বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী শবনম। ১৮০টির ও বেশি সিনেমায় অভিনয় করলেও কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘আম্মাজান’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পর গত প্রায় ২২ বছরে দেশের চলচ্চিত্রে আর দেখা মেলেনি তার। কিংবদন্তি এই অভিনেত্রীর জন্মদিনে বিজনেস বাংলাদেশ পরিবার থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। শুভ জন্মদিন।
অশোক ঘোষ পরিচালিত ‘নাচের পুতুল’ চলচ্চিত্রে নায়ক রাজ রাজ্জাকের লিপে মাহমুদুন্নবীর গাওয়া ‘আয়নাতে ঐ মুখ দেখবে যখন’ গানটির কথা মনে আছে নিশ্চই! এখনো দারুণ জনপ্রিয় গানটি। এ সিনেমার নায়িকা ছিলেন ষাটের দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শবনম। বাংলার পাশাপাশি উর্দু ও পাঞ্জাবি চলচ্চিত্রেও রয়েছে তার সুনিপুণ অভিনয়ের ছাপ। নন্দিত এ অভিনেত্রীর জন্মদিন আজ। ৭৬ বছরে পা রাখলেন তিনি জনপ্রিয় এই এই অভিনেত্রী। জানাগেছে করোনার কারণে তিনি পাকিস্তানে আটকে আছেন। পরিস্থিতি ভারো হলেখিব শিগগিরই দেশে ফিরবেন।
অভিনয় জীবনের একটা দীর্ঘ সময় তিনি পাকিস্তানের চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। সেখানকার দর্শকের কাছে এক মহানায়িকা শবনম। পাকিস্তানে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন সর্বোচ্চ ১১ বার নিগার অ্যাওয়ার্ড।
ষাটের দশকের জনপ্রিয় এই তারকার প্রকৃত নাম ঝর্ণা বসাক। ১৯৪০ সালের ১৭ আগস্ট, তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ননী বসাক ছিলেন একজন স্কাউট প্রশিক্ষক ও ফুটবল রেফারী। ১৯৬৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর স্বনামধন্য সঙ্গীত পরিচালক রবিন ঘোষকে বিয়ে করেন তিনি।
১৯৬১ সালে বাংলা চলচ্চিত্র ‘হারানো দিন’ এর মাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন শবনম। ১৯৬২ সালে উর্দু চলচ্চিত্র ‘চান্দা’ ছবির মাধ্যমে তৎকালীন সমগ্র পাকিস্তানে রাতারাতি তারকাখ্যাতি পান তিনি। এ দু’টি সিনেমাই তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঢাকা থেকে মুক্তি পেয়েছিল।
পরবর্তী বছরে ‘তালাশ’ সমগ্র পাকিস্তানে মুক্তি পেলে ঐ সময়ের সর্বাপেক্ষা ব্যবসা সফল সিনেমার মর্যাদা লাভ করে। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে শবনম পাকিস্তানের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে চিহ্নিত হন।
পেশার কারণে ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানের করাচীতে চলে যান তিনি। সত্তর দশকের শুরুতে শবনম ললিউডে (লাহোর) পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করেন। আশির দশকের শেষ পর্যন্ত প্রবল প্রতাপে একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করেছিলেন তিনি।
সম্ভবত বিশ্বে তিনিই একমাত্র চলচ্চিত্র অভিনেত্রী যিনি ১৯৬০ থেকে ১৯৮০ এর দশক পর্যন্ত তিনটি দশক ধারাবাহিক ও সফলভাবে রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় করে অগণিত দর্শক-শ্রোতার মন জয় করেছিলেন।
১৯৮৮ সালে শবনম তার চরিত্র পরিবর্তন করেন এবং পুনরায় ঢাকার চলচ্চিত্রাঙ্গনে অভিনয় করতে থাকেন। ৪০ বৎসরের অভিনয় জীবনে তিনি প্রায় ১৮০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন।
বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ