যায়। আড়িয়া বেগম বলেন, ‘আমাদের বাডি ছিল ধল্ল্যা পাড়া। নদীভাঙনে সেখানে আর থাকতে পারিনি। সেখান থেকে এসে দৌলতদিয়া ২নং ফেরিঘাট এলাকায় বাড়ি করি। সেখানেও দুই দফা ভাঙলে মজিদ শেখের পাড়ায় এসে বাড়ি করি। কিন্তু এখানেও ভাঙছে। ভাঙন যেন পিছু ছাড়ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, দিন এনে দিন খাই। অন্য কোথাও জমি নেই যে সেখানে বাড়ি করব। দুই দিন আগে বাড়ির পেছনে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। অনেকগুলো বাড়ি নদীতে চলে গেছে। সে ভয়ে লোকজনের সহযোগিতা নিয়ে আমার ঘরের চাল ও বেড়া ভেঙে রাস্তার পাশে নিয়ে রেখেছি।’ ‘ঘরের খুঁটি এখনো উঠাই নি। বস্তা ফেলার কাজ শুরু হয়েছে, এজন্য একটু সাহস পাচ্ছি। তবে কাজ ভালো হচ্ছে না। কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় খোলা আকাশের নিচে রান্না করছি, স্বামী-সন্তান নিয়ে খাব।’ দেশের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার রাজবাড়ী গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট। এখানে রয়েছে লঞ্চ ও ফেরিঘাট। ঘাটগুলো দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহনসহ পদ্মা নদী পারি দেয় লক্ষাধিক মানুষ। বর্ষা মৌসুমে পদ্মার তীব্র স্রোত ও পানির ঘূর্ণনে প্রতিবছরই ভাঙনে বিলীন হয় শতশত বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। মঙ্গলবার সকালে আকস্মিক নদীভাঙনে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট ও ১নং ফেরিঘাটের মাঝামাঝি এলাকায় মুহূর্তের মধ্যে ১৫০ মিটার ভেঙে পাঁচটি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এসময় ভাঙন আশঙ্কায় প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়। বর্তমানে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট এবং ১, ২ ও ৭নং ফেরিঘাট, মজিদ শেখের পাড়া, ছিদ্দিক কাজীর পাড়া ও ছাত্তার মেম্বারের পাড়া এলাকার সহস্রাধিক ঘরবাড়িসহ বহু স্থাপনা। এদিকে লঞ্চ ও ১নং ফেরিঘাটের মাঝামাঝি এলাকার ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে ১৪০ মিটার এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এছাড়া ফেরিঘাট এলাকার ভাঙনরোধেও বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

ট্যাগ :

বিএফআইইউ প্রধানের ‘ভিডিও ফাঁস’ বিশেষজ্ঞদের দাবি এআই দারা নির্মিত ষড়যন্ত্র

ভাঙন পিছু ছাড়ছে না নদী তীরবর্তী মানুষের

প্রকাশিত : ১২:৫৯:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১

নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে তার বসতবাড়ি। তারপরও মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয়টুকু ছাড়তে রাজি না আড়িয়া বেগম। এজন্য বসতঘর ভেঙে জিনিসপত্র রাস্তার পাশে রেখে প্রখর রৌদের তীব্র গরমে খোলা আকাশের নিচে রান্না চড়িয়েছেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে দৌলতদিয়া ১নং ফেরিঘাট সংলগ্ন ভাঙনকবলিত মজিদ শেখের পাড়ায় এমন চিত্র দেখা যায়। আড়িয়া বেগম বলেন, ‘আমাদের বাডি ছিল ধল্ল্যা পাড়া। নদীভাঙনে সেখানে আর থাকতে পারিনি। সেখান থেকে এসে দৌলতদিয়া ২নং ফেরিঘাট এলাকায় বাড়ি করি। সেখানেও দুই দফা ভাঙলে মজিদ শেখের পাড়ায় এসে বাড়ি করি। কিন্তু এখানেও ভাঙছে। ভাঙন যেন পিছু ছাড়ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, দিন এনে দিন খাই। অন্য কোথাও জমি নেই যে সেখানে বাড়ি করব। দুই দিন আগে বাড়ির পেছনে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। অনেকগুলো বাড়ি নদীতে চলে গেছে। সে ভয়ে লোকজনের সহযোগিতা নিয়ে আমার ঘরের চাল ও বেড়া ভেঙে রাস্তার পাশে নিয়ে রেখেছি।’ ‘ঘরের খুঁটি এখনো উঠাই নি। বস্তা ফেলার কাজ শুরু হয়েছে, এজন্য একটু সাহস পাচ্ছি। তবে কাজ ভালো হচ্ছে না। কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় খোলা আকাশের নিচে রান্না করছি, স্বামী-সন্তান নিয়ে খাব।’ দেশের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার রাজবাড়ী গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট। এখানে রয়েছে লঞ্চ ও ফেরিঘাট। ঘাটগুলো দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহনসহ পদ্মা নদী পারি দেয় লক্ষাধিক মানুষ। বর্ষা মৌসুমে পদ্মার তীব্র স্রোত ও পানির ঘূর্ণনে প্রতিবছরই ভাঙনে বিলীন হয় শতশত বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। মঙ্গলবার সকালে আকস্মিক নদীভাঙনে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট ও ১নং ফেরিঘাটের মাঝামাঝি এলাকায় মুহূর্তের মধ্যে ১৫০ মিটার ভেঙে পাঁচটি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এসময় ভাঙন আশঙ্কায় প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়। বর্তমানে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট এবং ১, ২ ও ৭নং ফেরিঘাট, মজিদ শেখের পাড়া, ছিদ্দিক কাজীর পাড়া ও ছাত্তার মেম্বারের পাড়া এলাকার সহস্রাধিক ঘরবাড়িসহ বহু স্থাপনা। এদিকে লঞ্চ ও ১নং ফেরিঘাটের মাঝামাঝি এলাকার ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে ১৪০ মিটার এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এছাড়া ফেরিঘাট এলাকার ভাঙনরোধেও বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর