এখন থেকে চাইলেই কোনো সরকারি কর্মকর্তা বিদেশে যেতে পারবেন না। বিশেষ প্রয়োজন হলেই কেবল সরকার তাদেরকে এই অনুমতি দেবে। নানা প্রকল্পে সরকারি কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনে বিদেশ সফরের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বুধবার অর্থনৈতিক বিষয়ক ও ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ বেড়ে গেছে বলে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন একজন সাংবাদিক। জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে অনুমতি দেয়া যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরকারি কর্মকর্তাদের এখন থেকে বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হবে না। তবে বিশেষ কোনো প্রয়োজন হলে অনুমতি সাপেক্ষে বিদেশ যেতে পারবেন।’এখন যারা বিদেশ যাচ্ছেন তাদেরকে আগেই অনুমতি দেয়া হয়েছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন করে কাউকে অনুমতি দেয়া হচ্ছে না।’কম গুরুত্বপূর্ণ আমদানিনির্ভর প্রকল্পের বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তের কথাও জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সময়ে সময়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কঠিন সিদ্ধান্তে নিতে হয়। আমরা এতদিন যেভাবে চলছিলাম, সারা বিশ্বের যে অবস্থা, তাতে লাগাম টেনে ধরতে হচ্ছে। বিশ্বের সঙ্গে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। বিশ্বের যে সামগ্রিক অবস্থা, তা বিবেচনায় নিয়ে এসব সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।’
সারা বিশ্বে করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। আগের চেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হওয়ায় দেশে রিজার্ভে টান পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিলাসদ্রব্যের আমদানি কমাতে চাইছে সরকার। চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার নিয়েও কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। যারা এই হিসাব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন, তাদের সঙ্গে দ্বিমত করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হিসাব নিরূপণে পদ্ধতির পরিবর্তন করিনি। আগে নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে। কাজেই, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জিডিপির যে হিসাব করেছে তা সঠিক বলে আমি মনে করি।আন্তর্জাতিক মহলে যারা সবচেয়ে বেশি সোচ্চার, আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের জিডিপি হিসাব নিয়ে কোনো আপত্তি করেনি। কাজেই আমাদের হিসাব সঠিক।’ মঙ্গলবার বিবিএসের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে এই তথ্য নিয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ। অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা দ্বিমত প্রকাশ করেছেন, তাদের সঙ্গে তিনি বসতে চান। বলেন, ‘তাদের পরামর্শ শুনব। আমরা সবাই এ দেশের মানুষ।’